পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস ধীরে ধীরে তুলে দেয়া হবে- এটাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির সিদ্ধান্ত। তবে সেটি একবারে নয়, ধাপে ধাপে করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএসইসির চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
শিগগিরই আরও ৩০ থেকে ৩২টি কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয় হবে জানালেও সেগুলো কোনগুলো, তা জানাতে চাননি তিনি। তবে এই কোম্পানিগুলো ফ্লোর প্রাইসেও সেভাবে লেনদেন হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
নিউজবাংলাকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘এখন হয়তো ৩০ থেকে ৩২টা আছে। আমরা এখন এটি নিয়ে খুবই সিরিয়াসলি চিন্তা করছি। খুব শিগগির আমরা বাকি যে ৩০-৩২টা কোম্পানি আছে, সেগুলোও উঠিয়ে দেব। তাহলে বছর ধরে এসব কোম্পানিতে বিনিয়োগকারীদের যে টাকা আটকে আছে, তারা হয়তো লেনদেনে আসবে।’
এভাবে পর্যায়ক্রমে সবগুলোর ফ্লোর প্রাইসই তুলে দেয়া হবে বলেও জানান শিবলী রুবাইয়াত।
ধাপে ধাপে করার কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘যদি একসঙ্গে করতে যাই, তাহলে বাজারের সূচক ও লেনদেনে প্রভাব পড়বে। এ জন্য আমরা একটা একটা করে করব। তারপর একটা সময় পর আমরা পুরোটাই উঠিয়ে দেব।’
গত বছর করোনার সংক্রমণ ধরা পড়ার পর শেয়ার দরে ধস ঠেকাতে এই ফ্লোর প্রাইস বা সর্বনিম্ন মূল্য বেঁধে দেয়া হয়। এর মধ্যে ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া হয় গত ৭ এপ্রিল।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মধ্যেও এবার ঝুঁকি নিয়েও ফ্লোর প্রাইস তোলার কারণ, সর্বনিম্ন দামেও এই শেয়ারগুলোর লেনদেন হচ্ছিল না বললেই চলে।
প্রথম দিনই আতঙ্কে এসব কোম্পানি ব্যাপকভাবে দর হারালেও পরে বিএসইসি কিছুটা স্বস্তি দেয় বিনিয়োগকারীদের। তারা জানান, এসব কোম্পানির শেয়ার দিনে ১০ শতাংশ দর বাড়তে পারবে, কিন্তু কমতে পারবে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ।
শুরুতে বিনিয়োগকারীরা ক্ষুব্ধ হলেও প্রায় দুই মাস পর ফ্লোর তোলার মূল্যায়ন করলে বেশ কিছু ইতিবাচক প্রভাবও লক্ষ করা যায়। যেসব কোম্পানির শেয়ার ফ্লোর প্রাইসে লেনদেন হতো না বললেই চলে, সেগুলো এখন প্রতিদিনই বিপুল পরিমাণ লেনদেন হচ্ছে। এতে বিনিয়োগকারীদের আটকে থাকা টাকা সচল হচ্ছে। এক কোম্পানির শেয়ার বিক্রি করে তারা অন্য কোম্পানির শেয়ার কিনতে পারছেন।
আবার আগের ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়ে দাম বেড়েছে প্রায় অর্ধেক কোম্পানির। আরও বহু কোম্পানির শেয়ার দর ফ্লোরের আশপাশেই আছে। যেকোনো একটি ভালো দিনেই সেগুলো আগের ফ্লোর প্রাইস ছাড়িয়ে যেতে পারে।
এই অভিজ্ঞতার পর পুঁজিবাজারকেন্দ্রিক ফেসবুক পেজগুলোতেও বিনিয়োগকারীরা ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়ার পক্ষে কথা বলছেন কেউ কেউ। আবার এর বিরোধিতাও করছেন অনেকে।
বিএসইসি চেয়ারম্যান জানান, তাদের কাছেও এমন দাবি জানানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাছে বিনিয়োগকারী এসোসিয়েশনেরও চিঠি এসেছে। তারাও অনুরোধ করেছেন ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেয়ার জন্য।’
সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমার বিধান চালু থাকবে
ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া ৬৬ কোম্পানির দর দিনে সর্বোচ্চ ২ শতাংশ কমতে পারবে বলে যে সুবিধা দেয়া হয়েছে, সেটি আরও কিছু দিন চালু থাকবে বলেও জানান বিএসইসির চেয়ারম্যান। নতুন যেগুলোর ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করা হবে, সেগুলোর ক্ষেত্রে প্রথম দিন থেকেই এই বিধানই চালু থাকবে।
বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, ‘এ সুবিধা কিছুদিন থাকুক। এগুলো যদি উঠিয়ে দেই…এক দিনে যদি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, তাহলে সূচক ও মার্কেটে ওপর এর প্রভাব পড়বে।’
কেন ফ্লোর প্রত্যাহার
বিএসইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পুঁজিবাজারবিষয়ক বৈশ্বিক জোট ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব সিকিউরিটিজ কমিশন- আইওএসসিওর সদস্য বাংলাদেশ। সেই জোট এই সিদ্ধান্তকে বাজারে হস্তক্ষেপ হিসেবে দেখছে। আর এ কারণে বাংলাদেশের পুঁজিবাজারে র্যাংকিং কমে যাবে।
যেসব কোম্পানির লেনদেন নেই বললেই চলে
গত ২১ ফেব্রুয়ারির পর ফ্লোর প্রাইসে এক দিনে সর্বোচ্চ ৩২১টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে স্ট্যান্ডার্ড সিরামিকের। অর্থাৎ বেঁধে দেয়া সর্বনিম্ন দামকে যৌক্তিক মনে করছেন না বিনিয়োগকারীরা।
এই খাতেরই মুন্নু সিরামিকেরও একই অবস্থা। গত ২২ মার্চের পর এক দিনে সর্বোচ্চ ২ হাজার ১৯৩টি শেয়ার হাতবদল হয় গত ৩১ মে। কোনো কোনো দিন একটিও শেয়ার লেনদেন হয়নি।
একইভাবে প্রকৌশল খাতের এটলাস, বিডি অটোকার, ইস্টার্ন কেবল, কে অ্যান্ড কিউ, মুন্নু অ্যাগ্রো, ন্যাশনাল টিউব, রেনউইক যগেশ্বর, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের জেমিনি সি ফুড, ন্যাশনাল টি কোম্পানি, পাট খাতের নর্দার্ন জুট, বিবিধ খাতের এসকেট্রিমস, ওষুধ ও রসায়ন খাতের কোহিনূর কেমিক্যালসসহ আরও কিছু কোম্পানি আছে, যেগুলোর লেনদেন হয় না বললেই চলে।
আরও পড়ুন:ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি ঠেকাতে নতুন টাকা ছাপিয়ে রাষ্ট্রকে ঋণ না দিতে বাংলাদেশ ব্যাংককে পরামর্শ দিয়েছেন অর্থনীতিবিদ ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ।
ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ডলারের দামের ওঠানামা নিয়ন্ত্রণের উপায় খুঁজতে গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার বৃহস্পতিবার ড. ওয়াহিদউদ্দিনের সঙ্গে আলোচনাকালে তিনি এই পরামর্শ দেন। সূত্র: ইউএনবি
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. মেজবাউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওয়াহিদউদ্দিন বর্তমান মুদ্রানীতির যথাযথ বাস্তবায়ন এবং নতুন টাকা ছাপিয়ে সরকারকে ঋণ না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।’
মুখপাত্র জানান, দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে অন্যান্য সিনিয়র এবং অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের সঙ্গেও কথা বলবেন গভর্নর।
তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনৈতিক সংকট নিরসনে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। তাই আমরা অর্থনীতির বিভিন্ন খাতের বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাদের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী মুদ্রানীতি প্রণয়ন করা হবে।’
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যেও বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের তুলনায় মূল্যস্ফীতি ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
মুখপাত্র বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক আমদানি নিয়ন্ত্রণ, রপ্তানি বৃদ্ধি এবং রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। উন্নত দেশগুলোতে মূল্যস্ফীতি ও সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে।’
