২ দশমিক ৯৪ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপির ভারত বিশ্বের পঞ্চম অর্থনীতির দেশ। ভারতের মোট বাণিজ্যের ১ দশমিক ৭ থেকে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হয় দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সঙ্গে। নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক জন্মলগ্ন থেকে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান বাংলাদেশ সব সময়ই কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে থাকে। দুই দেশের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক সব সময়ই পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আবর্তিত হয়ে আসছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে সর্ববৃহৎ সীমান্ত হওয়ায় ট্রানজিট, নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনেতিক কর্মকাণ্ডের জন্য ভারত বাংলাদেশের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল।
করোনা মহামারির ফলে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি এক কঠিন সংকট মোকাবিলা করেছে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি আবারও খাদের কিনারায় এসে ঠেকেছে। এর মধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান গভীর সংকটে পতিত হয়েছে। মালদ্বীপ, ভুটান ও নেপালের অর্থনীতিও আক্রান্ত। রিজার্ভ সংকট ও মূল্যস্ফীতির ফলে এসব দেশে নাগরিকদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা সত্ত্বেও বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, যদিও এ দেশ দুটির অর্থনীতি এ অঞ্চলের অন্য প্রতিবেশীদের চেয়ে অনেকটাই স্থিতিশীল।
দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা
ইউক্রেন যুদ্ধ ভারতসহ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারত ও বাংলাদেশের ভোজ্যতেলের বাজারে মূল্যস্ফীতি হয়েছে আকাশছোঁয়া। দুই দেশেরই আমদানি ও রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের অর্ডারের পরিমাণ কমেছে। তবে প্রতিবেশী দেশ দুটির অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের কারণে অর্থনীতি গভীর সংকটে পড়েনি। বিপরীতে শ্রীলঙ্কা-মালদ্বীপের মতো দেশগুলোর অর্থনীতি পর্যটন খাতের ওপর দাঁড়িয়ে থাকায় মহামারি ও যুদ্ধের ধাক্কায় সেখানকার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বাণিজ্য প্রধানত যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের সঙ্গে আবর্তিত হয়ে থাকে। রাশিয়ার সাথে আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত হওয়ায় এসব দেশের অর্থনীতিতেও মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। ফলে এসব দেশ দক্ষিণ এশিয়া থেকেও আমদানি কমিয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার রপ্তানি হ্রাসের মূল কারণ।
বর্ধিত জনসংখ্যা এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ধীরগতির অন্যতম কারণ। সেই সাথে মহামারি ও যুদ্ধে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির ফলে মাথাপিছু আয় কমে আসবে, যা জিডিপি প্রবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরবে। যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বাণিজ্যিক অবরোধের ধাক্কায় এ অঞ্চলের আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে, যা কতদিনে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।
যুদ্ধের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জনগোষ্ঠী বিদেশের শ্রমবাজারের ওপর নির্ভরশীল। নেপালের জিডিপির ২৭ শতাংশ আসে রেমিট্যান্স থেকে। ভারত বিশ্বের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স সংগ্রহকারী দেশ। কিন্তু উন্নত দেশগুলোতেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি কমতে থাকায় এসব দেশ থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাচ্ছে। মহামারির কারণে ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ার বৈদেশিক রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৪০ বিলিয়ন ডলার থেকে ১২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার গ্রামাঞ্চলগুলো মূলত কৃষিভিত্তিক। মহামারিকালীন কৃষিপণ্যের পরিবহন ও রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতি ও এ খাতের ওপর নির্ভরশীল বিশাল জনগোষ্ঠীর জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। মহামারির ধাক্কায় অনানুষ্ঠানিক খাতও বিপর্যস্ত হয়েছে। সরকার এ খাতের উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ নিলেও প্রায় সময়ই এর সমস্যাগুলো উন্নয়ন কার্যক্রমের আড়ালে থেকে যায়। তেলের দাম বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রিত না হলে অনানুষ্ঠানিক খাত মুখ থুবড়ে পড়বে।
