পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বছরে ১০০ শতাংশ অর্থাৎ একটি শেয়ারের বিপরীতে একটি শেয়ার বোনাস ঘোষণা করে হুলুস্থুল ফেলে দেয়া ফ্যামিলি টেক্সটাইল ডুবে গেলেও ব্যাপক মুনাফা করেছে মালিকপক্ষ।
উদ্যোক্তা পরিচালকরা ঘোষণা না দিয়ে বেআইনিভাবে তাদের হাতে থাকা প্রায় সব শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। আর ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের শেয়ারের দাম এখন পড়তে পড়তে তলানিতে এসে ঠেকেছে।
গত বছর শেয়ারের দাম একপর্যায়ে কমে এক টাকা ৬০ পয়সায় নেমে আসে। সম্প্রতি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠনের খবরে টানা কয়েক দিন দাম বেড়েছে। তাও তা তিন টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে।
অর্থাৎ মালিকপক্ষ যে টাকায় শেয়ার বিক্রি করেছে, এখন সব শেয়ার কিনতে পারবে তার ভগ্নাংশ দিয়ে।
চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (ইপিজেড) একটি প্রতিষ্ঠান ফ্যামিলিটেক্স লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ২০০৬ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসে।
২০১৩ সালে তালিকাভুক্তির পর ২০১২ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের আর্থিক হিসাব পর্যালোচনা করে কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। তবে ২০১৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য ১০০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করে কোম্পানির উদ্যোক্তা-পরিচালকরা।
ওই বছর কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় দেখানো হয় ৭ টাকা ২৬ পয়সা আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য হয় ২১ টাকা ৭২ পয়সা। এই লভ্যাংশ ঘোষণার পর দিন ১ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ার দর দাঁড়ায় ৬২ টাকা, যদিও একপর্যায়ে দাম ৭৪ টাকা ৮০ পয়সায় দাঁড়িয়েছিল।
বিপুল পরিমাণ বোনাস শেয়ার দেয়ার পর থেকেই ফ্যামিলিটেক্সের আয় কমতে থাকে। ২০১৫ থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত সমাপ্ত অর্থবছরে তারা সব শেষ মুনাফা করেছিল। তখন শেয়ারপ্রতি আয় হয় ৮২ পয়সা। এর পরের চার বছর ধরে লোকসান দিচ্ছে তারা।
২০১৭ সালে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয় সাড়ে ৪ পয়সার মতো। পরের বছর লোকসান হয় ৭ পয়সা, ২০১৯ সালে লোকসান হয় ৮ পয়সা। আর ২০২০ সালে লোকসান হয় ১৫ পয়সা।
চলতি অর্থছরের প্রথম ছয় মাসে লোকসান হয়েছে ১৩ পয়সা। মঙ্গলবার সবশেষ লেনদেনে ফ্যামিলিটেক্সের শেয়ারের দাম ছিল ২ টাকা ৯০ পয়সা।
২০১৩ সালে ১০০ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়ার পরের বছর তারা দেয় আরও ১০ শতাংশ বোনাস। এর পরের তিন বছর দেয় ৫ শতাংশ করে। কিন্তু গত দুই বছর কোনো লভ্যাংশই দেয়া হয়নি।
অথচ পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়ার আগে কোম্পানির আয় ক্রমেই বাড়ছিল। তালিকাভুক্তির আগে তিন বছরের আর্থিক প্রতিবেদন জমা দিতে হয় বিএসইসিতে।
সেখানে দেখা গিয়েছিল ২০১১ ও ২০১২ সালে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছিল চার গুণের বেশি। আর তালিকাভুক্ত হওয়ার বছরে মুনাফা বাড়ে আরও ৭৬ শতাংশ।
মাত্রাতিরিক্ত বোনাস শেয়ার দেয়ার পর শেয়ার কিনে বিনিয়োগকারীরা ঠকেছে মুন্না এগ্রো (আগে নাম ছিল মুন্নু স্টাফলার), স্টাইলক্রাফট, জেমিনি সি ফুড, ডাচবাংলা ব্যাংক, ডেল্টা লাইফের শেয়ার কিনে।
বহুজাতিক কোম্পানি ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো ও বার্জার পেইন্টসের শেয়ারে লোকসান না হলেও দুই বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে বিনিয়োগকারীদের।
আর ওষুধ খাতের ফার্মা এইড ২০১০ সালে একটি শেয়ারের বিপরীতে পাঁচটি বোনাস শেয়ার দেয়ার পর বিনিয়োগকারীরা মুনাফা পেয়েছে।
বেআইনিভাবে শেয়ার বেচলেও সাজা হয়নি
