গত এক দশকে ভারতের সঙ্গে করা একাধিক চুক্তিতে বাংলাদেশের ৭৩৬ কোটি ডলার ঋণ পাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত মিলেছে কেবল ৭৩ কোটি ডলার।
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরে আরও বেশি অর্থ ছাড়ের আশা করছে ঢাকা।
দুই দিনের সফরে শুক্রবার ঢাকায় আসছেন মোদি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের বন্ধু দেশটির সরকারপ্রধানের সফরের প্রধান উপলক্ষ বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে রাষ্ট্রীয় আয়োজন। তবে এর বাইরে দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে একান্ত ও দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠকও হবে। সেখানে নতুন সমঝোতার পাশাপাশি আগের করা চুক্তি ও সমঝোতা নিয়েও আলোচনা হবে।
গত এক দশকে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অমীমাংসিত বেশ কিছু সমস্যার সমাধান হয়েছে। এখনও কিছু সমস্যা রয়ে গেছে।
এর মধ্যে বাংলাদেশের উন্নয়ন প্রকল্পেও ভারত বিনিয়োগে আগ্রহ দেখাচ্ছে। সড়ক, রেল, নৌ-যোগাযোগসহ বিভিন্ন খাতের অবকাঠামোখাতে প্রায় তিন ডজন প্রকল্প দেশটির ঋণে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে।
লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় প্রথম চুক্তি হয়েছিল প্রায় এক যুগ আগে।
২০১০ সালে ১০০ কোটি ডলারের ঋণচুক্তি সই হয়। পরে এর মধ্যে কিছু অংশ ভারত অনুদান হিসেবে ঘোষণার পর ঋণ দাঁড়ায় ৮৬ কোটি ডলার।
২০১৫ সালের দ্বিতীয়বার আরও ২০০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি সই হয়।
সবশেষ ২০১৭ সালের ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ চুক্তি সই হয়।
সব মিলিয়ে ভারতের ঋণ ৭৩৬ কোটি ডলার, দেশি মুদ্রায় যা পরিমাণ ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি।
ইআরডির সর্বশেষ হিসাব বলছে, বড় অঙ্কের ঋণের বিপরীতে সে হারে অর্থছাড় হয়নি। প্রথম এলওসির প্রায় ১০ বছর পার হলেও পুরো টাকা এখনো মেলেনি, ছাড় হয়েছে প্রায় ৬৩ কোটি ডলার।
পাঁচ বছর আগের দ্বিতীয় এলওসির বিপরীতে সাড়ে ৯ কোটি ডলার এবং প্রায় সাড়ে তিন বছরে তৃতীয় এলওসির বিপরীতে ৬৪ লাখ ডলার ছাড় হয়েছে। মোট ছাড় হয়েছে প্রায় ৭৩ কোটি ডলার। যা মোট ঋণের ১০ শতাংশ।
মোদির এবার ঢাকা সফরে দুটি প্রকল্পে নতুন করে ৩০ কোটি টাকা অনুদান দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে এখন পর্যন্ত।
তবে এলওসির আওতায় অর্থছাড় ও প্রকল্পে গতি আসবে বলেই আশা করছে সরকার।
সরকারের অথনৈতিক সম্পক বিভাগ, ইআরডির একজন কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেছেন, মোদির সফর সামনে রেখে তারা প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন, যেন সংশ্লিষ্ট দপ্তর থেকে তথ্য চাওয়া হলে যথাসময়ে তা সরবরাহ করা যায়। সর্বশেষ অগ্রগতির তথ্য হালনাগাদ করে রাখা হয়েছে।
ইআরডি সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে তিনটি এলওসি সাক্ষরিত হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম এলওসির আওতায় নেয়া প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বাকি দ্বিতীয় ও তৃতীয় আওতাধীন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে।
‘আশা করি, সামনের দিনগুলোতে এ সম্পর্কের ধারাবাহিকতায় ভারতীয় ঋণের প্রকল্পগুলোর অর্থ ছাড়ে আরও গতি আসবে। একই সঙ্গে এসব প্রকল্পের বাস্তবায়নেও দ্রুতগতি পাবে ‘
কত প্রকল্প
ভারতের টাকায় প্রথম এলওসিতে ১৫টি, দ্বিতীয়টিতে ১৫টি এবং তৃতীয় এলওসির আওতায় ১৬টি প্রকল্প মিলে দিন এলওসির আওতায় মোট ৪৬ টি প্রকল্প বাস্তবায়ন হওয়ার কথা রয়েছে।
এর মধ্যে এখন পর্যন্ত কাজ শেষ হয়েছে প্রথম এলওসির আওতায় ১৪টি প্রকল্পের। আটটির কাজ চলমান। বাকিগুলোর কাজ এখনও শুরু হয়নি।