মহামারি খাদ্য পরিবহন ও সাপ্লাই চেইনকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করেছে। পর্যাপ্ত উৎপাদন সত্ত্বেও তা ভোক্তার কাছ পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ফলে উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়ই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আন্তঃসীমান্ত পরিবহন বন্ধ থাকায় ও অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যবস্থা সীমিত করায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিঘ্নিত হয় এবং একই সঙ্গে স্থানীয় ফুড মার্কেটও স্থবির হয়ে যায়। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বের অন্যতম খাদ্য রপ্তানিকারক দুটি দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খাদ্য রপ্তানি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায়ও সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে খাদ্যসংকট তৈরি হয়েছে।
বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতেও মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৩০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। খাদ্যসংকট এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে মূল্যস্ফীতির বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনের উদ্বাস্তু শরণার্থীদের প্রতি পশ্চিমের মনোযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশে বসবাসরত বিশ্বের সর্ববৃহৎ শরণার্থী জনগোষ্ঠীর ওপর থেকে মিডিয়ার মনোযোগও সরে গেছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার উদ্ভূত অর্থনৈতিক সংকট থেকে বাঁচতে সেখানকার একটি জনগোষ্ঠীর ভারতে আশ্রয় নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেরই আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
প্রয়োজন দুই দেশের সহযোগিতা
বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি সহযোগিতাসহ বিভিন্ন অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ সেপ্টেম্বর থেকে দিল্লি সফরে আছেন। এর আগে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও সংযোগ বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা করেন। চলমান সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান সফরের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে তা দেশ দুটির অর্থনীতির গতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। তারপরও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছিল ১০ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার, যদিও এ হিসাব করা হয়েছে অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য, আন্ডার ইনভয়েসিং, বাংলাদেশ থেকে ভারতের রেমিট্যান্স এবং ভারতে বাংলাদেশের মেডিক্যাল ও পর্যটনের হিসাবকে বাইরে রেখে। বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার রোধে দুই দেশকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পণ্য পরিবহনে বিভিন্ন জটিলতা রোধে কাস্টমসের প্রক্রিয়াগুলো আরও সহজ করতে হবে। পণ্য পরিবহন সহজ করতে বন্দরের অবকাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা বাড়াতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের প্রথম দিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে ভারত কোনো জরুরি পণ্যের রপ্তানি বন্ধ করলে তা আগে থেকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এতে বাংলাদেশ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।
খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি প্রযুক্তির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এশিয়া প্যাসিফিক দেশগুলোর মধ্যে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষায় সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। মার্চ মাসে জি-৭ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তা মিশন ঘোষণা করেন, যেখানে তিনি আফ্রিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করার কথা বলেন। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার সাফল্য উন্নত দেশগুলোকে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ করছে। বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষিপণ্যের অন্যতম ক্রেতা দেশ ভারত। ভারতের সাথে আমদানি ও রপ্তানির নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে পারলে বাংলাদেশের কৃষি খাত লাভবান হবে।
প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে কুশিয়ারা নদীর ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলনের ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। এ পানি উত্তোলন করতে পারলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে।
নদী শুকিয়ে যাওয়ায় শীতকালে নেপাল ও ভুটান দুই প্রতিবেশী দেশ মারাত্মক বিদ্যুৎ সংকটে পড়ে। ভুটানের সাথে জলবিদ্যুৎ সহযোগিতার চুক্তির জন্য বাংলাদেশ ভারতের সমর্থন প্রত্যাশী। আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ রপ্তানি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সাথে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক রয়েছে। নেপাল ও ভুটানের সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংযোগ তৈরির জন্য ভারতের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট নিতে হবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটানের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুতের বাজার বিস্তৃত করা সম্ভব, যা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সহযোগিতার সম্পর্কের ওপর নির্ভর করছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভারতের সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠককালে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
ফলপ্রসূ সহযোগিতা বৃদ্ধির অন্যতম পূর্বশর্ত হলো সংযোগ বৃদ্ধি। ট্রানজিট বৃদ্ধির মাধ্যমে এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলের মধ্যে টেকসই ও কার্যকরভাবে পণ্যের বিনিময় করা সম্ভব। ২০১৬ সাল থেকে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহন সহজ করার জন্য অত্যন্ত কম ট্রানজিট ফিতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি মোংলা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ থেকে ট্রানজিট সুবিধা পেলেও ভুটান ও নেপালের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য সহজ করার জন্য নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে না ভারত। ট্রানজিট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব দুই দেশেরই বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে।
সড়ক, রেলপথ ও বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভারত বাংলাদেশকে সম্প্রতি ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে বাংলাদেশ ভারত থেকে ঋণ সহযোগিতা পেয়েছে, যার মধ্যে আছে আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ সংস্কার ও ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন প্রকল্প। বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবিত ভারত-বাংলাদেশ সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সেপা) সইয়ের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নতুন গতি পাবে। সীমান্ত হাট বৃদ্ধি, আমদানি-রপ্তানি শুল্ক মওকুফ, পণ্য পরিবহন প্রক্রিয়া সহজীকরণ, অবকাঠামোগত উন্নতি প্রভৃতি সেপার অন্যতম লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে সেপা চুক্তি সই হবে তার অন্যতম সফলতা।
