পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত যে কয়েকটির পর্ষদ পুনর্গঠন করে সেগুলোকে বাঁচানোর চেষ্টা চলছে, তার মধ্যে অন্তত দুটির ভবিষ্যৎ নিয়ে সন্দিহান নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ফ্যামিলিটেক্স ও সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে দুটি কোম্পানিকে টেনে তুলতে যাদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে, তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলে বিএসইসি চেয়ারম্যান এই সংশয় প্রকাশ করেছেন।
নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি এই দুটি কোম্পানির উদ্যোক্তাদের ‘অসৎ’ আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করার প্রক্রিয়া চলছে।
এম খায়রুল হোসেন বিএসইসির চেয়ারম্যান থাকাকালে এই কোম্পানি দুটি তালিকাভুক্ত হয়েছিল পুঁজিবাজারে। কিন্তু প্রাথমিক গণপ্রস্তাবে টাকা তোলার পর থেকেই সেগুলো ধীরে ধীরে রুগ্ণ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, একপর্যায়ে সেগুলো বন্ধ হয়ে যায়। মালিকপক্ষ আর বিএসইসির সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখছে না, বিনিয়োগকারীদেরও কোনো তথ্য দিচ্ছে না। এ অবস্থায় পুঁজি হারিয়ে দিশেহারা হাজার হাজার বিনিয়োগকারী।
শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথমে আলহাজ ও পরে রিংশাইন টেক্সটাইলের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়।
আলহাজ টেক্সটাইল এরই মধ্যে উৎপাদন শুরুর তারিখ দিয়েছে। রিংশাইনও উৎপাদন শুরুর প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান।
তবে সিঅ্যান্ডএ ও ফ্যামিলিটেক্সের বিষয়ে সন্দিহান তিনি। নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বোর্ড পুনর্গঠন করার পর দেখা গেছে কয়েকটি কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল লুটপাটের জন্য। আমরা দেখছি কোম্পানিগুলোর কীভাবে কী করা যায়। যদি একেবারেই চালু করা সম্ভব না হয়, তাহলে সেসব কোম্পানির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করে দেব।’
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ফ্যামিলিটেক্স ও সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের পর্ষদ ভেঙে দিয়ে নতুন পর্ষদ গঠন করে বিএসইসি।
ফ্যামিলিটেক্সের জন্য বিএসইসির মনোনীত পরিচালক হলেন কাজী আমিনুল ইসলাম, ড. সামির কুমার শীল, ড. গাজী মোহাম্মদ হাসান জামিল, ড. মো. জামিল শরিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফ এহসান এবং ড. মো. ফরজ আলী। এই ছয়জন স্বতন্ত্র পরিচালকের মধ্যে কোম্পানিটির চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন কাজী আমিনুল ইসলাম।
আর সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের দায়িত্ব পেয়েছেন সাতজন। চেয়ারম্যান করা হয় অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব নারায়ণ চন্দ্র দেবনাথকে। অন্যরা হলেন ড. মোহাম্মদ শরিয়ত উল্লাহ, ড. এ বি এম শহীদুল ইসলাম, ড. রেজওয়ানুল হক খান, ড. এ বি এম আশরাফুজ্জামান, ড. তৌফিক ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরীফ এহসান।
তিন মাসে কোম্পানি দুটির মূল্যায়ন রিপোর্ট অবশ্য এখনও জমা দেননি তারা। তবে বিএসইসিকে নানা সময় কোম্পানির অবস্থা সম্পর্কে তারা জানিয়েছেন।
বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের ম্যানপাওয়ার কম। মাত্র ৮০ জন এখানে কাজ করি। এতগুলো কাজ একসঙ্গে করা মুশকিল হয়ে যায়। এ জন্য আমরা একটি একটি করে ধরছি, করছি। নতুন বোর্ড করে দিচ্ছি। তারা প্রোগেস করছে। এখন পর্যন্ত আমরা যে বোর্ড গঠন করে দিয়েছি, তার প্রোগেস রিপোর্ট শিগগিরই চলে আসবে। তখন সব বোঝতে পারব কোথায় কী হচ্ছে।’
আগামী সপ্তাহেই পূর্ণাঙ্গ তথ্য পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী তিনি।
ফ্যামিলিটেক্সের আদ্যোপান্ত
২০১৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় কোম্পানিটি। ১০ টাকা মূল্যমানের সাড়ে তিন কোটি শেয়ার ছেড়ে তারা সংগ্রহ করে ৩৫ কোটি টাকা।
তালিকাভুক্তির পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব পর্যালোচনা করে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। তবে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।