শেষ হওয়া প্রকল্পের মধ্যে ১২টি প্রথম এলওসির এবং দুটি দ্বিতীয় এলওসির। সাতটি প্রকল্পের দরপত্রসংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান এবং আটটি প্রকল্পের ডিপিপি (প্রকল্প প্রস্তাব) তৈরির কাজ চলছে।
এলওসির আওতায় গুরুত্ব পূর্ণ প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র, যার কাজ চলমান রয়েছে।
ইআরডির প্রস্তুতি
মোদির সফরে ভারতীয় ঋণের প্রকল্পের বিষয়ে বৈঠক নির্ধারিত না হলেও ইআরডি সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে যেন, অনির্ধারিত বৈঠক হলেও ভারতীয় ঋণের (এলওসি) প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি তুলে ধরা যায়।
ইআরডির পর্যালোচন সভার সারসংক্ষেপ অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
ইআরডি বলছে, এলওসির প্রকল্পের গাতি বাড়াতে নানা পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ, সংস্থা, ইআরডি ও ভারতীয় হাইকমিশন প্রকল্পগুলোকে মনিটরিং করছে। প্রকল্পের অগ্রগতি আনতে ইআরডি সচিব ও ভারতীয় হাইকমিশনারকে প্রধান করে হাই লেভেল কমিটিও গঠন করা হয়েছে।
অর্থছাড়ে গতি বেড়েছে
গত কয়েক বছরে ভারতীয় ঋণের অর্থছাড় কিছুটা বেড়েছে।
২০১১-১২ অর্থবছরে ১.২৯ কোটি ডলার, ২০১২-১৩ অর্থবছরে ৭.৫৩ কোটি ডলার, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ৭.৩৩ কোটি ডলার, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৪.৩৯ কোটি ডলার, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ৮.৪৭ কোটি ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৭ কোটি ডলার, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৪.৭ কোটি ডলার, ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ১৩.৭৭ কোটি ডলার এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ১৩.৬৫ কোটি ডলার অর্থছাড় করেছে ভারত।
প্রথম ধাপে ৮০ কোটি ডলারের মধ্যে অর্থছাড় হয়েছে ৬৩ দশমিক ৪ কোটি ডলার বা ৭৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ।
কেন বিলম্ব
এলওসির আওতায় অর্থছাড়ের বিলম্বেও কারণ সম্পর্কে ইআরডি বলছে, সাধারণত বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) মতো উন্নয়ন সহযোগীরা উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) তৈরির পর বাংলাদেশের সঙ্গে ঋণচুক্তি সই করে। কিন্তু ভারতের ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াটি ভিন্ন।
দেশটি প্রথমে ঠিক করে কোন কোনো প্রকল্পে তারা ঋণ দেবে। সেই প্রকল্পগুলোর বিষয়ে ঋণচুক্তি সই করার পর তারা কাজ শুরু করে। চুক্তির পর তারা ডিপিপি তৈরিসহ আনুষঙ্গিক কাজ করে।
স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বব্যাংক, এডিবিসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থার তুলনায় চুক্তি সইয়ের পর দু-তিন বছর বেশি সময় লাগে।
প্রথম দুই এলওসির পর তৃতীয় এলওসি প্রকল্পের ক্ষেত্রেও তাই হচ্ছে। প্রথম এলওসির ঋণের পর দ্বিতীয় ঋণের অর্থছাড় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
আবার তৃতীয় ঋণের আওতায় মোট ১৬ প্রকল্পের মধ্যে পাঁচটি প্রকল্প এরই মধ্যে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভা অনুমোদন দিয়েছে।
সামনে তিনটা প্রকল্পের টেন্ডার হবে। ফলে ২০২১ সালের মার্চ থেকে তৃতীয় ঋণে ভারত অর্থছাড় বাড়ার আশা করছে ইআরডি।
৩০ কোটি টাকার অনুদান
শুক্রবার শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির উপস্থিতিতে দুই প্রকল্পের বিপরীতে ৩০ কোটি টাকার অনুদান চুক্তির খসড়া চূড়ান্ত হয়ছে।
‘এস্টাবলিশমেন্ট অব স্পোর্টস ফ্যাসিলিটিজ অ্যান্ড রাজশাহী কলেজ ফিল্ড সারাউন্ডিংস এরিয়া’ প্রকল্পের আওতায় ৫ কোটি ৯৩ লাখ অনুদান দেবে ভারত।
প্রকল্পের আওতায় রাজশাহী কলেজে খেলাধুলার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি, প্রশাসনিক ও গেম বিল্ডিং এবং সুইমিং পুল নির্মাণ করা হবে।
