বরগুনার বাসিন্দাদের হতাশ করেছে এবারের বাজেট। বহুল প্রতীক্ষিত এই বাজেটে নেই বরগুনার বিষখালী-পায়রা নদীর ওপর বহুল প্রতিশ্রুত দুই সেতু প্রকল্প। এতে হতাশা প্রকাশ করেছেন বরগুনার বাসিন্দারা।
সেই সঙ্গে সেতুর প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেটি রক্ষা না করাকে উপকূলীয় এ জেলার বাসিন্দাদের সঙ্গে এক প্রকার প্রতারণার শামিল বলেও মনে করছেন বিশিষ্টজনেরা।
বেকারদের কর্মসংস্থানে নেয়া প্রকল্প ন্যাশনাল সার্ভিস উদ্বোধন উপলক্ষে ২০১১ সালের ৫ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরগুনায় আসেন। বরগুনাবাসীর উন্নয়নে ৪২ দফা দাবি পেশ করে জেলা আওয়ামী লীগ। ওই ৪২ দফা দাবির মধ্যে অন্যতম দাবি ছিল বরগুনা-আমতলী রুটের পায়রা সেতু।
২০১৮ সালের ২৯ নভেম্বর বুধবার সকালে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সপ্তম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর দায়িত্ব চীনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এরপর সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের জানান, চীন সরকারের সহায়তায় বাংলাদেশে নবম ও দশম মৈত্রী সেতু নিয়ে যে কথাবার্তা চলছে, তার মধ্যেই রয়েছে বরগুনা-আমতলী রুটের পায়রা সেতু।
এ সময় সেতুমন্ত্রী আরও জানান, বাংলাদেশে আরও নতুন দুটি সেতু (নবম ও দশম মৈত্রী সেতু) নির্মাণে চীন সরকার সহায়তা করবে। সম্ভাব্য ওই সেতু দুটিই নির্মিত হবে বরগুনার আমতলী ও পটুয়াখালীর গলাচিপায়।
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বরগুনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন বরগুনা বিষখালী নদীতে সেতু নির্মাণের দাবি জানান।
২০১৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি জানা যায়, ওই বছরের আগস্ট মাসে স্থানীয় সংসদ সদস্য অ্যাড. ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, সেতু বিভাগের সচিব রশিদুল হাসান, সেতু বিভাগের পরিচালক ও যুগ্ম সচিব ড. মো মনিরুজ্জামান, বরগুনার তৎকালীন জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ, সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী প্রকল্প পরিচালক মো. তোফাজ্জেল হোসেন ও তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামান সম্ভাব্য সেতুর প্রকল্প স্থানসমূহ পরিদর্শন করেন।
পরিদর্শন শেষে সার্কিট হাউসে সেতু বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. ফেরদৌস সাংবাদিকদের জানান, সেতুর নাম হবে ‘শেখ হাসিনা পায়রা ব্রিজ’। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে পায়রা নদীতে পটুয়াখালীর লেবুখালী ও মির্জাগঞ্জ এবং বরগুনা-আমতলী তিনটি সেতুই নির্মিত হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, মির্জাগঞ্জ ও বরগুনার দুই সেতুর ডিজাইনসহ দাপ্তরিক কাজ ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য স্টুপ কনসালট্যান্টস লিমিটেড (ভারত), বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ডিজাইন কনসালটেন্ট লিমিটেড ও ফিএন্ডই লিমিটেড কাজ করছে। ওই সমীক্ষা টিম পায়রা নদীর আমতলী-বরগুনার ৩-৪টি হার্ট পয়েন্টে ইতিমধ্যে সমীক্ষা শেষ করেছে।
এ খবর ছড়িয়ে পড়লে জেলাব্যাপী আনন্দ মিছিলও হয়।
সেতু বিভাগের ওয়েবসাইট ঘেঁটে দেখা যায়, পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা- কাকচিরা সড়কে (জ-৮৮০) পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ নামে একটি প্রকল্প রয়েছে যার দৈর্ঘ্য দেখানো হয়েছে ২ হাজার ৫৫০ মিটার। প্রকল্পের অবস্থান দেখানো হয়েছে আমতলী ফেরিঘাট, আমতলী উপজেলা, বরগুনা।
ব্রিজের সম্ভাব্য স্থানের একটি ম্যাপ ও প্রাক্কলিত ব্যয় দেখানো হয়েছে ৩ হাজার ১৯২ কোটি টাকা। নির্মাণের কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, আমতলী ও বরগুনা সদর উপজেলার সঙ্গে বরগুনা জেলা শহর এবং বরিশাল বিভাগীয় শহরের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করা যা যোগাযোগব্যবস্থাকে সহজ করবে।
এ ছাড়াও সেতুর অর্থনৈতিক প্রভাব হিসেবে বলা হয়েছে, এটি বরিশাল শহর ও বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলের মধ্যে সড়ক সংযোগব্যবস্থা উন্নত করবে; সঙ্গে সঙ্গে যাতায়াতের সময়, খরচ, যানবাহন রক্ষণাবেক্ষণ, যাতায়াতের ধরন ও যাতায়াতের নিরাপত্তা উন্নত করবে এবং জিডিপিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এ ছাড়াও সেতু বিভাগের ওয়েবসাইটে ১৮ আগস্ট ২০২০ সালের তথ্যে পটুয়াখালী- আমতলী-বরগুনা-কাকচিরা সড়কে (জ-৮৮০) বিষখালী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা সম্পন্ন দেখিয়ে একটি সমীক্ষা প্রতিবেদন দেয়া আছে।