নভোএয়ার অভ্যন্তরীণ রুটে সময়ানুযায়ী ফ্লাইট পরিচালনায় সেরা এয়ারলাইন হিসেবে ২০২৩ সালের ‘বেস্ট অন টাইম পারফরমেন্স এয়ারলাইন’ ক্যাটাগরিতে গোল্ড পুরস্কার পেয়েছে। এছাড়া বেস্ট ডমেস্টিক এয়ারলাইন, মোস্ট কাস্টমার ফ্রেন্ডলি এয়ালাইন (ডমেস্টিক), বেস্ট ইন-ফ্লাইট সার্ভিস (ডমেস্টিক)- এই তিন ক্যাটাগরির প্রত্যেকটিতে সিলভার পুরস্কার লাভ করেছে নভোএয়ার।
বুধবার রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে আয়োজিত ‘শেয়ারট্রিপ-মনিটর এয়ারলাইন অফ দি ইয়ার-২০২৩’ অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর হাত থেকে পুরস্কারগুলো গ্রহণ করেন নভোএয়ারের হেড অফ মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস মেজবাউল ইসলাম।
ভ্রমণ ও পর্যটন-বিষয়ক পাক্ষিক দি বাংলাদেশ মনিটর পরিচালিত আকাশপথে নিয়মিত ভ্রমণকারীদের অনলাইনে মতামত জরিপের ভিত্তিতে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
পুরস্কার গ্রহণের পর মেজবাউল ইসলাম বলেন, ‘এই স্বীকৃতি আগামীর পথচলায় আমাদের উৎসাহ জোগাবে। নভোএয়ার শুরু থেকেই সম্মানিত যাত্রীদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার জন্য বদ্ধপরিকর। নভোএয়ার সময়ানুযায়ী ফ্লাইট পরিচালনায় ও নিরাপদ ভ্রমণে যাত্রীদের বিশ্বস্ততা অর্জন করেছে। পূর্ণ যাত্রী সন্তুষ্টি এবং উন্নততর সেবার প্রতিশ্রুতি আমাদের পরিচালনার সকল স্তরে অব্যাহত থাকবে।’
বর্তমানে প্রতিদিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সৈয়দপুর, যশোর, সিলেট, রাজশাহী ও কলকাতায় ফ্লাইট পরিচালনা করছে নভোএয়ার।
দেশের ডিজিটাল পেমেন্ট বৃদ্ধিতে অনবদ্য ভূমিকা রাখার জন্য ভিসা এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২০২৩ অর্জন করেছে সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল এমএফএস নগদ। ভিসার সম্মানজনক এই অ্যাওয়ার্ড নগদ-এর পাশাপাশি দেশের মূলধারার কয়েকটি ব্যাংকও অর্জন করেছে।
সম্প্রতি ঢাকার একটি পাঁচতারকা হোটেলে ‘টুওয়ার্ডস আ ক্যাশলেস, স্মার্ট বাংলাদেশ’শিরোনামে এই পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ভিসা বাংলাদেশ।
এবারের ‘ভিসা লিডারশিপ কনক্লেভ-২০২৩-’এ ক্রেডিট কার্ড বিল পেমেন্ট এবং ডেবিট কার্ডে টাকা ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে ‘এক্সিলেন্স ইন সাইবারসোর্স-পে আউট,’ ক্যাটাগরিতে নগদ পুরস্কার অর্জন করেছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী জনাব এম এ মান্নান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট বিভাগের পরিচালক মো. শরাফাত উল্লাহ খান।
এ ছাড়া ভিসা বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের কান্ট্রি ম্যানেজার সৌম্য বসু ও ভিসার অন্যান্য কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন পর্যায়ের আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে নগদ-এর পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ আমিনুল হক, চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সিহাব উদ্দীন চৌধুরী ও হেড অব প্রোডাক্ট ডেভেলপমেন্ট গোলাম জামিল আহমেদ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
পুরস্কার-প্রাপ্তির বিষয়ে নগদ-এর চিফ কমার্শিয়াল অফিসার সিহাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘আমাদের পার্টনার ভিসার কাছ থেকে পাওয়া এমন স্বীকৃতি আমাদের জন্য সম্মানের। দেশের ডিজিটাল লেনদেন ব্যবস্থার ইতিবাচক পরিবর্তন করতে এবং গ্রাহকের সুবিধামতো সেবা দেয়ার জন্য আরও প্রোডাক্ট নিয়ে আসতে এই স্বীকৃতি আমাদের সাহায্য করবে।’
