করোনা পরিস্থিতিতে গত বছর সব শেয়ারের সর্বনিম্ন মূল্য বা ফ্লোর প্রাইস বেঁধে দেয়ার পর সম্প্রতি ৬৬ কোম্পানির ক্ষেত্রে তা প্রত্যাহার। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আলোচনা সমালোচনা তুঙ্গে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ-ডিএসইর পরিচালক রকিবুর রহমান মনে করেন, পুঁজিবাজারে যে সমস্যাগুলো আছে, তাতে ফ্লোর প্রাইস দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা কোনো সমাধান না।
তার দাবি, এই ফ্লোর প্রাইসের কারণে বিনিয়োগকারীরা লাভবান হচ্ছেন না। বরং কোনো কোম্পানির শেয়ার দর যত টাকা হওয়া উচিত না, ফ্লোর প্রাইসের কারণে সেটি তত টাকা হয়ে আছে। এতে সুবিধা নিচ্ছে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা।
রকিবুর রহমান স্টক ব্রোকার থেকে ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ (ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন) আলাদা হওয়ার আগে ডিএসই প্রেসিডেন্ট হিসেবেও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সেন্ট্রাল কাউন্টার পার্টি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিসিবিএল) পরিচালক পদেও আছেন।
নিউজবাংলার সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় জানালেন পুঁজিবাজারে কিসে মঙ্গল আর কোথায় সমস্যা।
বিএসইসি সম্প্রতি ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিয়েছে। এ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। আপনি এটিকে কীভাবে দেখছেন?
প্রথম বলতে চাই ফ্লোর প্রাইস কেন দেয়া হয়েছিল। ২০২০ সালে যেখন পুঁজিবজারে ক্রমাগত পতন হচ্ছিল তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি দিয়েছিলেন। করোনার সময় পুঁজিবাজারে পতন ঠেকাতে আমেরিকা, ভারত লাখ লাখ ডলার নিয়ে এসেছিল। আমাদের যেহেতু সে সক্ষমতা নেই তাই আমরা ফ্লোর প্রাইসে গিয়েছিলাম।
এখন কথা হচ্ছে, ফ্লোর প্রাইস দীর্ঘদিন থাকলে কার লাভ। জানুয়ারিতে পুঁজিবাজারের লেনদেন হাজার কোটি টাকায় উঠেছিল। ফেব্রুয়ারিতে আড়াই হাজার কোটি টাকাও লেনদেনও হয়েছিল। কিন্ত শতাধিক কোম্পানি তখনও ফ্লোর প্রাইসেই পড়ে ছিল।
কেন? কারণ এসব কোম্পানির ফান্ডমেন্টাল ভালো না। ভালো হলে নিশ্চয় দাম বাড়ত। বিনিয়োগকারীরা মনে করে ফ্লোর প্রাইস থাকলে সেই কোম্পানির তাদের জন্য নিরাপদ। এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
বিশ্বের কোনো স্টক এক্সচেঞ্জে এ ধরনের ফ্লোর প্রাইস নেই। আমরা আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজারের মানদণ্ডে ‘এ‘ ক্যাটাগরির। পুঁজিবাজারে বিশেষ কিছুর মাধ্যমে কোম্পানির শেয়ার দর আটকে রাখা হলে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে আমরা পিছিয়ে যাব। এটা হওয়া উচিত হবে না।
এখন আসেন ফ্লোর প্রাইসে লাভ কাদের। এটাতে তো কারো না কারো লাভ আছে। সেই লাভ হচ্ছে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকদের। তারা জানে তাদের শেয়ারের এত দাম হওয়া উচিত না। কিন্ত ফ্লোর প্রাইসের কারণে অনেক বেশি দর দেখাচ্ছে। চাইলে তারা সেই দরে শেয়ার বিক্রি করে দিতে পারছেন। এতে বিনিয়োগকারীদের কোনো লাভ নেই। ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দিয়ে কোম্পানির শেয়ারের সঠিক দামে নিয়ে আসা উচিত।
কিন্তু পতনমুখী বাজারে ৬৬ কোম্পানির ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার তো নতুন আতঙ্ক তৈরি করল।
পুঁজিবাজারের সূচক নিয়ে আতঙ্কিত হওয়া যাবে না। সূচক কমলে পুঁজিবাজার খারাপ হচ্ছে সে ধারণা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বরং দেখতে হবে লেনদেন কেমন হচ্ছে। লেনদেন ভালো হওয়ার পর যদি সূচক শত পয়েন্টও কমে যায়, সেটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। বরং সূচক অনেক বাড়ালো আর লেনদেন হলো ২০০ কোটি টাকা, তাহলে সেটি আতঙ্কের।
বোনাস শেয়ার সমন্বয়ের পর ফ্লোর প্রাইস পরিবর্তনের বিষয়ে বিএসইসি একটি নির্দেশনা দিয়েছে, কিন্ত ডিএসই সেটি পরিপালন করেনি। আপনি কি সেটি জানেন?
