× হোম জাতীয় রাজধানী সারা দেশ অনুসন্ধান বিশেষ রাজনীতি আইন-অপরাধ ফলোআপ কৃষি বিজ্ঞান চাকরি-ক্যারিয়ার প্রযুক্তি উদ্যোগ আয়োজন ফোরাম অন্যান্য ঐতিহ্য বিনোদন সাহিত্য শিল্প ইভেন্ট উৎসব ধর্ম ট্রেন্ড রূপচর্চা টিপস ফুড অ্যান্ড ট্রাভেল সোশ্যাল মিডিয়া বিচিত্র সিটিজেন জার্নালিজম ব্যাংক পুঁজিবাজার বিমা বাজার অন্যান্য ট্রান্সজেন্ডার নারী পুরুষ নির্বাচন রেস অন্যান্য আফগানিস্তান ১৫ আগস্ট কী-কেন স্বপ্ন বাজেট আরব বিশ্ব পরিবেশ বিশ্লেষণ ইন্টারভিউ মুজিব শতবর্ষ ভিডিও যৌনতা-প্রজনন মানসিক স্বাস্থ্য অন্যান্য উদ্ভাবন প্রবাসী আফ্রিকা ক্রিকেট শারীরিক স্বাস্থ্য আমেরিকা দক্ষিণ এশিয়া সিনেমা নাটক মিউজিক শোবিজ অন্যান্য ক্যাম্পাস পরীক্ষা শিক্ষক গবেষণা অন্যান্য কোভিড ১৯ ইউরোপ ব্লকচেইন ভাষান্তর অন্যান্য ফুটবল অন্যান্য পডকাস্ট বাংলা কনভার্টার নামাজের সময়সূচি আমাদের সম্পর্কে যোগাযোগ প্রাইভেসি পলিসি

মতামত
Cooperation between the two countries is essential to overcome the economic crisis
google_news print-icon

অর্থনৈতিক সংকট উত্তরণে দুই দেশের সহযোগিতা জরুরি

অর্থনৈতিক-সংকট-উত্তরণে-দুই-দেশের-সহযোগিতা-জরুরি
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা সত্ত্বেও বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, যদিও এ দেশ দুটির অর্থনীতি এ অঞ্চলের অন্য প্রতিবেশীদের চেয়ে অনেকটাই স্থিতিশীল।

২ দশমিক ৯৪ ট্রিলিয়ন ডলার জিডিপির ভারত বিশ্বের পঞ্চম অর্থনীতির দেশ। ভারতের মোট বাণিজ্যের ১ দশমিক ৭ থেকে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হয় দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের সঙ্গে। নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক জন্মলগ্ন থেকে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের অবদান বাংলাদেশ সব সময়ই কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করে থাকে। দুই দেশের অর্থনৈতিক, কূটনৈতিক সম্পর্ক সব সময়ই পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতার ভিত্তিতে আবর্তিত হয়ে আসছে। অন্যদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে সর্ববৃহৎ সীমান্ত হওয়ায় ট্রানজিট, নিরাপত্তা, বাণিজ্য ও অন্যান্য অর্থনেতিক কর্মকাণ্ডের জন্য ভারত বাংলাদেশের ওপর অনেকখানি নির্ভরশীল।

করোনা মহামারির ফলে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি এক কঠিন সংকট মোকাবিলা করেছে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ। যুদ্ধের ফলে বিশ্বজুড়ে অর্থনীতি আবারও খাদের কিনারায় এসে ঠেকেছে। এর মধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ায় শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তান গভীর সংকটে পতিত হয়েছে। মালদ্বীপ, ভুটান ও নেপালের অর্থনীতিও আক্রান্ত। রিজার্ভ সংকট ও মূল্যস্ফীতির ফলে এসব দেশে নাগরিকদের জীবনযাপন দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা সত্ত্বেও বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিবেশী দেশ ভারত ও বাংলাদেশ উভয়ই অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, যদিও এ দেশ দুটির অর্থনীতি এ অঞ্চলের অন্য প্রতিবেশীদের চেয়ে অনেকটাই স্থিতিশীল।

দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে অর্থনৈতিক অস্থিরতা

ইউক্রেন যুদ্ধ ভারতসহ বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর অর্থনীতিকে চাপে ফেলেছে। রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে ভারত ও বাংলাদেশের ভোজ্যতেলের বাজারে মূল্যস্ফীতি হয়েছে আকাশছোঁয়া। দুই দেশেরই আমদানি ও রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পের অর্ডারের পরিমাণ কমেছে। তবে প্রতিবেশী দেশ দুটির অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যের কারণে অর্থনীতি গভীর সংকটে পড়েনি। বিপরীতে শ্রীলঙ্কা-মালদ্বীপের মতো দেশগুলোর অর্থনীতি পর্যটন খাতের ওপর দাঁড়িয়ে থাকায় মহামারি ও যুদ্ধের ধাক্কায় সেখানকার অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়েছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বাণিজ্য প্রধানত যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও চীনের সঙ্গে আবর্তিত হয়ে থাকে। রাশিয়ার সাথে আমদানি-রপ্তানি বিঘ্নিত হওয়ায় এসব দেশের অর্থনীতিতেও মন্দাভাব দেখা দিয়েছে। ফলে এসব দেশ দক্ষিণ এশিয়া থেকেও আমদানি কমিয়েছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার রপ্তানি হ্রাসের মূল কারণ।

বর্ধিত জনসংখ্যা এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক ধীরগতির অন্যতম কারণ। সেই সাথে মহামারি ও যুদ্ধে সৃষ্ট মূল্যস্ফীতির ফলে মাথাপিছু আয় কমে আসবে, যা জিডিপি প্রবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরবে। যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট বাণিজ্যিক অবরোধের ধাক্কায় এ অঞ্চলের আমদানি-রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে, যা কতদিনে শেষ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই।

