নতুন করে যে ৩০টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন দর বা তুলে নেয়া হয়েছে, তার প্রতিটিই দর হারিয়েছে। এসব কোম্পানির দর হারানোর প্রান্তসীমা ছিল দুই শতাংশ। আর একটি ছাড়া সবগুলোই এই পরিমাণ দর হারিয়েছে।
এর আগে ফ্লোর তুলে দেয়া ৬৬ কোম্পানির মতোই এই কোম্পানির ক্ষেত্রেও একটি প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। আর তা হলে ফ্লোর প্রাইসে কোনো কোনোদিন একটি শেয়ারও হাতবদল না হলেও ‘মুক্ত’ হয়ে যাওয়ার পর সব কটি কোম্পানিই লেনদেন হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি দ্বিতীয় পর্যায়ে ৩০টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়। এরপর প্রথম লেনদেন হয়েছে রোববার।
গত বছরের মার্চে দেশে করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার পর শেয়ার মূল্যে দেখা দেয়া ধস ঠেকাতে এই ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়া হয় সবগুলো শেয়ারের। কিন্তু শেয়ারের আয়, মৌলভিত্তি বিবেচনায় না এনে কেবল বাজারমূল্যের ভিত্তিতে এই সর্বনিম্ন দাম দেয়া হয়।
পরে দেখা যায়, বহু কোম্পানি বিপুল পরিমাণ লোকসান দিচ্ছে। আর এ কারণে বেঁধে দেয়া সেই মূল্য অযৌক্তিক হয়ে যায় আর সেই দামে শেয়ার হাতবদল হচ্ছিল না বললেই চলে।
এই পরিস্থিতিতে প্রথমে ৭ এপ্রিল ৬৬টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয়। সেই কোম্পানিগুলোর প্রায় অর্ধেক এখন বেঁধে দেয়া ফ্লোর প্রাইসের ওপরে উঠে গেছে। আর প্রতিদিনই বেশ ভালো পরিমাণে লেনদেন হচ্ছে।
এর পরেও আরও বেশ কিছু কোম্পানি থেকে যায়, যেগুলো লেনদেন হচ্ছিল না বললেই চলে। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে তোলা হয় ৩০টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল ইসলাম নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, পুঁজিবাজারে কোনো ফ্লোর প্রাইস রাখা হবে না। কিন্তু একদিনে সবগুলো তুলে দিলে বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে, এই আশঙ্কায় তারা ধাপে ধাপে এই সিদ্ধান্ত নেবেন।
যেসব কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস কমানো হয়েছে, সেগুলোর একটি বিশেষ সুবিধা আছে। তা হলো অন্যগুলোর মতোই এগুলোর দাম ১০ শতাংশ বাড়তে পারবে, কিন্তু কমতে পারবে দুই শতাংশ।
কিন্তু শতকরা হিসাবের কারণে কোনো কোনো কোম্পানির দাম কমতে পারে দুই শতাংশের কম।
বিএসইসি চেয়ারম্যান নিউজবাংলার সঙ্গে আলাপকালে জানিয়েছিলেন, হঠাৎ করে এই সুবিধা উঠিয়ে দেয়া হলে তা পুঁজিবাজারের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। এজন্য পুঁজিবাজার যখন স্বাভাবিক হবে, বিনিয়োগকারীরা বাজারের প্রতি আস্থাশীল হবে তখন আস্তে আস্তে এসব সুযোগ উঠিয়ে দেয়া হবে।
কোনটার দাম কত কমল
রেনউইক যগেশ্বর ফ্লোর প্রাইস ছিল ৯০০ টাকা। রোববার কোম্পানিটির শেয়ার দর দিনের সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমে হয়েছে ৮৮২ টাকা।
ফ্লোর উঠানোর আগে বৃহস্পতিবার লেনদেন ছিল আটটি। সেটি বেড়ে হয়েছে ২১টি।
মুন্নু এগ্রোর দর ফ্লোর প্রাইস ৭৯৪ টাকা ৮০ পয়সা থেকে দুই শতাংশ কমে হয়েছে ৭৭৮ টাকা ৯০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন কোনো শেয়ার হাতবদল না হলেও আজ লেনদেন হয়েছে ৩১টি।
নর্দার্ন জুট কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩২৪ টাকা ৯০ পয়সা। এটিও দর হারিয়েছে ২ শতাংশ। আজ ৩০৭টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ৩১৮ দশমিক ৪০ পয়সায়। ফ্লোর উঠার আগে লেনদেন ছিল ১৮টি।
ইস্টার্ন কেবলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ১৪০ টাকা ১০ পয়সা। দুই টাকা ৮০ পয়সা বা দুই শতাংশ কমে এখন দাম হয়েছে ১৩৭ টাকা ৩০ পয়সা।
ফ্লোর উঠার আগের দিন ১১৬টি শেয়ার হাতবদল হলেও সেটি এখন বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৫৪৫টি
