পর পর কয়েকটি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব বা আইপিওতে বিনিয়োগকারীদের বিপুল পরিমাণ টাকা আটকে যাওয়ার পর নতুন করে আর আইপিও অনুমোদন না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
যদিও সংস্থাটি পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শিগগিরই আইপিও অনুমোদন দেয়ার মতো কোম্পানির হাতে নেই কমিশনের। একটি কোম্পানি থাকলেও তারা তাদের আর্থিক বিবরণী তৈরিতে আরও সময় চেয়েছে।
ডিসেম্বর থেকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছে ই জেনারেশন, মীর আকতার হোসাইন লিমিটেড, এনার্জিপ্যাক, রবি।
এর বাইরে দেশ জেনারেলের ইন্স্যুরেন্সের ১৬ কোটি ও এনআরবিসি কমার্শিয়াল ব্যাংকের ১২০ কোটি টাকা সংগ্রহে আইপিও আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে।।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে তালিকাভুক্ত হতে কাট অফ প্রাইস নির্ধারণে নিলাম চলছে বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের। একই প্রক্রিয়ায় পুঁজিবাজার থেকে ৫০ কোটি টাকা তুলতে চাইছে ইনডেক্স অ্যাগ্রো লিমিটেড।
দুই মসের মধ্যে এতগুলো আইপিও আসায়ে দুই কারণে পুঁজিবাজারের লেনদেনে টান পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রতিটি আইপিওর ক্ষেত্রে শেয়ারের জন্য ১০ থেকে ২০ গুণ বেশি আবেদন জমা পড়েছে। লটারির পর বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত দেয়া হয় ৩৫ কার্যদিবসের মধ্যে। ফলে বিপুল পরিমাণ টাকা এখনও ফেরত আসেনি বিনিয়োগকারীদের হিসাবে।
এর বাইরে রবি, এনার্জি প্যাক, মীর আকতারে সেকেন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ করে বিপুল পরিমাণে লোকসানে আছেন বিনিয়োগকারীরা। এই অংকটা এখন দুই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
বিএসইসি নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আইপিও এখন একটু ধীর হবে। কারণ আমাদের হাতে দেয়ার মতো এখন কোনো আইপিও নেই। যেগুলো আছে সেগুলো প্রসেস করতে কিছুটা সময় প্রয়োজন হবে।’
তিনি বলেন, ‘কমিশনের কাছে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ফাইল ছিল। তারাও তাদের আর্থিক বিবরণী তৈরিতে সময় চেয়েছে। ফলে আগামীতে আইপিও কিছুটা কমে আসবে।’
গত এক মাস ধরে পুঁজিবাজারে লেনদেনের খরা ও টানা দরপতনের জন্য নানা কারণ রয়েছে। একটি একের পর এক আইপিও অনুমোদনও এর একটি কারণ বলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা তৈরি হয়েছে।
পুঁজিবাজারের মন্দার কারণে এমন সিদ্ধান্ত কি না প্রশ্নে বিএসইসির মুখপাত্র বলেন, ‘আইপিও পুঁজিবাজারের অংশ। ফলে পুঁজিবাজার মন্দা না ভালো সেটা বিষয় না।’
কত সময় পর আবার আইপিও আসবে সে প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক বলা যাচ্ছে না। একটি প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করবে।’
এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করছেন পুঁজিবাজার বিশ্লেষক আবু আহমেদ। নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘আইপিও পুঁজিবাজারের জন্য খারাপ কিছু নয়। তবে ভালো পুঁজিবাজারে আইপিও আসলে সেটা বাজারকে স্থিতিশীল করে। কিন্তু পুঁজিবাজার যদি খারাপ থাকে তাহলে আইপিও গতি কমানো ভালো।’
এই অর্থনীতিবিদ বলেন, ‘পুঁজিবাজারে থেকে যে মুনাফা উত্তলন করা হয় তা আবার বিনিয়োগের জায়গা তৈরি করে রাখতে হবে। এখন বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগের একটি অংশ সংরক্ষণ করেন আইপিও আবেদনের জন্য। বাজার ভালো না হওয়ায় আইপিও প্রতি আগ্রহ বেশি তাদের। কারণ, এখানে দেখা যাচ্ছে লেনদেন শুরু হওয়ার দুই কার্যদিবসের মধ্যে শেয়ারের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে।’