বাৎসরিক এই কনক্লেভে ভিসা তাদের পার্টনার ব্যাংক, ফিনটেক কোম্পানি, মার্চেন্ট এবং অন্যান্য অংশীদারদের সম্মাননা জানায়। ক্রস বর্ডার পেমেন্ট, প্রোডাক্ট ইনোভেশন, ফিনটেক পার্টনারশিপ, সাইবার সোর্স, ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিসেসসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে তারা এসব পুরস্কার দিয়ে থাকে।
এবারের আয়োজনে ফিনটেকের পাশাপাশি ইসলামি ব্যাংক বাংলাদেশ, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ইস্টার্ন ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, দ্য সিটি ব্যাংক, হংকং সাংহাই ব্যাংকিং করপোরেশন (এইচএসবিসি), ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক, দ্য প্রিমিয়ার ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক এবং ডাচ বাংলা ব্যাংক বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার অর্জন করেছে।
আরও পড়ুন:বুধবার ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলম এতে সভাপতিত্ব করেন।
সভায় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. তানভীর আহমেদ, অন্যান্য পরিচালকবৃন্দ, ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডাইরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে.কিউ.এম. হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।
নতুন করে আরও ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে এক কোটি করে মোট ছয় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বৃহস্পতিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. হায়দার আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নতুন করে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে (প্রত্যেককে এক কোটি) ছয় কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।
ডিম আমদানির অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-চিস গ্যালারি, পপুলার ট্রেড সিন্ডিকেট, মেসার্স রিপা এন্টারপ্রাইজ, এস এম কর্পোরেশন, বিডিএস কর্পোরেশন ও মেসার্স জুনুর ট্রেডার্স।
গত সোমবার চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। তখন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ জানান, বাজার মনিটরিং করে যদি দেখা যায় ৪ কোটি ডিম আমদানির পরও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসছে না, তাহলে আরও আমদানির অনুমতি দেয়া হতে পারে।
ডিম আমদানিতে কয়েকটি শর্ত দেয়া হয়। সেগুলো হলো-
১. এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু-মুক্ত দেশ থেকে ডিম আমদানি করতে হবে।
২. আমদানি করা ডিমের প্রতিটি চালানের জন্য রপ্তানিকারক দেশের সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষের দেওয়া এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা বা বার্ড ফ্লু ভাইরাস ও ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ামুক্ত সনদ দাখিল করতে হবে।
৩. নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করা যাবে না।
৪. সরকারের অন্যান্য বিধি–বিধান প্রতিপালন করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত মাসে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ডিমের দাম নির্ধারণ করে দেয়। মন্ত্রণালয়ের হিসাবে সাড়ে ১০ টাকা উৎপাদন খরচ হচ্ছে। আর খুচরা পর্যায়ে বিক্রির জন্য ১২ টাকা দাম নির্ধারণ করা হয়। তবে খুচরা পর্যায়ে এই দামে বিক্রি হচ্ছে না বলে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে। সেজন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ডিম আমদানির অনুমতি প্রদান করে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, যতক্ষণ খুচরা পর্যায়ে ডিমের দাম ১২ টাকায় নিশ্চিত করা না যাচ্ছে, সে পর্যন্ত ডিম আমদানির অনুমতির এই কার্যক্রম চলমান থাকবে। তিনি বলেন, আরও ডিম আমদানি হতে পারে এমন আশ্বাসের কারণে অনেক আমদানিকারক ডিম আমদানির অনুমতি চেয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে দৈনিক ডিমের চাহিদা ৪ কোটি।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বুধবার ৭৯টি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