ওয়েবসাইটের আরও তথ্য, (সবশেষ ২২ মার্চ ২০২১ হালনাগাদ) চলমান প্রকল্পের পাশাপাশি পাঁচ সেতু সম্ভাব্যতা সমীক্ষার তালিকায় ১ ও ৫ ক্রমিকে পটুয়াখালী- আমতলী-বরগুনা-কাকচিরা সড়কে (জ-৮৮০) বিষখালী নদীর ওপর সেতু নির্মাণ । পটুয়াখালী-আমতলী-বরগুনা-কাকচিরা সড়কে (জ-৮৮০) পায়রা নদীর ওপর সেতু নির্মাণ প্রকল্প দেখানো হয়েছে।
কিন্তু বৃহস্পতিবার সংসদের অধিবেশনে ২০২১-২০২২ সালের পেশ করা বাজেটের মেগা প্রকল্পের মধ্যে এই দুটি সেতুর কথা উল্লেখ না থাকায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন অনেকেই।
পাবলিক পলিসি ফোরাম বরগুনার আহ্বায়ক হাসানুর রহমান ঝন্টু বলেন, ‘আমাদের বরগুনার পায়রা ও বিষখালী ব্রিজের বিষয়টি বাজেটে না থাকায় আমরা চরম হতাশ। বর্তমান সরকারের সেতুমন্ত্রী সেতু দুটি নির্মাণের কথা জানিয়েছিলেন। এ ছাড়া সমীক্ষার দলও বরগুনা এসেছিল।
‘অথচ, বর্তমান বাজেটে আমাদের দুটি সেতুর অস্তিত্বই নেই। তাহলে আমরা কি মনে করব এটা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা ছিল?’
তিনি আরও বলেন, ’৭০-এর নির্বাচন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের সমস্ত চড়াই-উতরাইয়ে বরগুনাবাসী সঙ্গে ছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের কাছে আমাদের কাছে যে প্রত্যাশা ছিল, তার সিকিভাগও আমরা বাস্তবে দেখছি না। হয়তো আমাদের কথা তার মনেই নেই।’
যোগাযোগ করা হলে বরগুনা-১-আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শমভু বলেন, ‘আমাদের জন্য এই দুটি সেতু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে বরগুনার উন্নয়নের যুগান্তকারী ভূমিকা রাখবে পায়রা ও বিষখালী সেতু। এ নিয়ে আমি একাধিকবার মাননীয় সেতুমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।
‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে বেশ কিছু মেগা প্রকল্প দিয়েছেন। আমাদের সেতুর বিষয়টিও বর্তমান সরকারের গুরুত্ব বিবেচনায় রয়েছে। মূলত সেতু দুটি নির্মাণ হবে বৈদেশিক অর্থে, তাই হয়তো বর্তমান বাজেটে রাখা হয়নি। তবে আমি এতটুকু বলতে পারি, এ সরকারের আমলেই সেতুর কাজ শুরু হবে।’
আরও পড়ুন:গাজীপুরের শ্রীপুরে বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে এক দম্পতির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় টেবিলের ওপরে একটি চিরকুট পাওয়া যায়।
উপজেলার মুলাইদ গ্রামের ফারুক খানের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে শুক্রবার সকালে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রাণ হারানো ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের বাসিন্দা ও তার স্ত্রী রোকেয়া খাতুনের (১৫) বাবার বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রাম।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত সাত থেকে আট মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই শ্রীপুরের মুলাইদ গ্রামের ফারুক হোসেনের বহুতল ভবনে ভাড়া থাকতেন। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।
রোকেয়ার ভাই বোরহান উদ্দিন বলেন, ‘সাত থেকে আট মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ের সম্পর্কে জড়িয়েছিল। বিয়ের পর তাদের সম্পর্ক ভালোই চলছি। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়। সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পাই।’
ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্ল্যাটে করতেন। শুক্রবার সকালে তাদের ফ্ল্যাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান এবং ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের ওপর বিছানায় দেখতে পান।
শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সাখাওয়াত হোসেন জানান, ‘খবর পেয়ে একটি ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রীর আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনিও আত্মহত্যা করেন।’
এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর মোহনায় জেলের জালে এবার ধরা পড়েছে ২৬ কেজি ২৫০ গ্রাম ওজনের একটি কোরাল মাছ।
পরে সেই মাছটি কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারে বিক্রি করা হয়েছে ৩২ হাজার ৭৫০ টাকায়।
কুয়াকাটা পৌর মাছ বাজারের ‘কুয়াকাটা ফিস পয়েন্টের’ পরিচালক নাসির উদ্দিন বৃহস্পতিবার দুপুরে মাছটি কেনেন।
তিনি বলেন, ‘সাগর মোহনায় সচরাচর এত বড় মাছ পাওয়া যায় না। আজ দুপুরে মাছটি মার্কেটে আসার পর এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নেই।’
স্থানীয় জেলেরা জানান, গত মঙ্গলবার কুয়াকাটার বাবলাতলা এলাকার জেলে রাসেল ‘মায়ের দোয়া’ নামের তার ট্রলারটি নিয়ে গভীর সমুদ্রে ইলিশ মাছ ধরতে রওনা হন। পরবর্তীতে বলেশ্বর নদীর সাগর মোহনায় রাত ২টার দিকে রাসেলের জালে এ বিশাল কোরাল মাছটি ধরা পড়ে।