ওই বছর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় দেখানো হয় ৭ টাকা ২৬ পয়সা আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য হয় ২১ টাকা ৭২ পয়সা। এই লভ্যাংশ ঘোষণার পরদিন ১ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়ায় ৬২ টাকা, যদিও একপর্যায়ে দাম ৭৪ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছিল।
বিপুল পরিমাণ বোনাস শেয়ার দেয়ার পর থেকেই ফ্যামিলিটেক্সের আয় কমতে থাকে। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরে তারা সবশেষ মুনাফা করেছিল। তখন শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৮২ পয়সা। এর পরের চার বছর ধরে লোকসান দিচ্ছে তারা।
২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় সাড়ে ৪ পয়সার মতো। পরের বছর লোকসান হয় ৭ পয়সা, ২০১৯ সালে লোকসান হয় ৮ পয়সা। আর ২০২০ সালে লোকসান হয় ১৫ পয়সা।
২০১৩ সালে ১০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়ার পরের বছর তারা দেয় আরও ১০ শতাংশ বোনাস। এর পরের তিন বছর দেয় ৫ শতাংশ করে। কিন্তু গত দুই বছর কোনো লভ্যাংশই দেয়া হয়নি।
অথচ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে কোম্পানির আয় ক্রমেই বাড়ছিল। তালিকাভুক্তির আগে তিন বছরের আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিতে হয় বিএসইসিতে।
সেখানে দেখা গিয়েছিল ২০১১ ও ২০১২ সালে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছিল চার গুণের বেশি। আর তালিকাভুক্ত হওয়ার বছরে মুনাফা বাড়ে আরও ৭৬ শতাংশ।
গত বছর কোম্পানিটি শেয়ারপ্রতি ১৫ পয়সা করে লোকসান দেয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই প্রান্তিক অর্থাৎ ছয় মাসে লোকসান দিয়েছে ১৩ পয়সার কিছু বেশি।
এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকরা আরেকটি আইনবিরুদ্ধ কাজ করেন। পুঁজিবাজারে ঘোষণা না দিয়েই উদ্যোক্তা-পরিচালকরা তাদের হাতে থাকা সিংহভাগ শেয়ার বিক্রি করে দেন।
এই বিষয়টি তদন্তে ডিসেম্বরের শেষে একটি কমিটি করে বিএসইসি। তারা কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পেরেছে কি না, সেটি এখনও জানা যায়নি। আর এ জন্য পরিচালকদের তেমন কোনো শাস্তিও পেতে হয়নি।
কোম্পানিটির ৩৫ কোটি ৪০ লাখ শেয়ারের মধ্যে এখন মাত্র ৪.০২ শতাংশের মালিক কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা। অথচ বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ী অন্তত ৩০ শতাংশ শেয়ার ধরে রাখতে হবে মালিকপক্ষ।
এই কোম্পানির ৭৭.৫৭ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে। ক্রমাগত লোকসান দিতে থাকা কোম্পানির শেয়ার দরও একেবারে তলানিতে। ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের সবশেষ মূল্য ২ টাকা ৮০ পয়সা।
সিঅ্যান্ডএর শুরু থেকেই জালিয়াতি
কোম্পানিটি ২০১৫ সালে পুঁজিবাজার থেকে ৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ শেষে একই সালের ২১ জানুয়ারি দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জে শেয়ার লেনদেন শুরু করে।
২০০১ সালে মাত্র পাঁচ লাখ টাকা মূলধনের কোম্পানি ছিল সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইল। এরপর ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বরে ৯ লাখ ৯২ হাজার নতুন শেয়ার ইস্যু ও প্রাক-আইপিও প্লেসমেন্টের মাধ্যমে মূলধন বাড়ানো হয় ৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা।
মাত্র এক মাসের ব্যবধানে একই বছরের ৩০ ডিসেম্বর আবারও নতুন শেয়ার ছেড়ে ১২০ কোটি টাকার বেশি মূলধন বাড়ানো হয়। এরপর বিএসইসির কাছে কোম্পানিটির আইপিও আবেদন জমা দেয়া হয়।
অর্থাৎ আইপিও আবেদনের আগের দুই মাসে পাঁচ লাখ টাকার কোম্পানিটি হয়ে যায় ১৩০ কোটি টাকা মূলধনের কোম্পানি। আইপিওর ৪৫ কোটি টাকা যোগ হওয়ার পর সেটি হয়ে যায় ১৭৫ কোটি টাকা মূলধনের কোম্পানি।
তালিকাভুক্তির পর তিন বছরে যথাক্রমে ১১, ১২ ও ১০ শতাংশ বোনাস শেয়ার দিয়ে কোম্পানির মূলধন দাঁড়ায় ২৩৯ কোটি ৩১ লাখ টাকা।
সিঅ্যান্ডএর আরও অনিয়মের খবর সে সময় আগে গণমাধ্যমে। আইপিও আবেদনে মিথ্যা তথ্য দেয়ার সুনির্দিষ্ট তথ্য নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও হয়। তবে এম খায়রুল হোসেনের নেতৃত্বাধীন কমিশন এসব অভিযোগ বিবেচনায় আনেনি।
