করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেও সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে রেকর্ডের পর রেকর্ড হচ্ছে। অস্বাভাবিক বিক্রি বাড়ায় এই রেকর্ড গড়ছে ‘সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ’ হিসেবে পরিচিত এই খাতে বিনিয়োগ। আর এতে বাড়ছে সরকারের ঋণের বোঝা।
চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) মোট ৮৬ হাজার কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এর আগে কখনোই ৯ মাসে এত টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়নি।
৯ মাসের বিক্রির এই অঙ্ক ২০১৯-২০ অর্থবছরের পুরো সময়ের (১২ মাস, জুন-জুলাই) চেয়ে ২৭ শতাংশ বেশি।
শুধু তা-ই নয়, একক মাস হিসাবেও সবচেয়ে বেশি সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে গত মার্চ মাসে। এই মাসে ১০ হাজার ৭৬২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর আগে কখনো এক মাসে এত বেশি টাকার সঞ্চয়পত্র কেনেননি ক্রেতারা।
জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর বুধবার সঞ্চয়পত্র বিক্রির হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে (২০২০ সালের জুন থেকে ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত) ৮৫ হাজার ৯৯০ কোটি ১৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল বাবদ ৫২ হাজার ৯৬৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা শোধ করা হয়েছে।
এ হিসাবে নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ২০ কোটি টাকা।
মার্চে ১০ হাজার ৭৬২ কোটি ৫৪ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। সুদ-আসল বাবদ গ্রাহকদের শোধ করা হয় ৬ হাজার ৮৭১ কোটি ২৬ লাখ টাকা। সে হিসাবে নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৩ হাজার ৮৯১ কোটি ২৮ লাখ টাকা।
এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা মহামারিতে মানুষের আয় কমে গেছে। তা ছাড়া মুনাফার ওপর করের হার বৃদ্ধি এবং নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপের পরও সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে কেন এই উল্লম্ফন- অর্থনীতিবিদরা তার সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) গবেষক রাষ্ট্রায়ত্ত অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জায়েদ বখত নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতি মাসেই সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ছে। আমার কাছে এটা অস্বাভাবিক মনে হচ্ছে। এই মহাসংকটের সময়ে কেন বাড়ছে, তা আমি পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছি না।
‘মহামারিতে মানুষের আয়-উপার্জন কমে গেছে। অনেকে সঞ্চয় ভেঙে সংসার চালাচ্ছেন। এর মধ্যেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি সত্যিই বিস্ময়কর।’
সঞ্চয়পত্র বিক্রি বাড়ায় সরকারের জন্য একটি বিপদ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘বিক্রির এই উল্লম্ফনের ফলে সরকারকে গ্রাহকদের প্রচুর সুদ দিতে হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে সরকারের ভবিষ্যৎ ঋণের বোঝা। এই “বোঝা” কমাতে সরকার নানা সময়ে নানা উদ্যোগ ও কড়াকড়ি আরোপ করলেও সঞ্চয়পত্র বিক্রির লাগাম টেনে ধরা যাচ্ছে না।’
জায়েদ বখত বলেন, ‘আমার এ বিষয়ে একটি মত আছে। সঞ্চয়পত্রের সুদের হার অনেক বেশি। এটি কমানো ছাড়া বিক্রি কমানো যাবে না। পরিবার ও পেনশনার সঞ্চয়পত্র ছাড়া অন্য সব সঞ্চয়পত্রের সুদের হার এখনই কমানো উচিত বলে আমি মনে করি। এ ছাড়া সঞ্চয়পত্র বিক্রির চাপ কোনোভাবেই কমানো যাবে না।’