৩৫৪ কোটি ১০ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির ৪.০২ শতাংশ শেয়ারের মালিক এর উদ্যোক্তা পরিচালকরা। যদিও আইন অনুযায়ী ৩০ শতাংশ শেয়ার থাকতে হবে তাদের হাতে।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৮ দশমিক ৪১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ শেয়ার আছে।
সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি করতে হলে পুঁজিবাজারে ঘোষণা দিতে হয়। কিন্তু এই প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা-পরিচালকরা তাও করেননি।
বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি গত ডিসেম্বরের শেষে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে দেয়।
এখন পর্যন্ত যতটুকু জানা গেছে তাতে দেখা যায়, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেরাজ-ই-মোস্তফা ২০১৮ সালের অক্টোবরে তার নিজ নামের ১ কোটি ৬৯ লাখ ২৬ হাজার শেয়ার বিনা ঘোষণায় বিক্রি করেছেন, যা ওই দিনে ডিএসইতে কোম্পানিটির বিক্রি হওয়া শেয়ারের প্রায় ৯৩ শতাংশ।
প্রায় একই সময়ে প্রতিষ্ঠানটির আরেক পরিচালক রোকসানা মোরশেদ ৯২ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার সাড়ে ৭ কোটি টাকায় বিক্রি করেছেন।
তিনি ২০১৭ সালের বিভিন্ন সময়ে চার দফায় ৫ কোটি ১৮ লাখ শেয়ার প্রায় ৫৬ কোটি টাকায় বিক্রি করেন। তার সাবেক স্বামী ও ফ্যামিলিটেক্সের উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মোরশেদও একই সময়ে সোয়া ২৩ কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করে দেশের বাইরে চলে যান।
উদ্যোক্তা পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি তদন্তে কমিটি
গত ২৮ ডিসেম্বর ফ্যামিলিটেক্সের পরিচালকদের বিএসইসিকে না জানিয়ে শেয়ার বিক্রির তথ্য অনুসন্ধানে তদন্ত কমিটি গঠন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
কমিটির সদস্যরা ছিলেন উপপরিচালক রাকিবুর রহমান ও সহকারী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম। কমিটিকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছিল।
এ বিষয়ে বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্ত ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কোম্পানিটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ইনফোর্সমেন্ট বিভাগে পাঠানো হচ্ছে।’
পর্ষদ পুনর্গঠন করে কোম্পানি বাঁচানোর চেষ্টা
বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানিগুলোর পর্ষদ পুনর্গঠনের অংশ হিসাবে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসএসি ফ্যামিলিটেক্সে ছয়জন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেয়।
তারা হলেন কাজী আমিনুল ইসলাম, ড. সামির কুমার শীল, ড. গাজী মোহাম্মদ হাসান জামিল, ড. মো. জামিল শরিফ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফ এহসান ও ড. মো. ফরজ আলী। ছয়জনের মধ্যে বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কাজী আমিনুল ইসলাম।
কোম্পানির আর্থিক অবস্থা যাচাই-বাছাই করে কীভাবে কোম্পানিটি আবার চালু করা যায় সে বিষয়ে কমিশনকে জানাবেন তারা।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির কার্যালয়। ছবি: নিউজবাংলা
কী করবেন স্বতন্ত্র পরিচালক
কোম্পানির আর্থিক অবস্থা পর্যালোচনা করাসহ কীভাবে কোম্পানিটিকে আগের অবস্থায় বা উৎপাদনে ফিরিয়ে আনা যায় তা নিয়ে কাজ করবেন স্বতন্ত্র পরিচালকরা। এ ছাড়া কোম্পানির কোনো অসঙ্গতি থাকলে সেটি নিয়েও কাজ করবে পুনর্গঠিত বোর্ড।
এ বিষয়ে বিএসইসি কমিশনার শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানিগুলোকে চালু করতে। দীর্ঘদিন এসব কোম্পানি বন্ধ থাকার কারণ বিদ্যমান বোর্ডে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন না করা। এ জন্য আমরা কোম্পানিগুলোতে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দিচ্ছি।’
