জুন ও জুলাই মাসে পোশাক খাতে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার ক্রয়াদেশের খবর প্রকাশের পরদিন পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতে ব্যাপক চাঙাভাব দেখা দিয়েছে।
এই খাতের প্রায় সব কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধির পাশাপাশি লেনদেনও হয়েছে ব্যাপক। আগের কর্মদিবসের চেয়ে লেনদেন বেড়েছে ১০০ কোটি টাকারও বেশি।
আগের দিন নিউজবাংলার এক খবরে প্রকাশ পায় ১০ বিলিয়ন ডলার বা ৮৫ হাজার কোটি টাকার যে ক্রয়াদেশ পাওয়া গেছে, সেটি চলতি আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিপমেন্ট করতে হবে। এই আদেশ গত এক বছরের মোট রপ্তানির প্রায় ৩৫ শতাংশ।
করোনাকালে এই আদেশ তৈরি পোশাক খাতের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে আর পোশাক খাতের শেয়ারে তাই দেখা দিয়েছে নতুন করে আগ্রহ।
গত দুই কর্মদিবসে এই খাতের শেয়ার দর এমনিতেই বাড়ছিল। আর নতুন অর্ডারের খবরে তা বাড়ে আরও বেশি।
দুই দিনের সাপ্তাহিক ছুটি শেষে রোববার পুঁজিবাজার বন্ধ ছিল সেদিন ব্যাংকে লেনদেন বন্ধ থাকায়। সোমবার পুঁজিবাজারে সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে বস্ত্র খাতের ৫৮টি কোম্পানির মধ্যে মাত্র চারটির শেয়ার দর কমেছে। বাকি ৫৪টি কোম্পানির দর বেড়েছে। অবশ্য সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধির তালিকায় এই খাতের প্রাধান্য ছিল না।
ব্যাংকে লেনদেনের সময় এক ঘণ্টা বাড়ায় আজ থেকে পুঁজিবাজারেও লেনদেন এক ঘণ্টা বাড়িয়ে বেলা ২টা পর্যন্ত করা হয়েছে।
আর সকালে লেনদেনের শুরু থেকেই বাজারে দেখা দেয় চাঙাভাব। বস্ত্রের হাত ধরে বাজার এগিয়ে গেলেও পরে যোগ হয় ওষুধ ও রসায়ন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক ও প্রকৌশল এবং ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক খাতের শেয়ার দরও বাড়ে।
সব মিলিয়ে পুঁজিবাজারে সূচক বাড়ে ৫০ পয়েন্টের বেশি। আর ২০ জুনের পর প্রথমবারের মতো লেনদেন ছাড়ায় ২ হাজার কোটি টাকার ঘর।
১০টা ৭ মিনিটে সূচক ৬ হাজার ৪২৫ পয়েন্ট থেকে বেড়ে হয় ৬ হাজার ৪৬১ পয়েন্টে। এরপর কিছুটা ঠাক্কা লাগে সূচকে। উত্থানে গতি খানিকটা কমে ১০টা ২০ মিনিটে সূচক নেমে আসে ৬ হাজার ৪৪৮ পয়েন্টে।
চলতে থাকে লেনদেন। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। ১১টা ১৬ ও ১টা ২৫ মিনিটে দিনের সর্বোচ্চ অবস্থায় পৌঁছে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৬ হাজার ৪৭৫ ও ৬ হাজার ৪৮৩ পয়েন্টে।
দিন শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ আগে একপর্যায়ে তা ৬ হাজার ৪৯১ পয়েন্ট পর্যন্ত পৌঁছে। তবে পরে সমন্বয়ে ১০ পয়েন্ট কমে শেষ হয় লেনদেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের এই সূচক ২০১১ সালের ২৮ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ। ওই দিন পুঁজিবাজারের ডিএসই সূচক ছিল ৬ হাজার ৫৮৭ পয়েন্ট। যদিও এখন আর ডিএসই সূচক নেই। ২০১৩ সালের ২৭ জানুয়ারি চালু হয় ডিএসইএক্স সূচক।