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘এই কঠিন সময়ে মানুষ টাকা পাচ্ছে কোথায়? বুঝতে পারছি না।’
তবে এর দুটি কারণ থাকতে পারে বলে মনে করেন মনসুর। বলেন, প্রথমত প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সের একটি অংশ দিয়ে মানুষ সঞ্চয়পত্র কিনছে। আগেও কিনত। তবে এখন রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ায় এই অঙ্ক বেড়েছে। এ ছাড়া অন্য যেকোনো সঞ্চয় প্রকল্পের চেয়ে সঞ্চয়পত্রের সুদের হার যেহেতু বেশি, সবাই এখানেই বিনিয়োগ করছে।
সঞ্চয়পত্র বিক্রির ক্ষেত্রে সরকার এখন জাতীয় পরিচয়পত্র এবং টিআইএন (কর শনাক্তকরণ নম্বর) বাধ্যতামূলক করেছে। তা ছাড়া ব্যাংক হিসাব ছাড়া সঞ্চয়পত্র কেনা যায় না।
এখন আর কেউ ভুয়া নামে বা একই ব্যক্তি বিভিন্ন নামে সঞ্চয়পত্র কিনতে পারেন না। ব্যাংকগুলোর আমানতের সুদের হার কম; ৩ থেকে ৫ শতাংশের মতো। অন্যদিকে সঞ্চয়পত্রে সুদ মিলছে ১১ থেকে ১২ শতাংশ।
পুঁজিবাজারে কিছুদিন ধরে তেজিভাব দেখা দিলেও এখনো পুরোপুরি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসেনি।
সব মিলিয়ে বেশি মুনাফার কারণেই সবাই সঞ্চয়পত্রের দিকে ঝুঁকছে বলে মনে করেন আহসান মনসুর ও জায়েদ বখত।
বিক্রির চাপ কমাতে গত বছরের ১ জুলাই থেকে সঞ্চয়পত্রে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। একই সঙ্গে এক লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে টিআইএন বাধ্যতামূলক করা হয়। ব্যাংক অ্যাকাউন্ট না থাকলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি না করার শর্ত আরোপসহ আরও কিছু কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার ফলে কমতে শুরু করে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি।
কিন্তু এই অর্থবছরের শুরু থেকেই তা আবার বাড়ছে তো বাড়ছেই।
বিক্রি কমাতে সর্বশেষ গত মঙ্গলবার ‘বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র’ নামের একটি সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে কড়াকড়ি আরোপ করেছে সরকার।
এখন থেকে কোনো ব্যাংকের শাখা বা ডাকঘর থেকে পাঁচ বছর মেয়াদি ‘বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্র’ কেনা যাবে না। শুধু জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের আওতাধীন সঞ্চয় ব্যুরো থেকে এই সঞ্চয়পত্র কেনা যাবে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) থেকে এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট ৬৭ হাজার ১২৭ কোটি ৭৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। তার আগের অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বিক্রির পরিমাণ ছিল ৯০ হাজার ৩৪২ কোটি ৩৯ লাখ টাকার; যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি বিক্রি।
আহসান মনসুর বলেন, বিক্রি যেভাবে বাড়ছে, এটা অব্যাহত থাকলে অর্থবছর শেষে এবার মোট বিক্রি ১ লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে।
তথ্যে দেখা যায়, চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ৮ হাজার ৭০৫ কোটি ৬২ লাখ টাকার বিভিন্ন ধরনের সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। আগস্টে বিক্রি হয় ৮ হাজার ৮৫২ কোটি ২৯ লাখ টাকা। সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে ১০ হাজার ৩৮৭ কোটি ৬২ লাখ টাকায় ওঠে।
এর পরের তিন মাস অক্টোবর, নভেম্বর ও ডিসেম্বরে বিক্রি হয় যথাক্রমে ৯ হাজার ২৪৯ কোটি ৮৬ লাখ, ৯ হাজার ৫৪৭ কোটি ৬২ লাখ এবং ৮ হাজার ২৩৩ কোটি ১৭ লাখ টাকার।
জানুয়ারিতে বিক্রি হয় ১০ হাজার ৬৪৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র, এক মাসের হিসাবে যা ছিল এত দিন সবচেয়ে বেশি বিক্রি।