বিএসইসি কমিশনার শামসুদ্দিন আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, `আসলে আইপিও অনুমোদনের জন্য কিছু প্রক্রিয়া থাকে। সে প্রক্রিয়াগুলো পর পুঁজিবাজারে আইপিও অনুমোদন দেয়া হয়। আমাদের হাতে চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়ার মতো এখন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। ফলে শিগগিরই কোনো কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের সম্ভাবনা নেই।‘
পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নতুন আইপিও নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আসলে বিনিয়োগকারীদের চাওয়া আর আমাদের পরিস্থিতি এক হয়ে গেছে। আইপিও প্রক্রিয়া শেষ হয়ে আসলে আমরা অবশ্যই সেটির অনুমোদনের জন্য বিবেচনা করব।’
নতুন শেয়ারের সার্কিট ব্রেকার নিয়ে বিভ্রান্তি
নতুন শেয়ার লেনদেনের দিন কোনো সার্কিট ব্রেকার থাকত না। তবে গত কয়েক মাসে প্রথম দুই দিন ৫০ শতাংশ দাম বাড়া যাবে বলে সার্কিট ব্রেকার বসানো হয়।
এই নিয়মে গত পাঁচটি কোম্পানির চারটির ক্ষেত্রে দেখা গেছে পর পর দুই দিন ৫০ শতাংশ করেই দাম বেড়েছে। এ ক্ষেত্রে কোম্পানির স্বাস্থ্য বিবেচনা করা হয়নি।
একমাত্র কোম্পানি যেটি দ্বিতীয় দিন ৫০ শতাংশ দাম বাড়েনি, সেটা হচ্ছে মীর আকতার। তবে এর কারণ, ৫০ টাকা প্রিমিয়াম।
কোম্পানিটি শেয়ার প্রতি ৬০ টাকায় ও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা ৬৫ টাকা করে পেয়েছেন।
বহু বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ধারণা আছে, কোনো শেয়ার প্রথম দুই কার্যদিবস ৫০ শতাংশ বাড়বে। আর এই সর্বোচ্চ দামে শেয়ার কিনে বিপুল পরিমাণ লোকসানে আছেন বিনিয়োগকারীরা।
টানা বেড়ে ১০ টাকার রবি ৭৭ টাকা, ৩১ টাকার এনার্জিপ্যাক ১০১ টাকা, ১০ টাকার তাওফিকা অ্যাগ্রো (লাভেলো আইসক্রিম) ২৭ টাকা, ৫৪ টাকার মীর আকতার ১১৭ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবগুলোতেই এখন বিপুল লোকসানে বিনিয়োগকারীরা।
চলতি বছর এখন পর্যন্ত তাওফিকা ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রো পুঁজিবাজার থেকে তুলেছে ৩০ কোটি টাকা।
২০২০ সালের শেষ প্রান্তিকে রবি ৫২৩ কোটি, ক্রিস্টাল ইন্স্যুরেন্স ১৬ কোটি, ডমিনোস স্টিল বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেড ৩০ কোটি, এসোসিয়েট অক্সিজেন ১৫ কোটি, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স ২৬ কোটি টাকা তুলেছে।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে চলতি বছর মীর আকতার ১২৫ কোটি, অ্যানার্জিপ্যাক ১৫০ কোটি টাকা তুলেছে।
২০২০ সালে ওয়ালটন ১০০ কোটি আর এডিএন টেলিকম তুলেছে ৫৭ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন:ভারত থেকে বাংলাদেশে এলো ডিমের একটি বড় চালান। শনিবার রাতে ডিম বোঝাই ট্রাকটি বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করে। সাড়ে সাত টন ওজনের ডিম বোঝাই ট্রাকে দু’লাখ ৩১ হাজার পিস মুরগির ডিম আমদানি করেছে ঢাকার আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান বিডিএফ করপোরেশন।
ভারতীয় রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান কানুফ ত্রিপুরা ইন্ডিয়ার মাধ্যমে ডিমের চালানটি শনিবার রাতে বেনাপোল বন্দরে এসে পৌঁছে। আমদানিকারকের পক্ষে কোনো কাগজপত্র কাস্টমস কর্তৃপক্ষের কাছে দাখিল না করায় সেদিন চালানটি খালাস দেয়নি বন্দর কর্তৃপক্ষ।
রোববার দুপুরের দিকে আমদানিকারকের পক্ষে চালানটি খালাসের জন্য রাতুল এন্টারপ্রাইজ নামক একটি সিএন্ডএফ এজেন্ট কাস্টমসে কাগজপত্র দাখিল করেছে।
কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, ডিমের আমদানি মূল্য নয় হাজার ৯৬৯ ডলার ১২ সেন্ট, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১১ লাখ ৮৬ হাজার ৩২৫ টাকা। আমদানি মূল্যের ওপর ২৮ শতাংশ শুল্ক করাদি পরিশোধ করে বেনাপোল কাস্টমস থেকে ছাড়পত্র নিতে হবে। প্রতি পিস ডিমের আমদানি মূল্য পাঁচ টাকা ৭৫ পয়সা। প্রতিটি ডিমের শুল্ক-করাদি পরিশোধ করতে হবে প্রায় দুই টাকা।
