দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে পৌর নির্বাচনে প্রার্থী হওয়াদের বহিষ্কার করেও বিদ্রোহ দমাতে পারছে না আওয়ামী লীগ।
দ্বিতীয় ধাপে অনুষ্ঠেয় পৌর নির্বাচনে ৬১ পৌরসভার মধ্যে ১৬টিতে অন্তত ২১ জন বিদ্রোহী প্রার্থী নৌকার বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের অনেককেই এরই মধ্যে দল থেকে বহিষ্কারও করা হয়েছে। এরপরেও নির্বাচনে প্রার্থিতায় আছেন তারা।
আরও পড়ুন: ভোট নিয়ে সমালোচনা মুছতে চায় আ. লীগ
বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিষয়ে এবার পৌর নির্বাচনের শুরু থেকেই কঠোর মনোভাব দেখিয়ে আসছে আওয়ামী লীগ। দলের শীর্ষ নেতারা হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছেন, বিদ্রোহীদের আর কখনোই দলের মনোনয়ন দেয়া হবে না। তারপরও পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন নেই।
কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, বিদ্রোহ দমনে দলের কঠোর মনোভাবের পর পরিস্থিতি শতভাগ না হলেও অন্যান্য বারের চেয়ে ভালো। ভবিষ্যতেও বিদ্রোহীদের বিষয়ে নমনীয় হওয়ার কোনো সুযোগ নেই বলে মনে করছেন তারা।
আরও পড়ুন: ভোটারদের তেল দিয়ে জরিমানা
গত ১৩ ডিসেম্বর দ্বিতীয় দফায় পৌর নির্বাচনের মেয়র পদে মনোনয়ন ফরম বিতরণ শেষ করে আওয়ামী লীগ। ১৮ ডিসেম্বর দলের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সভায় চূড়ান্ত করা হয় প্রার্থীদের তালিকা।
দ্বিতীয় দফায় ৬১ পৌরসভায় নৌকা প্রতীকে লড়তে ফরম নিয়েছিলেন ৩১৭ জন। অর্থাৎ প্রতিটি পৌরসভায় মেয়র পদে প্রার্থিতা করতে আগ্রহ প্রকাশ করেন গড়ে পাঁচ জন করে।
মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করাদের একটি বড় অংশ পরবর্তীতে নির্বাচন থেকে সরে এলেও অনেকেই লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। কোনো কোনো পৌরসভায় দুই কিংবা তারও বেশি বিদ্রোহী প্রার্থী রয়েছেন।
আরও পড়ুন: মাঠে নেই বিএনপি, সরব আওয়ামী লীগ
নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজশাহী বিভাগের বগুড়ার সারিয়াকান্দি পৌরসভায় নৌকার প্রার্থীর বিপরীতে নির্বাচনের মাঠে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর শাহী সুমন। তাকে এরই মধ্যে বহিষ্কার করেছে আওয়ামী লীগ।
রাজশাহীর ভবানীগঞ্জে পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ মামুন, আড়ানীতে বর্তমান মেয়র মোক্তার আলী ও সিরাজগঞ্জের বেলকুচিতে উপজেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক সাজ্জাদুল হক রেজা লড়ছেন বিদ্রোহী হিসেবে।
রংপুর বিভাগের দিনাজপুরের বীরগঞ্জ পৌরসভায় বিদ্রোহী হিসেবে লড়ছেন বর্তমান পৌর মেয়র মোশাররফ হোসেন বাবুল ও কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে মো. হোসেন ফাকু। মোশাররফ হোসেন বাবুলকে এরই মধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
রংপুর বিভাগের গাইবান্ধা জেলার সদর উপজেলায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী আছেন তিন জন। এরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহসানুল করিম লাচু ও সদস্য ফারুক আহমেদ এবং পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মতবুর রহমান। তিন জনকেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভোটার ফিরল কেন্দ্রে
এদিকে জেলার সুন্দরগঞ্জ পৌরসভায় বিদ্রোহে নাম লিখিয়েছেন খায়রুল হোসেন মাওলা ও দেবাশীষ সাহা।
ময়মনসিংহ বিভাগের মুক্তাগাছায় দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন আবুল কাশেম। আর ফুলবাড়িয়া পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের মাঠে আছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোস্তফা।
ঢাকা বিভাগে টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি পৌরসভায় বিদ্রোহী হিসেবে লড়ছেন যুবলীগ নেতা মনিরুজ্জামান বকল ও কিশোরগঞ্জ সদরে ভোটের মাঠে আছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শফিকুল গণি ডালি।
সিলেট বিভাগের মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে বিদ্রোহী হিসেবে লড়ছেন জেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি হেলাল মিয়া ও উপজেলা যুবলীগের সহসম্পাদক আনোয়ার হোসেন। এর মধ্যে হেলাল মিয়াকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আ. লীগের দুশ্চিন্তায় বিদ্রোহ, বিএনপির প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত
জেলার কুলাউড়া পৌরসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও সাবেক মেয়র শফি আলম ইউনুস লড়ছেন বিদ্রোহী হিসেবে। তাকে এরই মধ্যে বহিষ্কার করেছে দল। এই পৌরসভায় আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী হলেন শাহজাহান মিয়া।
হবিগঞ্জের মাধবপুর পৌরসভায় সাবেক মেয়র শাহ মুসলেম ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পঙ্কজ সাহা লড়ছেন দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন: গন্ডগোল হলে দায় প্রথমত ওবায়দুল কাদেরের: কাদের মির্জা