রাসেল বলেন, ‘তীব্র তাপদাহ শুরুর পর থেকে সাগরে মাছ পড়ে না। ভাগ্য সহায় বলে এত বড় মাছ আল্লাহ দিয়েছেন। মাছটি তীরে নিয়ে আসলে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ীরা মাছটি ক্রয় করতে চেয়েছেন। পরে কুয়াকাটা মাছ বাজারে এক হাজার ২৫০ টাকা কেজি দরে মাছটি বিক্রি করেছি।’
জানতে চাইলে কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, নদ-নদী এবং সাগরে বিভিন্ন মাছ পাওয়া যায়। সব সময় বড় মাছ ধরা পড়ছে না। সামুদ্রিক কোরাল এর চেয়েও অনেক বড় হয়।
সরকারের দেয়া ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরার সফল কার্যক্রমের কারণেই এ ধরনের মাছ জেলেদের জালে ধরা পড়ছে বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন:পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখা থেকে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে তিনজনকে আটক করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদের সাঁথিয়া থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। তিনজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম ও ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী, যাদের বাড়ি পাবনার বিভিন্ন উপজেলায়।
পুলিশের ভাষ্য, টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।
সাঁথিয়া থানা ও অগ্রণী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে পাঁচ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে আকস্মিক অডিটে আসেন অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান তারা। পরে অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এ ঘটনায় অগ্রণী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ করেন।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বিভাগীয় অফিস থেকে পাঁচ সদস্যের অডিট টিম ব্যাংকে অডিট শুরু করে। ওই টিমের পাশাপাশি পুলিশ সদস্যরা দিনভর জিজ্ঞাসাবাদ করে তিনজনের কাছ থেকে নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করেন। পরে রাতে তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।
আরও পড়ুন:কক্সবাজারের টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপে ঘরে ঢুকে এক নারী ও তার মেয়েকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
গত সোমবারের ঘটনায় বৃহস্পতিবার টেকনাফ মডেল থানায় অভিযোগটি করেন ছেনুয়ারা বেগম নামের নারী।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত সোমবার রাত দুইটার দিকে শাহপরীর দ্বীপের পূর্ব উত্তরপাড়া এলাকার নুর মোহাম্মদের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগমের ঘরের দরজা ভেঙে আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন প্রবেশ করেন। তারা ছেনুয়ারা ও তার মেয়ের হাত-পা বেঁধে মুখে কাপড় ঢুকিয়ে এলোপাতাড়ি লাথি ও ঘুষি মারেন। একপর্যায়ে মা ও মেয়ে উভয়কে বিবস্ত্র করেন আয়ুব ও তার লোকজন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, হামলাকারীরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে স্বর্ণ ও টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যান। যাওয়ার সময় তাদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের বিষয়ে কাউকে জানানো হলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে চলে যান৷
এ বিষয়ে ছেনুয়ারা বেগম বলেন, ‘সন্ত্রাসী আয়ুব খানের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন যুবক আমার বাড়িতে ভয়ভীতি দেখিয়ে প্রবেশ করে। পরে বাড়ি থেকে আমাকে জোরপূর্বক কয়েকজন লোক বের করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখে এবং আমার মেয়েকে নির্যাতন করে স্বর্ণ ও টাকা নিয়ে যায়। তাদের বিরুদ্ধে ঘটে যাওয়া বিষয়ে কাউকে বললে মেরে ফেলা হবে বলে চলে যায়।’
থানায় অভিযোগের পর আয়ুব হুমকি দিয়েছে জানিয়ে ছেনুয়ারা বলেন, ‘সেই আয়ুব খান মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বলে, মামলা হলে কী হবে? জামিন নিয়ে বাহির হয়ে আমাকে আর আমার মেয়েকে মেরে ফেলা হবে বলে প্রাণনাশের হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে আমি টেকনাফ মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি।’
এ বিষয়ে সাবরাং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য রেজাউল করিম রেজু বলেন, ‘আমি বিষয়টি শুনেছি এবং সঠিক তদন্তে পুলিশকে সহযোগিতা করব।’
অভিযোগ তদন্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘আমি ঘটনার সত্যতা পেয়েছি এবং আমি মামলা করার জন্য ওসি বরাবর সুপারিশ করেছি।’
টেকনাফ মডেল থানার ওসি ওসমান গণি বলেন, ‘আরও গভীরভাবে তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করা হবে।’