ফেব্রুয়ারিতে বিক্রি হয় ৯ হাজার ৬০৬ কোটি ৫৬ লাখ টাকার। সর্বশেষ মার্চে তা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১০ হাজার ৭৬২ কোটি ৫৪ লাখ টাকায় উঠেছে।
লক্ষ্যের ৬৫ শতাংশ বেশি ঋণ
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, অর্থবছরের এই ৯ মাসে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৩ হাজার ২০ কোটি টাকা, যা গত অর্থবছরের পুরো সময়ের চেয়ে ১২৯ শতাংশ বেশি। আর বাজেটের লক্ষ্যের চেয়ে বেশি ৬৫ শতাংশ।
২০১৯-২০ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ১৪ হাজার ৪২৪ কোটি ৩৫ লাখ টাকার।
আগে বিক্রি হওয়া সঞ্চয়পত্রের সুদ-আসল পরিশোধের পর যেটা অবশিষ্ট থাকে, তাকে বলা হয় নিট বিক্রি। ওই অর্থ সরকারের কোষাগারে জমা থাকে এবং সরকার তা রাষ্ট্রীয় কর্মসূচি বাস্তবায়নে কাজে লাগায়। বিনিময়ে সঞ্চয়পত্রের গ্রাহকদের প্রতি মাসে সুদ দিতে হয়। এ কারণে অর্থনীতির পরিভাষায় সঞ্চয়পত্রের নিট বিক্রিকে সরকারের ‘ঋণ’ বা ‘ধার’ হিসেবে গণ্য করা হয়।
সঞ্চয় অধিদপ্তর ২০২০-২১ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির মোট লক্ষ্য ধরেছে ৮৬ হাজার ৬৮৫ কোটি টাকার। এর মধ্যে সুদ-আসল বাবদ শোধ করতে হবে ৬৬ হাজার ২৫৫ কোটি টাকা। নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়াবে ২০ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা।
অর্থাৎ বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার এই ২০ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ নেবে।
হিসাব-নিকাশ করে দেখা যাচ্ছে, বাজেট ঘাটতি মেটাতে সরকার চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে যে টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরেছিল, তার ৬৫ শতাংশ ঋণ ৯ মাসেই নিয়ে ফেলেছে।
২০১৯-২০ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার লক্ষ্য ধরেছিল সরকার। বিক্রি কমায় বছরের মাঝামাঝিতে এসে সেই লক্ষ্য কমিয়ে ১১ হাজার ৯২৪ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।
কিন্তু গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে হঠাৎ করেই বিক্রি বেড়ে যাওয়ায় সঞ্চয়পত্র থেকে সরকারের ঋণ গ্রহণের পরিমাণ অর্থবছর শেষে ১৪ হাজার ৪২৮ কোটি ৩৫ লাখ টাকায় গিয়ে ঠেকে।
কোভিড-১৯ মহামারির ধাক্কা বাংলাদেশে লাগতে শুরু করার পর গত বছরের এপ্রিলে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি তলানিতে নেমে আসে। ওই মাসে মোট ৬৬১ কোটি ৭৮ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল। সুদ-আসল বাবদ শোধ করা হয় তার প্রায় দ্বিগুণ ১ হাজার ২৮৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। নিট বিক্রি ছিল ৬২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা ঋণাত্মক (-)।
অর্থাৎ এপ্রিল মাসে যত টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছিল তার থেকে ৬২১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা বেশি গ্রাহকদের সুদ-আসল বাবদে শোধ করা হয়েছিল।
মে মাসে ৩ হাজার ২২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়। সুদ-আসল বাবদ শোধ করা হয় ২ হাজার ৭৯৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। নিট বিক্রির পরিমাণ ছিল ৪৩০ কোটি ২৩ লাখ টাকা।
জুনে মোট বিক্রি মে মাসের চেয়ে প্রায় তিন গুণ বেড়ে ৯ হাজার ৩২২ কোটি ৮০ লাখ টাকায় দাঁড়ায়।
বর্তমানে দেশে চার ধরনের সঞ্চয়পত্র প্রচলিত আছে। এর মধ্যে পরিবার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ। পাঁচ বছর মেয়াদি বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রের সুদের হার ১১ দশমিক ২৮ শতাংশ, তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ০৪ শতাংশ এবং পেনশনার সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ১১ দশমিক ৭৬ শতাংশ।