বেনাপোল কাস্টম হাউজের উপ-কমিশনার অথেলো চৌধুরী বলেন, ‘ডিমের চালানটি যেহেতু জরুরি এবং পচনশীল সে কারণে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পণ্যচালান পরীক্ষা করে খালাসের ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করছি সন্ধ্যার আগেই সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা যাবে। আমরা পুরো প্রক্রিয়াটি মনিটরিং করছি।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে রোববার ঢাকার দুটি বাজারে অভিযান পরিচালনার কথা জানিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল রাখা ও বাজার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দুইটি টিম বাজার তদারকি করে। এ সময় তদারকি টিম সাত প্রতিষ্ঠানকে ২৯ হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
‘আজ রবিবার দুপুরে রাজধানীর নিউ মার্কেট কাঁচাবাজার ও গুলশান কাঁচাবাজারে তদারকি কার্যক্রম পরিচালিত হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঢাকা নিউ মার্কেট কাঁচাবাজারে তদারকি টিমের নেতৃত্ব দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. মেহেদী হাসান। এ সময় নিত্যপণ্যের মধ্যে চাল, ডাল, ডিম ও মুরগির বাজারে তদারকি করা হয়। টিমের সদস্যগণ মূল্য তালিকা টাঙানোসহ পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের রসিদ খতিয়ে দেখেন।
‘এ সময় মূল্য তালিকা সঠিকভাবে না টাঙানো ও যথাযথভাবে না লেখা ও সংরক্ষণ না করায় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সতর্ক করার পাশাপাশি একজন মুরগি ব্যবসায়ীকে দুই হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।’
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ‘…গুলশান কাঁচাবাজারে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে মোট ২৭ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্বে দেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মানসুরীন খান চৌধুরী।
‘অভিযানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বিভিন্ন বিভাগের কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।’
আরও পড়ুন:মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় সাকিব আল হাসান এবং তার স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশিরের ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়েছে। দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগামী পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট তথ্য জমা দিতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) বুধবার দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা পাঠিয়ে তাদের ব্যাংক হিসাবের যাবতীয় তথ্য চেয়ে পাঠিয়েছে।
বিএফআইইউর সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ব্যাংক হিসাবে লেনদেনের তথ্য তলব করার এই নির্দেশের ক্ষেত্রে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-সংশ্লিষ্ট ধারা প্রযোজ্য হবে বলে বিএফআইইউর চিঠিতে বলা হয়েছে। চিঠিতে তলব করা ব্যক্তির নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্টের তথ্য দেয়া হয়েছে।
বিএফআইইউর নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হিসাব তলব করা ব্যক্তিদের সংশ্লিষ্ট তথ্য বা দলিল যেমন হিসাব খোলার ফরম, কেওয়াইসি ও লেনদেন বিবরণী চিঠি দেয়ার তারিখ থেকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে বিএফআইইউতে পাঠানোর জন্য ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে বলা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, পুঁজিবাজারে কারসাজির দায়ে গত ২৪ সেপ্টেস্বর তারকা এই ক্রিকেটারকে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করে নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