আমি এটি সম্পর্কে জানি না। পুঁজিবাজারে কোম্পানি তালিকাভুক্ত করার ক্ষমতা ডিএসইর। আর এটার নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ বিএসইসি। উভয়ের মধ্যে সমন্বিতভাবেই পুঁজিবাজার পরিচালিত হচ্ছে।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিএসইসি এক নির্দেশনায় জানায়, কোনো কোম্পানি বোনাস বা রাইট শেয়ার ইস্যু করলে রেকর্ড ডেটের সর্বনিম্ম দরের সঙ্গে সমন্বয় হয়ে সেই কোম্পানির নতুন ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ হবে। এমন নির্দেশনা পরও ডিএসই কোনো কোম্পানি বোনাস বা রাইট দেয়ার পর সমন্বিত দর যদি নির্ধারিত ফ্লোর প্রাইসের কম হয় তাহলে পরিবর্তন করছে আর বেশি হলে আগের ফ্লোর প্রাইসই বহাল রাখছে, যা নির্দেশনার পরিপন্থী।
এ বিষয়ে আমার বিস্তারিত জানা নেই। তবে বিএসইসির কোনো নির্দেশনাকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য আইসিবি বিলিয়ন ডলারের বন্ড ছাড়ছে। সুইজারল্যান্ডের একটি ব্যাংকের এতে বিনিয়োগ করবে শোনা যাচ্ছে। এতে পুঁজিবাজারের কী কী উন্নয়ন হবে।
আইসিবি যে বন্ডটি আনছে তা টাকায় প্রায় ১৪-১৫ হাজার কোটি টাকা হবে। এর মধ্যে আট হাজার কোটি টাকা আইসিবি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে যে ঋণ নিয়েছিল সেটি পরিশোধ করবে। সোনালী, জনতা, অগ্রণী ব্যাংক থেকে আইসিবি যে ঋণ নিয়েছে সে টাকা তারা আবার পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেনি। বিনিয়োগ করেছে নন-লিস্টেট কোম্পানিতে।
এখন ব্যাংক তাদের কাছে টাকা চাচ্ছে। সেই টাকা দিতে হলে আইসিবিকে তাদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে দিতে হবে। এজন্য বন্ড থেকে যে টাকা আসবে তার থেকে আইসিবি আট হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ করবে।
আইসিবি, সিডিবিএল কিন্ত পুঁজিবাজারে লেনদেন করার জন্য গঠন করা হয়নি। পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার জন্য করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের ভালো মানের শেয়ারের দর যখন কমবে তখন তারা সেগুলো কিনবে। আর যখন বাড়বে তখন বিক্রি করবে। কিন্ত বিক্রি একবারে করবে না। অল্প করে বিক্রি করে, আবার কিনবে।
এছাড়া সে বন্ড থেকে যে টাকা আসবে তার একটি অংশ ব্যবহার করা হবে মার্জিন ঋণ প্রদানের জন্য। বতর্মানে মার্জিন ঋণের সুদের যে হার তার চেয়ে অর্ধেক সুদে তখন ঋণ দেয়া সম্ভব হবে। ফলে সার্বিক বিবেচনায় পুঁজিবাজারের জন্য ভালো উদ্যোগ এই বন্ড।
অনেক সময় পুঁজিবাজারে প্রযুক্তিগত ক্রটির কারণে লেনদেনে বিঘ্ন হয়। কিন্ত প্রযুক্তির উন্নয়নে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়া হলেও কাজে আসছে না কেন?