এই ডিএসই ও ডিএসইএক্স সূচকের তুলনা করলে দেখা যায়, চালুর দিন ডিএসইএক্স সূচক ছিল ৪ হাজার ৫৫। তবে সেদিন ডিএসই সূচকের মানদণ্ডে তা ছিল ৪ হাজার ১৭১ পয়েন্ট।
চাঙা বাজারে ব্যাপকভাবে হতাশ করেছে বিমা খাত। বস্ত্রে যেমন প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার দর বেড়েছে, তেমনি উল্টোভাবে এই খাতে কমেছে প্রায় সব কোম্পানির শেয়ার দর।
অর্ধবার্ষিক মুনাফায় চমক দেখানো ব্যাংক খাতে আবারও গেল একটি মন্দা দিন। যেসব কোম্পানির দাম বেড়েছে, তা একেবারেই নগণ্য পরিমাণে। তেমনি যেগুলো দর হারিয়েছে, সেগুলোর পতনও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে নয়।
প্রত্যাশার উত্থানে বস্ত্র
দীর্ঘদিন ধরেই পুঁজিবাজারে আলোচনায় বস্ত্র খাতের কোম্পানির শেয়ার নিয়ে। জুন ক্লোজিংয়ের প্রায় সব কটি কোম্পানি ২০২১ সালের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে।
এমন অবস্থায় প্রায়ই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত অন্য খাতকে পেছনে ফেলে দর বৃদ্ধিতে সামনে আসে বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলো।
রোববার নতুন এক খবর যোগ হলো বস্ত্র খাতের উত্থানে। তা হচ্ছে বাংলাদেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের ক্রয়াদেশ পেয়েছে। যা সেপ্টেম্বরের মধ্যে শিপমেন্ট করতে হবে। ফলে নতুন স্বপ্ন যুক্ত হলো এ খাতে। সোমবার লেনদেনে বস্ত্র খাতের শেয়ার দরে সেই ছোঁয়ায় দর বেড়েছে সবকটি তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার দর।
তবে কোনো খাত দিয়ে যখন তোলপাড় হয়, তখন সেই খাতের শেয়ারগুলোর দর দিনের সর্বাধিক দর বৃদ্ধির তালিকায় থাকে সাধারণত। তবে এদিন সর্বাধিক দর বৃদ্ধির তালিকায় এই খাতের শেয়ারগুলো ছিল কমই।
সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এমন ১০টি কোম্পানির মধ্যে দুটি ছিল বস্ত্র খাতের। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৯.৯৫ শতাংশ বেড়েছে মেট্রো স্পিনিংয়ের দর। ১৯ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ২১ টাকা।
তারপরেই আছে প্যাসিফিক ডেনিম, যার শেয়ারপ্রতি দর বেড়েছে ৯.৯৩ শতাংশ, ১৪ টাকা ১০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ১৫ টাকা ৫০ পয়সা।
আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৯.৫০ শতাংশ, ৩৮ টাকা ৫০ পয়সা থেকে বেড়ে হয়েছে ৪১ টাকা ৬০ পয়সা।
এই খাতে লেনদেনও বেড়েছে ব্যাপকভাবে। আজ হাতবদল হয়েছে ২৯৫.৯১ কোটি টাকা, যা আগের দিন ছিল ১৮৬ কোটি ৩৪ লাখ টাকা।
সবচেয়ে বেশি লেনদেন প্রকৌশল খাতে
এই খাতের বেশির ভাগেরই লভ্যাংশ ঘোষণার সময় এসেছে আর সিংহভাগ কোম্পানিই করোনাকালে ভালো ব্যবসা করেছে বলে তাদের আর্থিক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
আরও বেশ কিছু বন্ধ ও লোকসানি কোম্পানির আবার চালু বা নতুন ব্যবসা শুরুর খবরেও আগ্রহ বেড়েছে।
সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া ১০টি কোম্পানির মধ্যে চারটিই ছিল এই খাতের।
এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে এস আলম কোল্ড রোলিং স্টিলের দর। ১০ শতাংশ বেড়ে শেয়ার দর ৩৩ টাকা থেকে হয়েছে ৩৬ টাকা ৩০ পয়সা।
ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপার্ডের শেয়ার দর ১৫ টাকা ২০ পয়সা থেকে ৯.৯৩ শতাংশ বেড়ে হয়েছে ১৬ টাকা ৬০ পয়সা।
নাহি অ্যালুমিনিয়ামের দর ৯.৯৩ শতাংশ বেড়ে ৪৩ টাকা ৫০ পয়সার শেয়ার হয়েছে ৪৭ টাকা ৬০ পয়সা।
সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজের দর বেড়েছে ৯.৮৫ শতাংশ। আরএসআরএম স্টিল মিলস লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৬৯ শতাংশ। বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস লিমিটেডের শেয়ার দর বেড়েছে ৯.৫৫ শতাংশ।
লেনদেন হওয়া ৪২টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ৩৮টির, কমেছে তিনটির, পাল্টায়নি একটির।
এই খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩৭৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১৭৯ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা বিদ্যুৎ ও ওষুধ খাতেও আগ্রহ
গত সপ্তাহ থেকেই ওষুধ ও রসায়ন খাতে বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক দেখা দিয়েছিল। সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে তা বেড়েছে আরও বেশি।
এই খাতের ৩১টি কোম্পানির মধ্যে বেক্সিমকো সিনথেটিক অবসায়নের সিদ্ধান্ত জানানোর পর থেকে লেনদেন স্থগিত। বাকি কোম্পানিগুলোর মধ্যে বেড়েছে ২৬টির দরই। বিপরীতে কমেছে ৪টির।
গত এক বছরে তিন গুণেরও বেশি দাম বাড়া বিকন ফার্মা আবার লাফ দিয়েছে। ১০ টাকার শেয়ার এক দিনেই ১৬ টাকা ৬০ পয়সা বেড়ে হয়েছে ২১৭ টাকা ৬০ পয়সা।
উল্লেখযোগ্যসংখ্যক বেড়েছে এসিআই ফর্মুলেশন, সেন্ট্রাল ফার্মা, ইন্দোবাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস, জেএমআই সিরিঞ্জ, লিব্রা ইনফিউশনের দরও।
এই খাতে লেনদেন ৩০৯ কোটি ২৪ লাখ টাকা, যা আগের কর্মদিবসে ছিল ১৭২ কোটি ৪৮ লাখ টাকা।
ঘুমন্ত জ্বালানি খাতে মাঝে মাঝে যে ঝলক দেখা দেয়, তেমন একটি দিন ছিল আজ। এই খাতের ২৩টি কোম্পানির মধ্যে পাঁচটির দর হারানোর বিপরীতে বেড়েছে ১৮টির দর। লেনদেনও বেড়েছে ব্যাপকভাবে। গত বৃহস্পতিবার এই খাতে লেনদেন ৮২ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। তা এক লাফে হয়েছে ১৩৬ কোটি ৭৭ লাখ টাকা।
শতকরা হিসেবে দর বৃদ্ধির হার খুব একটা বেশি না হলেও দিন শেষে কিছুটা হলেও বাড়ার পাশাপাশি লেনদেন দেড় গুণ হয়ে যাওয়াটা এই খাতের বিনিয়োগকারীদের জন্য ছিল স্বস্তিকর।
বিশেষ করে দুই বিদ্যুৎকেন্দ্রের মেয়াদ পেরিয়ে যাওয়ার পর নতুন করে মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করা কেপিসিএলের শেয়ার দর ৬০ পয়সা বৃদ্ধি পাওয়া কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে কোম্পানিটির বিনিয়োগকারীদের।
বিমা খাতে আরও হতাশা