আরও পড়ুন:তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম বাড়ানো হয়েছে। ১২ কেজির সিলিন্ডারে দাম বেড়েছে ৩৫ টাকা। একইসঙ্গে লিটার প্রতি অটো গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে প্রায় দেড় টাকা।
বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বুধবার সংবাদ সম্মেলনে দাম বৃদ্ধির এই ঘোষণা দেন।
দাম বৃদ্ধির কারণে এখন থেকে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম হবে এক হাজার ৪৫৬ টাকা। আর অটোগ্যাস লিটার প্রতি ৬৬ টাকা ৮৪ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দর আজ বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকেই কার্যকর হচ্ছে।
আমদানিনির্ভর এলপিজির আন্তর্জাতিক বাজার বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশেও দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিইআরসি।
গত সেপ্টেম্বর মাসে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম ছিল এক হাজার ৪২১ টাকা। অন্যদিকে অটোগ্যাস লিটার প্রতি দাম ছিল ৬৫ টাকা ২৬ পয়সা। আগের মাস আগস্টে ১২ কেজি এলপি গ্যাসের দাম ছিল এক হাজার ৩৭৭ টাকা।
২০২১ সালের ১২ এপ্রিলের আগে পর্যন্ত এলপিজির দর ছিল কোম্পানিগুলোর ইচ্ছাধীন। ১২ এপ্রিল বিইআরসি কর্তৃক দর ঘোষণার সময় বলা হয়, আমদানিনির্ভর এই জ্বালানির দাম নির্ধারণে সৌদি রাষ্ট্রীয় কোম্পানি আরামকো ঘোষিত দরকে ভিত্তি মূল্য হিসেবে ধরা হবে।
আরামকো নির্ধারিত দর উঠা-ওঠা-নামা করলে ভিত্তিমূল্য উঠা-নামা করবে। অন্যান্য কমিশন অপরিবর্তিত থাকবে। ঘোষণার পর থেকে প্রতি মাসে এলপিজির দর ঘোষণা করে আসছে বিইআরসি। টানা তিন মাস ধরে আন্তর্জাতিক বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকায় বাংলাদেশেও এলপিজির দাম বাড়ছে।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশ চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে বৈদেশিক ঋণপ্রাপ্তির চেয়ে উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি ঋণ পরিশোধ করেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি)।
সোমবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ইআরডি। তাতে বলা হয়েছে, জুলাই থেকে আগস্ট পর্যন্ত বাংলাদেশ ৪৫৮ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণ পেয়েছে। তবে একই সময়ে দেশটিকে ঋণের কিস্তি বাবদ ৫৮৯ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করতে হয়েছে। এতে ঘাটতি ছিল ১৩১ মিলিয়ন ডলার।
ঋণ পরিশোধের হিসাব বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মূলধনের ৪১৫ দশমকি ৬ মিলিয়ন ডলার এবং সুদ বাবদ ১৭৩ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করা হয়েছে। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় সুদ পরিশোধে ব্যয় বৃদ্ধি হয়েছে ১৯ মিলিয়ন ডলার।
এই মাসগুলোতে দেশটির বৈদেশিক ঋণের প্রতিশ্রুতি ব্যাপক কমায় এই চ্যালেঞ্জকে আরও জটিল করে তুলেছে। কেননা নতুন প্রতিশ্রুতির রেকর্ড মাত্র ২ মিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি লিমিটেডের (বেক্সিমকো) শেয়ার কারসাজির দায়ে নয় বিনিয়োগকারীকে ৪২৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
মঙ্গলবার বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় এই জরিমানা আরোপের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে কোনো কোম্পানির শেয়ার কারসাজির দায়ে এতো বড় অঙ্কের অর্থ জরিমানা এর আগে আর করা হয়নি।