এটা আমি স্বীকার করি যে, প্রায়শ ডিএসইতে কারিগরি ক্রটি দেখা দিচ্ছে। এর অনেকগুলো কারণ আছে। এটা নিয়ে বিএসইসি একটি কমিটি করেছে। সে কমিটিও এর জন্য অনেকগুলো কারণ পেয়েছে। আমরা সে সমস্যাগুলো কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করছি। বিশেষ করে ডিজিটালাইজেশনের দিকে আমরা এগুচ্ছি। বিশ্বব্যাংকের এ জন্য সাত মিলিয়ন ডলার অর্থায়ন আছে। আমাদের আর ছয় মাসের সময় প্রয়োজন। আশা করি এই সময়ের পর আর কোনো সমস্যা হবে না।
বিএসইসি মার্জিন ঋণের রেশিও বাড়িয়েছে। পুঁজিবাজারের লেনদেন বাড়াতে এটি কতটা যৌক্তিক?
পুঁজিবাজারে ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ হচ্ছে মার্জিন ঋণ নিয়ে বিনিয়োগ করা। এখন যে নিয়ম তাতে সাত হাজার সূচক পর্যন্ত বিনিয়োগকারীরা ১০০ টাকা বিনিয়োগ করলে মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে ৮০ টাকা ঋণ হিসাবে পাবে। আগে যা ছিল ৫০ টাকা।
বর্তমানে সূচক ৫ হাজার ২০০ পয়েন্টের আশেপাশে। গত জানুয়ারিতে সূচক সর্বোচ্চ ৬ হাজারের কাছাকাছি উঠেছিল। ফলে বিনিয়োগকারীরা চাইলেই মার্জিন ঋণের রেশিও অনুযায়ী ঋণ নেয়ার সুযোগ আছে।
কিন্ত আমি বলব, তারা যেন দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগের উদ্দেশ্য ছাড়া মার্জিন ঋণ না নেন। ডেইলি টেডিং করার জন্য মার্জিন ঋণ নিয়ে লোভে পড়া যাবে না।
আমি বিনিয়োগকারীদের পরামর্শ দেবে, তাদের কাছে যদি ২০ লাখ টাকা থাকে তাহলে সেখানে ১০ লাখ টাকা শেয়ার বাজারে নিয়ে আসুন। আর বাকি ১০ লাখ টাকায় স্থায়ী সঞ্চয়পত্র, বন্ডে বিনিয়োগ করুন। সব টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করে নিজের পুঁজিকে ঝুকিতে ফেলবেন না। প্রয়োজনে মিউচ্যুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগ করুন।
মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতিও বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী নেই। এর কারণ কী?
ভারতের পুঁজিবাজারের দিকে তাকান। দেখবেন সেখানে সাধারণ কোম্পানিতে বিনিয়োগের তুলনায় মিউচ্যুয়াল ফান্ডের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহী বেশি। আমাদের দেশে অনেকগুলো মিউচ্যুয়াল ফান্ড ভালো করছে। কিন্ত যেগুলো খারাপ করছে সেটিকেই বিনিয়োগকারীরা উদাহরণ হিসাবে নিয়ে আসে। এই জায়গাটিকে ঠিক করতে হবে।
আর আছে বন্ড মার্কেট। এখানে অনেকে বন্ড ছেড়ে টাকা সংগ্রহ করতে চাচ্ছে। আমি বলতে চাই, যারা বন্ড ছাড়তে আগ্রহী তাদের কী কী সম্পদ আছে সেটি আগে যাচাই করতে হবে। তা না হলে নানাভাবে বন্ড মার্কেটও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
বাইব্যাক আইন নিয়ে অনেক দিনের আলোচনা। কিন্ত এটি এখনও অন্ধকারে। কেন?