কী করবে স্বতন্ত্র পরিচালকরা প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘কোম্পানিটিকে চালু করার প্রাথমিক কাজটি তারা করবেন। পরবর্তীতে কেউ যদি কোম্পানিগুলো নিয়ে চালু করতে চায় তাহলে সেভাবে উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিনিয়োগকারী ও বিশ্লেষকের বক্তব্য
ফ্যামিলিটেক্স সম্পর্কে পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী আফজাল হোসেন বলেন, তালিকাভুক্ত হওয়ার পর অনেক কোম্পানিগুলো নিজেদের আকষর্ণীয় করার জন্য প্রথমেই বোনাস শেয়ার দেয়ার পথ বেছে নেয়। শুধু ফ্যামিলিটেক্স নয় এমন অনেক কোম্পানি আছে যারা বড় অংকের বোনাসের মাধ্যমে মূলত নিজেরাই লাভবান হয়েছে।
‘এই কোম্পানির বিনিয়োগাকরীরাদের কি অবস্থা সেটি যে খুব ভালো সেটা বলা যাবে না। কারণ যে কোম্পানির শেয়ারের উদ্যোক্তা পরিচালকদেরই কোনো সন্ধান নেই সেই কোম্পানির বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়া যাবে সেটা কল্পনার বিষয়।’
পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বোনাস শেয়ার দিয়ে কখনও কোম্পানির আর্থিক অবস্থা বোঝা যায় না। কারণ কোম্পানি আর্থিক প্রতিবেদন অস্পষ্টভাবে তৈরি করে দেখাতে পারে তাদের কাছে অনেক টাকা আছে। সেটি দিয়ে তারা কোম্পানি সম্প্রসারণ করবে। বাংলাদেশ এটাই হচ্ছে।
‘পরে সেই টাকার বিপরীতে বোনাস শেয়ার ইস্যু করে সে টাকা নিজেদের কাছে রেখে দিচ্ছে ঠিকই কিন্ত কোম্পানির কোনো উন্নতি করে না। আর যদি উন্নতি করেও থাকে তাহলে সেটা প্রতিফলন পাওয়ার কথা। কিন্ত সেটি না হয়ে এমনও হচ্ছে বড় বোনাস দিয়ে পরবর্তীতে কোম্পানি বন্ধ করে দিতে হবে।’
পরের পর্বে থাকছে দুই বহুজাতিক কোম্পানি বিএটিবিসি ও বার্জার পেইন্টসের কথা
আরও পড়ুন:১৮ জুন ২০২৫ তারিখে প্রকাশিত টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিংস ২০২৫-এর ফলাফলে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) বাংলাদেশের মধ্যে শীর্ষস্থান অধিকার করেছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের শীর্ষ ২০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় জায়গা করে নিয়ে একটি গৌরবময় অবস্থান নিশ্চিত করেছে। বিশ্বব্যাপী ২,৩১৮টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ডিআইইউ ১০১ থেকে ২০০-এর মধ্যে অবস্থান করেছে। বাংলাদেশ থেকে তালিকাভুক্ত ১৯টি পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ডিআইইউ-ই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যা এই মর্যাদাপূর্ণ অবস্থানে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে।
টাইমস হায়ার এডুকেশন ইমপ্যাক্ট র্যাঙ্কিং মূলত জাতিসংঘ ঘোষিত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)-এর ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবদান মূল্যায়ন করে থাকে। ২০২৫ সালের র্যাঙ্কিংয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অনন্য সাফল্য অর্জন করেছে। বিশেষভাবে, বিশ্ববিদ্যালয়টি মানসম্মত শিক্ষা (এসডিজি-৪) এবং লক্ষ্যের জন্য অংশীদারিত্ব (এসডিজি-১৭) এই দুই ক্যাটেগরিতে বিশ্বব্যাপী ১৯তম স্থান অর্জন করেছে। এছাড়া শালীন কাজ ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি (এসডিজি-৮) ক্ষেত্রে ৩৩তম, শূন্য দারিদ্র্য (এসডিজি-১) ক্ষেত্রে ৩৬তম, জিরো হাঙ্গার (এসডিজি-২) ক্ষেত্রে ৫৩তম এবং বৈষম্য হ্রাস (এসডিজি-১০) ক্ষেত্রে ৬০তম স্থান অর্জন করেছে।
এই কৃতিত্ব ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির টেকসইতা, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন ও বৈশ্বিক প্রভাব সৃষ্টির প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকারের পরিচায়ক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই সাফল্যে তাদের সম্মানিত অনুষদ সদস্য, নিবেদিতপ্রাণ কর্মী, প্রতিভাবান শিক্ষার্থী, গর্বিত প্রাক্তন শিক্ষার্থী এবং মূল্যবান অংশীদারদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানিয়েছেন, যারা এই যাত্রার অংশ হয়ে ডিআইইউ-কে বিশ্বমঞ্চে তুলে ধরেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অর্জন বিভিন্ন গবেষণা প্রকল্প, সারাবছর আয়োজিত একাডেমিক ও সামাজিক কার্যক্রম এবং জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রচেষ্টারই স্বীকৃতি। এই সাফল্য একাধারে সহযোগিতামূলক দৃষ্টিভঙ্গির উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠা শিক্ষা ব্যবস্থার এবং তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর জ্ঞানচর্চার ধারাবাহিক উন্নয়নের প্রতিফলন।
