জুনে অর্থবছর শেষ করা প্রথম কোম্পানি হিসেবে লভ্যাংশ ঘোষণা করা ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের কোম্পানি সি পার্ল বিচ রিসোর্ট ও স্পা লিমিটেড বিনিয়োগকারীদেরকে হতাশ করল। সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরের জন্য শেয়ার প্রতি ১০ পয়সা লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোম্পানিটি।
করোনার বছরে লকডাউনে হোটেল বন্ধ থাকায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত কোম্পানিটি গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় করেছে ৬১ পয়সা। তবে এই আয় আগের বছরের চেয়ে ভালো। ওই বছর শেয়ার প্রতি ৯ পয়সা লোকসান হয়েছিল।
করোনার কারণে লকডাউন ও শাটডাউনে কীভাবে কোম্পানিটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেটি বোঝা যায় এর চতুর্থ প্রান্তিকের হিসেবে। গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউনে কোম্পানিটির ব্যবসা হয়নি। মার্চ পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিক শেষে কোম্পানিটির যত আয় ছিল, তার অর্ধেক পরের তিন মাসে লোকসান হয়েছে।
গত বছরের জুলাই থেকে চলতি বছর মার্চ পর্যন্ত শেয়ার প্রতি আয় ছিল ১ টাকা ২০ পয়সা। অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত শেয়ার প্রতি লোকসান হয়েছে ৪৯ পয়সা।
লোকসান সত্ত্বেও আগের বছর যে হারে লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি, এবার মুনাফা করার পরেও সেই পরিমাণ লভ্যাংশই দিতে চাইছে।
রোববার কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের সভায় লভ্যাংশ সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
কোম্পানিটির লভ্যাংশ সংক্রান্ত রেকর্ড ডেট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৬ সেপ্টেম্বর। অর্থাৎ এই লভ্যাংশ নিতে চাইলে সেদিন শেয়ার ধরে রাখতে হবে।
এই লভ্যাংশ অনুমোদনের জন্য বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিতে বার্ষিক সাধারণ সভা ডাকা হয়েছে আগামী ১৩ নভেম্বর।
কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত রাজস্ব আয় করেছে ৬৪ কোটি ৩৯ লাখ ৪৪ হাজার ৭৯৭ টাকা। আগের বছরের একই সময়ে আয় ছিল ৪৫ কোটি ৮৫ লাখ ৭ হাজার ৭৪৪ টাকা। ফলে এই সময়ে কোম্পানিটির রাজস্ব আয় বেড়েছে ১৮ কোটি ৫৪ লাখ ৩৭ হাজার ৫৩ টাকা।
তবে ১২ কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজারটি শেয়ারে বিভক্ত কোম্পানিটির চূড়ান্ত আয় হয়েছে ৭ কোটি ৩৬ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা।
এই আয়ের মধ্যে কোম্পানিটি বিতরণ করতে চায় ১ কোটি ২০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
২০২০ সালে শেয়ার প্রতি ৯ পয়সা লোকসান করেও ১০ পয়সা নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল সি পার্ল। ২০১৯ সালে কোম্পানিটি সদ্য সমাপ্ত অর্থবছরে চেয়ে কম আয় করে বেশি লভ্যাংশ দিয়েছিল। সে সময় শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ৪৪ পয়সা, আর বিনিয়োগকারীরা ৫ শতাংশ বোনাস, অর্থাৎ প্রতি ২০টি শেয়ারে একটি শেয়ার পেয়েছিলেন।
লভ্যাংশ তলানিতে থাকলেও পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির শেয়ারের মূল্য তুলনামূলক হিসেবে বেশিই বলা যায়। লভ্যাংশ ঘোষণার দিন এর শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৪৩ টাকায়। গত এক বছরে সর্বনিম্ন দাম ছিল ৩৯ টাকা ৫০ পয়সা আর সর্বোচ্চ দর ছিল ৭৯ টাকা ১০ পয়সা।
কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদমূল্য আছে ১০ টাকা ৬৩ পয়সা।