বিদ্যমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক সহযোগিতা দুই দেশের জন্যই ‘উইন উইন সিচুয়েশন’ তৈরি করবে। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য, যোগাযোগ, জ্বালানি ও খাদ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উভয়ের অর্থনীতিই লাভবান হবে, যা এ অঞ্চলের অন্য অর্থনীতিগুলো থেকে বাংলাদেশ ও ভারতকে ব্যতিক্রমী করে তুলবে।
নিশাত তাসনীম: দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ও নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষক।
আরও পড়ুন:
দেশে চলমান ডলার সংকট সমাধানে বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। এরপরও সংকটের সমাধান হচ্ছে না। বাজার নিয়ন্ত্রণে রিজার্ভ থেকে ধারাবাহিকভাবে ডলার বিক্রি করছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
এমন পরিস্থিতিতে এক সপ্তাহের ব্যবধানে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমেছে ৫৩৩ দশমিক ৮২ মিলিয়ন ডলার। মূলত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডলার বিক্রির কারণে রিজার্ভ কমেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২৭ মার্চ পর্যন্ত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪৫ বিলিয়ন ডলার। এক সপ্তাহ আগে বা ২০ মার্চ তা ছিল ১৯ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ২১ বিলিয়ন ডলারের উপরে। এরপর এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) ১ দশমিক ৩৫ বিলিয়ন ডলার আমদানি বিল পরিশোধ এবং বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে ডলার বিক্রির ছাড়পত্রের পর রিজার্ভ ১৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে গেছে।
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি বিল মেটাতে রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি অব্যাহত রেখেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
ডলার সংকট কাটাতে চলতি বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি কারেন্সি সোয়াপ কার্যক্রম চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর আওতায় প্রায় ১৭৫ কোটি ডলার রেখে প্রায় ১৯ হাজার কোটি টাকার বেশি তারল্য সহায়তা নিয়েছে সংকটে থাকা কয়েকটি ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর জমা রাখা ডলার বৈদেশিক মুদ্রার গ্রস রিজার্ভে যোগ হচ্ছে। এর মাধ্যমে রিজার্ভ বাড়ানোর চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে চলতি মাসে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়ন (আকু) ও অন্যান্য আমদানি বিল পরিশোধের চাপে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমছে।
ব্যাংকিং শিল্প-সংশ্লিষ্টরা সংবাদ মাধ্যমেক বলেন, সংকটের কারণে রিজার্ভ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রচুর ডলার বিক্রি করছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে মুদ্রা অদলবদলের মাধ্যমে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোও ডলার ফেরত নিচ্ছে।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য নির্ধারিত স্থান ও সোনাহাট স্থলবন্দর এলাকা পরিদর্শন করেছেন ভুটানের রাজা জিগমে খেসার ওয়াংচুক।
বৃহস্পতিবার সৈয়দপুর বিমানবন্দরে নেমে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউজে পৌঁছান তিনি। সেখানে বিশ্রাম ও দুপুরের খাবারের পর জেলা শহরের কাছে ধরলা সেতুর পূর্ব প্রান্তে অবস্থিত প্রস্তাবিত ভুটান বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শন করেন।
দুপুর ১টা ২০ মিনিটে সেখানে পৌঁছান তিনি। সেখানে প্রায় ২০মিনিট অবস্থান করে সবকিছু দেখেন এবং তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাজা স্থান নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন।
এ সময় তিনি এলাকাটি ঘুরে দেখেন এবং সবার সঙ্গে ছবি তোলেন। পরিদর্শনকালে জোন এলাকাটি তার পছন্দ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ ছাড়াও ইকোনোমিক জোন এলাকায় অ্যাগ্রোবেজড ও ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজ হওয়ার সম্ভাবনার রয়েছে বলে তিনি আভাস দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, ভুটানের বিনিয়োগকারী এবং বাংলাদেশের স্থানীয়দের চাহিদার ওপর নির্ভর করবে ইকোনোমিক জোনে কী ধরনের শিল্প কারখানা স্থাপন করা হবে। পরে জোন এলাকা থেকে তিনি ১টা ৪০ মিনিটে সোনাহাট স্থলবন্দরের উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করেন।