গত অর্থবছরে বিপুল পরিমাণ লোকসান দেয়া বাটা শুর ফ্লোর প্রাইস ৬৯৩ টাকা ২০ পয়সায় লেনদেন হচ্ছিল না বললেই চলে।
ফ্লোর মুক্ত দিনে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে দাম হয়েছে ৬৭৯ দশমিক ৪০ পয়সা। লেনদেনও হয়েছে প্রায় তিন গুণ।
বৃহস্পতিবার হাতবদল হয়েছেল ৭৯৯টি। আর রোববার হয়েছে দুই হাজার ১৯৭টি।
কোহিনুর ক্যামিকেলের ফ্লোর প্রাইস ছিল ৪৭২ টাকা ৮০ পয়সা। এর দরও ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে হয়েছে ৪৬৩ টাকা ৪০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন কোনো লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটির জট খুলেছে। ৫১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
ওয়াটা ক্যামিকেল ফ্লোর প্রাইস ছিল ৩০৬ টাকা ৮০ পয়সা। ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে দাম হয়েছে ৩০০ টাকা ৭০ পয়সা।
আগের দিন ১১৬টি শেয়ার হাতবদল হলেও এর লেনদেন বেড়ে হয়েছে এক হাজার ৫৪৮টি।
এপেক্স স্পিনিং এর দর ১৩০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে হয়েছে ১২৮ টাকা ১০ পয়সা।
ফ্লোরের শেষ দিন কোনো লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটিরও জট খুলেছে। দাম কমার পর হাতবদল হয়েছে ৪০০টি।
সিভিও পেট্রো ক্যামিকেলের দাম ১১৫ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৯ শতাংশ কমে হয়েছে ১১৩ টাকা ১০ পয়সা।
আগের দিন মাত্র তিনটি শেয়ার হাতবদল হলেও ফ্লোর থেকে মুক্ত হওয়ার পর হাতবদল হয়েছে ৪১১টি।
স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের দর ৩০৭ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ৩০১ টাকা ৮০ পয়সা।
তবে এটির লেনদেন কমেছে। আগের দিন ১২০টি শেয়া হাতবদল হলেও আজ হয়েছে ৯২টি।
সোনালী পেপারের দাম ২৭৩ টাকা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ২৬৭ টাকা ৬০ পয়সা।
এটিরও লেনদেন কমেছে। আগের দিন ২০টি হাতবদল হলেও আজ হয়েছে দুটি।
কে অ্যান্ড এর দর ২০৭ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ২০৩ টাকা ৩০ পয়সা।
এটিরও লেনদেন কমেছে। আগের দিন লেনদেন হয় ৮৬৯টি। আজ হয়েছে একটি।
স্টাইলক্রাফটের দর ১৪৬ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমে হয়েছে ১৪৩ টাকা ৩০ পয়সা।
আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে দুই হাজার ৯৩টি শেয়ার লেনদেন হলেও এটি আজ হাতবদল হয়েছে দ্বিগুণ। লেনদেন হয়েছে চার হাজার ২৯২টি।
বিডিঅটোকারের দর ১৪৭ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয়েছে ১৪৪ টাকা ৪০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন তিনটি শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর হাতবদল হয়েছে ৩৩৫টি।
মুন্নু সিরামিকের দর ১২৬ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয়েছে ১২৪ টাকা ৩০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন ৭৪ শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর হাতবদল হয়েছে এক হাজার ২৫১টি।
বঙ্গজের দাম ফ্লোর প্রাইস ১১৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ কমে হয়েছে ১১৪ টাকা ৬০ পয়সা।
এই কোম্পানিরও লেনদেন বেড়েছে। আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে এক হাজার ৭২৬টি শেয়ার লেনদেন হলেও এটি আজ হাতবদল হয়েছে দুই হাজার ৪০৬টি।
এপেক্স ট্যানারির দাম ফ্লোর প্রাইস ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে হয়েছে ১০৪ টাকা ৮০ পয়সা।
ফ্লোর প্রাইসের শেষ দিন ১০০টি শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর হাতবদল হয়েছে দুই হাজার ২২৯টি।
সমতা লেদারের দর ফ্লোর প্রাইস ১০৬ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে হয়েছে ১০৪ টাকা ৮০ পয়সা।
আগের দিন ফ্লোর প্রাইসে একটি শেয়ার লেনদেন হলেও এটি আজ হাতবদল হয়েছে ১৭টি।