যুদ্ধের ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হবে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক জনগোষ্ঠী বিদেশের শ্রমবাজারের ওপর নির্ভরশীল। নেপালের জিডিপির ২৭ শতাংশ আসে রেমিট্যান্স থেকে। ভারত বিশ্বের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স সংগ্রহকারী দেশ। কিন্তু উন্নত দেশগুলোতেও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি কমতে থাকায় এসব দেশ থেকে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাচ্ছে। মহামারির কারণে ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ সালে দক্ষিণ এশিয়ার বৈদেশিক রেমিট্যান্সের পরিমাণ ১৪০ বিলিয়ন ডলার থেকে ১২০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার গ্রামাঞ্চলগুলো মূলত কৃষিভিত্তিক। মহামারিকালীন কৃষিপণ্যের পরিবহন ও রপ্তানি ব্যাহত হওয়ায় গ্রামীণ অর্থনীতি ও এ খাতের ওপর নির্ভরশীল বিশাল জনগোষ্ঠীর জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। মহামারির ধাক্কায় অনানুষ্ঠানিক খাতও বিপর্যস্ত হয়েছে। সরকার এ খাতের উন্নয়নে কিছু পদক্ষেপ নিলেও প্রায় সময়ই এর সমস্যাগুলো উন্নয়ন কার্যক্রমের আড়ালে থেকে যায়। তেলের দাম বৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রিত না হলে অনানুষ্ঠানিক খাত মুখ থুবড়ে পড়বে।

মহামারি খাদ্য পরিবহন ও সাপ্লাই চেইনকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করেছে। পর্যাপ্ত উৎপাদন সত্ত্বেও তা ভোক্তার কাছ পর্যন্ত পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ফলে উৎপাদক ও ভোক্তা উভয়ই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। আন্তঃসীমান্ত পরিবহন বন্ধ থাকায় ও অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যবস্থা সীমিত করায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিঘ্নিত হয় এবং একই সঙ্গে স্থানীয় ফুড মার্কেটও স্থবির হয়ে যায়। এ ছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বের অন্যতম খাদ্য রপ্তানিকারক দুটি দেশ রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে খাদ্য রপ্তানি দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায়ও সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াতে খাদ্যসংকট তৈরি হয়েছে।

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতিতেও মূল্যস্ফীতি বেড়েই চলেছে। পাকিস্তানে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৩০ শতাংশ ছাড়িয়েছে। খাদ্যসংকট এবং জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে মূল্যস্ফীতির বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যুদ্ধ শুরুর পর ইউক্রেনের উদ্বাস্তু শরণার্থীদের প্রতি পশ্চিমের মনোযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বাংলাদেশে বসবাসরত বিশ্বের সর্ববৃহৎ শরণার্থী জনগোষ্ঠীর ওপর থেকে মিডিয়ার মনোযোগও সরে গেছে। অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার উদ্ভূত অর্থনৈতিক সংকট থেকে বাঁচতে সেখানকার একটি জনগোষ্ঠীর ভারতে আশ্রয় নেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশেরই আঞ্চলিক নিরাপত্তার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

প্রয়োজন দুই দেশের সহযোগিতা

বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জ্বালানি সহযোগিতাসহ বিভিন্ন অমীমাংসিত ইস্যু নিয়ে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ সেপ্টেম্বর থেকে দিল্লি সফরে আছেন। এর আগে নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশ সফর করেন। সে সময় দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধি ও সংযোগ বৃদ্ধির ব্যাপারে আলোচনা করেন। চলমান সংকটের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বর্তমান সফরের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে তা দেশ দুটির অর্থনীতির গতি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

এক দশকের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখযোগ্য মাত্রায়। তারপরও ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতি দাঁড়িয়েছিল ১০ দশমিক ২৭ বিলিয়ন ডলার, যদিও এ হিসাব করা হয়েছে অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য, আন্ডার ইনভয়েসিং, বাংলাদেশ থেকে ভারতের রেমিট্যান্স এবং ভারতে বাংলাদেশের মেডিক্যাল ও পর্যটনের হিসাবকে বাইরে রেখে। বাংলাদেশ থেকে অর্থ পাচার রোধে দুই দেশকেই কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। পণ্য পরিবহনে বিভিন্ন জটিলতা রোধে কাস্টমসের প্রক্রিয়াগুলো আরও সহজ করতে হবে। পণ্য পরিবহন সহজ করতে বন্দরের অবকাঠামো ও অন্যান্য সুবিধা বাড়াতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের প্রথম দিন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে ভারত কোনো জরুরি পণ্যের রপ্তানি বন্ধ করলে তা আগে থেকে জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন। এতে বাংলাদেশ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে।

খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি প্রযুক্তির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এশিয়া প্যাসিফিক দেশগুলোর মধ্যে কৃষি গবেষণা ও শিক্ষায় সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। মার্চ মাসে জি-৭ সম্মেলনে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ খাদ্য ও কৃষি নিরাপত্তা মিশন ঘোষণা করেন, যেখানে তিনি আফ্রিকাসহ মধ্যপ্রাচ্যের দরিদ্র দেশগুলোতে খাদ্য সরবরাহের জন্য বাংলাদেশের ওপর নির্ভর করার কথা বলেন। বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান খাদ্য ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তার সাফল্য উন্নত দেশগুলোকে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে উদ্বুদ্ধ করছে। বাংলাদেশের খাদ্য ও কৃষিপণ্যের অন্যতম ক্রেতা দেশ ভারত। ভারতের সাথে আমদানি ও রপ্তানির নিরবচ্ছিন্নতা বজায় রাখতে পারলে বাংলাদেশের কৃষি খাত লাভবান হবে।

প্রধানমন্ত্রীর এবারের সফরে কুশিয়ারা নদীর ১৫৩ কিউসেক পানি উত্তোলনের ব্যাপারে ভারতের সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার কথা রয়েছে। এ পানি উত্তোলন করতে পারলে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্তত ৫ হাজার হেক্টর জমি সেচের আওতায় আসবে।