জুনের মাঝামাঝি সময়ে সংশোধনে যাওয়া বিমা খাত মহামারির বছরে প্রথম ৬ মাসে আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে বেশি মুনাফা করেছে বলে প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে।
তার পরেও পতনের বৃত্ত থেকে বের হতে পারছে না এই খাতটি। এই খাতের ৫১টি কোম্পানির মধ্যে দাম বেড়েছে কেবল ৬টির। অন্যদিকে দর হারিয়েছে ৪৩টি কোম্পানি। পাল্টায়নি বাকি দুটির দাম।
বেশির ভাগ বিমা কোম্পানির শেয়ার দর পতন হওয়ায় এদিন দিনের সর্বোচ্চ পতন হওয়া প্রাইম ইন্স্যুরেন্স দর হারিয়েছে ৯.৮৯ শতাংশ।
অন্যগুলোর মধ্যে প্রভাতী ইন্স্যুরেন্স ৪.৯৯ শতাংশ, মার্কেন্টাইল ইন্স্যুরেন্স ৪.২৬ শতাংশ, পাইওনিয়ার ইন্স্যুরেন্স ৪.১৭ শতাংশ, গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স ৪ শতাংশ দর হারিয়েছে।
ফিনিক্স, পপুলার লাইফ, ক্রিস্টাল, সেন্ট্রাল ও বাংলাদেশ ন্যাশনাল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার দর কমেছে তিন শতাংশ পর্যন্ত।
উদ্যোক্তা পরিচালকরা ৬০ লাখেরও বেশি শেয়ার কেনার পর গোটা খাতে পতনের ভিড়ে উল্টো স্রোতে থাকা স্ট্যান্ডার্ড ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে আরও। ২.৫১ শতাংশ বেড়ে শেয়ার দর ৮৩ টাকা ৪০ পয়সা থেকে হয়েছে ৮৫ টাকা ৪০ পয়সা।
এই খাতে লেনদেন অবশ্য কিছুটা বেড়েছে। আজ হাতবদল হয়েছে ২০১ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা গত বৃহস্পতিবার ছিল ১৯৭ কোটি ১০ লাখ টাকা।
সুখবরও আগ্রহ বাড়াতে পারছে না ব্যাংকে
২০২০ সালে মহামারির বছরে কোম্পানিগুলো যে লভ্যাংশ বিতরণ করেছে, সেটি ছিল প্রত্যাশার বাইরে। অর্ধবার্ষিক মুনাফায় চমক দেখানো ব্যাংক খাতে কোনো কোনো কোম্পানির শেয়ার দর তিন থেকে চার গুণ হয়েছে। একটি কোম্পানি গত চার বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মুনাফা করেছে।
তার পরেও এই খাত বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করতে পারছে না। লেনদেনেও নেই গতি, আর শেয়ার দর খুব একটা বাড়েও না, আবার কমেও না।
আজ ৩১টি ব্যাংকের মধ্যে দর কমেছে ১৯টির, বেড়েছে ৭টির আর অপরিবর্তিত দেখা গেছে বাকি ৫টির দর।
লেনদেনে ব্যাংক খাতের সবচেয়ে বেশি দর কমেছে শাহজালাল ইসলামী ব্যাংকের ১.৪৪ শতাংশ। সাউথ ইস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১.১৮ শতাংশ। স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ১.০৬ শতাংশ। রূপালী ব্যাংক ও মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার দর কমেছে ০.৯৪ শতাংশ।
এক শতাংশের কম হারে শেয়ার দর কমেছে ডাচ বাংলা, যমুনা, প্রাইম, আল আরাফাহ ইসলামী, এনআরবিসি ও ইসলামী ব্যাংকের।
দর বাড়া এবি, ব্র্যাক, সিটি, আইসিবি ইসলামী, এনসিসি, ওয়ান ও উত্তরার মধ্যে কেবল ব্র্যাকের দর বেড়েছে ২০ পয়সা, বাকিগুলোর ১০ পয়সা।
এই খাতে মোট লেনদেন হয়েছে ১০২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ৮৯ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