বাইব্যাক আসলে কারা করবে? কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা করবে নাকি কোম্পানি করবে? আমাদের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এ নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। তারা মনে করে কোম্পানির উদ্যোক্তা পরিচালকরা বাইব্যাক করবে। কিন্ত না। এটা করবে কোম্পানি।
কোম্পানির যখন মনে করবে তার শেয়ারের দর ৫০ টাকা হওয়া উচিত, কিন্ত পুঁজিবাজারে দর ২০ টাকা। তখনই কোম্পানি বাইব্যাক করবে। কোম্পানির যে রিজার্ভ আছে সেখান থেকে টাকা নিয়ে বাজার থেকে শেয়ার কিনবে। কিন্ত এই শেয়ার কেনার মাধ্যমে কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন বাড়ানোর সুযোগ দেয়া যাবে না।
আরও পড়ুন:আগামী বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে অনুষ্ঠেয় লোকসভা নির্বাচনের আগে মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরতে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।
দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৪ সালের মার্চ নাগাদ এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ ফরেইন ট্রেডের (ডিজিএফটি) বৃহস্পতিবার জারি করা প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, পেঁয়াজ রপ্তানি নীতি ‘অবাধ’ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি জানায়, নিষেধাজ্ঞা শুক্রবার কার্যকর হলেও তিনটি শর্তে পেঁয়াজ রপ্তানি করা যাবে।
এতে বলা হয়, প্রজ্ঞাপন জারির আগে জাহাজে বোঝাইকৃত পেঁয়াজ; পরিবহন মূল্য পরিশোধ, পেঁয়াজ বোঝাইয়ের জন্য জাহাজের ভারতের বন্দরে আগমন ও প্রজ্ঞাপনের আগে জাহাজগুলোর রোটেশন নম্বর বরাদ্দ এবং প্রজ্ঞাপনের আগে পেঁয়াজের চালান কাস্টমসের কাছে হস্তান্তর ও নিবন্ধিত হলে পণ্যটি রপ্তানি করা যাবে।
ভারতজুড়ে বৃহস্পতিবার প্রতি কেজি পেঁয়াজের গড়মূল্য ছিল ৫৭ দশমিক ১১ রুপি। এ দর এক বছর আগের এ সময়ের তুলনায় ৯৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ বেশি।
আরও পড়ুন:গরুর মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তদারকি করতে শুক্রবার সারা দেশে অভিযান চালাবে ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির উপপরিচালক (প্রশিক্ষণ ও প্রচার) আতিয়া সুলতানা স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আজ ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ তারিখ ঢাকা মহানগরসহ সারা দেশে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কর্তৃক গরুর মাংসসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য তদারকির লক্ষ্যে বাজার অভিযান পরিচালনা করা হবে।
‘উল্লেখ্য ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকাতে অধিদপ্তরের দুইজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে দুটি পৃথক টিম বাজার অভিযান পরিচালনা করবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ঢাকায় অভিযান চালাবেন ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ঢাকার সহকারী পরিচালক রোজিনা সুলতানা ও অধিদপ্তরের ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আবদুস সালাম।
অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া পদক্ষেপের সুফল মিলতে শুরু করেছে। করোনা মহামারি আর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের রেশ ধরে বিশ্বব্যাপী তৈরি হয় ডলার সংকট। বিশ্ব বাণিজ্যের বড় অংশই যেহেতু নিয়ন্ত্রণ হয় ডলারে, সেহেতু যুদ্ধ ও করোনা মহামারিকে পুঁজি করে বাড়তে থাকে মুদ্রাটির চাহিদা।