কুষ্টিয়া বিজিবির পৃথক যৌথ টাস্কফোর্স এর অভিযানে ২৮৮০ কেজি বেহুন্দী জাল, ৪৭০ কেজি কারেন্ট জাল ও ১৫টি তেলের ড্রাম জব্দ এবং ৮টি নৌকার মালিককে ৩২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৭ জুন) রাত সাড়ে ১১ টায় বিষয়টি নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়া বিজিবি-৪৭ ব্যাটালিয়ন।
বিজিবি জানায়, ১৬ জুন সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জেলার দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী মানিকের চর এলাকায় একটি যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়। এ সময় দৌলতপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট, মৎস্য অফিসার, এবং বিজিবির ভারপ্রাপ্ত কোয়ার্টার মাস্টার সহকারী পরিচালক মোঃ জাকিরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে বিজিবি ও আনসার সদস্যদের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়।
পরিচালিত অভিযানে এ বিপুল পরিমাণ অবৈধ ২৮৮০ কেজি বেহুন্দী জাল, ১৫টি তেলের ড্রাম জব্দ সহ মৎস্য রক্ষা ও সংরক্ষণ আইন ১৯৫০-এর ৪(ক) ধারা লঙ্ঘনের দায়ে ৬টি নৌকার মালিককে ৫ হাজার টাকা করে মোট ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দকৃত জাল ও তেলের ড্রামের আনুমানিক মূল্য ৭২,৭৫,০০০ হাজার টাকা।
জব্দকৃত জাল ও তলের ড্রাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হাই সিদ্দিকীর নেতৃত্বে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
এছাড়াও মঙ্গলবার (১৭ জুন) দুপুরে জেলার মিরপুর উপজেলার গরুর হাট সংলগ্ন এলাকায় আরেকটি যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান পরিচালিত হয়।
এ সময় ৪৭০ কেজি ভারতীয় অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। জব্দকৃত অবৈধ কারেন্ট জাল মিরপুর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয় এবং একই ধারায় অভিযুক্ত ২জনকে ১ হাজার টাকা করে ২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জব্দকৃত কারেন্ট জালের আনুমানিক মূল্য ৭,০৫,০০০ টাকা।
বিজিবি আরো জানান, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, মাদক ও চোরাচালানসহ সকল অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড। এই অভিযান মাদক ও চোরাচালানবিরোধী জিরো টলারেন্স নীতির একটি সফল বাস্তবায়ন। ভবিষ্যতেও এই ধরনের অপরাধ দমনে কঠোর এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত রাখবে বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়ন।
কক্সবাজারের আলোচিত সাবেক এমপি জাফর আলম কে আদালতে শ্যোন অ্যারেস্ট দেখাতে চকরিয়া উপজেলা জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হয়েছে আজ।
জাফর আলম সর্বশেষ কক্সবাজার-১ আসনের এমপি এবং চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ছিলেন।
বুধবার সকাল ৯টার পর পরই জেলা পুলিশের একটু প্রিজন ভ্যানে করে যৌথ বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় তাকে আদালতে আনা হয়।
তাকে আজ আদালতে তোলার খবরে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত চত্বর ও আশপাশের অন্তত অর্ধ কিলোমিটার এলাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয় যৌথবাহিনীর পক্ষ থেকে।