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজারে বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা নাশকতা মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান ও জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক এমএ মুহিতসহ ১৪ নেতাকর্মীকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে তা নামঞ্জুর করে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
উচ্চ আদালতের মঞ্জুরকৃত জামিন শেষ হওয়ায় তারা আদালতে হাজির হন।
মৌলভীবাজার মডেল থানায় ২০২৩ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে করা দুটি রাজনৈতিক মামলার ১৪ জন আসামি হাজির হলে আদালত তাদের সবার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করে।
মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন- জেলা বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক মুহিতুর রহমান হেলাল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলে সাবেক সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলর স্বাগত কিশোর দাস চৌধুরী, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আহমেদ আহাদ, যুবদলের এমএ নিশাদ, যুবদলের সিরাজুল ইসলাম পিরুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নুরুল ইসলাম, যুবদলের ওয়াহিদুর রহমান জুনেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আব্দুল হান্নান, স্বেচ্ছাসেবক দলের রোহেল আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের মামুনুর রশিদ ও যুবদলের জাহেদ আহমেদ।
মৌলভীবাজার জেলা আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. ইউনুছ মিয়া জানান, ২০২৩ সালে নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় মৌলভীবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন আসামিরা। আদালত শুনানি শেষে আবেদন নামঞ্জুর করে তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি থানাধীন সাজেকে শ্রমিকবাহী ডাম্প ট্রাক খাদে পড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৯ জনে দাঁড়িয়েছে।
বাঘাইছড়ি থানার সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল আওয়াল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে জানান।
এর আগে বিকেলে সাজেকের উদয়পুর সীমান্ত সড়কের ৯০ ডিগ্রি এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশের ভাষ্য, খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকের উদয়পুর সীমান্তবর্তী সড়ক নির্মাণের জন্য ডাম্প ট্রাকে ১৪ জন শ্রমিক জামান ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির সেতুর কাজে যাচ্ছিলেন। পথে গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের ঢালে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ছয়জনের মৃত্যু হয়।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, যেখানে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে, সেটি খুবই দুর্গম এলাকা। আহত শ্রমিকদের উদ্ধার করে খাগড়াছড়ি জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী, তবে তাৎক্ষণিকভাবে কারও নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরও পড়ুন:মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলায় ৭ (সাত) বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে সৈয়দ সরাফত আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক রিপন চন্দ্র গোপের নেতৃত্বে একটি অভিযানিক দল বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশন এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে।
৬০ বছর বয়সী সৈয়দ সরাফত আলী রাজনগর থানার করিমপুর চা বাগান এলাকার বাসিন্দা।
পিবিআই জানায়, শিশুটিকে বাঁশের বাঁশি বানিয়ে দেয়ার লোভ দেখিয়ে গত ১৪ এপ্রিল বেলা পৌনে দুইটার দিকে সৈয়দ সরাফত আলী তার বাড়ির পাশের বাঁশ ঝাড়ের নিচে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে ধর্ষণ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি হলে তিনি আত্নগোপন করেন।
অসুস্থ অবস্থায় শিশুটিকে গত প্রথমে রাজনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে মৌলভীবাজার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়।
এ বিষয়ে শিশুটির বাবা বাদী হয়ে রাজনগর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন।
পিবিআই মৌলভীবাজার পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক বলেন, ‘শিশু ধর্ষণের ঘটনায় অপরাধীর পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আইনের আওতায় এনে তাদের বিচার করা হবে। মামলার খুঁটিনাটি বিষয় বিবেচনায় রেখে নিখুঁত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।’
আরও পড়ুন:
মন্তব্য