এছাড়া ‘এস্টাবলিশমেন্ট অব বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস অ্যান্ড এম্পলয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টার’ নির্মাণ প্রকল্পে প্রায় ২৫ কোটি টাকার অনুদান পাওয়া যাবে।
প্রকল্পের আওতায় আইসিটি ট্রেনিং ইক্যুইপমেন্ট দেবে ভারত। এ জন্য প্রকল্পের আওতায় সরকারের সেবাগুলোকে ই-সেবায় রূপান্তরের মাধ্যমে জনগণের কাছে দ্রুত ও সহজে পৌঁছে দেয়া এবং সব ক্ষেত্রে আইসিটির ব্যবহার বৃদ্ধিকল্পে প্রয়োজনীয় আইসিটি অবকাঠামো স্থাপন করা হবে।
প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।
আরও পড়ুন:অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রী রেহেনা চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুটি পৃথক মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়, ঢাকা-১ এ মামলাগুলো দায়ের করা হয়। সংস্থাটির উপপরিচালক মো. সাইদুজ্জামান বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন।
দুদক জানায়, আসামি সাবের হোসেন চৌধুরী ১৯৮৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়ে বৈধ আয়ের বাইরে ১২ কোটি ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৬৯ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করেছেন। একই সঙ্গে তিনি নিজের নামে ২১টি ব্যাংক হিসাবে মোট ১২৪ কোটি ৬১ লাখ ৫৪ হাজার ২৫২ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন।
তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৭(১) ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা, এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারার অধীনে মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে দুদক জানিয়েছে।
এছাড়া, তার স্ত্রী রেহানা হোসেনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ২৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকার বেশি সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনেছে দুদক। তিনি ১৯৯৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সময়ে ৩টি ব্যাংক হিসাবে প্রায় ১৫০ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেন করেছেন বলে দুদক জানিয়েছে। এই মামলায় সাবের হোসেন চৌধুরীকেও সহযোগী আসামি করা হয়েছে।
ঢাকা-৯ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাবের আওয়ামী লীগ সরকারের সবশেষ মন্ত্রিসভায় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। এর আগে ১৯৯৯ সালে তিনি প্রথমে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত হন। পরে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন। সাবের হোসেন ২০২৩ সালে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবেশ ও জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত হিসেবে নিয়োগ পান। একাদশ সংসদে তিনি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন।
সরকার পতনের পর গত অক্টোবরে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে পাঠানোর পরদিনই ছয় মামলায় জামিন পেয়ে এক ঘণ্টার মধ্যেই মুক্তি পান সাবের হোসেন চৌধুরীর।
যাত্রীদের চলাচলের সুবিধায় আগামী রোববার থেকে রাজধানীর মতিঝিল এবং উত্তরা-উত্তর প্রান্ত থেকে মেট্রোরেল চলাচলের সময় বাড়ানো হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) মহাব্যবস্থাপক (মানবসম্পদ ও প্রশাসন) মো. নাসির উদ্দিন তরফদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডিএমটিসিএল-এর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ক্রমাগতভাবে যাত্রীসেবার মান বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে এবং সম্মানিত যাত্রীসাধারণের সুবিধার্থে আগামী রোববার হতে উত্তরা উত্তর মেট্রো রেল স্টেশন ও মতিঝিল মেট্রো রেল স্টেশন উভয় প্রান্ত থেকে এক ঘণ্টা বর্ধিত সময়ে মেট্রো ট্রেন চলাচল করবে।
নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শনিবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত উত্তরা-উত্তর স্টেশন থেকে মতিঝিল স্টেশন অভিমুখে প্রথম মেট্রোরেল ছেড়ে যাবে ৬টা ৩০ মিনিটে। যা আগে ছেড়ে যেত সকাল ৭টা ১০ মিনিটে। এখন উত্তরা-উত্তর স্টেশন থেকে সবশেষ মেট্রো রেল ছেড়ে আসে রাত ৯টায়। নতুন সূচিতে ছাড়বে রাত সাড়ে ৯টায়।
এছাড়া মতিঝিল থেকে উত্তরা-উত্তর অভিমুখে দিনের প্রথম মেট্রো রেল ছেড়ে যায় সকাল সাড়ে ৭টায়।
নতুন সময়সূচি অনুযায়ী উত্তরা অভিমুখে মেট্রো রেল চলবে সকাল সোয়া ৭টা থেকে। মতিঝিল থেকে উত্তরা অভিমুখে সর্বশেষ মেট্রোরেল ছেড়ে যেত রাত সাড়ে ৯টায়। এখন রাত ১০টা ১০ মিনিটে তা ছেড়ে যাবে।
এদিকে শুক্রবারে মেট্রো রেল চলাচলের সময়সূচি অপরিবর্তিত রয়েছে। উত্তরা থেকে মতিঝিল অভিমুখে প্রথম ট্রেন ছাড়ে বিকেল ৩টায়। সবশেষ ট্রেন ছাড়ে রাত ৯টায়। মতিঝিল থেকে উত্তরা অভিমুখে প্রথম ট্রেন ছাড়ে বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে। সবশেষ ট্রেন ছাড়ে রাত ৯টা ৪০ মিনিটে।
মা-ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়নে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার পদ্মা নদীতে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনা করে ২৫ লাখ বর্গমিটার অবৈধ নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল ও ১১ জেলেকে আটক এবং ৫ কেজি মা-ইলিশ জব্দ করেছে প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার সকালে পদ্মা নদীর কলাবাগান ও অন্তার মোড় এলাকায় নৌপুলিশ ফরিদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুনের নেতৃত্বে উপজেলা মৎস্য বিভাগ, দৌলতদিয়া নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ডের যৌথ অভিযানে
২৫ লাখ বর্গমিটার কারেন্ট জাল, ১১ জন জেলে আটক ও ৫ কেজি মা-ইলিশ জব্দ করা হয়। পরে আটককৃত ১১ জন জেলেকে মৎস্য সুরক্ষা আইন ১৯৫০ খ্রি. সালের ৫ (২) (খ) ধারা মতে মিয়মিত মামলায় জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং কারেন্ট জালগুলো আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস ও মাছগুলো এতিমখানা ও স্থানীয় অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে নৌপুলিশ সুপার সাংবাদিকদের বলেন, সরকারের নির্দেশনা মতে গত ৪ অক্টোবর থেকে অভিযান শুরু হয়েছে আগামী ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত চলবে, মা-ইলিশ প্রজনন এই মৌসুমে সচেতনামূলক প্রোগ্রাম করা হয়েছে, যেন কোনো জেলেরা নদীতে মা-ইলিশ না ধরে, যেন মা-ইলিশ নদীতে ডিম ছাড়তে পারে, আমাদের নৌপুলিশের অভিযান নদীতে অব্যাহত রয়েছে। এখানে জেলা মৎস্য অফিসের সাথে আমাদের নৌপুলিশ, কোস্ট গার্ড, ম্যাজিস্ট্রেট যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ি থেকে চারটি মামলা রুজু হয়েছে, মোবাইল কোর্ট করা হয়েছে, ৬০ জনের মতো আসামিকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে, ২ কোটি ১০ লাখ বর্গমিটারের উপরে অবৈধ কারেন্ট জাল জব্দ করে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে, ২৬০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করে গরিব ও এতিমখানায় বিতরণ করা হয়েছে। শেষ সময় পর্যন্ত আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযানে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম পাইলট, দৌলতদিয়া নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ত্রিনাথ সাহা, এসআই মেহেদী হাসান অপূর্বসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও ফসল রক্ষায় বরগুনার আমতলী উপজেলার কুকুয়া ইউনিয়নের রায়বালা গ্রামের বিবিসি ইটভাটা বন্ধের দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে আঁকবাড়িয়া দাখিল মাদ্রাসাসংলগ্ন