এপেক্স ফুটওয়্যারের দর ফ্লোর প্রাইস ২১৯ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৬ শতাংশ কমে হয়েছে ২১৫ টাকা।
এই কোম্পানির এটিরও লেনদেন কমেছে। আগের দিন তিন হাজার ৩৫১টি শেয়ার হাতবদল হলেও আজ হয়েছে দুই হাজার ৪৬৭টি।
আজিজ পাইপের দর ফ্লোর প্রাইস ৯৭ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৫ শতাংশ কমে হয়েছে ৯৫ টাকা ৬০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ৭১০ শেয়ার হাতবদল হলেও মুক্ত হওয়ার পর লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৯৫টি।
ন্যাশনাল টিউবের দর ১০৩ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছে ১০১ টাকা ১০ পয়সা।
আগের দিন ১৪১টি শেয়ার হাতবদল হলেও আজ লেনদেন হয়েছে ৭০৮টি।
ওরিয়ন ইনফিউশনের দর ৭২ টাকা ১০ পয়সা থকে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছে ৭০ টাকা ৭০ পয়সা।
এটির লেনদেনও কমেছে। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ১০ হাজার শেয়ার হাতবদল হলেও দর কমার দিন লেনদেন হয়েছে দুই হাজার ৩৭৪টি।
ন্যাশনাল পলিমারের দর ৫৬ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছে ৫৫ টাকা ৫০ পয়সা।
লেনদেন কমেছে এটিরও। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন হাতবদল হয়েছে দুই লাখ ৫৩ হাজার ৩৫১টি। তবে আজ হাতবদল হয়েছে ৩৮ হাজার ১০৯টি।
জেমিনি সি ফুডের দর ফ্লোর প্রাইস ১৪৪ টাকা ৩০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৪ শতাংশ কমে হয়েছে ১৪১ টাকা ৫০ পয়সা।
এটির লেনদেনও কমেছে। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ৭১৮টি শেয়ার হাতবদল হলেও দর কমার দিন লেনদেন হয়েছে ৪৪৭টি।
এসকে ট্রিমসের দর ৬২ টাকা ২০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ কমে হয়েছে ৬১ টাকা।
ফ্লোরের শেষ দিন একটি শেয়ারও লেনদেন না হওয়া কোম্পানিটির ১৬টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে।
লিগ্যাসি ফুটওয়ারের দর ৬২ টাকা ৯০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯১ শতাংশ কমে হয়েছে ৬১ টাকা ৭০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন এটিরও কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি। তবে আজ হাতবদল হয়েছে আট হাজার ১১৯টি।
সিপার্লের দর ফ্লোর প্রাইস ৭৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৯০ শতাংশ কমে হয়েছে ৭৭ টাকা ৭০ পয়সা।
ফ্লোরে থাকার শেষ দিন এটিরও কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি। তবে আজ হাতবদল হয়েছে ১১টি।
হাক্কানি পাল্পের দর ফ্লোর প্রাইস ৭৪ টাকা থেকে ১ দশমিক ৮৯ শতাংশ কমে হয়েছে ৭২ টাকা ৬০ পয়সা।
এটির লেনদেনও কমেছে। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন এক হাজার ১০১টি শেয়ার হাতবদল হলেও দর কমার দিন লেনদেন হয়েছে ২২টি।
ডেফোডিল কম্পিউটারের দর ফ্লোর প্রাইস ৫৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে ১ দশমিক ৮৭ শতাংশ কমে হয়েছে ৫২ টাকা ৪০ পয়সা।
এটির লেনদেনও কমেছে। ফ্লোরে থাকার শেষ দিন ২৯ হাজার ৯০টি শেয়ার হাতবদল হলেও দর কমার দিন লেনদেন হয়েছে ১৭ হাজার ২১টি।
একমাত্র শেয়ার হিসেবে এটলাসের দর সর্বনিম্ন সীমা থেকে কম কমেছে। কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস ছিল ১০৯ টাকা ৪০ পয়সা। দাম কমতে পারত ১০৭ টাকা ৩০ পয়সা পর্যন্ত। কিন্তু দিন শেষে দাম হয়েছে ১০৮ টাকা ৯০ পয়সা।
তবে এর লেনদেন হয়েছে ন্যূনতম। আগের দিন দুটি শেয়ার হাতবদল হওয়া কোম্পানিটির তিনটি শেয়ার লেনদেন হয়েছে এটি।
‘দাম কমাই স্বাভাবিক’
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ব্র্যাক ইপিএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের সাবেক প্রধন গবেষণা কমর্কতা দেবব্রত সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এতদিন লেনদেন না হওয়ার কারণ কোম্পানিগুলোর ফ্লোর প্রাইস ছিল অতিমূল্যায়িত। এখন দর কমবে, বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কিনবে।’