২০১৫ সালের ২৩ মে থেকে এ হার কার্যকর রয়েছে। তার আগে সঞ্চয়পত্রের মুনাফার হার ছিল ১৩ শতাংশেরও বেশি।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের অন্যতম বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ-এর ট্রাস্টি বোর্ডের নতুন চেয়ারপারসন নির্বাচিত হলেন ফারুক আহমেদ।
ট্রাস্টি বোর্ডের ৬৬তম সভায় এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ফারুক আহমেদ ২৭ এপ্রিল থেকে পরবর্তী তিন বছরের জন্য চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিপ্রাপ্ত ফারুক আহমেদের উন্নয়ন খাতে রয়েছে বিস্তৃত অভিজ্ঞতা।
তিনি এক সময় ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের নির্বাহী পরিচালক ছিলেন এবং ঢাকায় বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে বিভিন্ন পদে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জেনেভাভিত্তিক গ্যাভি, দ্যা ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স (এঅঠও)-এর বোর্ড সদস্য ছিলেন, এছাড়া তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কমিটিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
ফারুক আহমেদ সোশ্যাল মার্কেটিং কোম্পানি (এসএমসি) এন্টারপ্রাইজের পরিচালনা পরিষদের একজন সদস্য। তিনি বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ ওয়ার্কিং গ্রুপেরও একজন সদস্য।
ফারুক আহমেদ ২০২০ সালের ১৬ মার্চ থেকে আরডিআরএস-এর ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
আরডিআরএস বিশ্বাস করে, ফারুক আহমেদের নেতৃত্বে সংস্থাটি দেশজুড়ে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি অব্যাহত রাখতে এবং এ সম্পর্কিত কার্যক্রমকে বেগবান করতে সক্ষম হবে। প্রেস রিলিজ
দেশের বাজারে টানা তৃতীয় দিনের মতো কমেছে স্বর্ণের দাম। ভালো মানের অর্থাৎ ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে ৬৩০ টাকা। সে হিসাবে স্বর্ণের ভরি দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৫৬১ টাকা। আগের দিন বুধবার তা ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ১৯১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমানের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানানো হয়।
স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের সংগঠনটি জানায়, স্থানীয় বাজারে তেজাবি স্বর্ণের দাম কমেছে। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বর্ণের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৫০ মিনিট থেকে স্বর্ণের নতুন নির্ধারিত দাম কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগে চলতি এপ্রিল মাসের ৬, ৮ ও ১৮ তারিখ তিন দফা স্বর্ণের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দেয়। এর মধ্যে ভালো মানের স্বর্ণের ভরিতে ৬ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা, ৮ এপ্রিল ১ হাজার ৭৫০ টাকা ও ১৮ এপ্রিল দুই হাজার ৬৫ টাকা বাড়ানো হয়। মাঝে ২০ এপ্রিল ভরিতে ৮৪০ টাকা দাম কমানোর পরদিন ২১ এপ্রিল আবার ৬৩০ টাকা বাড়ায় বাজুস।
এবার শুরু হয় দাম কমানোর পালা। সবশেষ দাম বাড়ানোর দু’দিন পর ২৩ এপ্রিল ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে তিন হাজার ১৩৮ টাকা ও ২৪ এপ্রিল দু’হাজার ৯৯ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয় বাজুস। আর বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ভরিতে ৬৩০ টাকা কমানোর ঘোষণা দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ টানা তিন দিনে স্বর্ণের দাম ভরিতে কমেছে পাঁচ হাজার ৮৬৮ টাকা।