করোনা মহামারি-পরবর্তী বাংলাদেশেও বেড়ে যায় আমদানি চাহিদা। তাতে করে প্রয়োজন বাড়ে ডলারের। ঊর্ধ্বমুখী চাহিদা পূরণে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে দফায় দফায় বিক্রি করতে হয়েছে ডলার। ফলে দুই বছরের ব্যবধানে রিজার্ভ নেমে আসে প্রায় অর্ধেকে।
তবে ডলার সংকট কিংবা রিজার্ভ কমে যাওয়ার দুশ্চিন্তা থেকে ধীরে ধীরে সরে আসছে বাংলাদেশের অর্থনীতি। বিশেষ করে গভর্নর হিসেবে আবদুর রউফ তালুকদার দায়িত্ব নেয়ার পরই অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমাতে নেয়া হয় বেশ কিছু পদক্ষেপ। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিজ্ঞপ্তি জারি করে বিলাসি পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করে নির্দেশনা দেয় ব্যাংকগুলোকে। সেসব পদক্ষেপের সুফল মিলতে শুরু করেছে। আমদানি ও রপ্তানির ঘাটতি পূরণে কার্যকর ভূমিকা রেখেছে তাদের নেয়া পদক্ষেপ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের চার মাসে আগের অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে প্রায় ৬০ শতাংশ।
ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত তথ্য বলছে, গেল চার মাসে বাণিজ্য ঘাটতি কমে হয়েছে ৩৮০ কোটি ৯০ লাখ ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিলো ৯৬২ কোটি ৪০ লাখ ডলার। অর্থাৎ বছরের চার মাসের হিসাবে বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে ৬০ দশমিক ৫০ শতাংশ।
তবে অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে বাণিজ্য ঘাটতি, ১৮২ কোটি ডলার। অতি প্রয়োজনীয় জ্বালানি ও সার আমদানির প্রভাবে এটা বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাণিজ্য ঘাটতি কমার ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে আমদানি নিয়ন্ত্রণ। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবর সময়ে দেশে মোট আমদানি হয়েছে ২ হাজার ২৬ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পণ্য। আগের অর্থবছরের জুলাই-অক্টোবরে তা ছিলো ২ হাজার ৫৫১ কোটি ডলার। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে চার মাসে আমদানি কমেছে ২০ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
অন্যদিকে একই সময়ে রপ্তানি থেকে মোট আয় এসেছে ১ হাজার ৬৪৬ কোটি ডলার, যা আগের অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ছিলো ১ হাজার ৫৮৮ কোটি ডলার। অর্থাৎ রপ্তানিতে বড় কোনো প্রবৃদ্ধি না হলেও বেড়েছে প্রায় ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রপ্তানি বাড়ানো গেলে বাণিজ্য ঘাটতি আরও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অপ্রয়োজনীয় আমদানি কমাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি কোনো আমদানিকারক যেন পণ্যের বাড়তি দাম দেখিয়ে আমদানি করতে না পারে সেদিকেও রয়েছে কঠোর নজরদারি।
‘প্রতিটি ব্যাংককে আমরা সতর্কতার সঙ্গে আমদানির ঋণপত্র খুলতে বলেছি। আমদানিতে যেন কোনোভাবেই কোনো মিথ্যা তথ্য না আসে সেদিকে বাংলাদেশ ব্যাংক কঠোর নজরদারি করছে। শুধু তাই নয়, আমদানির আড়ালে যেন কোনোভাবেই অর্থ পাচার না হয় সেদিকেও আমাদের নজরদারি রয়েছে।’
তিনি জানান, বর্তমানে বিশ্ববাজারে আমদানি পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। এছাড়া দাম বাড়তি মনে হলে তা সঙ্গে সঙ্গে থামিয়ে দেয়া হচ্ছে। এজন্য আমদানি কিছুটা কমে এসেছে।
আমদানি কমানোর প্রবণতা অব্যাহত থাকবে কিনা- এমন প্রশ্নে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা কোনো ভুল দামে পণ্য আমদানি করতে দেবে না। আমার মনে হয় এতে আমদানি ও রপ্তানির মধ্যে ঘাটতি কমে আসবে।’