আদালত সূত্র জানায়- বিগত ৫ আগষ্ট পরবর্তী চকরিয়া ও পেকুয়া থানায় দায়ের করা একাধিক হত্যাসহ বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাকে শ্যােন অ্যারেস্ট দেখানো হয় পুলিশের পক্ষ থেকে। সেসব মামলার শুনানি করা হয় আজ। এ সময় আদালতের বিচারক মো. আনোয়ারুল কবির শুনানী শেষে ৭ মামলায় সর্বমোট ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তন্মধ্যে পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এসব মামলায় সর্বোচ্চ চারদিন ও সর্বনিম্ন ২ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
মামলাগুলোর মধ্যে চকরিয়া থানার ৫টি ও পেকুয়া থানার ২টি মামলা রয়েছে।
আরও জানান- আদালতের শুনানী চলাকালে জাফর আলমের পক্ষে শুনানী করেন অসংখ্য আইনজীবী। এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে তথা জাফর আলমের বিপক্ষে শুনানীতে অংশ নেন আদালতের এপিপি অ্যাডভোকেট মো. মঈন উদ্দিন। এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন এপিপি মঈন উদ্দিন-ই।
আদালতের শুনানী শেষে চকরিয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা জাফর আলমের মুক্তির দাবিতে সাড়ে দশটার দিকে একটি ঝটিকা মিছিল বের করেন।
এর আধাঘন্টা পর উপজেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জাফর আলমের উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে পাল্টা মিছিল করে চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল মাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে গিয়ে শেষ করেন।
‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫' এর অধীনে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর' প্রতিষ্ঠিত হবে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ মঙ্গলবার দিবাগত রাতে এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনসহ গণ-অভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে এ অধ্যাদেশ। অধ্যাদেশটি জনসাধারণের জ্ঞাতার্থে মঙ্গলবার দিবাগত রাতে প্রকাশ করা হয়।
এই অধ্যাদেশের দ্বিতীয় অধ্যায়ে অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠা ও এর কার্যাবলীসহ নানাবিধ বিষয় অর্ন্তভূক্ত রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, এই অধ্যাদেশের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর' প্রতিষ্ঠিত হবে।
অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয় থাকবে ঢাকায়। সরকার প্রয়োজনে ঢাকার বাইরে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অধিদপ্তরের শাখা কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
অধিদপ্তরের কার্যাবলী হচ্ছে- সরকারি গেজেটে প্রকাশিত জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা ও ডাটাবেজ সংরক্ষণ, প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন এবং হালনাগাদ আকারে সরকারি গেজেটে প্রকাশের জন্য সুপারিশ।
এছাড়া রয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত এককালীন ও মাসিক আর্থিক সহায়তা প্রদান এবং বিধি দ্বারা নির্ধারিত পদ্ধতিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবারের সদস্য ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা গ্রহণ।
আরো রয়েছে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহিদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসন করার লক্ষ্যে সরকারের পূর্বানুমোদনক্রমে পরিকল্পনা গ্রহণ, বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন।
কার্যাবলীতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনের লক্ষ্যে দেশি-বিদেশী সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ ও সমন্বয়সাধনের কথা রয়েছে।
অধিদপ্তরের একজন মহাপরিচালক থাকবেন এবং তিনি অধিদপ্তরের প্রধান নির্বাহী হবেন।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, এটি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসনসহ গণ-অভ্যুত্থানের মর্ম ও আদর্শকে রাষ্ট্রীয় ও জাতীয় জীবনে সুপ্রতিষ্ঠিত করা এবং ইতিহাস সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রণীত হয়েছে।