সোনার দামে এমন উত্থান-পতনের কারণ জানতে চাইলে বাজুসের মূল্য নির্ধারণ ও মূল্য পর্যবেক্ষণ স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান বলেন, ‘আমরা এখন নতুন পদ্ধতি বা পলিসি অনুসরণ করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করি। সেটি হচ্ছে বিশ্ব স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিল পলিসি।
‘এতদিন আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে গোল্ডের দাম নির্ধারণ করতাম। সেক্ষেত্রে বিশ্ববাজারে যখন স্বর্ণের দাম কমত তখন আমরা কমাতাম। আর যখন বাড়ত তখন বাড়াতাম।’
তিরি আরও বলেন, ‘এখন আমরা আমাদের স্বর্ণের সবচেয়ে বড় বাজার তাঁতীবাজারের বুলিয়ান মার্কেট ফলো করে দর নির্ধারণ করি। এই বাজারে স্বর্ণের দাম ঘণ্টায় ঘণ্টায় উঠা-নামা করে। সেটা অনুসরণ করে আমরা নতুন দর নির্ধারণ করে থাকি। সেক্ষেত্রে দিনে দু’বারও গোল্ডের দাম বাড়ানো-কমানো হতে পারে।’
আরও পড়ুন:ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসির পরিচালনা পর্ষদ ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ২০২৩ সালে ১০ শতাংশ ক্যাশ ডিভিডেন্ড সুপারিশ করেছে।
ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে এ ডিভিডেন্ড প্রদান করা হবে।
ব্যাংকের চেয়ারম্যান আহসানুল আলমের সভাপতিত্বে বুধবার অনুষ্ঠিত পরিচালনা পর্ষদের সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়।
সভায় ভাইস চেয়ারম্যান তানভীর আহমেদসহ অন্যান্য পরিচালক, ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও সিইও মুহাম্মদ মুনিরুল মওলা এবং অ্যাডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ও কোম্পানি সেক্রেটারি জে কিউ এম হাবিবুল্লাহ, এফসিএস উপস্থিত ছিলেন।
আগামী ২৫ জুন ব্যাংকের ৪১তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। লভ্যাংশ প্রাপ্তি এবং সাধারণ সভায় যোগদানের ক্ষেত্রে রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১৬ মে।
সভায় অন্যান্য আলোচ্যসূচির সঙ্গে ৩১ মার্চ শেষ হওয়া ২০২৪ সালের প্রথম প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক বিবরণী অনুমোদন করা হয়।
আরও পড়ুন:কোভিড-১৯ মহামারির অভিঘাতে সমগ্র বিশ্ব যখন টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যে পতিত হয়, ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পুঁজিবাজারকে টেনে তুলতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তার নেতৃত্বে বিভিন্ন যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুঁজিবাজার বিশ্বের দরবারে অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়।
যদিও একটি শ্রেণি বাজারে নেতিবাচক ভূমিকা রাখতে বরাবরই সক্রিয় ছিল। তবে দূরদর্শী নেতৃত্বগুণে বিনিয়োগকারীদের অর্থের সুরক্ষা দিতে বারবার বহুমাত্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে সেই উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হতে দেননি অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম।
সম্প্রতি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে অস্বাভাবিক আচরণ করছে পুঁজিবাজার। নিয়ন্ত্রক সংস্থাও এ পরিস্থিতি সামাল দিতে এরই মধ্যে অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক করে বাজারকে স্থিতিশীল করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এমনকি পরিস্থিতি অনুকূলে আনতে গতকাল ফ্লোর প্রাইসমুক্ত সব শেয়ারে একদিনের দর কমার নিম্নসীমা (সার্কিট ব্রেকার) ৩ শতাংশে বেঁধে দিয়েছে সংস্থাটি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিএসইসির সময়োপযোগী এমন পদক্ষেপ বাজারকে আবারও টেনে তুলতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।
বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে সন্দেহভাজন বেশকিছু লেনদেন পরিলক্ষিত হয়েছে বাজারে। এতে বিশেষ একটি শ্রেণি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করছে। কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও এতে জড়িত রয়েছে। বাজারে অবাঞ্ছিত বিক্রির আদেশ দিয়ে তারা অস্থিরতা তৈরি করছে। তাছাড়া বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে বাজারে একটা শ্রেণি স্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করছে। ফলে বেশ কিছুদিন ধরে বাজার কিছুটা অস্বাভাবিক আচরণ করছে।
এ বিষয়ে বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে বেশ কিছু ট্রেডার নিজেদের মধ্যে যোগশাজসের মাধ্যমে প্রথমে কম দরে শেয়ার বিক্রি করত। পরে তাদের দেখাদেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রি করত তখন তারা আবার কম দরে শেয়ারগুলো কিনে নিত। এভাবে তারা নিজেদের মধ্যে শেয়ার লেনদেন করে প্যানিক সৃষ্টির মাধ্যমে ভালো শেয়ারগুলোর দাম কমাত। এই কাজে তাদের বেশ কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসও সহযোগিতা করত।’
বাজার বিশ্লেষকদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেয়ারের দর কমার কথা নয়। গুটি কয়েক অসাধু ট্রেডারের কারসাজিতে বাজারে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এতে বড় বড় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল-আমিন বলেন, ‘এক শ্রেণির অসাধু বিনিয়োগকারী চাচ্ছেন বর্তমান কমিশন বিদায় হয়ে নতুন কেউ দায়িত্বে আসুক, যাতে তারা নতুন করে আরও সুযোগ নিতে পারেন। তারাই বিভিন্ন দুর্বল শেয়ারে কারসাজি করে সুবিধা নিচ্ছেন।
‘ফোর্সড সেলের মাধ্যমে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার তারা কম দরে কিনে নিচ্ছেন। কমিশনের উচিত হবে কারসাজিকারীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা, যাতে তারা বারবার বাজারকে ম্যানিপুলেট করার সাহস না পায়।’
এদিকে শেয়ারবাজারের সাম্প্রতিক সময়ের টানা পতন ঠেকাতে আবারও শেয়ারের মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। মঙ্গলবার বিকেলে বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে।
ওই আদেশে বলা হয়, এখন থেকে তালিকাভুক্ত কোনো কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের দর এক দিনে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না। বর্তমানে দরভেদে কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত দরপতন হতে পারে।
দেশের পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে আদেশে জানানো হয়েছে। সার্কিট ব্রেকারের এ সিদ্ধান্ত বুধবার থেকে কার্যকর করতে দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জকে নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ‘আজকের এই সার্কিট ব্রেকার আরোপ বাজারে কারসাজি রোধ করবে। এটি সন্দেহভাজন লেনদেন বন্ধ করবে। আর এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও উচ্চ সম্পদশালী একক বিনিয়োগকারীরা আরও বেশি সক্রিয় হবে বলে আশা করছি।’
তিনি বলেন, ‘অনেক ভালো শেয়ার বর্তমানে আন্ডারভ্যালুতে আছে। এখানে তারা বিনিয়োগ করবে বলে আমাদের প্রত্যাশা।’
সার্কিট ব্রেকার বাজারের দরপতন ফেরাতে ব্যর্থ হলে আবারও ফ্লোর প্রাইস দেয়ার কোনো সিদ্ধান্ত আছে কি না জানতে চাইলে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আশা করছি, আমাদের বাজারে আর কখনও ফ্লোর প্রাইস দিতে হবে না। শিগগিরই বাজার একটা স্থিতিশীল অবস্থানে ফিরবে।’