শেয়ার লেনদেন শুরুর ২৭ মাস পর অর্থাৎ ২০১৭ সালের ১ মে হঠাৎ উৎপাদন বন্ধ করে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপভিত্তিক তৈরি পোশাক ক্রেতাদের সংগঠন অ্যাকর্ড ও অ্যালায়েন্সের চাহিদা অনুযায়ী কোম্পানির কারখানা সংস্কার করার কথা বলে উৎপাদন বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয় কর্তৃপক্ষ। এরপর প্রায় চার বছরেও আর উৎপাদনে ফেরেনি কোম্পানিটি।
ঘটনার পরে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি কারখানা পরিদর্শনে যায়। তবে কর্তৃপক্ষ কারখানায় ঢুকতে পারেনি বলে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) লিখিত জানায়।
তালিকাভুক্তির প্রথম দিনেই সিঅ্যান্ডএ টেক্সটাইলের ১০ টাকার প্রতিটি শেয়ারের দাম এক লাফে ১২০ শতাংশ বেড়ে ২২ টাকায় উন্নীত হয়েছিল।
২০১৬ সালের ৩০ জুন কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে শেয়ার ছিল ৩০.২৯ শতাংশ। পরে এক-চতুর্থাংশ বিক্রি করেন দেন তারা। এখন পরিচালকদের শেয়ার সংখ্যা ২২.১৪ শতাংশ।
গত জুলাইয়ে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুখসানা মোর্শেদ, পরিচালক শারমিন আকতার ও প্রাতিষ্ঠানিক পরিচালক বাংলাদেশ শু ইন্ডাস্ট্রিজকে ১৪ কোটি টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। আইন লঙ্ঘন করে কোনো ঘোষণা ছাড়া তাদের হাতে থাকা বিপুল শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে ১২ কোটি টাকার বেশি মুনাফা করায় এ জরিমানা করা হয়। তবে সে টাকা পরিশোধ করেননি তারা।
আরও পড়ুন:শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে গত ০২ জুন, সোমবার আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জনতা ব্যাংক জাতীয়তাবাদী অফিসার কল্যাণ সমিতি।
জনতা ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মুহঃ ফজলুর রহমান প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ মজিবর রহমান, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ গোলাম মরতুজা, মোঃ ফয়েজ আলম ও মোঃ আশরাফুল আলম বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। সংগঠনের সভাপতি সাইফুল আবেদিন তালুকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভা সঞ্চালনায় ছিলেন কার্যকরী সভাপতি শাহ জাহান ও সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইকবাল হোসেন। অনুষ্ঠানে সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এস. এফ. এম. মুনির হোসেন, সহসভাপতি মজিবুর রাহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ ছানোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ও প্রধান কার্যালয়ের নির্বাহী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র কেনায় আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। আবার ক্রেডিট কার্ড নেওয়ার সময় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। ট্রেড লাইসেন্স নিতেও রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র লাগবে না। বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দাখিলের বাধ্যবাধকতায় কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্রের বাধ্যবাধকতায় এসব পরিবর্তন আনা হয়েছে। এত দিন ৪৬টি সেবায় রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখানোর বাধ্যবাধকতা ছিল।
এখন ১১ ধরনের সেবা নিতে রিটার্ন দাখিলের প্রমাণপত্র দেখাতে হবে না। শুধু কর শনাক্তকরণ নম্বরধারীদের (টিআইএন) সিস্টেম জেনারেটেড প্রত্যয়নপত্র দাখিল করলেই হবে। ওই ১১টি সেবা হলো সিটি করপোরেশন বা পৌরসভা এলাকায় নতুন ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণে; সমবায় সমিতির নিবন্ধন প্রাপ্তিতে; সাধারণ বিমার তালিকাভুক্ত সার্ভেয়ারের নতুন লাইসেন্স গ্রহণে; ক্রেডিট কার্ড গ্রহণ ও নবায়নে; চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট, চার্টার্ড সেক্রেটারি, আইনজীবী ও কর আইনজীবী, অ্যাকচুয়ারি, প্রকৌশলী, স্থপতি, সার্ভেয়ার হিসেবে কোনো স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার সদস্যপদ গ্রহণে; পাঁচ লাখ টাকার অধিক পোস্ট অফিস সঞ্চয়ী হিসাব খোলায়; এমপিওভুক্তির