এ সময় তথ্যমন্ত্রী এম এ আরাফাত, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল হক খন্দকার, সংসদ সদস্য বিপ্লব হাসান পলাশ, বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ ও পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
রাজা জিগমে খেসার ওয়াংচুক বলেন, ‘জায়গাটি আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। আমি কাজ শুরু হলে আবারও এখানে আসব।’
এরপর বিকেল পৌনে ৩টার দিকে তিনি সোনাহাট স্থলবন্দর এলাকায় পৌঁছান। সেখানে ২০ মিনিট অবস্থানের পর তিনি স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের আসাম রাজ্যের গোলকগঞ্জ দিয়ে ভুটানের উদ্দেশে ভারতে প্রবেশ করেন। সোনাহাট থেকে সড়ক পথে ভুটানের দূরত্ব প্রায় ১৬০ কিলোমিটার।
সফর শেষে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন বলেন, ‘উনি শতভাগ সন্তষ্ট। জায়গা দেখেছেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা দেখেছেন। সবকিছু মিলিয়ে উনি সন্তষ্টি প্রকাশ করেছেন।’
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এখানে কী ধরনের কার্যক্রম হতে পারে, সে বিষয়ে রাজা জানিয়েছেন, এখানকার স্থানীয় লোকজনের কী ধরনের চাহিদা রয়েছে এবং ভুটানের বিনিয়োগকারী লোকজনের কী চাহিদা রয়েছে- তার ওপর ভিত্তি করে এখানে কী ধরনের শিল্পকারখানা হবে তা নির্ধারণ করা হবে। তবে কৃষিনির্ভর ও ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।’
এ অর্থনৈতিক অঞ্চলে প্রায় ১০/২০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে জানান তিনি।
কুড়িগ্রাম-২ আসনের সংসদ সদস্য ডা. হামিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই সফরের মধ্য দিয়ে অনুন্নত কুড়িগ্রাম উন্নয়নের দিকে ধাবিত হবে। ২০১৬ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী অর্থনৈতিক জোনের জন্য জায়গা খুঁজতে বলেছিলেন। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমরা সফলতার মুখ দেখছি।
‘এটি বাস্তবায়ন হলে এলাকার বেকার মানুষ কাজ পাবে। সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাবে পিছিয়ে পড়া এই জেলা।’
আরও পড়ুন:ঈদের ছুটির আগেই গার্মেন্টসসহ সব সেক্টরের শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে হবে। ঈদের আগে কোনো শ্রমিক ছাঁটাই করা যাবে না। আর কোনোক্রমেই ঈদের ছুটি সরকারি ছুটির কম হবে না। সূত্র: ইউএনবি
ত্রিপক্ষীয় পরামর্শ পরিষদের (টিসিসি) ৭৭তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মো. নজরুল ইসলাম চৌধুরী। বুধবার শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘মালিক-শ্রমিক উভয়ের মধ্যে আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করে যাতায়াতের সুবিধা অনুযায়ী আসন্ন ঈদের ছুটি দেয়া হবে।’
সভায় অংশ নেন- শ্রম ও কর্মসংস্থান সচিব মো. মাহবুব হোসেন, শ্রম অধিদপ্তরে মহাপরিচালক মো. তরিকুল আলম, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি আরদাশির কবির, বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টারস এসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) প্রেসিডেন্ট ফারুক হাসান, বাংলাদেশ মুক্ত শ্রমিক ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. শহীদুল্লাহ বাদল এবং বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ডা. ওয়াজেদুল ইসলাম খান।
আরও পড়ুন:ভারত থেকে ৫০ হাজার টন পেঁয়াজ আমদানির সিদ্ধান্ত হয়েছে। আর তা আমদানি করবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অফ বাংলাদেশ (টিসিবি)।
বুধবার অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়। সূত্র: ইউএনবি
তবে বৈঠকে পেঁয়াজের দাম প্রকাশ করা হয়নি। কারণ প্রস্তাবটি অনুমোদনের জন্য আবারও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আসবে।
প্রস্তাব অনুযায়ী, ভারতের ন্যাশনাল কো-অপারেটিভ এক্সপোর্ট লিমিটেডের কাছ থেকে জিটুজি (সরকার বনাম সরকার) ভিত্তিতে এসব পেঁয়াজ আমদানি করবে টিসিবি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন অতিরিক্ত সচিব সাংবাদিকদের জানান, ক্রয় প্রস্তাবটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে আসার পর পেঁয়াজের দাম প্রকাশ করা হতে পারে।
