হবিগঞ্জের শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে শেষ মুহূর্তের প্রচারে ব্যস্ত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। এখানে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের তিন বিদ্রোহী প্রার্থী। এ কারণে বেকায়দায় দলীয় প্রার্থী।
এদিকে একক প্রার্থী হওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে অনেকটাই নির্ভার হয়ে প্রচার চালাচ্ছেন বিএনপি প্রার্থী।
প্রার্থীরা কনকনে শীত-কুয়াশা উপেক্ষা করে সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ছুটে যাচ্ছেন ভোটারের বাড়ি বাড়ি। চাইছেন ভোট, দোয়া, সহযোগিতা ও পরামর্শ।
নির্বাচন ঘিরে ভোটারদের মধ্যেও বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। জাতীয় সংসদ বা উপজেলা নির্বাচনে ভোটারদের তেমন আগ্রহ দেখা না গেলেও পৌরসভা নির্বাচনের চিত্র ভিন্ন। স্থানীয় নির্বাচন হওয়ায় এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে আগ্রহ বেশি।
২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মেয়র পদে ছয় জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৩৬ জন এবং সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন।
এর মধ্যে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাসুদউজ্জামান মাসুক (নৌকা), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অলিওর রহমান অলি (ধানের শীষ), আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র মো. ছালেক মিয়া (নারকেল গাছ), ফজল উদ্দিন তালুকদার (চামচ) ও আবুল কাশেম শিবলু (জগ) এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমদাদুল ইসলাম শীতল (মোবাইল ফোন)।
উপজেলা নির্বাচন অফিস জানিয়েছে, ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত প্রথম শ্রেণির এ পৌরসভার আয়তন ১০ দশমিক ৪০ বর্গকিলোমিটার। মোট ভোটার ১৭ হাজার ৯৬১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ৮৩৫ জন এবং নারী ভোটার ৯ হাজার ১২৬ জন।
৯টি কেন্দ্রের ৪৬টি কক্ষে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে ভোট হবে।
পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অলিগলি ছেয়ে গেছে নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানারে। বেলা দুইটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত চলছে মাইক দিয়ে প্রচার। প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা প্রচারপত্র নিয়ে ঘুরছেন বাড়ি বাড়ি। যাচ্ছেন বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগের তিন বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় দলীয় প্রার্থী মাসুদউজ্জামান মাসুক। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র ছালেক মিয়াকে নিয়ে চিন্তিত নৌকার এই প্রার্থী ।
তবে বিএনপি প্রার্থী অলি অনেকটা নির্ভার। এমনিতে তার রয়েছে তুমুল জনপ্রিয়তা।
নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাসুদউজ্জামান মাসুক জনপ্রিয়তার দিক থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই। পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তিনবারের কাউন্সিলর হওয়ায় বেশ জনপ্রিয়।
ভোটাররা বলছেন, আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী মাসুদউজ্জামান মাসুকের সঙ্গে মূলত হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বর্তমান মেয়র ছালেক মিয়ার। তবে বাকি দুই প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ফজল উদ্দিন তালুকদার ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম শিবলু তেমন প্রভাব না ফেললেও ক্ষতির পরিমাণ বাড়িয়ে দেবেন নৌকার প্রার্থীর।
এই সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগের দুর্গে বেশ শক্তিশালী আঘাতই হানতে চান বিএনপির প্রার্থী।
অন্যদিকে, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমদাদুল ইসলাম প্রচারে সরব নন। যে কারণে তাকে নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের যেমন মাথাব্যথা নেই, ভোটারদের মধ্যেও নেই আলোচনা।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুক বলেন, ‘১৫ বছর আমি কাউন্সিলর ছিলাম। জনগণ আমার দ্বারা উপকৃত হয় বলেই পরপর তিনবার আমাকে কাউন্সিরর নির্বাচিত করেছেন। আমার কর্মকাণ্ড এবং উন্নয়নে মুগ্ধ হয়ে যেমন দল মনোনয়ন দিয়েছে, আমার বিশ্বাস ভোটাররাও আমাকেই বেচে নেবেন।’