আরও পড়ুন:শান্তিতে নোবেলজয়ী হয়েও ড. ইউনূস ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার পক্ষ নিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, হত্যাযজ্ঞে নিশ্চুপ থেকে এবং একজন ইসরায়েলির দেয়া পুরস্কার নিয়ে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন। আর ইউনূস সেন্টার এটিকে ইউনেস্কোর পুরস্কার উল্লেখ করে মিথ্যাচার করছে, যা খুবই দুঃখজনক।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বৃহস্পতিবার মতবিনিময়কালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘ইউনূস সেন্টারের মিথ্যাচারে আমি বিষ্মিত, হতবাক। সম্প্রতি আজারবাইজানের বাকুতে একটি সম্মেলনে মিজ হেদভা সের নামে একজন ইসরায়েলি ভাস্বর ড. ইউনুসকে একটি পুরস্কার দিয়েছেন। এ সম্মেলনে ইউনেস্কো কোনোভাবে জড়িত ছিল না।
‘এই পুরস্কার ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে তো নয়ই, একজন ব্যক্তির পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে। আর ইউনূস সেন্টার সেটিকে ইউনেস্কোর পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে বলে মিথ্যাচার ও অপপ্রচার করেছে। তবে এটিই প্রথম নয়, এর আগেও এ ধরনের মিথ্যাচার ইউনূস সেন্টারের পক্ষ থেকে করা হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনূস শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। ওদিকে গাজায় আজ নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ চলছে, নারী ও শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি, প্রতিবাদ করেননি।
‘বরং এই সময়ে তিনি একজন ইসরায়েলির কাছ থেকে পুরস্কার গ্রহণ করেছেন। এর অর্থ কি এটাই নয় যে ড. ইউনূস প্রকারান্তরে গণহত্যায় সমর্থন দিয়েছেন? এটি অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সীমান্ত হত্যায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ
মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২৫ মার্চ মধ্যরাতে লালমনিরহাট ও ২৬ মার্চ ভোরে নওগাঁ সীমান্তে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনায় বিজিবি’র মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো এবং সীমান্তে পতাকা বৈঠকও হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই ভারতের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি। সম্প্রতি ভারত সফরেও এ নিয়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকগুলোতে গুরুত্বসহ আলোচনা করেছি। সেই প্রেক্ষিতে সীমান্তে এখন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নন-লেথাল বা প্রাণঘাতী নয় এমন অস্ত্র ব্যবহার করা হয়। রাবার বুলেটে অনেকে আহত হন; কিন্তু প্রাণহানি কমে এসেছে। তবে আমাদের লক্ষ্য প্রাণহানিকে শূন্যের কোটায় নিয়ে আসা।’
নাবিক ও জাহাজ উদ্ধারে নানামুখী তৎপরতা চলছে
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সোমালি জলদস্যুদের কবল থেকে বাংলাদেশি জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহর নাবিকদের নিরাপদে উদ্ধার ও জাহাজটিকে মুক্ত করাই আমাদের মূল উদ্দেশ্য।’
তিনি বলেন, ‘জাহাজ সম্পর্কে শুধু এটুকু বলতে চাই, নাবিকদের মুক্ত করার জন্য আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগে আছি। আমরা নানামুখী তৎপরতা চালাচ্ছি। আমরা অনেকদূর এগিয়েছি।’
জাহাজে খাদ্য সংকট নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, জাহাজটিতে খাদ্য সংকট নেই। এর আগে তিন মাস ধরে জলদস্যুদের কবলে থাকা অন্য জাহাজেও খাদ্য সংকট ছিল না।