চালু হয়েছে শিল্প গোষ্ঠী কল্লোল গ্রুপ অফ কোম্পানির নিজস্ব ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম কল্লোলমার্ট ডটকম।
বাংলাদেশে অন্যতম দ্রুত-সম্প্রসারণশীল ভোগ্যপণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতকারী সব পণ্যের সমাহার নিয়ে অনলাইন জগতে প্ল্যাটফর্মটির যাত্রা শুরু হয়।
এর মধ্য দিয়ে ভোক্তাদের কাছে কম মূল্যে মানসম্পন্ন নিজস্ব পণ্য সহজলভ্যে পৌঁছে দিতে চায় কল্লোল গ্রুপ।
এখন থেকে ই-কমার্স সাইট ‘kallolmart.com’ এর মাধ্যমে ক্যাশ অন ডেলিভারি সুবিধা কাজে লাগিয়ে ভোক্তারা দেশের যেকোনো জায়গা থেকে ঘরে বসে সহজেই কল্লোল গ্রুপের জেট ডিটারজেন্ট পাউডার, জেট লিকুইড, ফে টিস্যু, ফে এয়ার ফ্রেশনার, ফে কটন বাডস, ফে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মামা নুডলস, নিউট্রি-সি, সিস্টেমা টুথ ব্রাশ, মামা ডিশ ওয়াস, উজালাসহ যেকোনো পণ্য কিনতে পারবেন।
কল্লোল গ্রুপ অফ কোম্পানিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ভোক্তাদের সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার লক্ষ্যেই তৈরি হয় আমাদের নিজস্ব ই-কমার্স সাইট কল্লোলমার্ট ডটকম। এ ছাড়াও ভোক্তারা এখন তাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত ও প্রিয় ব্র্যান্ডের পণ্যগুলো কল্লোল মার্টের মাধ্যমে আকর্ষণীয় মূল্যে দ্রুত ও নিরাপদে নিজেদের দোরগোড়ায় পেতে পারেন।’
কল্লোল গ্রুপ অব কোম্পানিজের হেড অফ ডিজিটাল মার্কেটিং রিফাত আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশের ঘরে ঘরে কল্লোল গ্রুপের পণ্য পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যেই আমাদের নিজস্ব ই-কমার্স সাইট kallolmart.com-এর যাত্রা শুরু। এ ছাড়াও কল্লোল মার্ট ভোক্তাদের নিজস্ব ও প্রকৃত পণ্যের নিশ্চয়তাও দিচ্ছে, যা তাদের গুণগত মান নিশ্চিত করবে।
‘গ্রাহকদের সর্বোত্তম সেবা বিবেচনায় বর্তমানে আমরা দেশজুড়ে ফ্রি হোম ডেলিভারির সুবিধা দিচ্ছি এবং পণ্য বুঝে পাওয়ার পরই গ্রাহক মূল্য পরিশোধ করতে পারবেন। খুব শিগগিরই অনলাইন পেমেন্ট সুবিধা যুক্ত করা হবে।’
রমজানে চাহিদা বাড়ায় ভারত থেকে আমদানি করা আলুর আরেকটি চালান বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে দেশে এসেছে।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, ভারতের পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ১৩ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ৩২টি ট্রাকে এক হাজার টন আলু নিয়ে আসা হয়েছে বেনাপোলে।
আলুর আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হলো ইন্টিগ্রেটেড ফুড অ্যান্ড বেভারেজ এবং রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ভারতের পেপসিকো ইন্ডিয়া হোল্ডিংস। আলুর চালান বন্দর থেকে খালাস নিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করেছে ট্রান্সমেরিন সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট নামের একটি প্রতিষ্ঠান।
বেনাপোল চেকপোস্ট কার্গো শাখার রাজস্ব কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বুধবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ‘ভারতের পেট্রাপোল বন্দর হয়ে ১৩ ও ১৪ মার্চ ২০০ টন করে এবং ১৯ মার্চ ৩০০ ও ২৪ মার্চ রাতে ৩০০ টন আলু আমদানি করা হয়।’
ট্রান্সমেরিন লজিস্টিক লিমিটেড সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের প্রতিনিধি মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘চারটি চালানে ভারতীয় ৩২টি ট্রাকে এক হাজার টন আলু আমদানি করা হয়। প্রতি টন আলুর আমদানি খরচ পড়েছে ১৯৪ ডলার।’
এ বিষয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ‘আমদানি করা আলুর তিনটি চালানের ৭০০ টন ইতোমধ্যে বন্দর থেকে খালাস করা হয়েছে। শেষ চালানের ৩০০ টন বন্দরে খালাসের অপেক্ষায় আছে।
‘আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান খালাসের অনুমতি চাইলে দ্রুত ছাড়করণে সব ধরনের সহায়তা করা হবে।’