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সার্বিক বাণিজ্য ঘাটতি কমে ৩ দশমিক ৮১ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। এটা ২০২২-২৩ অর্থবছর শেষে ছিলো ১ হাজার ৭১৫ কোটি ডলার বা ১৭ দশমিক ১৫ বিলিয়ন ডলার।
রেকর্ড পরিমাণ বাণিজ্য ঘাটতি দেখা যায় ২০২০-২১ অর্থবছরে। করোনা মহামারি শুরুর প্রথম বছরে বাণিজ্য ঘাটতি সব রেকর্ড ভেঙে ছাড়িয়ে যায় ৩ হাজার ৩২৫ কোটি ডলারের ঘর। সে হিসাবে গত অর্থবছরে তার আগের বছরের চেয়ে প্রায় অর্ধেক হয় বাণিজ্য ঘাটতি। চলতি অর্থবছর শেষে তা আরও কমে আসবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাণিজ্য ঘাটতি কমে আসাকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতি বিশ্লেষকরা। তবে এর প্রভাবে যেন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানি কমে না আসে সেদিকে নজর দেয়ার পরামর্শ তাদের।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও দ্য ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট অফ বাংলাদেশের (আইসিএবি) ভাইস প্রেসিডেন্ট মাহমুদ হোসেন এফসিএ বলেন, ‘রিজার্ভের কথা চিন্তা করে আমদানি কমিয়ে আনতে হবে; সেটা ধীরে ধীরে হচ্ছে। তবে অনেক ক্ষেত্রে রপ্তানিকারকরা কাঁচামাল আমদানি করতে না পারলে রপ্তানিও কমে আসবে।’
তার পরামর্শ, আমদানির আড়ালে যেন অর্থ পাচার না হয় সেদিকে নজরদারি বাড়াতে হবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ল্যান্ড ডেভেলপার, বসুন্ধরা গ্রুপের প্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা হাউজিং জিতল মর্যাদাপূর্ণ ‘ওয়ার্ল্ড বিজনেস আউটলুক অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’। এই পুরস্কার প্রাপ্তির মাধ্যমে বসুন্ধরা হাউজিং বাংলাদেশের সবচেয়ে উদ্ভাবনী ল্যান্ড ডেভেলপার কোম্পানি হিসেবে স্বীকৃতি পেল যা রিয়েল এস্টেট সেক্টরের জন্য নতুন একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
গত ২৫ নভেম্বর থাইল্যান্ডের ব্যাংককের কুইন্স পার্কের ম্যারিয়ট মারকুইস-এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
এই পুরস্কারটি ডিপার্টমেন্ট অফ ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড প্রমোশন (ডিআইটিপি) থেকে তুলে দেন নাটিয়া সুচিন্দা এবং পুরস্কারটি গ্রহণ করেন জনাব বিদ্যুৎ কুমার ভৌমিক, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধান (বিক্রয় ও বিপণন), বসুন্ধরা গ্রুপ।
এই পুরস্কারটি একটি আধুনিক এবং গতিশীল জীবনযাত্রার পরিবেশ তৈরির জন্য বসুন্ধরা হাউজিং-এর অবদানকে তুলে ধরে, যা ঢাকায় প্রথম পরিকল্পিত এবং একমাত্র রাজউক-অনুমোদিত আধুনিক স্মার্ট সিটি।
শুধু বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় এবং বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে এমন কোনো শর্ত বা ধারা অন্তর্ভুক্তি সমর্থন করে না বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা বলা হয়েছে।
বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা অতীতে এমন উদাহরণ দেখেছি, যেখানে ক্রেতার কাছ থেকে এলসির শর্ত উদ্ধৃত করে এটিকে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা হিসেবে সাধারণীকরণ করা হয়েছে।’
বিজিএমইএ’র এক সদস্যকে বিদেশি ক্রেতার কাছ থেকে লেটার অফ ক্রেডিটের (এলসি) অনুলিপি অ্যাসোসিয়েশনের নজরে এসেছে।
বিদেশি ক্রেতার কাছ থেকে এলসি অনুলিপিতে বলা হয়, ‘আমরা জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, যুক্তরাজ্যের নিষেধাজ্ঞাপ্রাপ্ত কোনো দেশ, অঞ্চল বা দলের সঙ্গে লেনদেন করব না। নিষেধাজ্ঞার কারণে কোনো বিলম্ব, অকার্যকারিতা বা তথ্য প্রকাশের জন্য আমরা দায়বদ্ধ নই।’