নদী শুকিয়ে যাওয়ায় শীতকালে নেপাল ও ভুটান দুই প্রতিবেশী দেশ মারাত্মক বিদ্যুৎ সংকটে পড়ে। ভুটানের সাথে জলবিদ্যুৎ সহযোগিতার চুক্তির জন্য বাংলাদেশ ভারতের সমর্থন প্রত্যাশী। আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুৎ রপ্তানি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য ভারতের সাথে বাংলাদেশের সমঝোতা স্মারক রয়েছে। নেপাল ও ভুটানের সাথে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ সংযোগ তৈরির জন্য ভারতের মধ্য দিয়ে ট্রানজিট নিতে হবে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল, ভুটানের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুতের বাজার বিস্তৃত করা সম্ভব, যা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সহযোগিতার সম্পর্কের ওপর নির্ভর করছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠককালে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ভারতের সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠককালে আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান জানিয়েছেন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই ১৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

ফলপ্রসূ সহযোগিতা বৃদ্ধির অন্যতম পূর্বশর্ত হলো সংযোগ বৃদ্ধি। ট্রানজিট বৃদ্ধির মাধ্যমে এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলের মধ্যে টেকসই ও কার্যকরভাবে পণ্যের বিনিময় করা সম্ভব। ২০১৬ সাল থেকে ভারতের উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহন সহজ করার জন্য অত্যন্ত কম ট্রানজিট ফিতে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করার অনুমতি দিয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি মোংলা ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ। তবে বাংলাদেশ থেকে ট্রানজিট সুবিধা পেলেও ভুটান ও নেপালের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য সহজ করার জন্য নিজেদের ভূখণ্ড ব্যবহারের অনুমতি দিচ্ছে না ভারত। ট্রানজিট বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহযোগিতাপূর্ণ মনোভাব দুই দেশেরই বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহযোগিতা করবে।

সড়ক, রেলপথ ও বন্দর অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য ভারত বাংলাদেশকে সম্প্রতি ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্পে বাংলাদেশ ভারত থেকে ঋণ সহযোগিতা পেয়েছে, যার মধ্যে আছে আখাউড়া-আগরতলা রেল সংযোগ, অভ্যন্তরীণ নৌপথ সংস্কার ও ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী পাইপলাইন প্রকল্প। বাণিজ্য ও সংযোগ বৃদ্ধির জন্য প্রস্তাবিত ভারত-বাংলাদেশ সমন্বিত অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি (সেপা) সইয়ের মাধ্যমে দুই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নতুন গতি পাবে। সীমান্ত হাট বৃদ্ধি, আমদানি-রপ্তানি শুল্ক মওকুফ, পণ্য পরিবহন প্রক্রিয়া সহজীকরণ, অবকাঠামোগত উন্নতি প্রভৃতি সেপার অন্যতম লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রীর এ সফরে সেপা চুক্তি সই হবে তার অন্যতম সফলতা।

বিদ্যমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে ভারত ও বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক সহযোগিতা দুই দেশের জন্যই ‘উইন উইন সিচুয়েশন’ তৈরি করবে। দুই দেশের মধ্যকার বাণিজ্য, যোগাযোগ, জ্বালানি ও খাদ্য সহযোগিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে উভয়ের অর্থনীতিই লাভবান হবে, যা এ অঞ্চলের অন্য অর্থনীতিগুলো থেকে বাংলাদেশ ও ভারতকে ব্যতিক্রমী করে তুলবে।

নিশাত তাসনীম: দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতি ও নিরাপত্তাবিষয়ক গবেষক।

আরও পড়ুন:
পানি না দিলে ইলিশও দেব না, হাসতে হাসতে বললেন শেখ হাসিনা
আঞ্চলিক শান্তি, নিরাপত্তা বজায়ে একমত হাসিনা-মোদি
ভারত বন্ধুরাষ্ট্র, আলোচনা ফলপ্রসূ হবে: প্রধানমন্ত্রী
মহাত্মা গান্ধীর সমাধিতে শেখ হাসিনার শ্রদ্ধা
বৈঠকে শেখ হাসিনা-মোদি

মন্তব্য

আরও পড়ুন

মতামত
The 5th Intex Bangladesh Exhibition starts in Dhaka

ঢাকায় শুরু ১৬তম ইনটেক্স বাংলাদেশ এক্সিবিশন

ঢাকায় শুরু ১৬তম ইনটেক্স বাংলাদেশ এক্সিবিশন

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সফল গার্মেন্টস ক্রেতা, বিপনন ও সরবরাহকারী এবং সোর্সিং এক্সিবিশন খ্যাত ইনটেক্স বাংলাদেশের ১৬তম আসর আজ রাজধানীর আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি)-তে শুরু হয়েছে। এই তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল সোর্সিং শোতে ১০টিরও বেশি দেশের ১২৫টির অধিক কোম্পানি অংশ নিচ্ছে, যা বিশ্বব্যাপী ক্রেতা, সরবরাহকারী এবং উৎপাদনকারীদের জন্য একটি গতিশীল প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।

পোশাক খাতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে বাংলাদেশ-এর নিত্য উদ্ভাবনী কৌশল ও উন্নতমানের দ্রুত উৎপাদন ক্ষমতার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্রেতাদের চাহিদায় প্রাধান্য পাচ্ছে।

২০২৬ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক শিল্প রপ্তানি ৫৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ইনটেক্স-এর মতো প্ল্যাটফর্মগুলো অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা, সাপ্লাই চেইনে বৈচিত্র্য আনা এবং টেক্সটাইল ও পোশাক শিল্পে উদ্ভাবন প্রদর্শনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান, গেস্ট অব অনার হিসেবে ছিলেন রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন।

এছাড়াও বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং এলএবিসিসিআই, কেবিসিসিআই ও বিজিসিসিআই-এর মতো দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সংস্থার নেতৃবৃন্দও অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

মাহবুবুর রহমান বলেন, “বাংলাদেশ এখন পোশাক খাতে বিশ্ব বাজারের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি দ্রুত টেকসই ও মূল্য-সংযোজিত পোশাক উৎপাদনের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। উদ্ভাবন, কমপ্লায়েন্স এবং দক্ষ কর্মী নিয়োগে কৌশলগত বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশটি দায়িত্বশীল ফ্যাশন ও টেক্সটাইল সোর্সিংয়ের পরবর্তী অধ্যায় নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। আমরা বিশ্বাস করি, ইনটেক্স বাংলাদেশের মতো প্ল্যাটফর্মগুলো আমাদের কৌশলগত লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে, পাশাপাশি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক বাজারে মানসম্পন্ন পণ্য নিশ্চিত করবে”