মাধ্যমে সরকারের কাছ থেকে দশম গ্রেড বা তদূর্ধ্ব পদমর্যাদার কর্মচারীর কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতাদের ক্ষেত্রে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস বা মোবাইল ব্যাংকিং বা ইলেকট্রনিক উপায়ে টাকা স্থানান্তরের মাধ্যমে এবং মোবাইল ফোনের হিসাব রিচার্জের মাধ্যমে কমিশন, ফি বা অন্য কোনো অর্থ প্রাপ্তিতে; স্ট্যাম্প, কোর্ট ও কার্টিজ পেপারের ভেন্ডর বা দলিল লেখক হিসেবে লাইসেন্স নিবন্ধন ও তালিকাভুক্তিতে; ত্রি-চক্র মোটরযানের নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়নে; ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে ই-কমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে লাইসেন্সিং অথরিটির কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণে।
আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
আজ সোমবার (২ জুন) বাংলাদেশ টেলিভিশনে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ এ কথা বলেন। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।
২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট ঘোষণার সময় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আগামী ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য মোট ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব করছি, যা জিডিপির ১২.৭ শতাংশ। এর মধ্যে পরিচালনসহ অন্যান্য খাতে মোট ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা এবং বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি।
তিনি বলেন, এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করতে চাই যে, ২০১৫ সালের পর এখন পর্যন্ত বেতন কাঠামো প্রণীত না হওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধার পরিমাণ বৃদ্ধির প্রস্তাব করছি।
ঘরে বসে যেসব ক্রেতারা কেনাকাটা করতে চান, তাদের জন্য অনলাইন প্ল্যাটফর্ম থেকে কেনাকাটা আগামী অর্থবছর থেকে খানিকটা ব্যয়বহুল হতে পারে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ই-প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে পণ্য বিক্রয় থেকে কমিশনের ওপর ভ্যাট বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পণ্যের দাম বেশি হতে পারে।
চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে এই ভ্যাটের হার ছিল ৫ শতাংশ।
জুলাই অভ্যুত্থানে বদলে যাওয়া বাংলাদেশে ভিন্ন বাস্তবতায় এবার সংসদের বাইরে ভিন্ন আঙ্গিকে পেশ হলো বাজেট। এবার সংসদ না থাকায় সংসদের আলোচনা বা বিতর্কের কোনো সুযোগ থাকছে না। উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন নিয়ে অর্থ উপদেষ্টা বাজেট উপস্থাপন করার পর ৩০ জুন তা রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ আকারে কার্যকর করা হবে।
তবে অতীতের রেওয়াজ মেনে বাজেট ঘোষণার পরদিন সংবাদ সম্মেলনে এসে বাজেট নিয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেবেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এছাড়া পুরো জুন মাসজুড়ে অংশীজনদের মতামত নেওয়ার কথাও তিনি বলেছেন।
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে সরকারের ধারাবাহিক সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করায় এবং সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পাওয়ায় মূল্যস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নেমে আসবে।
অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ আজ সোমবার ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় এ কথা বলেন। তার এ বক্তৃতা বাংলাদেশ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, গত বছরের আগস্ট মাসে আমাদের সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করে তখন আমাদের সামনে সবচাইতে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল নিয়ন্ত্রণহীন মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরে মানুষকে স্বস্তি দেয়া।
তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বিগত মাসগুলোতে আমরা ধারাবাহিকভাবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অবলম্বন করেছি। এর ফলে নীতি সুদের হার ১৫০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। মুদ্রানীতির আওতায় গৃহীত কার্যক্রমকে সহায়তা করতে সংকোচনমূলক রাজস্বনীতি অনুসরণ করা হয়েছে। অপ্রয়োজনীয় ব্যয় কমিয়ে আনায় সার্বিকভাবে সরকারি ব্যয় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এর ইতিবাচক প্রভাব ইতোমধ্যে দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেছে। পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ২০২৪ সালের ডিসেম্বর মাসের ১০.৮৯ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২৫ সালের এপ্রিল মাসে ৯ দশমিক ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। আশার কথা হলো এবারের রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার স্মরণকালের মধ্যে সবচাইতে স্থিতিশীল ছিল। এ ধারা অব্যাহত থাকলে এই জুন মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশের কোঠায় নেমে আসবে। মূল্যস্ফীতির সাথে এ লড়াইয়ের ফলে আমাদের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার অন্যান্য বছরের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে।’
মূল্যস্ফীতির নিম্নমুখী ধারা অব্যাহত রাখার ক্ষেত্রে বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল থাকা জরুরি উল্লেখ করে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ স্থিতিশীল থাকা অত্যাবশ্যক। প্রবাস আয়ের প্রবৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক হওয়ায় এবং রপ্তানি স্থিতিশীল থাকায় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এপ্রিল মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ২৭.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে, যা টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সে কারণে আমরা বিগত ১৪ মে তারিখে বাজারভিত্তিক মুদ্রা বিনিময় হার চালু করেছি।
১৯৪৪ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী আর্থিক অস্থিরতা সামাল দিতে গঠিত হয় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ। এর মূল লক্ষ্য ছিল বৈশ্বিক মুদ্রানীতি সমন্বয় সাধন, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে উৎসাহ দেওয়া এবং উন্নয়নশীল দেশগুলো অর্থনৈতিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা করা। বহু দেশ সংকটে পড়ে এই সংস্থার দ্বারস্থ হয়েছে- কেউ সাময়িকভাবে রক্ষা পেয়েছে, কেউ আবার দীর্ঘমেয়াদি ঋণনির্ভরতার ফাঁদে পড়ে গেছে।
আজ, যখন বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ভারসাম্য ক্রমশ পশ্চিমকেন্দ্রীকতা থেকে সরে পূর্ব ও দক্ষিণে ছড়িয়ে পড়ছে, তখন আইএমএফ তার প্রাসঙ্গিকতা ও নৈতিক অবস্থান নিয়ে এক নতুন প্রশ্নের সম্মুখীন।
ঋণ সহায়তা, নাকি ঋণের ফাঁদ?
আইএমএফ সাধারণত এমন শর্তে ঋণ দেয়, যার মধ্যে থাকে কঠোর ব্যয়সংযম, ভর্তুকি হ্রাস, মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বাজারমুখী সংস্কার; কিন্তু এই শর্তগুলো অনেক সময় জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলে। স্থানীয় শিল্প ধসে পড়ে, বৈষম্য বেড়ে যায় এবং সাধারণ মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে ওঠে। আর্জেন্টিনার অভিজ্ঞতা এর এক উল্লেখযোগ্য উদাহরণ। ২০১৮ সালে আইএমএফ ইতিহাসের বৃহত্তম ঋণ প্যাকেজ ৫৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুমোদন করে। ফল ছিল বিপরীত- মুদ্রাস্ফীতি ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়, দারিদ্র্য আরও বেড়ে যায় এবং দেশটি আবার মন্দার মুখে পড়ে।
এই অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে শুধু অর্থনৈতিক সমীকরণ দিয়ে কোনো দেশের সামাজিক বাস্তবতা নির্ধারণ চলে না।
আইএমএফের নীতিনির্ধারণ কাঠামো এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী শক্তির ভারসাম্যের প্রতিচ্ছবি। উন্নত দেশগুলো (বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন) সংগঠনের ভোটের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে দরিদ্র ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর অংশগ্রহণ প্রায় অনুপস্থিত। এই গণতান্ত্রিক ঘাটতি আজ দক্ষিণের রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে গভীর অসন্তোষ ও অবিশ্বাসের জন্ম দিচ্ছে।