আরও পড়ুন:রাজধানীর কারওয়ান বাজারের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) আঞ্চলিক কার্যালয় স্থানান্তরের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। অফিসটি সরিয়ে মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ সংলগ্ন মোহাম্মদপুর কমিউনিটি সেন্টারে নেয়া হচ্ছে। এই কমিউনিটি সেন্টারে হবে ডিএনসিসি’র অঞ্চল-০৫ এর অস্থায়ী আঞ্চলিক কার্যালয়।
বৃহস্পতিবার সকালে আঞ্চলিক কার্যালয়ের মালামাল স্থানান্তরের কার্যক্রম পুরোদমে শুরু হয়।
কারওয়ান বাজারে ডিএনসিসির আঞ্চল-৫ এর কার্যালয়ের সামনে সকালে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘ডিএনসিসির কার্যালয় স্থানান্তরের মাধ্যমে কারওয়ান বাজারের স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে। ঈদের আগে অফিসের সবকিছু সরিয়ে নেয়া হবে এবং ঈদের পর ভবনটি ভাঙা হবে। ঈদের পর ঝুঁকিপূর্ণ এই ভবনে থাকা ১৭৬টি দোকান গাবতলীতে সরিয়ে নেয়া হবে। একইসঙ্গে অস্থায়ী আরও ১৮০টি দোকান গাবতলীতে স্থানান্তর করা হবে।’
প্রসঙ্গত, কারওয়ান বাজার থেকে ডিএনসিসির পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন থেকে সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়সহ দোকানপাট স্থানান্তরের বিষয়ে ১৮ মার্চ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে ডিএনসিসি। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
সভায় ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের পর কারওয়ান বাজারে ডিএনসিসির পরিত্যক্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে ফেলা হবে। কারণ যেকোনো সময় এটি ধসে পড়তে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের কারণে বহু মানুষের জীবন হুমকিতে রয়েছে। কারওয়ান বাজারের পাইকারি কাঁচাবাজারের এই ব্যবসায়ীদের গাবতলিতে ডিএনসিসির পাইকারি কাঁচাবাজারে স্থানান্তর করা হবে।’
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদের প্রথম ধাপের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর মালিকানাধীন কোনো স্থানে ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ না করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার সংস্থাটির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে পাঠিয়েছেন বলে জানা গেছে।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে-
(ক) কমিশন ভোট গ্রহণের তারিখের অন্যূন ১৫ দিন আগে চূড়ান্ত তালিকা সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে যেসব এলাকার ভোটারগণ ভোটদান করবেন সেসব এলাকার নামও চূড়ান্ত তালিকায় উল্লেখ করতে হবে। তবে শর্ত থাকে যে, ওই চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরও বিশেষ পরিস্থিতিতে কমিশন যেকোনো ভোটকেন্দ্র পরিবর্তন করতে পারবে।
(খ) রিটার্নিং অফিসার প্রকাশিত চূড়ান্ত ভোটকেন্দ্রের তালিকা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট উপজেলার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক ভোটকেন্দ্রের ব্যবস্থা করবেন।
(গ) সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত নয় এরূপ স্থানকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করা যাবে না।
(ঘ) পুরুষ ও মহিলা ভোটারগণ যাতে পৃথকভাবে ভোট প্রদান করতে পারেন সে উদ্দেশ্যে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রয়োজনীয়সংখ্যক ভোট কক্ষের ব্যবস্থা রাখতে হবে এবং প্রতিটি ভোট কক্ষে ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয়সংখ্যক স্থান রাখতে হবে।
(ঙ) কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো স্থানে কোনো ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা যাবে না।
(চ) প্রার্থিতা চূড়ান্তকরণের পর কোনো প্রার্থীর মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোনো ভোটকেন্দ্র স্থাপিত হয়ে থাকলে কমিশন তা পরিবর্তন করতে পারবে।