বিএনপির মেয়র প্রার্থী অলি বলেন, ‘প্রচারণার ক্ষেত্রে তেমন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে না। তবে ইভিএম নিয়ে আমরা অনেক শঙ্কায় রয়েছি। কারণ শুনেছি ইভিএমের মাধ্যমে ভোট সুষ্ঠু হয় না। তাই আমরা চাই ইভিএম বাদ দিয়ে পূর্বের মতো ব্যালটে ভোট গ্রহণ হোক।’ তবে জয়ের ব্যাপারে তিনি শতভাগ আশাবাদী বলে জানান।
আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র ছালেক মিয়া বলেন, ‘দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় নির্বাচন করব না বলে চিন্তা করেছিলাম। কিন্তু জনগণের চাপে শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করতে হচ্ছে। কারণ বিগত ৫ বছরে আমি শায়েস্তাগঞ্জে উন্নয়নের জোয়ার এনেছি। সুতরাং জনগণ আমার বিকল্প শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভায় চিন্তাই করতে পারে না।’
আচরণবিধি লঙ্ঘন
অভিযোগ উঠেছে, প্রার্থী ও এজেন্টদের মধ্যে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের হিড়িক পড়েছে।
বেলা দুইটা থেকে রাত আটটার মধ্যে মাইকিং করার কথা থাকলে তা মানছেন না কোনো প্রার্থীই। সকাল থেকে শুরু হয় মাইকিং। এ ছাড়া রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মিছিল ও গণসংযোগ করছেন প্রার্থীরা।
এ ব্যাপারে শায়েস্তাগঞ্জ রেলজংশন এলাকার ব্যবসায়ী সরাজ মিয়া বলেন, ‘শায়েস্তাগঞ্জ শহর এমনিতেই অনেক ছোটো। এখানে সব সময় যানজট লেগেই থাকে। কিন্তু নির্বাচনে যানজটের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে গেছে। প্রার্থীরা মিছিল ও প্রচারণা করছেন শত শত কর্মী-সমর্থক দিয়ে। যে কারণে রাস্তা ব্লক হয়ে যাচ্ছে বারবার।’
পুরান বাজারের ব্যবসায়ী মখলিছ মিয়া বলেন, ‘এক প্রার্থী যেতে না যেতেই আরেক প্রার্থী শত শত সমর্থক নিয়ে আসছেন। এতে শহরে সব সময় যানজট লেগে থাকছে। এর বাইরেও নির্বাচনী যে আচরণবিধি রয়েছে, তার কিছুই মানছেন না। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মাইকিং করে কান ঝালাপালা করে ফেলছেন।’
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আচরণবিধি কিছুটা লঙ্ঘন হচ্ছে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের লোকজন অভিযান চালিয়ে ইতিমধ্যে তিন মেয়র প্রার্থীসহ পাঁচ প্রার্থীকে জরিমানাও করেছে। পাশাপাশি সব প্রার্থীকে হুশিয়ার করে দেয়া হয়েছে যেন তারা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন না করেন।’
ভোটারদের প্রত্যাশা
অনেক ভোটারের অভিযোগ, বিগত সময়ে ন্যূনতম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি পৌরসভায়। মেয়র-কাউন্সিলর মধ্যে বিবাধ-দ্বন্দ্বেই কেটে গেছে পাঁচ বছর। অপ্রশস্ত রাস্তা, অকেজো ড্রেনেজ ব্যবস্থা, যেখানে-সেখানে ময়লা আবর্জনার স্তূপ আর জুয়া-মাদকের ছড়াছড়ি। এতে নাজেহাল পৌরবাসী। নির্বাচনের আগে গালভরা প্রতিশ্রুতি দিয়েও কোনো কাজই করেন না মেয়র-কাউন্সিলররা। তাই এবার আর প্রতিশ্রুতি নয়, কাজ করবেন এমন প্রার্থীকেই নির্বাচিত করতে চান তারা।
শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার মো. ছমির আহমেদ বলেন, ‘এই ওয়ার্ডে বিগত ৫ বছরে ন্যূনতম উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। এখানে পাড়া-মহল্লার ভেতরে প্রবেশ করার মতো অবস্থা নেই। রাস্তা এতটাই সরু যে একটি মোটরসাইকেল নিয়েও ভেতরে ঢোকা যায় না। ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরে আছে। বৃষ্টি হলে কাদাপানি মেখে বাসায় ফিরতে হয়।’
৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মধু মিয়া বলেন, ‘ড্রেনগুলোতে ময়লা জমে দুর্গন্ধে টেকা যায় না। এ কারণে এখন বাসায় থাকা দায়। এ ছাড়া দিনরাত মশার উপদ্রবে আমরা অতিষ্ঠ। আমরা চাই এসব সমস্যা নিয়ে কাজ করবেন, এমন প্রার্থী যেন এবার নির্বাচিত হন।’
উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক জালাল উদ্দিন রুমি বলেন, ‘আমরা পৌরবাসী চাই এবারের নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে। দীর্ঘদিনের যে সমস্যাগুলো রয়েছে, সেগুলো দ্রুত সমাধান করবেন এমন প্রার্থীই যেন নির্বাচিত হন।’
তীব্র থেকে অতি তীব্র মাত্রায় পাবনা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তাপপ্রবাহ। অসহনীয় দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। গত তিন-চার দিন তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও শুক্রবার চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে।