এই বছরের এক্সপোতে বিভিন্ন দেশের উল্লেখযোগ্য প্যাভিলিয়নের মধ্যে ভারতের (টেক্সপ্রোসিল ও পেডেক্সিলের মাধ্যমে) তুলা, মিশ্র সুতা ও টেকসই টেক্সটাইল প্রদর্শন করছে। চীন নিয়ে এসেছে টেকনিক্যাল ফ্যাব্রিক ও গার্মেন্টস ট্রিম। দক্ষিণ কোরিয়া পরিবেশবান্ধব পারফরম্যান্স উপকরণ প্রদর্শন করছে। অন্যদিকে থাইল্যান্ড ও জাপান নিয়ে এসেছে প্রিমিয়াম শার্টিং ও বোনা পণ্য। বাংলাদেশি প্রদর্শনকারীরা নিটওয়্যার, ডেনিম এবং ভার্টিক্যালি ইন্টিগ্রেটেড উৎপাদন সমাধানের অগ্রগতি তুলে ধরছে।

এক্সপোর মূল্যবোধ আরও বাড়াতে ইন্টারেক্টিভ বিজনেস ফোরাম (আইবিএফ) দুটি সেশনের আয়োজন করেছে। প্রথম সেশনে টেক্সটাইল উৎপাদন ও ফ্যাশনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) সংযুক্তি নিয়ে আলোচনা করা হবে, অন্যদিকে দ্বিতীয় সেশনে বৈশ্বিক শুল্ক ও বাণিজ্য পরিবর্তনের বাংলাদেশি রপ্তানির প্রভাব নিয়ে আলোচনা হবে। এই সেশনগুলোতে এ শিল্পের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিরা অংশ নিচ্ছেন, যা ব্যবসায়িক স্থিতিস্থাপকতা ও বৃদ্ধির কৌশল প্রদান করবে।

প্রদর্শনীর পাশাপাশি, ইনটেক্স বাংলাদেশ ২০২৫-এ ব্যবসায়িক সভা (বি২বি), ভিআইপি নেটওয়ার্কিং এবং ক্রেতা-সরবরাহকারীদের মধ্যে ম্যাচমেকিং সুবিধা রয়েছে— যা সোর্সিং ও ব্যবসায়িক সম্প্রসারণের জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ অভিজ্ঞতা প্রদান করছে।

ওয়ার্ল্ডেক্স ইন্ডিয়ার আয়োজিত এই ইভেন্টটি বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, বিজিবিএ, ইপিবি এবং আইবিসিসিআই, এলেবিসিসিআই, কেবিসিসিআই ও বিজিসিসিআইয়ের মতো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সংস্থার সমর্থন পেয়েছে।

বাংলাদেশ যখন আরও উদ্ভাবনী ও টেকসই টেক্সটাইল ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে চলেছে, ইনটেক্স বাংলাদেশ বিশ্ব বাজারের সাপ্লাই চেইনের সাথে দেশটিকে সংযুক্ত করার একটি প্রধান সমর্থক হিসেবে কাজ করছে।

মন্তব্য

মতামত
Foreign investment in the country has decreased by 5 percent

দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩ শতাংশ

দেশে বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে ১৩ শতাংশ

দেশে ২০২৪ সালে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ—এফডিআই আগের বছরের চেয়ে ১৩ শতাংশ কমেছে। গত বছর প্রকৃত এফডিআই এসেছে ১২৭ কোটি ডলার। স্থানীয় মুদ্রায় যা প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকার সমপরিমাণ। ২০২৩ সালে নিট এফডিআই ছিল ১৪৬ কোটি ৪০ লাখ ডলার।

গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের বিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্টে বিদেশি বিনিয়োগ আসার ওই পরিসংখ্যান প্রকাশ করা হয়েছে।

বাংলাদেশে ২০২৪ সাল শেষে বিদেশি বিনিয়োগের স্থিতি ১ হাজার ৮২৯ কোটি ডলার, যা দেশের জিডিপির মাত্র ৪ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ায় এ ক্ষেত্রে গড় হার ১৩ শতাংশ।

ভারতের হার ১৪ শতাংশ। ভুটানের মতো দেশে এ হার ১৭ শতাংশ। বাংলাদেশে ২০২৪ সালে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগে অর্থের ঘোষণার পরিমাণও কমেছে।

ঘোষিত অর্থের পরিমাণ ১৭৫ কোটি ডলার। গত বছরের তুলনায় যা ৩৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে বিদেশে মাত্র ৭০ লাখ ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে। স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮৫ কোটি টাকা।

গত পাঁচ বছরের মধ্যে ২০২১ সালে দেশের বাইরে সর্বাধিক ৮ কোটি ডলারের বিনিয়োগ করেন বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ব যখন আরো গভীর সহযোগিতা ও বিস্তৃত সুযোগ সৃষ্টির দিকে এগিয়ে যাওয়ার কথা, তখন ঘটছে তার বিপরীত। ২০২৪ সালে বৈশ্বিকভাবে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) ১১ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ডলার, যা বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য একটি বড় ধাক্কা। অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগে মন্দা, শিল্প খাতে চাপ এবং উন্নয়নশীল দেশগুলোর প্রতি কম মনোযোগ উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। বাণিজ্য উত্তেজনা, নীতিগত অনিশ্চয়তা এবং ভূরাজনৈতিক বিভাজন বৈশ্বিক বিনিয়োগ পরিবেশকে আরো জটিল করে তুলছে।

তবে অন্ধকারে কিছুটা আশার আলোও রয়েছে। ডিজিটাল অর্থনীতিকে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও এর প্রবৃদ্ধি এখনো অসম। ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে ডিজিটাল পরিকাঠামোয় বিনিয়োগ অত্যন্ত জরুরি। কারণ, ডিজিটাল সংযুক্তি হতে পারে অন্তর্ভুক্তিমূলক অগ্রগতির একটি শক্তিশালী চালিকাশক্তি, যদি তা সবার কাছে পৌঁছানো যায়। প্রতিবেদনটি সরকারগুলোকে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগের মাধ্যমে গ্লোবাল ডিজিটাল কমপ্যাক্ট এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজিএস) অর্জনে সহায়তা করার বিষয়ে ব্যবহারিক নির্দেশনা দিয়েছে। এ সময়টাই সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একসঙ্গে কাজ করার, যাতে আরো সহনশীল ও টেকসই বিশ্ব গড়ে তোলা যায়। সে লক্ষ্যে প্রতিবেদনটি বিভিন্ন নীতিগত ধারণা ও পরামর্শ তুলে ধরেছে।