অধ্যাদেশ আরো বলা হয়েছে, তদানীন্তন পাকিস্তান সরকারের বর্ণবাদী, নিপীড়নমূলক ও বৈষম্যমূলক নীতি এবং বাংলাদেশের জনগণকে নির্বিচারে হত্যার কারণে মুক্তিযুদ্ধ অনিবার্য হয়ে ওঠে। ১৯৭১ সালে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বাংলাদেশের জনগণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জনগণের অব্যাহত সংগ্রাম ও ত্যাগ তিতিক্ষা সত্ত্বেও স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরও সুবিচার, মর্যাদাপূর্ণ গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠনের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জিত হয়নি। জানুয়ারি ২০০৯ সাল থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে দলীয়করণ, দুর্নীতি ও পরিবারতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ফলে রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠান অকার্যকর হয়। অন্যায়ভাবে শক্তি প্রয়োগ করে বিরোধীমত দমন, গুম ও বিচার বহির্ভূত হত্যা সংঘটিত হয়। দেশের অর্থ পাচার ও লুটপাট নীতির ফলে অর্থনৈতিক বৈষম্য সৃষ্টি, নারী ও সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী কাঠামোগত সহিংসতার শিকার হয়। জনগণের বাকস্বাধীনতা ও ভোটাধিকার হরণ করে জাতীয় স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করার সৃষ্ট প্রেক্ষাপট জনগণকে শঙ্কিত করে।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই ২০২৪ এ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে দল-মত-ধর্ম-বর্ণ-নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আপামর জনতার দীর্ঘ পনেরো বৎসরের ফ্যাসিবাদ ও বিচারহীনতার ফলে পুঞ্জীভূত ক্ষোভে এক গণআন্দোলন হতে ক্রমান্বয়ে গণঅভ্যুত্থানে রূপ লাভ করে ৫ আগস্ট, ২০২৪ এ ফ্যাসিবাদী শাসককে জনগণের কাছে পরাজিত হয়ে দেশ ছেড়ে পলায়নে বাধ্য করে। এ গণঅভ্যুত্থানে ব্যাপক সংখ্যক নারী ও পুরুষ অংশগ্রহণ করেছেন এবং দেশব্যাপী সহস্রাধিক নিরস্ত্র দেশপ্রেমিক ছাত্রজনতা শহীদ হয়েছেন।
এছাড়া অসংখ্য মানুষ আহত, কেউ কেউ গুরুতর আহত হয়েছেন। অধিকাংশই আঘাত ও নৃশংসতার বিভীষিকায় পর্যুদস্ত এবং তাদের এই আত্মত্যাগকে যথার্থ সম্মান প্রদর্শন অপরিহার্য।
অধ্যাদেশে বলা হয়েছে, জুলাই আন্দোলনে ত্যাগের দৃষ্টান্ত জাতির গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও রাষ্ট্র পুনর্গঠনের একটি গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায় হিসাবে সমুন্নত রাখা কর্তব্য।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের যথোপযুক্ত স্বীকৃতি, সম্মান, কল্যাণ ও পুনর্বাসন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার ও আহত জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ সাধন ও পুনর্বাসনের উদ্দেশ্যে বিধান প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়। এই অধ্যাদেশ 'জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ পরিবার এবং জুলাই যোদ্ধাদের কল্যাণ ও পুনর্বাসন অধ্যাদেশ, ২০২৫' নামে অভিহিত হবে। এটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও গেজেটে বলা হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) সদস্যদের জনবিচ্ছিন্ন না হয়ে বরং জনসংযোগ ও নিরাপত্তার মেলবন্ধনের মাধ্যমে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি আজ বুধবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের ৩৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত 'প্রধান উপদেষ্টার দরবার' অনুষ্ঠানের বক্তব্যে এ কথা বলেন।