(ছ) প্রত্যেক ভোটকেন্দ্রের প্রতিটি ভোট কক্ষে ভোট চিহ্ন প্রদানের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক গোপন কক্ষ থাকবে।
উপজেলা নির্বাচনে ছুটির দিনেও অফিস খোলা রাখার নির্দেশ
উপজেলা পরিষদে প্রথম ধাপের নির্বাচন উপলক্ষে সরকারি ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও অফিস খোলা রেখে কাজ করার জন্য মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বৃহস্পতিবার ইসি থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ের জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিনে অফিস খোলা রেখে নির্বাচনী কার্যক্রম পরিচালনার ব্যবস্থা করতে হবে।
আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলা পরিষদে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপের নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ভোট গ্রহণ হবে ৮ মে।
নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।
মোট চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তীতে তিন ধাপের ভোটগ্রহণ ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।
আরও পড়ুন:ঈদের পর সমাধান করা হবে- স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এমন আশ্বাসে এক মাসের জন্য আন্দোলন থামালেন বেতন-ভাতা বাড়ানো ও বকেয়া ভাতা পরিশোধসহ চার দফা দাবিতে কর্মবিরতি কর্মসূচি পালনকারী পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চিকিৎসকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চিকিৎসকরা যে দাবিগুলো করেছেন সেগুলো যৌক্তিক। চিকিৎসকরা হাসপাতালকে বাঁচিয়ে রাখে। তাদের বেতন বাড়ানোর বিষয়ে আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, চিকিৎসকদের দাবিগুলো বাস্তবায়ন হবে। তারা কাজে যোগদান করুক।’
বিষয়টি কতদিনে বাস্তবায়িত হবে- এমন প্রশ্নের জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘কিছুদিন তো লাগবেই। তবে ঈদের পর হয়তো বলতে পারব, কতদিনের মধ্যে বেতন বাড়বে।’
এর আগে গত শনিবার (২৩ মার্চ) চার দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন করেন পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে না বলেই স্বাধীনতার মর্মার্থকে অকার্যকর করতে চায়।
বৃহষ্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি একথা বলেন। বিএনপি নেতাদের মিথ্যা, বানোয়াট ও দুরভিসন্ধিমূলক বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই বিবৃতি দেয়া হয়। খবর বাসসের
ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশের প্রত্যেক মানুষ এখন স্বাধীনতার সুফল পাচ্ছে। অগণতান্ত্রিক ও উগ্র-সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রতিভূ বিএনপির ফ্যাসিবাদী দর্শনে জনগণ কখনো সাড়া দেয়নি, দেবেও না। তাই বিএনপি সর্বদা জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।
তিনি বলেন, পাকিস্তানি ভাবাদর্শকে পুঁজি করে রাজনীতি করা বিএনপির একান্ত কাম্যই হলো যে কোনো উপায়ে ক্ষমতা দখল, জনকল্যাণ নয়। তারা ক্ষমতায় গিয়ে নিজেদের আখের গুছিয়ে নিয়েছিল। বাংলার জনগণ তাদের দ্বারা প্রতারণার শিকার হয়েছিল। সুতরাং বাংলার জনগণ এই প্রতারক গোষ্ঠীকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।
‘বিএনপি নেতাকর্মীদের ঘর-বাড়ি, ব্যবসা-বাণিজ্য দখল করে নেয়া হচ্ছে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘তিনি (মির্জা ফখরুল) সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণ না দিয়ে ঢালাওভাবে বানোয়াট ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন। বরং আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, বিএনপির নেতাকর্মীরা বহাল তবিয়তে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। কোথাও রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হচ্ছে না।’