বিজিএমইএ বলেছে, ‘এই ধারার ব্যাখ্যায় উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে যে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হতে পারে, যা সঠিক নয়। উল্লিখিত ধারার এলসি গ্রহণকারী সদস্যদের সংশ্লিষ্ট ব্র্যান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যাখ্যা চাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
‘যদি এই ধারা শুধু বাংলাদেশি সরবরাহকারীদের পক্ষে জারি করা এলসিগুলোতে প্রদর্শিত হয়, তবে এটি নৈতিকতার লঙ্ঘন করে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা আমাদের সদস্য কারখানাগুলোকে বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্বের সঙ্গে নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। প্রয়োজনে এ ধরনের ক্রেতাদের সঙ্গে ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি পর্যালোচনা/পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিজিএমইএ বলছে, ‘বৈশ্বিক বাণিজ্য দৃশ্যপট দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। মানবাধিকার ও পরিবেশগত বিষয়গুলো অগ্রাধিকার পাচ্ছে, অন্যদিকে ভূ-রাজনৈতিক বিষয়গুলোও বাণিজ্যকে প্রভাবিত করছে।
‘যেহেতু বাংলাদেশের অর্থনীতি ও প্রবৃদ্ধি ব্যাপকভাবে বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল, তাই বাণিজ্য নীতির যেকোনো উন্নয়ন আমাদের উদ্বিগ্ন করে তোলে।’
বিজিএমইএ বলেছে, এটি লক্ষ্য করা উচিত, এলসি একটি নির্দিষ্ট ক্রেতার কাছ থেকে এসেছিল এবং এটি কোনো দেশের দ্বারা সংবিধিবদ্ধ আদেশ বা নোটিশ নয়। সুতরাং এটিকে বাংলাদেশের ওপর বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা বা অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার পদক্ষেপ হিসেবে ভুল ব্যাখ্যা করা উচিত নয়।
‘আমরা বুঝতে পারি মানবাধিকার ও পরিবেশগত যথাযথ অধ্যয়ন আমাদের অনেক রপ্তানি বাজারের জন্য ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব বহন করে। বাংলাদেশ সরকার আমাদের বাণিজ্য অংশীদারদের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে।’
এতে বলা হয়, ‘বিশ্বব্যাপী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, অধিকার ও উচ্চ শ্রমমানকে এগিয়ে নেয়ার জন্য চলতি বছরের ১৬ নভেম্বর সই হওয়া যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের স্মারকটি চলমান বিশ্বব্যাপী শ্রম প্রচারাভিযানে উল্লেখযোগ্য গুরুত্ব বহন করেছে। কারণ এটির সম্পৃক্ততা এবং প্রয়োগের ক্ষেত্রে বেশ অনন্য বলে মনে হয়।’
বিজিএমইএ’র বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা এর চেতনাকে সম্মান করি এবং মূল নীতিগুলোর সঙ্গে একটি সামঞ্জস্য খুঁজে পাই। যদিও স্মারকলিপিতে কূটনৈতিক ও সহায়তা সরঞ্জামের পূর্ণ পরিসর অন্তর্ভুক্ত এবং যথাযথভাবে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা, বাণিজ্য জরিমানা, ভিসা বিধিনিষেধ ও অন্যান্য পদক্ষেপসহ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। তবে এটি বাংলাদেশের জন্য গৃহীত হয়নি, বরং এটি শ্রমিকদের অধিকার ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের একতরফা অবস্থান।’
আরও পড়ুন:তৈরি পোশাকশিল্প ও এর বাইরে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রম অধিকারকে এগিয়ে নিতে বাংলাদেশের বেসরকারি খাত ও অন্যান্য অংশীজনদের সঙ্গে কাজ আরও গভীর করতে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহী বলে জানিয়েছেন ঢাকায় দেশটির দূত পিটার হাস।