এর আগে গত বছরের ২ ডিসেম্বর ভারত থেকে তিনটি ট্রাকে ৭৪ টন আলু আমদানি করা হয়। এরপর চলতি মাসে চারটি চালানে আরও এক হাজার টন আলু আমদানি করা হয়েছে।
পাঠাও-বাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, নিয়ে এলো ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা ‘পাঠাও পে’। এটি একটি অত্যাধুনিক ডিজিটাল ওয়ালেট সেবা, যার লক্ষ্য বাংলাদেশের ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল ল্যান্ডস্কেপ বদলে দেওয়া। পাঠাও পে-এর বিশাল পরিধির সেবা আর্থিক লেনদেনকে সহজতর করবে, যাতে এর ব্যবহারকারীগণ যেভাবে চান সেভাবে লেনদেন করতে পাবেন, প্রয়োজনে অর্থের যোগান পাবেন এবং যেভাবে উচিত সেভাবে নিজের আয়-ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। এই সফট লঞ্চে, শুধুমাত্র ছোট পরিসরে মনোনীত ইউজারদের পাঠাও-এর ইনার সার্কেল-এ যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে, যারা পাবেন পাঠাও পে-এর প্রিমিয়াম ফিচারগুলোর এক্সক্লুসিভ এক্সেস ও এক্সাইটিং সব অফার।
পাঠাও পে বিভিন্ন সার্ভিস প্রদানের মাধ্যমে পেমেন্ট এক্সপেরিয়েন্সকে দ্রুত, ফ্লেক্সিবল এবং ঝামেলাহীন করবে। ব্যবহারকারীগণ পাবেন কিছু নতুন ধরনের সুবিধা, যেমন: Split Pay-এর মতো আকর্ষণীয় ফিচার, যা একাধিক ব্যবহারকারীদের নিজেদের মধ্যে বিলটি ভাগ করে পরিশোধ করার সুবিধা দিবে। এছাড়াও রয়েছে ATOM, যা ব্যবহারকারীদের পাঠাও পে ব্যবহার করে ওয়ালেটে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স না থাকলেও সরাসরি সোর্স অফ ফান্ড থেকে সেই সময়েই অর্থ পরিশোধ করার সুযোগ দিবে। ইউজারগণ তাদের কার্ড, ব্যাংক ট্রান্সফার বা নগদ-এর মাধ্যমে সহজেই ফান্ড অ্যাড করতে পারবেন। ফান্ড জমা হলেই, ইউজার তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, কার্ড বা পার্টনার এটিএম-এ ক্যাশআউট অপশন থেকে ক্যাশ টাকা তুলতে পারবেন।
এই সফট লঞ্চে থাকছে ব্যবহারকারীদের জন্য বিশাল ক্যাশব্যাক পাওয়ার একটি দুর্দান্ত সুযোগ। প্রত্যেক ব্যবহারকারী পাঠাও পে-এর মাধ্যমে পাঠাও সার্ভিসের জন্য পেমেন্ট করে পাবেন ৫৫০ টাকা পর্যন্ত, ৫০% ক্যাশব্যাক। পাঠাও ফুড-এর দু’টি অর্ডারে পাঠাও পে দিয়ে পেমেন্ট করে পাবেন সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা ক্যাশব্যাক (প্রতি অর্ডারে ১২৫টাকা পর্যন্ত)। একইভাবে, পাঠাও কার-এর দু’টি রাইডে পাবেন সর্বোচ্চ ২০০ টাকা ক্যাশব্যাক (প্রতি রাইডে ১০০টাকা পর্যন্ত), পাঠাও বাইক-এর দুটি রাইডে পাবেন সর্বোচ্চ ১০০ টাকা ক্যাশব্যাক (প্রতি রাইডে ৫০ টাকা পর্যন্ত)। ইউজার এই ক্যাশব্যাক পাবেন ক্রেডিট ট্রানজেকশন হওয়ার পরবর্তী কার্যদিবসে।
দেরি না করে এখনই আপডেট করে ফেলুন পাঠাও অ্যাপ অথবা জয়েন করুন ইনার সার্কেল-এর ওয়েটলিস্টেঃ https://forms.gle/nJZFG4jGtF61sEME8
এই লঞ্চের মাধ্যমে পাঠাও পে, পাঠাও-এর ডিজিটাল ইকোসিস্টেমের পরিধি উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি করেছে, এবং সার্বজনীন ও সহজতর ফিন্যান্সিয়াল ল্যান্ডস্কেপে ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে, যা বাংলাদেশী ব্যবহারকারীদের জন্য স্বাচ্ছন্দ্য-পূর্ণ, সুবিধাজনক হয়ে আর্থিক ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।
২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত পাঠাও বাংলাদেশের ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরির মাধ্যমে নতুন সুযোগ সৃষ্টি, সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন ও জীবনমানের উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে। পাঠাও বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ ডিজিটাল সার্ভিস প্ল্যাটফর্ম; রাইড শেয়ারিং, ফুড ডেলিভারি ও ই-কমার্স লজিস্টিকস সেবা খাতের শীর্ষ প্রতিষ্ঠান। পাঠাও আপনাদের সাথে আছে ১ কোটিরও বেশি গ্রাহক এবং ৩ লাখ চালক-ডেলিভারি এজেন্ট, ১ লক্ষ মার্চেন্ট ও ১০ হাজার রেস্টুরেন্টের সুবিশাল নেটওয়ার্ক নিয়ে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশে ৫ লক্ষেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি করেছে পাঠাও এবং তাঁদের উপার্জনক্ষম করে তোলার পাশাপাশি বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতিতে ও অবদান রাখছে। প্রেস রিলিজ
মন্তব্য