তবে ব্যাংকবহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে আবার দেখা গেছে চাঙাভাব। এই খাতের ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দর বেড়েছে ১৯টির, কমেছে ২টির আর পাল্টায়নি দুটির।
এই খাতে লেনদেন হয়েছে মোট ৯০ কোটি ৫৩ লাখ টাকা, যা আগের কর্মদিবসে ছিল ৪৭ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
অন্যান্য খাতের লেনদেন
প্রধান অন্য খাতগুলোর মধ্যে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২০টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১২টির, কমেছে ৭টির আর একটির ছিল অপরিবর্তিত। এই খাতে লেনদেন হয়েছে ১০৫.৪০ কোটি টাকা, যা আগের দিন ছিল ১০১ কোটি ৪১ লাখ টাকা।
এই খাতে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে অ্যামারেল্ড অয়েলের দাম। চার বছর ধরে বন্ধ থাকা কোম্পানিটি আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে চালু হচ্ছে। এই খবর প্রকাশ হয়েছে আগেই। এর মধ্যে যোগ হলো গত জুলাইয়ে কোম্পানিটির ১০ শতাংশ শেয়ার কিনেছে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা।
কোম্পানিটির শেয়ার দর ৯.৯৭ বেড়েছে। আগের দিন দাম ছিল ২১ টাকা ১০ পয়সা, বর্তমান দাম ৩৫ টাকা ৩০ পয়সা।
৩৬টির মধ্যে ৩০টি মিউচ্যুয়াল ফান্ড লভ্যাংশ ঘোষণার অপেক্ষায় থাকলেও এই খাতে আগ্রহ এখন আর সেভাবে বাড়ছে না, যদিও গত চার মাসে ইউনিটের দর দেড় গুণেরও বেশি বেড়েছে।
ফান্ডগুলোর মধ্যে দর বেড়েছে কেবল ৮টির, অন্যদিকে দর হারিয়েছে ১৪টি। অপরিবর্তিত ছিল বাকি ১৪টির দর।
তবে বেড়েছে লেনদেন। এই খাতে হাতবদল হয়েছে ৯৩ কোটি ১ লাখ টাকা, যা বৃহস্পতিবার ছিল ৬৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
বিবিধ খাতের ১৪টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১০টির, কমেছে ৩টির, আর অপরিবর্তিত দেখা গেছে একটির দর।
এই খাতে হাতবদল হয়েছে মোট ১১৮ কোটি ৮১ লাখ টাকা, যা আগের দিন ছিল ১১৩ কোটি টাকা।
সূচক ও লেনদেন
সোমবার ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ৫৬ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৪৮১ পয়েন্টে।
শরিয়াহভিত্তিক কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসইএস সূচক ১১ দশমিক ১০ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪১২ পয়েন্টে।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচকের এই অবস্থান এখন ২০১১ সালের ২৮ জুলাইয়ের পর সর্বোচ্চ
বাছাই করা কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএস-৩০ সূচক ১৬ দশমিক ২২ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৩৪৪ পয়েন্টে।
লেনদেন হওয়া কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ২৩২টির, কমেছে ১১৮টির, দর পাল্টায়নি ২৫টির। লেনদেন হয়েছে মোট ২ হাজার ১৮৭ কোটি টাকা, যা আগের কার্যদিবসে ছিল ১ হাজার ৫২১ কোটি টাকা।
চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) প্রধান সূচক সিএএসপিআই আগের দিনের তুলনায় ২২৩ দশমিক ৩৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৮৫৮ পয়েন্টে।
লেনদেন হয়েছে ৭৩ কোটি টাকা।