উল্লেখ্য, গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তন এবং এর আগ থেকে জ্বালানি সংকটের কারণে বিদেশি বিনিয়োগে নেতিবাচক প্রভাব তৈরি করে। যার প্রভাব কিছুটা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হলেও সেটি বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য সন্তোষজনক নয় বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

ওয়ার্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট রিপোর্ট ২০২৪ এ প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায়, ২০২০ সালের চেয়ে ২০২১ সালে এফডিআই প্রবাহ বেড়েছিল ১২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। ২০২২ সালে প্রবাহ ২০ দশমিক ১৬ শতাংশ বেড়ে ছিল ৩৪৮ কোটি ডলার। ২০২৩ সালে ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ কমে প্রবাহ হয়েছে ৩০০ কোটি ৪০ লাখ ডলারের। ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে ভিয়েতনামে বেড়েছে ৩ দশমিক ৩৫ শতাংশ। কম্বোডিয়ায় এফডিআই প্রবৃদ্ধি ২০২৩ সালে হয়েছে ১০ দশমিক ৬১ শতাংশ। পাকিস্তানে এফডিআই প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৪ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

২০২৩ সালে ৪৫টি স্বল্পোন্নত দেশে (এলডিসি) এফডিআই ১৭ শতাংশ বেড়ে ৩১ বিলিয়ন ডলারে দাড়িয়েছে। এর প্রায় ৫০ শতাংশ প্রবাহ কেন্দ্রীভূত ছিল কম্বোডিয়া, ইথিওপিয়া, বাংলাদেশ, উগান্ডা এবং সেনেগাল—এ পাঁচ দেশে। গত এক দশকে স্বল্পোন্নত দেশের বহিঃখাতগুলোয় অর্থায়নের অন্যান্য উৎসের তুলনায় এফডিআই প্রবৃদ্ধিই পিছিয়ে আছে। সামগ্রিকভাবে উন্নয়ন সহায়তা এবং রেমিট্যান্স হার স্বল্পোন্নত দেশের তুলনায় উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলোর তুলনায় বেশি। ওই বছর বৈশ্বিকভাবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রবাহ ১০ শতাংশের বেশি কমে ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলারে স্থবির ছিল।

মন্তব্য

মতামত
Bri has invented three new varieties of rice

নতুন আরো তিন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে ব্রি

নতুন আরো তিন জাতের ধান উদ্ভাবন করেছে ব্রি

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি) ধানের আরও তিনটি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে একটি লবণাক্ততা সহনশীল, একটি উচ্চফলনশীল বোরো এবং অন্যটি ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী। এ নিয়ে ব্রি আটটি উচ্চফলনশীল বা হাইব্রিড জাতসহ মোট ১২১টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে।

নতুন উদ্ভাবিত তিনটি জাত হলো; লবণাক্ততা সহনশীল ব্রি-১১২, উচ্চফলনশীল বোরো ব্রি-১১৩ ও ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ব্রি-১১৪। গত বুধবার জাতীয় বীজ বোর্ডের (এনএসবি) ১১৪তম সভায় নতুন এ তিনটি জাত অনুমোদন করা হয়।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ানের সভাপতিত্বে বোর্ড সভায় ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামানসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ জানায়, নতুন উদ্ভাবিত জাতগুলোর মধ্যে ব্রি ধান-১১২ লবণাক্ততা সহনশীল ও মাঝারি জীবনকালীন রোপা আমনের জাত। এ জাতের ডিগপাতা প্রচলিত ব্রি ধান-৭৩-এর চেয়ে খাড়া। ব্রি ধান-১১২ লবণাক্ততার মাত্রাভেদে হেক্টর প্রতি ৪ দশমিক ১৪ থেকে ৬ দশমিক ১২ টন ফলন দিতে সক্ষম। এ জাতের জীবনকাল ১২০ থেকে ১২৫ দিন এবং গাছের উচ্চতা ১০৩ থেকে ১০৫ সেন্টিমিটার। গাছের কাণ্ড মজবুত। এ কারণে ঢলে পড়ে না। এ জাতের ধানের চাল মাঝারি চিকন ও সাদা। ভাত ঝরঝরে। এটি লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। দানা মাঝারি চিকন ও শিষ থেকে ধান সহজে ঝরে পড়ে না। জীবনকাল তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় উপকূলীয় লবণাক্ত অঞ্চলে ফসল কর্তনের পর মধ্যম উঁচু থেকে উঁচু জমিতে সূর্যমুখী ও লবণ সহনশীল সরিষা আবাদের সুযোগ তৈরি হবে।

ব্রি ধান-১১৩ জাতটি বোরো মৌসুমের জনপ্রিয় জাত ব্রি-২৯-এর বিকল্প হিসেবে ছাড়করণ করা হয়েছে। এটি মাঝারি চিকন দানার উচ্চফলনশীল জাত। এ জাতের ডিগপাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা এবং ধান পাকলেও সবুজ থাকে। গাছ শক্ত ও মজবুত বিধায় সহজে হেলে পড়ে না। জাতটির গড় জীবনকাল ১৪৩ দিন। চালের আকার-আকৃতি মাঝারি চিকন ও রং সাদা। দেখতে অনেকটা নাজিরশাইলের মতো। এ ধানের চালে অ্যামাইলোজের পরিমাণ ২৮ শতাংশ এবং ভাত ঝরঝরে। এ ছাড়া প্রোটিনের পরিমাণ ৮ দশমিক ৪ শতাংশ। প্রস্তাবিত জাতের ফলন পরীক্ষায় দেখা গেছে, জাতটি ব্রি ধান-৮৮-এর চেয়ে ১১ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি ফলন দিয়েছে। এ জাতের গড় ফলন হেক্টরে ৮ দশমিক ১৫ টন। উপযুক্ত পরিবেশে সঠিক ব্যবস্থাপনা করলে জাতটি হেক্টরে ১০ দশমিক ১ টন পর্যন্ত ফলন দিতে সক্ষম।

কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, নতুন ব্রি ধান-১১৪ বোরো মৌসুমের দীর্ঘ জীবনকালীন ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী জাত। এ জাতের ডিগপাতা খাড়া, প্রশস্ত ও লম্বা। গাছ মজবুত এবং হেলে পড়ে না। পাতার রং গাঢ় সবুজ। এর গড় ফলন হেক্টরপ্রতি ৭ দশমিক ৭৬ টন। দানা মাঝারি মোটা এবং সোনালি বর্ণের। ভাত ঝরঝরে হয়। জাতটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, ব্লাস্ট রোগ প্রতিরোধী ক্ষমতাসম্পন্ন। ফলে এ জাতের ধান চাষে কৃষককে ব্লাস্ট রোগ নিয়ে বাড়তি চিন্তা করতে হবে না, উৎপাদন খরচ সাশ্রয় হবে।

ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান বলেন, জাতগুলো অনুমোদন লাভ করায় এখন আমরা এসব ধানের বীজ বাজারজাত করতে পারব। কৃষকেরা এ জাতের ধান চাষ করে লাভবান হবেন। তাদের উৎপাদনও বাড়বে। উপকূলীয় অঞ্চলে পানিতে লবণের পরিমাণ বেশি থাকায় অনেক সময় ধান চাষ করা যেত না। এখন আমাদের ব্রি ধান-১১২ সেসব এলাকায় সহজে চাষ করা যাবে। এ ছাড়া অন্য জাতগুলো আমাদের ধান উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমরা আশাবাদী।

সূত্র: বাসস

মন্তব্য

মতামত
Customs VAT and Tax Office will be open on June 23 and 26

২১ ও ২৮ জুন কাস্টমস, ভ্যাট ও কর কার্যালয় খোলা থাকবে

২১ ও ২৮ জুন কাস্টমস, ভ্যাট ও কর কার্যালয় খোলা থাকবে

আগামী ২১ ও ২৮ জুন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এবং এর অধীনে সব কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর কার্যালয় খোলা থাকবে। শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও ওই দুই দিনও খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

মূলত রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট কার্যক্রম চলমান রাখার জন্য এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে এনবিআর। গতকাল বুধবার এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করেছে এনবিআর। গত ২ জুন আগামী অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২২ জুন বাজেট চূড়ান্ত হওয়ার কথা রয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে (জুলাই-মে) মোট ৩ লাখ সাড়ে ২১ হাজার কোটি টাকা আদায় করেছে। এটি সাময়িক হিসাব। ভ্যাটের রিটার্ন দাখিলের হিসাবের এই সংখ্যা আরও বাড়বে। লক্ষ্য অর্জনে শুধু জুন মাসেই সব মিলিয়ে ১ লাখ ৪২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে এনবিআরকে।

এনবিআরকে চলতি অর্থবছরের জন্য ৪ লাখ ৬৩ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সংশোধিত রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য দেওয়া হয়েছে। মূল লক্ষ্য ছিল ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা।

মন্তব্য

মতামত
From now on the dollar will be market based Governor

এখন থেকে ডলারের দাম হবে বাজারভিত্তিক: গভর্নর

জুনের মধ্যে আইএমএফের ঋণের চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়
এখন থেকে ডলারের দাম হবে বাজারভিত্তিক: গভর্নর

বাজার পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে উল্লেখ করে ডলার-টাকার বিনিময় হার এখন থেকে বাজারনির্ভরভাবে নির্ধারণের সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে দুবাই থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ ঘোষণা দেন।

এ সিদ্ধান্তের ফলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) থেকে বাংলাদেশ আগামী জুন মাসের মধ্যে ১৩৩ কোটি ডলারের ঋণ কিস্তি পাবে বলেও জানান তিনি।

ডলারের দাম বাজারভিত্তিক করা নিয়ে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে কয়েক মাস ধরে বাংলাদেশের দর-কষাকষি চলছিল। মূলত সে কারণে আইএমএফ ঋণের কিস্তি ছাড় করছিল না। এর মধ্যে গতকাল জানা যায়, বাংলাদেশ ডলারের বিনিময় আরও নমনীয় করতে রাজি হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে চলমান ৪৭০ কোটি ডলারে ঋণের দুটি কিস্তি একসঙ্গে ছাড় করতে রাজি হয়েছে আইএমএফ।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, গত ৯ মাসে রিজার্ভ থেকে কোনো ডলার বিক্রি করা হয়নি, তবুও বিনিময় হার স্থিতিশীল রয়েছে এবং তাতে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো হস্তক্ষেপ ছিল না। এ অবস্থায় বাজারভিত্তিক বিনিময় হার চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে ব্যাংকারদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, বাজারভিত্তিক করায় হঠাৎ করে ডলারের রেট অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। দীর্ঘদিন ধরে ডলারের রেট ১২২ টাকার আশপাশে রয়েছে এবং তা সেখানেই থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশের ডলারের রেট দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা-সরবরাহ অনুযায়ী নির্ধারিত হবে, বাইরের দেশের নির্দেশে নয়। বর্তমানে বাজারে ডলারের সরবরাহও পর্যাপ্ত রয়েছে।

তবে, তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, দুবাইভিত্তিক কিছু সিন্ডিকেট বাজারে অস্থিরতা তৈরি করার চেষ্টা করতে পারে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সতর্ক থাকবে এবং সার্বক্ষণিক নজরদারি করবে। কেউ যদি ইচ্ছাকৃতভাবে অস্থিতিশীলতা তৈরির চেষ্টা করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার, ড. মো. হাবিবুর রহমান, কবির আহমেদ, উপদেষ্টা আহসান উল্লাহ এবং নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান।

এদিকে গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি বছরের জুনের মধ্যে চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির জন্য নির্ধারিত ১ দশমিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার একত্রে ছাড় করবে।

বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার স্বার্থে সকল বিষয় সতর্কতার সাথে পর্যালোচনা করে উভয়পক্ষ রাজস্ব ব্যবস্থাপনা, মুদ্রা বিনিময় হারসহ অন্যান্য সংস্কার কাঠামো বিষয়ে সম্মত হয়েছে। রাজস্ব ব্যবস্থাপনা এবং বিনিময় হার ব্যবস্থায় কিছু গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার বিষয়ে অধিকতর পর্যালোচনার লক্ষ্যে চতুর্থ রিভিউ সম্পন্ন হওয়ার পর উভয় রিভিউয়ের জন্য নির্ধারিত কিস্তির অর্থ একত্রে ছাড় করা হবে বলে বিগত তৃতীয় রিভিউয়ে সিদ্ধান্ত হয়। এই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের এপ্রিলে ঢাকায় অনুষ্ঠিত চতুর্থ রিভিউয়ের সময় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় এবং পরবর্তীতে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত ব্যাংক-ফান্ড সভায় এবিষয়ে আলোচনা চলমান ছিল।

এ ছাড়া বিশ্ব ব্যাংক, এডিবি, এআইআইবি, জাপান এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টসহ বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে আরও প্রায় ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেট সহায়তা জুন মাসের মধ্যে পাবে বলে বাংলাদেশ প্রত্যাশা করছে। উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে এ অর্থ পাওয়া গেলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আরও শক্তিশালী হবে। ফলে মুদ্রার বিনিময় হারের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয় যে, বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সহায়তা গ্রহণের ক্ষেত্রে যেসকল সংস্কার কর্মসূচি নেয়া হচ্ছে তা সম্পূর্ণরূপে বাংলাদেশ সরকারের নিজস্ব বিবেচনায় পরিকল্পিত এবং জাতীয় স্বার্থে গৃহীত। এ সকল সংস্কার কর্মসূচির ক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীদের কার্যক্রম শুধুমাত্র কারিগরি সহায়তা প্রদানের মধ্যে সীমাবদ্ধ।

মন্তব্য

মতামত
The United States and China agree to reduce tariffs

শুল্ক কমাতে একমত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

শুল্ক কমাতে একমত যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

বাণিজ্যযুদ্ধের তীব্রতা কমিয়ে আনতে যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে। পরস্পরের ওপর আরোপ করা পাল্টাপাল্টি বাণিজ্য শুল্ক ৯০ দিনের জন্য ব্যাপক পরিসরে কমাতে একমত হয়েছে দুই দেশ। গতকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের পক্ষ থেকে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। বিশ্বের বৃহত্তম দুই অর্থনীতিকে হুমকির মুখে ফেলে দেওয়া বাণিজ্যযুদ্ধের উত্তেজনা কমাতেই এই চুক্তি হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের আগে চীনের ওপর মার্কিন শুল্ক ছিল ২০ শতাংশ। পরে নতুন শুল্ক যখন ট্রাম্প ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করেন তখন তিনি বলেছিলেন তিন মাস সবার জন্য বাড়তি ১০ শতাংশ শুল্ক হার প্রযোজ্য হবে।

সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় দুপক্ষের মধ্যে আলোচনার পর এক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেন, গঠনমূলক ও দৃঢ় আলোচনার পর উভয় দেশ ৯০ দিনের জন্য শুল্ক স্থগিত করতে রাজি হয়েছে। এর আওতায় দেশ দুটি পারস্পরিক শুল্ক ১১৫ শতাংশ কমাবে।

চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র চীনা পণ্যের ওপর আরোপিত বর্তমান ১৪৫ শতাংশ শুল্ক কমিয়ে ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। অন্যদিকে চীন মার্কিন পণ্যের ওপর আরোপ করা ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। উভয় দেশের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে, আগামী ১৪ মে থেকে শুল্কের এই কাঁটছাট কার্যকর হবে।

যুক্তরাষ্ট্র-চীন বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে স্কট বেসেন্ট বলেন, আমরা এ বিষয়ে সিদ্ধান্তে এসেছি যে, আমাদের অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। দুই পক্ষের প্রতিনিধিদলই একমত হয়েছে যে তারা বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে চায় না। মার্কিন অর্থমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশই নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে পেরেছে। আমাদের লক্ষ্য ভারসাম্যপূর্ণ বাণিজ্যের পথে অগ্রসর হওয়া এবং এটি তারই সূচনা।

প্রথম দফায় শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্ববাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা দেখা দিয়েছিল এবং বৈশ্বিক মন্দার শঙ্কাও জোরালো হয়েছিল। তবে এবার এই চুক্তির ঘোষণায় বিশ্ব শেয়ারবাজারে তাৎক্ষণিক ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

শুল্ক কমানোর চুক্তির ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই বিশ্ববাজারে চাঙাভাব দেখা দেখা গেছে। হংকংয়ের প্রধান সূচক ৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ স্টক ফিউচারের উত্থান হয়েছে। এছাড়া বাড়তি শুল্ক স্থগিতের খবরে চীনা মুদ্রা ইউয়ানের দর বেড়ে ছয় মাসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে। ইউরোপীয় শেয়ারবাজারগুলোও উচ্চমুখী প্রবণতায় লেনদেন শুরু করে এবং মার্কিন বাজারগুলোও ২ থেকে ৩ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে স্পষ্ট করা হয়েছে, এই সময়সীমার মধ্যে চীনের উচিত হবে ফেন্টানিল নামক ভয়াবহ মাদকের অবৈধ রপ্তানি বন্ধে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়া। এ বিষয়ে চীনের সদিচ্ছা দেখে ওয়াশিংটন আশাবাদ প্রকাশ করেছে।

এর আগে যুক্তরাষ্ট্রে ফেন্টানিলের প্রবেশ ঠেকাতে চীন পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে না এমন অভিযোগ তুলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রথমে চীনা পণ্যের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন।

মন্তব্য

মতামত
NBR will form special units to prevent money smuggling

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করবে এনবিআর

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করবে এনবিআর
টাকার পাচার রোধে এনবিআর তিনটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছে। প্রথমত, আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচার ঠেকাতে দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে বিশেষায়িত একটি ইউনিট গঠন করা যেতে পারে। এই ইউনিটের সদস্যরা প্রতারণা হয় বা হতে পারে- এমন বিল অব এন্ট্রিগুলো তদারকি ও তদন্ত করবেন। এই ইউনিট গঠন হলে একদিকে টাকা পাচার বন্ধের পাশাপাশি এনবিআরের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির সক্ষমতা বাড়বে।