আরও পড়ুন:দেশের পুঁজিবাজারে শেয়ারের দরপতনের গতি কমিয়ে আনার চেষ্টার অংশ হিসেবে এবার মূল্যসীমায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এখন থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর শেয়ার আগের দিনের শেষ হওয়া দরের ভিত্তিতে ৩ শতাংশের বেশি কমতে পারবে না।
শেয়ারের দাম কমার ক্ষেত্রে আগে মূল্যসীমা ছিল ১০ শতাংশ। তবে ঊর্ধ্বসীমা অর্থাৎ কোনো শেয়ারের দাম বাড়ার সীমা ১০ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) বুধবার এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে। বৃহস্পতিবার থেকেই এ আদেশ কার্যকর হবে বলে আদেশে জানানো হয়েছে।
বিএসইসি জানিয়েছে, যেসব শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের আওতায় আছে সেসব শেয়ারের ক্ষেত্রে নতুন আদেশ প্রযোজ্য হবে না।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে বাজার সূচকের অবাধ পতন ঠেকাতে এর আগে ২০২২ সালের জুলাই শেষে প্রতিটি শেয়ারের ফ্লোর প্রাইস নির্ধারণ করে দিয়েছিল বিএসইসি। ফ্লোর প্রাইস ছিল ২০২২ সালের ২৮ জুলাই ও তার আগের চার দিনের ক্লোজিং প্রাইসের গড়।
বর্তমানে বেক্সিমকো, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, খুলনা পাওয়ার কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম ও শাহজীবাজার পাওয়ার কোম্পানির ক্ষেত্রে ওই ফ্লোর প্রাইস কার্যকর রয়েছে।
আরও পড়ুন:দেশের বাজারে স্বর্ণের দাম একদিনের ব্যবধানে আরেক দফা কমেছে। সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের স্বর্ণের দাম ভরিতে দু’হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স সমিতি (বাজুস) বুধবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়। বলা হয়েছে,
স্থানীয় বাজারে তেজাবী স্বর্ণের (পাকা স্বর্ণ) দাম কমার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। নতুন নির্ধারিত দাম বুধবার (২৪ এপ্রিল) বিকেল ৪টা ৫০ মিনিট থেকে কার্যকর হবে।
বাজুস এর আগের দিন মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়ে ওই দিন থেকে ভালো মানের এক ভরি স্বর্ণের দাম ৩ হাজার ১৩৮ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ১৬ হাজার ২৯০ টাকা নির্ধারণ করে। সে হিসাবে দুদিনের ব্যবধানে দেশের বাজারে ভালো মানের স্বর্ণের দাম ভরিতে কমলো ৫ হাজার ২৭৭ টাকা।
নতুন নির্ধারিত মূল্য অনুযায়ী, সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ২ হাজার ১৩৯ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ১৪ হাজার ১৫১ টাকা। ২১ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের দাম ১ হাজার ৯৯৫ টাকা কমিয়ে ১ লাখ ৯ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এছাড়া ১৮ ক্যারেটের ভরি ১ হাজার ৭১৪ টাকা কমিয়ে ৯৩ হাজার ৪২৯ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের দাম ভরিতে ১ হাজার ৩৭৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার ২০৯ টাকা।
অবশ্য স্বর্ণালঙ্কার কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের এর চেয়ে বেশি অর্থ গুনতে হবে। কারণ বাজুস নির্ধারণ করা দামের ওপর ৫ শতাংশ ভ্যাট যোগ করে স্বর্ণের গহনা বিক্রি করা হয়। সে সঙ্গে ভরি প্রতি মজুরি ধরা হয় নূন্যতম ৩ হাজার ৪৯৯ টাকা। ফলে ২২ ক্যারেটের এক ভরি স্বর্ণের গহনা কিনতে ক্রেতাদের গুনতে হবে ১ লাখ ২৩ হাজার ৩৫৮ টাকা।