এদিন পাবনার ঈশ্বরদীতে ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে যা জেলায় চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত রবিবার (২১ এপ্রিল) ঈশ্বরদীতে প্রথমবার ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
ঈশ্বরদী আবহাওয়া অফিসের সহকারী পর্যবেক্ষক নাজমুল হক রঞ্জন জানান, জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
অতি তীব্র তাপদাহে পাবনার মানুষের দৈনন্দিন কাজ ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে কৃষক, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, ইটভাটার শ্রমিকসহ দিনমজুরদের জন্য অসহ্য হয়ে পড়েছে। এছাড়াও তীব্র গরমে ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশুসহ সব বয়সের মানুষ।
গাইবান্ধায় ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে খুন হয়েছেন আশরাফ আলী নামের এক রিকশাচালক। এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে সদর উপজেলার সুন্দরগঞ্জ-কুপতলা সড়কের ৭৫ নম্বর রেলগেট নামক এলাকায় এ ছিনতাই ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। পরে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে সাদেকুলকে কারাগারে পাঠানো হয়।
৫০ বছর বয়সী রিকশাচালক আশরাফ আলী সদর উপজেলার খোলাহাটী ইউনিয়নের সাহার ভিটার গ্রামের মৃত ফয়জার রহমানের ছেলে। অন্যদিকে ছিনতাই ও হত্যায় অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলাম কুপতলা ইউনিয়নের রামপ্রসাদ গ্রামের বাসিন্দা।
নিউজবাংলাকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন গাইবান্ধা সদর থানার ওসি মাসুদ রানা।
ওসি জানান, প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবার রাতে রিকশা নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন আশরাফ আলী। তিনি কুপতলা এলাকার ৭৫ নম্বর রেলগেটে পৌঁছালে আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা সাদেকুল ইসলাম তার পথ রোধ করে ছুরি ধরে রিকশা এবং চাবি কেড়ে নিয়ে তাকে চলে যেতে বলেন। আশরাফ আলী এতে রাজি না হওয়ায় বিষয়টি নিয়ে প্রথমে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত সাদেকুল আশরাফ আলীর পেটে ছুরিকাঘাত করেন। পরে স্থানীয়রা তাকে চিকিৎসার জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ওসি বলেন, ‘এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ওই রাতেই অভিযুক্ত সাদেকুল ইসলামকে আটক করা হয়। একই সঙ্গে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাটিও উদ্ধার করা হয়। পরে আজ (শুক্রবার) দুপুরে সাদেকুলকে একমাত্র আসামি করে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী মনোয়ারা বেগম। মামলায় আসামিকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরেই আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।’
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখায় প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে শাখা ম্যানেজারসহ ৩ কর্মকর্তাকে আটকের পর কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর। এদিন দুপুরে তাদের আদালতে প্রেরণ করে সাঁথিয়া থানা পুলিশ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান জানান, বিকেলে সাঁথিয়া থানা থেকে এনে তাদের আদালতে তোলা হয়। এ সময় কেউ তাদের জন্য জামিন আবেদন করেননি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আটককৃতরা হলেন- অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) সুজানগর উপজেলার দুর্গাপুর গ্রামের বাসিন্দা হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার বাসিন্দা আবু জাফর এবং ক্যাশিয়ার বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা সুব্রত চক্রবর্তী।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী বিভাগীয় অফিস থেকে ৫ সদস্যবিশিষ্ট অডিট টিম কাশিনাথপুর শাখায় অডিটে আসে। দিনভর অডিট করে তারা ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম পান। এ বিষয়ে সাঁথিয়া থানায় ওই শাখার ম্যানেজার (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী ও সিনিয়র অফিসার আবু জাফরকে অভিযুক্ত করে অভিযোগ দিলে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে তাদের তিনজনকে আটক করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লে তাদের আটক করে সাঁথিয়া থানা পুলিশকে খবর দেয় ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। পুলিশ গিয়ে তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আজ (শুক্রবার) দুপুরে জিডির ভিত্তিতে আটককৃতদের আদালতে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে বিষয়টি নিয়ে দুদক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