এছাড়া প্রধান উপদেষ্টা স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের সদস্যদের সকল রাজনৈতিক মতাদর্শের ঊর্ধ্বে উঠে নিরাপত্তার জন্য কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে এসএসএফ মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুস সামাদ চৌধুরী বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, তিন বাহিনী প্রধান, প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব মো. সিরাজ উদ্দিন মিয়া, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার মাসুদপুর সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ২০ জনকে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বুধবার (১৮ জুন) ভোর পৌনে ৫টার দিকে ভারত থেকে তাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঠেলে দেওয়া হয়। এরপর মাসুদপুর বিজিবি ক্যাম্পের একটি টহল দল তাদের আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ৫৩ বিজিবি ব্যাটালিনের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফাহাদ মাহমুদ।
তিনি জানান, আটকদের মধ্যে ৩ জন পুরুষ, ৭ জন মহিলা ও ১০টি শিশু রয়েছে। তারা কুড়িগ্রামের বাসিন্দা বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে।
এ ছাড়া আটকদের নাম ও ঠিকানা যাচাইয়ের কাজ শেষে তাদের শিবগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হবে বলে জানান তিনি।
কর্নেল ফাহাদ বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের কাছে জোর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।’
এর আগে, গত ৩ জুন জেলার ভোলাহাট উপজেলার চাঁনশিকারি সীমান্ত দিয়ে ৮ জনকে ও ২৭ মে গোমস্তাপুর উপজেলার বিভীষণ সীমান্ত দিয়ে ১৭জনকে পুশইন করে বিএসএফ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার গোসাইপুর-জালশুকা সড়কের নির্মাণ কাজ ১১ মাসেও শেষ হয়নি। অথচ ঠিকাদারের শর্ত অনুসারে এ কাজ নয় মাসে শেষ করার কথা। অভিযোগ রয়েছে- ঠিকাদার লোকমান হোসেন এ সড়কের বক্সকাটিং করে ১১ মাস ধরে ফেলে রেখেছেন। তার স্বেচ্ছাচারিতা ও গাফিলতে এলাকাবাসী চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। উল্লেখ্য তিতাস নদীর উত্তর পাড়ে বড়াইল ইউনিয়নের একটি গ্রাম গোসাইপুর। গ্রামের পশ্চিম অংশে বাজার। বাজারের পূর্ব দিকে দিয়ে চলে গেছে গোসাইপুর-জালশুকা সড়কটি। এ বাজারের যাতায়াতের জন্য রাধানগর, চরগোসাইপুর, জালশুকা, বড়াইল, মেরাতুলী গ্রামের মানুষেরাও সড়কটি ব্যবহার করে।
গোসাইপুর বাজারের মুদি মালের ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বলেন-"আমার গ্রামের বাড়ি জালশুকা । প্রতিদিন এ সড়কে বাজারে আসি। সড়কটি বর্ষাকালে বৃষ্টি হলেই পানি ও কাঁদা মিলে চলাচলে অযোগ্য হয়ে যায়"। বড়াইল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল বাসার বলেন-"পূর্ব অঞ্চলের জনগণের জন্য এই রাস্তাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গোসাইপুর বাজার ও রাধানগর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক একাডেমি স্কুল অ্যান্ড কলেজে আসা-যাওয়ার একমাত্র সড়ক এটি। সড়কটির কাজ শেষ না হওয়ার কারণে জনগণের যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে"। গোসাইপুর গ্রামের সাবেক মেম্বার ডা. হুমায়ুন কবীর বলেন-"সড়কটি দীর্ঘদিন ধরেই অবহেলিত চলাচলে ভোগান্তির শেষ নেই। নির্মাণ কাজ করতে এসে ঠিকাদার আর কাজ করছেন না। এখন বর্ষার বৃষ্টির কারনে মোড়ে মোড়ে রাস্তা ভেঙে মাটি পড়ে যাচ্ছে। যাত্রীরা পা পিছলে পড়ে যাচ্ছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারে না শিক্ষার্থীরাও"। কাজ বন্ধ থাকার বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান জাকির হোসেন বলেন- "সড়কটি জনগুরুত্বপূর্ণ হওয়ায় কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে আমি কয়েকবার তাগিদ দিয়েছি"। এ বিষয়ে ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব হোসেন বলেন-"এ বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে"। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজীব চৌধুরী বলেন-"এই সড়কের কাজ বন্ধ থাকার বিষয়টি আমার জানা ছিল না। আমি দ্রুত সময়ে কাজ শুরু করার জন্য ঠিকাদারের সাথে যোগাযোগ করব"।
মন্তব্য