সড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে এলাকার প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বিবিসি (বিসমিল্লাহ ব্রিকস) ইটভাটার কারণে এলাকার অন্তত পাঁচশত একর তিন ফসলি জমি, গাছপালা, জীববৈচিত্র্য, প্রাণিসম্পদ ও গ্রামীণ সড়ক মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ফলে প্রায় পাঁচ হাজার মানুষ স্বাস্থ্যঝুঁকির মুখে পড়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, ২০১৭ সালে আব্দুল হান্নান মৃধা ফসলি জমির ওপর বিবিসি ইটভাটি স্থাপন করেন। কৃষকরা অভিযোগ করেন, ইটভাটা নির্মাণের পর থেকে জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে গেছে, ফলে আগের মতো ফসল উৎপাদন হচ্ছে না। ওই ইটভাটার ৩০০ গজের মধ্যে রায়বালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, এতিমখানা ও ইবতেদায়ী মাদ্রাসা রয়েছে। আইন অনুযায়ী, আবাসিক এলাকা, কৃষি জমি বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। কিন্তু আইন লঙ্ঘন করে সেখানে ইটভাটা চালু রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় জাহাঙ্গির আলমের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন নাশির উদ্দিন, কবির গাজী, শাহীন প্যাদা ও খোকন হাওলাদার প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ইটভাটার কারণে জমিতে আগের মতো ফলন হচ্ছে না, গাছে ফল ধরছে না এবং শিশুদের মধ্যে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ দেখা দিচ্ছে। তারা বরগুনা জেলা প্রশাসক, পরিবেশ অধিদপ্তর বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের কাছে দ্রুত ইটভাটা বন্ধের দাবি জানান। বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা যায়, তিন দিক ঘেরা ধান খেতের মধ্যে বিবিসি ইটভাটার কার্যক্রম চালু রয়েছে।
রায়বালা গ্রামের কৃষক কবির গাজী বলেন, ‘ইটভাটার কারণে আমাদের ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আগের মতো ফসল ফলছে না। পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ফরিদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা বলেছেন, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ফরিদপুর-৩ (সদর) আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে যিনি ধানের শীষ প্রতীক পাবেন, ঐক্যবদ্ধভাবে আমরা তাকেই জিতিয়ে নেওয়ার জন্য জানপ্রাণ দিয়ে কাজ করব। এই নির্বাচনে ফরিদপুর সদর আসনে এবার ধানের শীষ প্রতীক হেরে গেলে আমরা শুধু হারবই না, চিরতরে হারিয়ে যাব। তাই আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার স্বার্থেই ধানের শীষকে সর্বশক্তি দিয়ে বিজয়ী করে আনতে হবে।
গত বুধবার রাতে শহরের হাবেলি গোপালপুরে আফজাল হোসেন খান পলাশের বাসভবন প্রাঙ্গণে রাষ্ট্র কাঠামো মেরামত ও সংস্কারের ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় রাজপথের অকুতোভয় দুঃসাহসী নেতা হিসেবে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশকে জেলা বিএনপির পরবর্তী সভাপতি দেখতে চান বলেও নেতা-কর্মীরা জোরালো বক্তব্য দেন। তারা বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট হাসিনাবিরোধী আন্দোলনের প্রতিটি কর্মসূচিতে আফজাল হোসেন খান পলাশের দৃঢ় ভূমিকা রেখেছেন।
সভায় সভাপতির বক্তব্যে জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আমাদের করণীয় কী হবে, আমরা কী করব সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এই সভার আয়োজন। যারা আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে এখানে এসেছেন, সকলের প্রতিই কৃতজ্ঞ। তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ফরিদপুরের রাজপথে কোনো আন্দোলন হয়েছে আর আমি আফজাল হোসেন খান পলাশ ছিলাম না তা কখনোই হয়নি। আমার বিরুদ্ধে ২৫টি মামলা দিয়েছে। তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় জাতীয় পর্যায়ে মাইনাস টু ফর্মুলা বাস্তবায়ন চলছিল, তেমনি ফরিদপুরেও একটা চক্রান্ত হয়েছিল। ঐক্যবদ্ধভাবে সকল চক্রান্ত প্রতিহত করে বিএনপির ধানের শীষকে বিজয়ী করব।