আরও পড়ুন:দীর্ঘ এক যুগ বন্ধ থাকার পর পুনরায় শ্রীমঙ্গল-পাত্রখোলা সড়কে বাস পরিষেবা চালু করেছে শ্রীমঙ্গল-শমশেরনগর-কুলাউড়া বাস মালিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার সকালে কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসিদ আলী ও ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে বাস সার্ভিস উদ্বোধন করেন শ্রীমঙ্গল বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
প্রাথমিক পর্যায়ে এই রুটে ৫০ মিনিট পরপর ২৪টি বাস চলাচল করবে বলে সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত শ্রীমঙ্গল থেকে ভানুগাছ মাধবপুর সড়ক দিয়ে ইসলামপুর ইউনিয়নের কুরমা চা বাগান পর্যন্ত এ বাস চলাচল করবে।
কুরমা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত বাসভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৬০ টাকা। এছাড়া পাত্রখোলা থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৫০ টাকা, মাধবপুর থেকে শ্রীমঙ্গল পর্যন্ত ৪০ টাকা, কুরমা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ৪০ টাকা, পাত্রখোলা থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ২৫ টাকা, মাধবপুর থেকে ভানুগাছ পর্যন্ত ১৫ টাকা এবং ভানুগাছ থেকে শ্রীমঙ্গল ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২৫ টাকা।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কুরমা নতুন বাস স্ট্যান্ডে বাস চলাচলের উদ্বোধন শেষে মতবিনিময় সভায় শ্রীমঙ্গল-শমসেরনগর-কুলাউড়া বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি মো. তসলিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও প্রকৌশলী যোগেশ্বর চন্দ্র সিংহের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন ইউপি চেয়ারম্যান সোলেমান মিয়া, সাংবাদিক আসাদুজ্জামান শাওন, ইউপি সদস্য আব্দুল্লাহ, নুরুল হক, বাস মালিক সমিতির সহ-সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দুলাল, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, গ্রুপ সভাপতি কাসেম মিয়া ও আব্দুস সালাম প্রমুখ।
এর আগে মাধবপুর বাজারে বাস প্রবেশ করলে এলাকাবাসী বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতাদের ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় যাত্রীদের মানসম্পন্ন সেবা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে বলে আশ্বস্ত করেন বাস মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা।
এদিকে সিএনজি থেকে ভাড়া কম করে বাস সার্ভিস চালু হওয়ায় যাত্রীসহ স্কুল কলেজ শিক্ষার্থীরা বেজায় খুশি।
পঞ্চগড় সদর উপজেলায় চাওয়াই নদীতে গোসল করতে নেমে পানিতে ডুবে আলমি আক্তার ও ইসরাত জাহান সিফাত নামে দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার অমরখানা ইউনিয়নের চাওয়াই নদীর চৈতন্যপাড়া এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।
১২ বছরের আলমি ওই এলাকার আব্দুল আজিজের মেয়ে এবং ৯ বছরের সিফাত সাইফুল ইসলামের মেয়ে। তারা দুজনে সম্পর্কে ফুফু-ভাতিজি।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, শুক্রবার দুপুরে আলমি ও সিফাত বাড়ির পাশে চাওয়াই নদীতে গোসল করতে যায়৷ গোসল করতে গিয়ে সিফাত পানিতে ডুবে যেতে থাকলে তাকে বাঁচাতে এগিয়ে যায় আলমি৷ পরে দুজনেই পানিতে ডুবে যায়। এ সময় নদীর পাড়ে থাকা অন্য আরেক শিশু ঘটনাটি দেখে দৌড়ে তাদের পরিবারের লোকজনকে খবর দিলে তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে মৃত অবস্থায় নদী থেকে দুজনের মরদেহ উদ্ধার করে।
খবর পেয়ে পুলিশ দুই শিশুর মরদেহের সুরতহাল করে।
পঞ্চগড় সদর থানার উপ-পরিদর্শক পলাশ চন্দ্র রায় বলেন, ‘দুই শিশুর মধ্যে একজন সাঁতার জানত, আরেকজন জানত না। একজন আরেকজনকে বাঁচাতে গিয়ে দুজনেই একসঙ্গে ডুবে মারা গেছে বলে জানিয়েছে স্থনীয়রা।’