টাকা পাচার ঠেকাতে বিশেষ ইউনিট গঠন করতে চায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। মূলত বাণিজ্যের আড়ালে যে বিদেশে টাকা পাচার হয়, তা প্রতিরোধ করতেই এমন উদ্যোগ। দুই প্রক্রিয়ায় টাকা পাচার হয় বলে মনে করে এনবিআর। এগুলো হলো-আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা এবং ট্রান্সফার প্রাইসিং। এসব কারণে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ রাজস্ব লোকসান হয় বলে মনে করে এনবিআর।

সম্প্রতি এনবিআর মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি রাজস্ব কৌশল নামে ১০ বছরের একটি পরিকল্পনা চূড়ান্ত করেছে। সেখানে এই তথ্য দেওয়া হয়েছে।

গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটির (জিএফআই) উদ্ধৃতি দিয়ে এনবিআরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্যের আড়ালে (মিথ্যা ঘোষণা) ৭০ শতাংশ অর্থ পাচার হয়ে থাকে।

টাকার পাচার রোধে এনবিআর তিনটি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলেছে। প্রথমত, আমদানি-রপ্তানিতে মিথ্যা ঘোষণা ও ট্রান্সফার প্রাইসিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাচার ঠেকাতে দক্ষ কর্মকর্তাদের দিয়ে বিশেষায়িত একটি ইউনিট গঠন করা যেতে পারে। এই ইউনিটের সদস্যরা প্রতারণা হয় বা হতে পারে- এমন বিল অব এন্ট্রিগুলো তদারকি ও তদন্ত করবেন। এই ইউনিট গঠন হলে একদিকে টাকা পাচার বন্ধের পাশাপাশি এনবিআরের রাজস্ব আদায় বৃদ্ধির সক্ষমতা বাড়বে।

সাধারণত আমদানিকালে তুলনামূলক বেশি দাম দেখিয়ে অর্থ দেশের বাইরে পাচার করা হয়। মূলত মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে এভাবে টাকা পাচার করা হয়। দুই বছর আগে এনবিআর পাচার টাকা ফেরত আনার সুযোগ দিলেও কেউ তা নেননি।

এনবিআরের দ্বিতীয় সুপারিশ হলো, বিদেশি কূটনীতিক মিশনে রাজস্ব খাতের কর্মকর্তাদের জন্য এটাশে পদ সৃষ্টি করা। এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাণিজ্যের আড়ালে মিথ্যা ঘোষণা এবং ট্রান্সফার প্রাইসিং ইস্যুটি সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ হয়ে গেছে। যেসব দেশ থেকে পণ্য আসে, সেখানে পণ্যের মূল্য কত, তা জানা সম্ভব হয় না। আবার নানাভাবে বিভিন্ন দেশে টাকা পাচার হয়। এনবিআর বলছে, বিভিন্ন দূতাবাসে, বিশেষ করে বাংলাদেশে বড় বাণিজ্য অংশীদার দেশগুলোতে রাজস্ব খাতে কর্মকর্তাদের জন্য এটাশে পদ সৃষ্টির সুপারিশ করেছে এনবিআর। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জাপান, ভারতের মতো দেশ এমন পদ সৃষ্টি করেছে বলে এনবিআরের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

এনবিআরের তৃতীয় সুপারিশ হলো, পাচার টাকা ফেরত আনতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। যেমন দক্ষ জনবল নিয়োগ দেওয়া; যেসব দেশে পাচার হয়, সেখানে তদারকি ও পর্যবেক্ষণ বৃদ্ধি; আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করা। এসব করা হলে পাচার টাকা চিহ্নিত করে ফেরত আনা সহজ হবে। এ ছাড়া টাকা পাচারে সহায়তাকারীদের শাস্তির আওতায় আনার কথাও বলেছে এনবিআর।

এনবিআরের একজন কর্মকর্তা বলেন, টাকা পাচারের কারণে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারায় সরকার। টাকা পাচার বন্ধ করতে পারলে অর্থনীতি আরও চাঙা হবে। এ ছাড়া সরকারের রাজস্ব আদায়ও বাড়বে।

বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর অর্থনীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রতিবেদন তৈরি করেছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২০০৯ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বিদেশে পাচার হয়েছে। বর্তমান বাজারদরে এর পরিমাণ ২৮ লাখ কোটি টাকা। এই হিসাবে প্রতিবছর গড়ে ১ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের রাঘববোয়াল (ক্রীড়নক), আমলা ও মধ্যস্বত্বভোগীরা এই পরিমাণ অর্থ পাচার করেছেন। গ্লোবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইনটিগ্রিটি রিপোর্টস (জিএফআইআরএস) এবং কিছু নির্দিষ্ট পূর্বানুমানের ভিত্তিতে টাকা পাচারের হিসাব করেছে শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটি।

দেশ থেকে কারা, কীভাবে, কোথায় টাকা পাচার হয়েছে- সেই চিত্র তুলে ধরে শ্বেতপত্রে বলা হয়, টাকা পাচারের জন্য দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, আর্থিক খাতের ক্রীড়নক, আমলাদের মধ্যে এক ধরনের অনৈতিক চক্র গড়ে ওঠে। ঘুষ-দুর্নীতি, আর্থিক অপরাধ, মিথ্যা ঘোষণার আড়ালে বাণিজ্য, ব্যাংক থেকে চুরি করা টাকা, খেলাপি ঋণের অর্থ, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার, প্রকল্পের খরচ বাড়িয়ে দেখানো, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, কর ফাঁকি- এসব কর্মকাণ্ডের অর্থ পাচার করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, হংকং, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভারতসহ করের অভয়ারণ্য নামে পরিচিত ছোট ছোট দেশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হয়েছে। মূলত বাড়ি কিনে এবং ব্যবসায় বিনিয়োগ করে টাকা পাচার করা হয়।

মন্তব্য

p
উপরে