ফরিদপুর জেলা যুবদলের সাবেক সহসভাপতি শামীম হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যের মধ্যে ফরিদপুর মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবি সিদ্দিকী মিতুল, যুগ্ম আহ্বায়ক সামসুল আরেফিন সাগর, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এমএ সালাম লাল, ফরিদপুর সুগার মিলের সাবেক চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান, জেলা যুবদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুদ্দীন বিশ্বাস, জেলা শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার জোয়ার্দার, জেলা যুবদলের সহসভাপতি কেএম জাফর, মোহসিনুল কবির রুবেল, টিটু খাঁন, শ্যামসুন্দরপুর নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা মুতাওয়াল্লী আলহাজ ফরিদ শেখ, বিএনপির প্রবীণ নেতা আলমগীর মাস্টার, মো. রেজাউল ইসলাম, আব্দুস সাত্তার খান, শাহীন হক, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর কবির, আলতাফ হোসেন, হাফিজুর রহমান রাজা, জিন্না মেম্বার, হায়দার হোসেনসহ অনুষ্ঠানে ৪৫ জন বক্তা বক্তব্য রাখেন।
রংপুরে শতকরা ২৭ ভাগ মানুষ থ্যালাসেমিয়ার বাহক। এছাড়া প্রতি বছর বাংলাদেশে ৫ থেকে ৮ হাজার নতুন থ্যালাসেমিয়া রোগী শনাক্ত হচ্ছে। বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষাসহ থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করে এমন নারী-পুরুষদের মধ্যে বিয়ে বন্ধ করা গেলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধ যোগ্য। বৃহস্পতিবার দুপুরে রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ মিলনায়তনে ‘থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা ও বিনামূল্যে মেডিকেল ক্যাম্প’ উপলক্ষে বৈজ্ঞানিক সেমিনারে এ তথ্য দেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি ও হাসপাতালের উদ্যোগে সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালক ডা. একরামুল হোসেন স্বপন। তথ্য-চিত্র উপস্থাপন করে বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি ও বোন ম্যারো ট্রান্সপ্লান্ট ইউনিটের সাবেক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এম এ খান এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজের হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মাফরুহা আক্তার। রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন, রংপুর গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আলম আল আমিন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, রংপুর গ্রুপের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন সরকার।
সেমিনারে চিকিৎসকরা জানান, থ্যালাসেমিয়ার বাহক আর থ্যালাসেমিয়ার রোগী এক নয়। বাহকের তেমন কোনো উপসর্গ থাকে না, তেমন কোনো চিকিৎসাও লাগে না। তবে একজন বাহক পরবর্তী প্রজন্মে রোগ বহন করতে সক্ষম। থ্যালাসেমিয়া রোগের বিস্তার বিষয়ে সবাই সচেতন হলে এ রোগ শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। থ্যালাসেমিয়া রোগের চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় বেশির ভাগ পরিবার এর চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে যায়। তাই এ রোগ প্রতিরোধে সকলকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান বক্তারা।
দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র চায়ের রাজধানী খ্যাত মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে পর্যটক ও স্থানীয়দের জন্য ট্রেনের টিকিট পাওয়া যেন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজনের তুলনায় সিট সংখ্যা অপ্রতুল হওয়ায় সপ্তাহ ১০ দিন আগেই সব টিকিট বুকিং হয়ে যায়। ফলে ভোগান্তিতে পড়ছেন ঘুরতে আসা পর্যটকসহ স্থানীয় যাত্রীরা।