তৃণমুলের নেতাকর্মীরা বলছেন, বিদ্রোহী প্রার্থীদের কারণে মাঠপর্যায়ে অনেক সময়ই নেতাকর্মীদের মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়। ভোটাররাও হয়ে পড়েন বিভক্ত। আর এতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা পরাজিতও হন।
স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচনে দেখা গেছে বিদ্রোহী প্রার্থীদের দাপট। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগের যেসব প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন, তারাও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়েন বিদ্রোহীদের কাছে।
পৌর নির্বাচনে বিদ্রোহ দমনে আগের মতোই কঠোর অবস্থানে আওয়ামী লীগ। দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো রাজনৈতিক দলের ক্ষেত্রেই শতভাগ সফল হওয়া যায় না। একটা বড় রাজনৈতিক দল, এখানে এতটা পারা যায় না। তবে এবার কঠোর সিদ্ধান্তের কারণে বিদ্রোহ অনেকটাই কমেছে।
‘ঐ অর্থে এবার বিদ্রোহ অনেকটাই কম। সেটা তো একটা ভালো দিক। এতে আগামী দিনে আরো সুদুরপ্রসারী, ভালো ফল পাওয়া যাবে। এরই মধ্যে আমরা শুরু করেছি। আগামীতে আরও পাব।’
আরও পড়ুন: শায়েস্তাগঞ্জে আ. লীগে তিন বিদ্রোহী
তিনি বলেন, কঠোর সিদ্ধান্তের পরেও সব ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলে শতভাগ বিদ্রোহ দমন করা যায় না।
তৃণমুলে বিদ্রোহে কেন্দ্রীয় নেতাদের মদদ থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান আওয়ামী লীগের এ কেন্দ্রীয় নেতা।
গত ২ ডিসেম্বর সারাদেশে দ্বিতীয় ধাপে ৬১ পৌরসভা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। তফসিল অনুযায়ী ১৬ জানুয়ারি হবে ভোট। এর মধ্যে ২৯ পৌরসভার ভোট হবে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন বা ইভিএমের মাধ্যমে। আর ৩২টিতে ভোট হবে ব্যালটে।
আরও পড়ুন:কুড়িগ্রামে শতাধিক দুস্থ অসহায় বাবা মায়ের জন্য ভ্রাম্যমাণ শাড়ি লুঙ্গির হাটের আয়োজন করেছে ফাইট আনটিল লাইট (ফুল) নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
ভ্রাম্যমাণ এ হাটে আট টাকা দরে একটি শাড়ি, একটি লুঙ্গি এবং দুই টাকায় একটি ব্লাউজের পিস বিক্রি করা হয়।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ভোগডাঙা ইউনিয়নের কুমোরপুর দাখিল উলুম মাদ্রাসা মাঠে শুক্রবার দুপুরে এসব শাড়ি, লুঙ্গি বিক্রি করা হয়েছে।
আট টাকায় শাড়ি পেয়ে বৃদ্ধ আমেনা বেওয়া বলেন, ‘বর্তমানে বাজারে একটা শাড়ির দাম নিম্নে ৩০০ টাকা। সেই শাড়ি আট টাকায় পেয়ে খুব উপকার হলো।’
লুঙ্গি পেয়ে হামিদ মিয়া বলেন, ‘৬৫ বছর বয়সে কোন দিন দেহি নাই আট টাহায় এহান (একটা) লুঙ্গি পাওয়া যায়। আইজ সেই আট টাহায় লুঙ্গি কিনলাম। খুব খুশি নাগছে।’
ভোগডাঙা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমান বলেন, “‘ফুল’ দীর্ঘদিন ধরে জেলায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অসহায় বাবা মাকে নিয়ে কাজ করে আসছে। তাদের আজকের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।”
ফাইট আনটিল লাইটের নির্বাহী পরিচালক আবদুল কাদের বলেন, ‘কুড়িগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সামাজিক সংগঠন ফুল শহর গ্রাম ও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের মানুষ মাঝে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক উন্নয়নে এক যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করে আসছে।
‘আমরা ত্রাণে নয়, বিনিময়ে উপহার দিয়ে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন আনতে চাই। তাই অসহায় বাবা-মায়ের কাছে মাত্র আট টাকার বিনিময়ে শাড়ি লুঙ্গি বিক্রি করার ব্যবস্থা করছি।’
আরও পড়ুন:অতি তীব্র দাবদাহের মধ্যে মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।
সীমান্তবর্তী জেলাটিতে শুক্রবার বেলা তিনটায় ৪২ দশমিক সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
জেলায় অতি তীব্র দাবদাহে ওষ্ঠাগত জনজীবন। গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন অনেকে। কেউ কেউ পান করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পানীয়।
তীব্র গরমে চুয়াডাঙ্গার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে গরমজনিত রোগী। এতে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ।
পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রম। তা ছাড়া অতি গরমে নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, ‘এই তাপে মাঠে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে কৃষিকাজ করা যাচ্ছে না।
‘ধানের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। ধানে বেশি সেচ লাগছে, কিন্তু সেচ পাম্পে ঠিকমতো পানিও উঠছে না।’
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চুয়াডাঙ্গা কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গতকাল (বৃহস্পতিবার) থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র দাবদাহ অব্যাহত রয়েছে। আগামী তিন দিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।’
দেশের কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে সেখানে মৃদু তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ বইছে ধরা হয়।
তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে মাঝারি এবং ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকলে তীব্র দাবদাহ ধরা হয়। অন্যদিকে তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার বেশি হলে বলা হয় অতি তীব্র দাবদাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানায়, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলার ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:থাইল্যান্ডে রাষ্ট্রীয় সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশটির গভর্নর হাউসে শুক্রবার থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজে তিনি এ মন্তব্য করেন বলে বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি ও আইসিটি খাতে সহযোগিতা জোরদারের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি দৃঢ়ভাবে অনুভব করি, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, খাদ্য নিরাপত্তা, পর্যটন, জনস্বাস্থ্য, জ্বালানি, আইসিটি, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগের ক্ষেত্রে এবং বিমসটেকের অধীনে আমাদের সহযোগিতা জোরদার করার সুযোগ রয়েছে।’
এর আগে দুই নেতা গভর্নর হাউসে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে যোগ দেয়ার আগে ১৫ মিনিটের জন্য একান্ত বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি—একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) সই করা হয়।
মধ্যাহ্নভোজে শেখ হাসিনা বলেন, নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে বাংলাদেশ থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়।
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, টেকসই উন্নয়ন, জনগণ থেকে জনগণে যোগাযোগ ও সংযোগসহ সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী থাভিসিন ও তিনি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য সব ধরনের প্রচেষ্টা করতে এবং দুই দেশের সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার মধ্যে আরও আলাপ-আলোচনাকে উৎসাহিত করতে সম্মত হয়েছি। একইভাবে দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগের প্রসার ও সুবিধার্থে আমাদের সব রকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার ঢাকা ও ব্যাংকক যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সই করেছে, তা আমাদের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য একটি দৃঢ় কাঠামো প্রদান করবে।’
শেখ হাসিনা বলেন, সফরটি ‘প্রতিবেশী’ নীতির বৃহত্তর ফোকাসের অংশ, যা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের গতি আরও নবায়নের জন্য দুই দেশকে চমৎকার সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে, এই সফর আমাদের দুই দেশের সম্পর্ককে আরও গভীর করতে সাহায্য করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, এই সফর দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের পূর্ণ সম্ভাবনায় অত্যন্ত প্রয়োজনীয় গতি সঞ্চার করবে।
তিনি বলেন, ‘এই সরকারি সফর আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে, যা আমাদের দুই দেশের মধ্যে ফলপ্রসূ অংশীদারত্বের এক নতুন যুগের সূচনা করেছে।
‘আগামী দিনগুলোয় আমাদের জনগণ ও দেশের পারস্পরিক সুবিধার জন্য আমাদের সম্পর্কের নতুন গতি বজায় রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন:রাজধানীর উপকণ্ঠ সাভারের আশুলিয়ায় একটি নির্জন বাঁশবাগানের ভেতর থেকে এক নারী পোশাকশ্রমিকের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আশুলিয়ার কাঠগড়া নয়াপাড়া এলাকার বাঁশবাগান থেকে শুক্রবার সকালে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো আনজু খাতুন আশুলিয়ার নরসিংহপুরের হা-মীম গ্রুপের একটি তৈরি পোশাক কারখানার অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন। তার বাড়ি গাইবান্ধা সদর থানার ঘাগুয়া ইউনিয়নে।
পুলিশের ভাষ্য, বাঁশবাগানের ভেতর নারী পোশাকশ্রমিকের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয় স্থানীয়রা। এর পরিপ্রেক্ষিতে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ আরও জানায়, ওই নারীর গলায় ঝোলানো পরিচয়পত্রে দেখা যায়, তিনি হা-মীম গ্রুপের একটি পোশাক কারখানার অপারেটর।
হা-মীম গ্রুপের টিআইএসডব্লিএল-১ কারখানার মহাব্যবস্থাপক (জিএম) ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘আনজু খাতুন নামে এক নারী শ্রমিক গতকাল রাত ৯টা ১৫ মিনিটের পরে কারখানা থেকে বাসায় যায়, কিন্তু আজ সকালে তিনি আর কারখানায় আসেননি।
‘পরে লাইনের সুপারভাইজার আনজুকে কল দিলেও সে রিসিভ করেনি।’
আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ভজন চন্দ্র বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। কর্মস্থল থেকে ফেরার পথে কেউ তাকে (পোশাকশ্রমিক) হত্যা করে ফেলে রেখে যেতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের কারণ উদঘাটনের চেষ্টা চলছে।’
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তের ওপারে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২২) নামের বাংলাদেশি রাখাল নিহত হয়েছেন।
উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ঝালাংগী বিজিবি ক্যাম্পের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলার এলাকায় শুক্রবার ভোররাতে এ ঘটনা ঘটে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও যুবকের পরিবারের কাছ থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়ন সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু। গরু নিয়ে ফেরার পথে শুক্রবার ভোররাতে বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। ওই সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে ডাকু গুরুতর আহত হলে সঙ্গীরা তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে বাংলাদেশ সীমান্তে। পরে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে জানান।
এ বিষয়ে পাটগ্রাম ৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আবুল কালাম ডাকু নামে একজন যুবক নিহত হয়েছেন। পাটগ্রাম থানা পুলিশ পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে নিহতের মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট করেছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে তীব্র প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’
নিহত যুবকের মা মমতা বেগম বলেন, ‘আমার ছেলের বিয়ে ঠিক হয়েছে। কী অপরাধের জন্য বিএসএফ তাকে গুলি করে হত্যা করল জানি না। আমি এই হত্যার বিচার চাই।’
পাটগ্রাম থানার ওসি আবু সাইদ বলেন, ‘বিএসএফের গুলিতে আহত যুবক আবুল কালাম ডাকুকে পরিবারের সদস্যরা পাটগ্রাম হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যান। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে। এ ঘটনায় একটি ইউডি (অপমৃত্যুর) মামলা করা হবে।’
আরও পড়ুন:মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন।
উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে শুক্রবার সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
প্রাণ হারানো আবদুস সালাম (৫০) ও ছানোয়ার হোসেন (৪৫) মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজির ব্যবসা করতেন।
গোলড়া হাইওয়ে থানার ওসি সুখেন্দু বসু বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়ত থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আবদুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন, কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানকে ধাক্কা দেয়।
এতে ঘটনাস্থলেই আবদুস সালাম নিহত হন এবং গুরুত্ব অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি জানান, নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়।
এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে থাইল্যান্ডের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি বাংলাদেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কেও থাইল্যান্ডের বিনিয়োগ কামনা করেছেন।
বার্তা সংস্থা ইউএনবির প্রতিবেদনে জানানো হয়, থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে শুক্রবার গভর্নমেন্ট হাউসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের পর যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশি চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ও সক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি তাকে বাংলাদেশের হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোতে বিনিয়োগের সম্ভাবনা অন্বেষণেরও প্রস্তাবও দিয়েছি।’
বৈঠক শেষে দুই প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে পাঁচটি দ্বিপক্ষীয় নথি, একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও একটি লেটার অফ ইনটেন্টে (এলওআই) সই করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নিকটতম প্রতিবেশী হিসেবে থাইল্যান্ডের সঙ্গে সম্পর্ককে বাংলাদেশ অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের ঐতিহাসিক, ভাষাগত ও অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের গভীরে প্রোথিত।
‘সহযোগিতার বহুমুখী ক্ষেত্রে আমাদের দুই দেশের মধ্যে উষ্ণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
বৈঠকে দুই নেতা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এ নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার গতিশীল অর্থনীতির সঙ্গে আমাদের সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল অংশীদার হিসেবে দেখি।’
বাণিজ্য সহযোগিতার বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের বর্তমান পরিসর বাড়ানোর জন্য দীর্ঘ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনা করেছেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সহজীকরণের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমি প্রধানমন্ত্রীকে (থাভিসিন) আশ্বস্ত করেছি। আমি থাই পক্ষকে আমাদের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং হাইটেক পার্কে বিনিয়োগ করার ও শুধু থাইল্যান্ডের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল নেয়ার প্রস্তাব দিয়েছি।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য