তিনি বলেন, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসীন হওয়ার পর রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়ে লাখ লাখ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে ঘর-বাড়ি ছাড়তে হয়েছিল, নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নির্মম অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। বিএনপি-জামাতের ক্যাডারবাহিনী দ্বারা হাজার হাজার নারী ধর্ষিত হয়েছিল। সারা দেশে আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছিল।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের পথ-পরিক্রমায় বাঙালি জাতি ১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে সশস্ত্র লড়াইয়ের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করে। স্বাধীনতা অর্জনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পরিচালিত হতে থাকে।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ভিত্তিতে জাতিকে সংবিধান উপহার দেন। ধর্মের ভিত্তিতে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যার পর খুনি জিয়া-মোশতাক চক্র মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধূলিসাৎ করে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সামরিক স্বৈরশাসক জিয়াউর রহমান নিজের অবৈধ ও অসাংবিধানিক ক্ষমতাকে পাকাপোক্ত করতে ধর্মের কার্ড ব্যবহার করে ধর্মভিত্তিক রাজনীতি প্রচলন করে। স্বৈরাচার জিয়া রাষ্ট্র ও সমাজের সকল স্তরে সাম্প্রদায়িকতার বিষবৃক্ষের বীজ বপন ও উগ্র-সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত করে। তখন থেকে বিভেদের রাজনীতির গোড়াপত্তন হয়। বিরোধী দল বিশেষ করে আওয়ামী লীগকে নির্মূল করার লক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালানো হয়।
মানিকগঞ্জ শহরের প্রবেশপথে যানজট নিরসনে ও পথচারীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়েছে।
পৌরসভা কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড ও পৌর সুপার মার্কেটের সামনের সড়ক ও ফুটপাত থেকে শতাধিক হকার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান করা হয়।
প্যানেল মেয়র তসলিম মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অস্থায়ী কিছু ব্যবসায়ীরা ফুটপাত ও সড়কের একাংশ দখল করে ব্যবসা করে আসছেন। এতে করে শহরে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। পথচারীদের সুবিধার্থে যানজট দূর করতেই এই উচ্ছেদ অভিযান।
উচ্ছেদ অভিযানে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জহিরুল আলম, পৌরসভার প্যানেল মেয়র-২ মো. তসলিম মিয়া ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর রাজিয়া সুলতানাসহ থানা পুলিশ ও পৌরসভার কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঝালকাঠির রাজাপুরে নদীর তীর থেকে এক ভ্যানচালকের মরদেহ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ।
স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো যুবকের মামুন হোসেন, যার বয়স ২৫ বছর। তিনি রাজাপুরের পশ্চিম সাতুরিয়া গ্রামের মোকসেদ আলীর ছেলে।
ভ্যানচালক মামুন দুই দিন আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন জানিয়ে রাজাপুর থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, ‘স্থানীয়দের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে সাতুরিয়া গ্রামের ইদুরবাড়ি এলাকায় কচা নদীর তীর থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেয়া হয়। লাশের ময়নাতদন্তসহ পরবর্তী সময়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে, তবে এটি হত্যা নাকি দুর্ঘটনা, সেটি তদন্তে বের হবে।’
এ পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কেউ অভিযোগ করেনি। সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য