উল্লিখিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে মারজানা রহমানকে ৩০ কোটি, ট্রেড নেক্সট ইন্টারন্যাশনালকে চার কোটি এক লাখ, মুশফিকুর রহমানকে ১২৫ কোটি, মমতাজুর রহমানকে ৫৮ কোটি, জুপিটার ব্যবসাকে ২২ কোটি ৫০ লাখ, অ্যাপোলো ট্রেডিংকে ১৫ কোটি ১০ লাখ, এআরটি ইন্টারন্যাশনালকে ৭০ কোটি, আবদুর রউফকে ৩১ কোটি এবং ক্রিসেন্ট লিমিটেডকে ৭৩ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও কমিশন সভায় নয়টি কোম্পানির আইপিও/আরপিওর তহবিলের ব্যবহার পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত হয়।
কোম্পানিগুলো হলো- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, বেস্ট হোল্ডিং, ইনডেক্স এগ্রো, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফ্যাকচারিং, লুব-রেফ (বাংলাদেশ) লিমিটেড, নাভানা ফার্মাসিউটিক্যালস, রিং শাইন টেক্সটাইল, সিকদার ইন্স্যুরেন্স ও সিলভা ফার্মাসিউটিক্যালস।
আরও পড়ুন:সদ্যসমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৪০ কোটি ৪৮ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। রেমিট্যান্স প্রবাহে গত চার বছরের মধ্যে একক মাসে প্রবাসী আয়ের দিক থেকে এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। এর আগে জুনে ব্যাংকিং চ্যানেলে ২৫৪ কোটি ডলার এবং তার আগে ২০২০ সালের জুলাইয়ে ২৫৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রকাশিত হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিপোর্ট বলছে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২ দশমিক ৪০ বিলিয়ন ডলার। এটা আগের অর্থবছরের একই মাসে ছিল মাত্র ১ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার।
এছাড়া আগের মাস আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৮০ মিলিয়ন ডলার। আগস্টে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স ছিল ২ দশমিক ২২ বিলিয়ন ডলার।
তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে প্রতিদিন গড়ে দেশে রেমিট্যান্স এসেছে আট কোটি ডলার। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এই অংকটা ছেল চার কোটি ৪৫ লাখ ডলার। সে হিসাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।
একক মাস হিসেবে গত বছরের তুলনায় এ বছরের সেপ্টেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে ৮০.২ শতাংশ। গত বছরের সেপ্টেম্বরের রেমিট্যান্স এসেছিল ১৩৩ কোটি ডলার। তার আগে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে এসেছিল ১৫৪ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬৩ কোটি ৮৩ লাখ ডলার, বিশেষায়িত একটি ব্যাংকের মাধ্যমে ১১ কোটি ডলার, বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৬৫ কোটি ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ৬২ লাখ ডলার।
আলোচিত সময়ে সরকারি বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (বিডিবিএল), রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, পুলিশের কমিউনিটি ব্যাংক, বিদেশি হাবিব ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান ও স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার মাধ্যমে কোনো রেমিটেন্স আসেনি।
শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে প্রবাসীরা ব্যাংকিং চ্যানেলে ব্যাপক রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা আগের বছরের একই মাসের তুলনায় ১.০৭ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স বেশি পাঠিয়েছেন, এ হিসাবে প্রবৃদ্ধি ৮০ দশমিক ২২ শতাংশ।
ব্যাংকাররা বলেন, নতুন সরকারের শুরু থেকে প্রবাসীরা হুন্ডিতে রেমিট্যান্স পাঠানো কমিয়ে দিয়েছেন। এখন তারা লাইনে দাঁড়িয়ে হলেও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। সে সুবাদে দেশের প্রবাসী আয় ব্যাপক পরিমাণে বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
মন্তব্য