স্বর্ণের দাম কমানো হলেও অপরিবর্তিত রয়েছে রূপার দাম। ২২ ক্যারেটের এক ভরি রূপার দাম ২ হাজার ১০০ টাকা, ২১ ক্যারেট ২ হাজার ৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট ১ হাজার ৭১৫ টাকা এবং সনাতন পদ্ধতির রূপার ভরি ১ হাজার ২৮৩ টাকা নির্ধারণ করা আছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের বাজারে গত বছর প্রথমবারের মতো ল্যাপটপ নিয়ে আসে ট্রেন্ডি প্রযুক্তি ব্র্যান্ড ইনফিনিক্স। ইনবুক ওয়াইটু প্লাস নামের ল্যাপটপটি দিচ্ছে চমৎকার ডিজাইন, শক্তিশালী পারফরম্যান্স ও সাশ্রয়ী দামের প্রতিশ্রুতি। অল্প সময়ের মধ্যেই প্রযুক্তিপ্রেমী শিক্ষার্থী ও এক্সিকিউটিভদের নজর কাড়তে সক্ষম হয়েছে এ ল্যাপটপ।
দেখে নেওয়া যাক কী আছে ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস ল্যাপটপটিতে। এর ফিচার, পারফরম্যান্স ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতাই বা কেমন।
ডিজাইন ও গঠন
স্লিক ও হালকা ডিজাইনের ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাস সহজেই সবার মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। শিক্ষার্থী ও ব্যস্ত এক্সিকিউটিভদের জন্য এ ল্যাপটপ যথার্থ। এর পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক মেটালিক ডিজাইন স্থায়িত্ব নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে দেয় প্রিমিয়াম অনুভূতি। স্লিক প্রোফাইল ও প্রাণবন্ত ডিসপ্লের সঙ্গে যুক্ত সরু বেজেল ল্যাপটপটির সৌন্দর্য বাড়িয়ে তোলে। ফলে বাজারের একই ধরনের দামি ল্যাপটপের সমকক্ষ হয়ে ওঠে ওয়াইটু প্লাস।
তা ছাড়া এর মসৃণ এজি গ্লাস টাচ প্যানেলের কারণে সিল্কি-স্মুথ ও স্থায়ী টাচের অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ১.৫ মিলিমিটার কি ট্র্যাভেল এবং ব্যাকলাইটিংযুক্ত রেসপনসিভ কি-বোর্ড টাইপিংকে করে তোলে সহজ ও আরামদায়ক। তাই কম আলোতেও টাইপ করতে কোনো সমস্যা হয় না।
পারফরম্যান্স ও প্রোডাক্টিভিটি
১১তম প্রজন্মের কোর আই৫ প্রসেসর ও ৮ জিবি র্যাম রয়েছে ইনফিনিক্স ওয়াইটু প্লাসে। স্টোরেজের প্রয়োজন মেটাতে এতে আছে ৫১২ জিবি এনভিএমই পিসিআইই এসএসডি। প্রোডাক্টিভিটি সফটওয়্যার, ওয়েব ব্রাউজ করা কিংবা কনটেন্ট স্ট্রিম করাসহ সব ধরনের উচ্চ চাহিদাসম্পন্ন অ্যাপ্লিকেশন চালানো যায় খুব সহজেই। এর ইন্টিগ্রেটেড ইন্টেল ইউএইচডি গ্রাফিকস সাধারণ গেমিং ও মাল্টিমিডিয়া এডিটিংয়ের জন্য স্বাচ্ছন্দ্যময় গ্রাফিকস পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে। উইন্ডোজ ১১ পরিচালিত ইনফিনিক্স ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের অপারেটিং সিস্টেম সবার পরিচিত ও ব্যবহার করা সহজ।
ডিসপ্লে ও মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতা
উজ্জ্বল রং ও ওয়াইড অ্যাঙ্গেলের সঙ্গে স্পষ্ট ও পরিষ্কার ভিজ্যুয়াল দেয় ১৫.৬ ইঞ্চি ফুল এইচডি আইপিএস ডিসপ্লেযুক্ত ইনবুক ওয়াইটু প্লাস। ৮৫ শতাংশ স্ক্রিন-টু-বডি রেশিওর সঙ্গে চমৎকার মাল্টিমিডিয়া অভিজ্ঞতার জন্য ডিসপ্লেটি দারুণ। কাজেই আপনার প্রিয় নেটফ্লিক্স সিরিজ দেখা কিংবা ফটো এডিট করা— সবই হবে স্বাচ্ছন্দ্যে।
ল্যাপটপটিতে আছে ডুয়েল এলইডি ফ্ল্যাশ ও এআই নয়েজ ক্যান্সেলেশন প্রযুক্তিযুক্ত ১ হাজার ৮০ পিক্সেলের ফুল এইচডি+ ক্যামেরা। এর ফলে ভিডিও কলের অভিজ্ঞতা হবে আরও উন্নত।
ব্যাটারি লাইফ ও চার্জিং
ইনবুক ওয়াইটু প্লাসের ৫০ ওয়াট-আওয়ার ব্যাটারি ক্যাপাসিটি কোনো চার্জ ছাড়াই প্রতিদিনের কাজে আট ঘণ্টা পর্যন্ত ব্যাকআপ দিতে সক্ষম। পাশাপাশি এর ৪৫ ওয়াট টাইপ-সি পোর্টযুক্ত চার্জারে ডিভাইসটি দ্রুত ও সহজেই চার্জ করা যায়। ফলে ভারী চার্জার বহনের প্রয়োজন হয় না।
দাম
ল্যাপটপটির বর্তমান বাজারমূল্য ৫৮ হাজার ৯৯০ টাকা। অনুমোদিত ইনফিনিক্স রিটেইলার থেকে ল্যাপটপটি কেনা যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য