মরদেহের সুরতহাল শেষে ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম। বাড়ি তার বাগেরহাট সদর উপজেলার খানপুর গ্রামে। বর্তমানে ঢাকার সুত্রাপুর থানায় কর্মরত।
৩৮ বছর বয়সী এ যুবকের নেশা বিয়ে করা। যেখানেই যান সেখানেই তিনি বিয়ে করেন। এ পর্যন্ত ৭টি বিয়ে করেছেন।
সর্বশেষ তিনি বিয়ে করেন ঝিনাইদহ শহরের পবহাটি এলাকার। ঢাকায় থাকাকালে সেঁজুতি নামের পবহাটির একটি মেয়ের সঙ্গে সপ্তমবারের মতো সংসার শুরু করেন তিনি।
তবে এর মানে এই নয় যে, তার আগের সব স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছে। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রী পারভীন তার গ্রামের বাড়িতে এবং ষষ্ঠ স্ত্রী রয়েছেন যশোরের বেনাপোলে। ২ স্ত্রীর ঘরে ২টি সন্তানও রয়েছে তরিকুলের।
সম্প্রতি সংসার জীবন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই যুবক। স্বামীকে ফিরে পেতে আড়াই বছরের মেয়েকে নিয়ে ঝিনাইদহের পবহাটিতে আসেন ষষ্ঠ স্ত্রী হোসনে আরা আক্তার সাথী। তরিকুলকে স্বামী দাবি করলে সেখানে বেঁধে যায় রণক্ষেত্র। স্বামীকে নিয়ে সেঁজুতির সঙ্গে শুরু হয় তার কাড়াকাড়ি। কোনো উপায় না পেয়ে পালিয়ে যান আনসার সদস্য তরিকুল ইসলাম।
নিউজবাংলাকে সাথী জানান, বেনাপোল বন্দরে কর্মরত থাকা অবস্থায় নিজেকে এতিম পরিচয় দিয়ে তাকে বিয়ে করেন তরিকুল। ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর তাদের বিয়ের পর থেকে একসঙ্গেই ছিলেন দুজন। তবে ২০২২ সালে বদলি হয়ে ঢাকায় চলে যান তরিকুল। তার কিছুদিন পর থেকে সাথীর সঙ্গে তার সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ।
তিনি জানান, ঢাকায় বদলি হওয়ার পর থেকে তার ও তাদের সন্তানের কোনো খরচ পাঠাতেন না তরিকুল। এরই মধ্যে সেঁজুতির সঙ্গে তার ইমোতে পরিচয় হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ওই বছরের ডিসেম্বর মাসে সেঁজুতিকে বিয়ে করেন তিনি।
সাথী বলেন, ‘গত ঈদে আমার কাছে গিয়ে ৬ দিন ছিল। সেখানে আমাকে ভুলিয়ে আমার কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা নিয়ে চলে আসে। তারপর আবার সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছে। আমার আড়াই বছরের মেয়েটি বাবার জন্য সব সময় কান্নাকাটি করে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার স্বামী ঝিনাইদহ আছে- এমন খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে গিয়েছিলাম। সেখানে আমাদের মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছে। আর এর মধ্যে আবার পালিয়েছে সে (তরিকুল)। আমি তরিকুল ও সেঁজুতির বিচার চাই।’
এ ব্যাপারে জানতে আনসার সদস্য তরিকুলের মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আরও পড়ুন:চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে একটি পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের মধ্যে পড়ে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।
শুক্রবার সকাল ১১টার পর থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উপজেলার নেজামপুর ইউনিয়নের পূর্ব নেমাজপুর গ্রামে মাঠের মধ্যে থাকা ওই পাইপ থেকে উদ্ধারের চেষ্টা করছিলেন।
বিকেল সোয়া ৪টার দিকে মানসিক প্রতিবন্ধী রনি বর্মনকে (২৩) অবশেষে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, বিএমডিএর গভীর নলকূপটির পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায়, নতুন করে আরেকটি গভীর নলকূপ কিছুদিন আগে বসানো হয়, ফলে আগেরটি পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে ছিল। ওই পরিত্যক্ত নলকূপের পাইপের মধ্যেই পড়ে যান রনি বর্মন।
নাচোল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তারেকুর রহমান জানান, প্রায় ৫ ঘণ্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় বিকেলে সোয়া ৪টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রনি বর্মনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। এখন আইনি প্রক্রিয়া শেষে পুলিশ মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করবে।
স্থানীয়রা জানান, রনি বর্মন গভীর নলকূপের ওই এলাকায় ঘোরাঘুরি করতেন। সকালে পরিত্যক্ত গভীর নলকূপের পাইপের কাছে গেলে,পড়ে যান। এ সময় মাঠের কয়েকজন কৃষক ওই নলকূপের কাছে পানি খাওয়ার জন্য এসেছিলেন, তারা ছেলেটির কান্নার আওয়াজ শুনে সবাইকে জানান, খবর দেয়া হয় ফায়ার সার্ভিসকে।
মন্তব্য