বিকল্প প্রতিষ্ঠানের উত্থান
এই প্রেক্ষাপটে বিকল্প আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো যেমন- নিউ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (NDB), এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (AIIB) এবং ল্যাটিন আমেরিকান রিজার্ভ ফান্ড (FLAR) নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে। (NDB) এর সহায়তা তুলনামূলকভাবে শর্তমুক্ত এবং অংশগ্রহণমূলক। এখানে প্রতিটি দেশের ভোটের ও প্রতিনিধিত্বের সমান সুযোগ আছে, যা উন্নয়নশীল দেশগুলো আরও আগ্রহী করে তুলেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো এখন শুধু আর্থিক বিকল্প নয়- এরা এক নতুন উন্নয়ন দর্শনের বাহক। সেই দর্শনে উন্নয়ন নির্ধারিত হয় স্থানীয় বাস্তবতা ও প্রয়োজনকে কেন্দ্র করে, বাইরের চাপ বা রূঢ় শর্ত নয়।
বিশ্ব আজ বহুমেরু। অর্থনৈতিক শক্তি ছড়িয়ে পড়ছে নানা অঞ্চলে। এই বাস্তবতায় টিকে থাকতে হলে আইএমএফকে নিজস্ব কাঠামো ও দর্শনে রূপান্তর আনতে হবে। প্রয়োজন গভর্ন্যান্সের সংস্কার, নীতিনির্ধারণে সমান অংশগ্রহণ, এবং সর্বোপরি সহানুভূতিশীল ঋণ নীতিমালা।
আইএমএফ যদি সত্যিই বৈশ্বিক আর্থিক স্থিতিশীলতার অভিভাবক হতে চায়, তাহলে তাকে হতে হবে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়ভিত্তিক, এবং আঞ্চলিক বাস্তবতাসম্মত এটি শুধু আইএমএফের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রশ্ন নয়; এটি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার ও সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্ন।
জুলাই অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচার হওয়া অর্থ জব্দ কর তা বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করার পরমর্শ দিয়েছেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য। এ সময়ে এবারের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রাক-বাজেট ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘বিগত সরকারের আমলে দুর্নীতি, ব্যাংক জালিয়াতি, করখেলাপি ও পাচারকৃত অর্থ জব্দের মাধ্যমে বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করলে তা হতে পারে এবারের বাজেটের একটি অভিনব উৎস।’
‘গত সরকারের রেখে যাওয়া বিদেশি ঋণের চাপ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় ছিল। এই সরকারের এই সময়ে অন্যতম সাফল্য ৫০০ কোটি (৫ বিলিয়ন) ডলার পরিশোধ করে বিদেশি ঋণের চাপ কমিয়ে আনা,’ যোগ করেন তিনি।
দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘এই ঋণ বিলিয়ন ডলার করে বছর বছর বাড়ছিল। সামগ্রিকভাবে এই সরকারের সাফল্যের জায়গাটা হলো বহির্খাত, রেমিট্যান্স, রপ্তানি, দায়-দেনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা, মজুদ বাড়ানো ও টাকার মূল্যমান স্থিতিশীল রাখা।’
তবে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক হতে যাচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। তিনি বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়, পাচার হওয়া অর্থ ফেরত এবং করের আওতা বাড়ানোর মতো নতুন কোনো কিছু না থাকায় এবারের বাজেটে কোনো চমক থাকছে না।’
‘যে প্রকল্পগুলো সরকারের কাছে আছে, তা অতিমূল্যায়িত ও তার ৪০ শতাংশ ব্যয়ই ভুয়া। আগের যে প্রকল্পগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হতো, সেগুলো অব্যাহত আছে,’ বলেন তিনি।
সিপিডির এই সম্মানীয় ফেলো বলেন, ‘রাজস্ব ব্যয় সঠিকভাবে না করলে করদাতাদের উৎসাহ থাকে না। আমাদের কর কাঠামো বৈষম্যনির্ভর। আমাদের বৈদেশিক খাতে কিছুটা স্থিতিশীলতা অর্জিত হলেও ব্যক্তি খাতে স্থিতিশীলতা ও বিনিয়োগ এখনো আশানুরূপ অর্জিত হয়নি।’
ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি নামের একটি বিতর্ক সংগঠন এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
‘রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধি করা আসন্ন বাজেটের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত’ শীর্ষক ছায়া সংসদে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজকে পরাজিত করে ঢাকার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এন্ড টেকনোলজির বিতার্কিকরা বিজয়ী হন।
মন্তব্য