বাংলাদেশ তুলা দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘তৈরি পোশাক খাতের জন্য সাম্প্রতিক ন্যূনতম মজুরি পর্যালোচনা একটি বস্তুনিষ্ঠ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং প্রমাণভিত্তিক জাতীয় মজুরি নীতির সুস্পষ্ট প্রয়োজনীয়তা প্রদর্শন করেছে, যা গার্মেন্টস শ্রমিকদের সামনে থাকা গুরুতর অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে মোকাবিলা করবে।’ খবর ইউএনবির।
রাষ্ট্রদূত হাস বলেন, দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক, টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন এবং বাংলাদেশে পরিচালিত যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য একটি স্থিতিশীল ও প্রত্যাশিত পরিচালনার পরিবেশের জন্য শক্তিশালী শ্রম আইন ও তাদের বাস্তবায়ন অত্যাবশ্যক।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘আমরা যখন তৈরি পোশাক খাতের দিকে তাকাই, বাংলাদেশে আমাদের মিশনের অন্যতম অগ্রাধিকার হলো উন্নত শ্রমমানের মাধ্যমে উপলব্ধ টেকসই এবং বিস্তৃতভাবে ভাগ করা সমৃদ্ধি।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের অব্যাহত প্রবৃদ্ধি ও স্থায়িত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি আমাকে শ্রম অধিকারের দিকে মনোনিবেশ করায়।’
রাষ্ট্রদূত স্মরণ করিয়ে দেন, গত ১৬ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ‘অ্যাডভান্সিং ওয়ার্কার এম্পাওয়ারমেন্ট, রাইটস অ্যান্ড হাই লেবার স্ট্যান্ডার্ডস গ্লোবালি’ শীর্ষক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নতুন স্মারকলিপি ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন এ বৈশ্বিক শ্রম কৌশলটি সব আমেরিকান সরকারি সংস্থাগুলোকে সরকার, শ্রম সংগঠন, ট্রেড ইউনিয়ন, সুশীল সমাজ ও বেসরকারি খাতের সঙ্গে সংগঠন এবং সম্মিলিত দরকষাকষির স্বাধীনতার অধিকার প্রচার ও সুরক্ষার জন্য সম্পৃক্ততা জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে।’
আরও পড়ুন:মহান বিজয়ের মাসে পদ্মা ব্যাংকের জয়োৎসব শুরু হলো নতুন পণ্য বিজয় ৭১-এর মোড়ক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে।
বিজয় আয়োজনে সবার চেতনায় ধ্বনিত হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়গাঁথার স্মৃতিচারণ আর বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। তেমনি পদ্মা ব্যাংকও বিজয় উদযাপন করতে, মাত্র ৭১ দিনে ৯% হারে ফিক্সড ডিপোজিট করার সুযোগ নিয়ে এলো গ্রাহকদের জন্য।
সম্প্রতি এই স্কিমটি আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় গুলশানের হেড অফিসে।
মাত্র ৭১ দিনে এক বছরের মুনাফা উপভোগ করবেন গ্রাহকরা। যা ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে অনন্য।
এটিকে আরেকটি বিজয় উল্লেখ করে ব্যাংকের রিটেইল ব্যাংকিং হেড মীর শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিজয় মানেই উৎসব। এত স্বল্প সময়ে ফিক্সড ডিপোজিটের কথা কিছুদিন আগেও চিন্তা করতে পারতেন না কোনো গ্রাহক। আর পদ্মা ব্যাংকের হাত ধরে সেটা এখন বাস্তব।’
আগামীতে গ্রাহকদের জন্য আরও আকর্ষণীয় নানান স্কিম নিয়ে আসবে বলে ঘোষণা দেন শফিকুল ইসলাম।
এ ছাড়াও সম্প্রতি মাসিক সেভিংস স্কিম নামে প্রতি মাসে সঞ্চয় স্কিম এনেছে পদ্মা ব্যাংক। ৫০০ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ২৫ হাজার টাকা কিস্তিতে তিন, পাঁচ, আট এবং দশ বছরের জন্য খোলা যাবে এই অ্যাকাউন্ট। ১১% থেকে ১৪% হারে লভ্যাংশ পাওয়া যাচ্ছে এই হিসাবে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য