গত শুক্রবার ঢাকা থেকে পরিবারের লোকজন নিয়ে শ্রীমঙ্গল ঘুরতে আসেন পর্যটক আরোফিন আহমেদ। বাসে যাতায়াত করা তার জন্য অস্বস্তিকর হওয়ায় তিনি ট্রেনে ফিরতে চাইলেও গত রোববার বা সোমবারের কোনো টিকিট পাননি। শেষমেষ ভোগান্তি নিয়ে তাকে বাসে করেই ঢাকায় ফিরতে হয়েছে।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক হুমায়রা সুলতানা বলেন, ‘অনেক চেষ্টার পরেও ট্রেনের কোনো টিকিট পাইনি। ছোট্ট শিশু সন্তান নিয়ে দীর্ঘসময় ধরে যাত্রা করতে হয়েছে। এটি খুবই কষ্টদায়ক। দীর্ঘদিন ধরে আমরা রেলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। কিন্তু এখনো কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেই।’
১৯১২ সালে চালু হওয়া শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন মৌলভীবাজার জেলার তিনটি উপজেলার যাত্রী ব্যবহার করে থাকেন। পাশাপাশি দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গল হওয়ায় এ স্টেশনের গুরুত্ব অনেক। প্রতিদিনই হাজার হাজার পর্যটক এখানে ভ্রমণে আসেন; কিন্তু টিকিট সংকট তাদের জন্য সবচেয়ে বড় ভোগান্তি।
শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন সূত্রে জানা যায়, ঢাকাগামী শ্রীমঙ্গল থেকে বরাদ্দকৃত আসন সংখ্যা কালনী এক্সপ্রেসে ৮১টি, জয়ন্তিকা এক্সপ্রেসে ৭০টি, পারাবত এক্সপ্রেসে ১০৫টি, উপবন এক্সপ্রেসে ৬৫টি, পাহাড়িকা এক্সপ্রেসে ৪৭টি এবং উদয়ন এক্সপ্রেসে ৩০টি।
স্থানীয় ব্যবসায়ী লিটন অধিকারী বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহেই ঢাকায় যেতে হয়। শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে টিকিট বরাদ্দ কম থাকায় সিলেট থেকে ঢাকা পর্যন্ত বেশি ভাড়া দিয়ে সেখান থেকে টিকিট সংগ্রহ করি।’
রাধানগর পর্যটন কল্যান পরিষদের যুগ্ম সভাপতি তাপস দাশ বলেন, ‘বর্তমানে শ্রীমঙ্গলে প্রায় ১০০টি হোটেল-রিসোর্ট রয়েছে। দেশ-বিদেশ থেকে প্রতিদিন অনেক পর্যটক আসলেও ট্রেনের টিকিটের সংখ্যা এত কম যে সেগুলো ১০ দিন আগেই বুকিং হয়ে যায়। ফলে পর্যটন খাতও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।’
শ্রীমঙ্গলের পর্যটন শিল্প ও স্থানীয় জনগণের ভ্রমণ সুবিধা নিশ্চিত করতে অতিরিক্ত ট্রেন চালু ও সিট সংখ্যা বাড়ানোর দাবি করেন স্থানীয়রা।
পর্যটন গাইড শ্যামল দেববর্মা বলেন, ‘দেশি-বিদেশি পর্যটকরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন ফিরতি টিকিট নিয়ে। বিদেশি পর্যটকদের জন্য কোনো কোটা নেই। রাত ২টার পর ঢাকা যাওয়ার ট্রেন ধরতে স্টেশনে পর্যটকদের অপেক্ষা করতে হয়, অথচ স্টেশনের টয়লেট ব্যবস্থাও নাজুক এবং ভিআইপি রুম তালাবদ্ধ থাকে। তিনি পর্যটকদের সুবিধার্থে নতুন ট্রেন চালুর পাশাপাশি সময়সূচি আপডেটের দাবি জানান।
শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশনের মাস্টার সাখাওয়াত হোসেন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘শুক্র ও শনিবারে হাজারও পর্যটক আসেন। কিন্তু যাত্রী সংখ্যার তুলনায় বরাদ্দ টিকিট অপ্রতুল। আমাদের কিছু করার নেই। অনলাইনে আগেই টিকিট কেটে নেয় যাত্রীরা। কালোবাজারির সুযোগ নেই, কারণ জাতীয় পরিচয়পত্র ছাড়া টিকিট কাটা যায় না। তবে আমরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সিট সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চিঠি দিয়েছি।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘এই উপজেলার পর্যটন খাতের উন্নয়নের জন্য বৃহৎ পরিকল্পনা রয়েছে। এরই অংশ হিসেবে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের সার্বিক সমস্যা সমাধান, ট্রেন ও টিকিট সংকট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ কাজ করছে।’
মন্তব্য