তাতে বলা হয়েছে, আগামী ৩০ অক্টোবরের মধ্যে অনুমোদিত একেকজন রপ্তানিকারক ৫০ টন ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে।
তবে ইলিশ রপ্তানিতে ৮টি শর্ত দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- রপ্তানির অনুমতিপ্রাপ্ত পণ্যগুলোর একটি ম্যানুয়াল পরিদর্শন করবে শুল্ক কর্তৃপক্ষ; প্রতিটি চালান শেষ হওয়ার পরে পুরো রপ্তানি নথি অবশ্যই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে; কেউ অনুমোদিত পরিমাণের বেশি ইলিশ রপ্তানি করতে পারবে না; অনুমতি কোনোভাবেই হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং সাব-কন্ট্রাক্টিংয়ের মাধ্যমে ইলিশ রপ্তানি করা যাবে না।
দুর্গাপূজা সামনে রেখে এর আগে পাঁচ হাজার টন ইলিশের চাহিদার কথা জানিয়েছিলেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ব্যবসায়ীরা।
চলতি বছরের ১ সেপ্টেম্বর কলকাতার মাছ আমদানিকারকদের সমিতি কলকাতায় বাংলাদেশ মিশনে এই আবেদন জমা দেয়। আবেদনটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে আসে ৪ সেপ্টেম্বর।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছর পূজা উৎসব উপলক্ষে ২ হাজার ৯০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছিল। তবে রপ্তানি করা হয়েছিল ১ হাজার ৩০০ টন ইলিশ।
আগের বছরগুলোতেও একই ঘটনা ঘটেছে। অনুমোদিত পরিমাণের চেয়ে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কম ইলিশ রপ্তানি হয়েছে।
আরও পড়ুন:সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা সামনে রেখে বরিশাল থেকে ভারতে যাচ্ছে ১৯ টন ইলিশ। এ বছর বরিশালের ৫টি প্রতিষ্ঠানকে ৫০ টন করে মোট ২৫০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বানিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে রপ্তানির অনুমতি পাওয়ার পর বুধবার প্রথম চালানে ১৯ টন ইলিশ ভারতের উদ্দেশে পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারী প্রতিষ্ঠান মাহিমা এন্টারপ্রাইজের মালিক নিরব হোসেন টুটুল।
বরিশাল মৎস্য আড়তদার এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টুটুল বলেন, ‘বরিশাল থেকে পাঁচটি প্রতিষ্ঠান ভারতে ইলিশ পাঠানোর অনুমতি পেয়েছে। সেগুলো হলো- মাহিমা এন্টারপ্রাইজ, তানিশা এন্টারপ্রাইজ, মাসফি এন্টারপ্রাইজ, এআর এন্টারপ্রাইজ ও সী গোল্ড এন্টারপ্রাইজ।
প্রতিটি প্রতিষ্ঠান ৫০ টন করে ইলিশ মাছ পাঠানোর অনুমতি পেয়েছে। অনুমতি পেয়ে প্রথম চালান বুধবার রাতেই বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড মোকাম থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হবে। প্রথম চালানে ১৯ টন ইলিশ যাচ্ছে। মাহিমা ও তানিশা এন্টারপ্রাইজ ওই ইলিশ রপ্তানি করছে। ইলিশের এই চালান বেনাপোল স্থল বন্দর দিয়ে ভারতে প্রবেশ করবে বলে জানান তিনি।
ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়াটা দেশের বাজারের জন্য ইতিবাচক বলেই উল্লেখ করেন পোর্ট রোডের আড়তদার জহির সিকদার। তিনি বলেন, ‘যশোর, সাতক্ষীরা ও আগরতলা হয়ে ভারতে প্রতিনিয়ত বিপুল পরিমাণ ইলিশ চোরাই পথে ভারতে পাচার হয়ে থাকে। বৈধভাবে রপ্তানির অনুমতি দেয়ায় এখন চোরাই পথে ইলিশ পাচার বন্ধ হবে। তখন স্থানীয় বাজারেও ইলিশের সরবরাহ বেশি থাকবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য