বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচ মাঠে গড়াচ্ছে বুধবার। সেখানে মুখোমুখি হবে রংপুর রাইডার্স আর ফরচুন বরিশাল। আরেকটু স্পষ্ট করলে তামিম ইকবাল আর সাকিব আল হাসান। এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে দশম আসরের ফাইনালের দ্বিতীয় দল।
যে জিতবে সে-ই ফাইনাল খেলবে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের সঙ্গে। হেরে যাওয়া দল বাড়ি যাবে বিদায়ের বিউগল শুনতে শুনতে। তাই দুই দলের জন্যই বিপিএলের মহাগুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ এটি। অন্যদিকে এই ম্যাচে যে জিতবে, সাকিব-তামিম কথিত দ্বৈরথে সে-ই তো ‘চ্যাম্পিয়ন’!
গ্রুপ পর্বের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে মুখোমুখি অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান আর দেশসেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। দুর্দান্ত খেলতে থাকা তামিম ইকবালকে আউট করলেন সাকিব। এরপরই হাত মুষ্টিবদ্ধ কনুই ঝাঁকি দিয়ে উদযাপন করলেন। দ্বিতীয় ইনিংসের খেলা। ব্যাটিংয়ে নেমেই চড়াও হতে থাকেন সাকিব। মেহেদী মিরাজকে তুলে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন বদলি ফিল্ডার প্রীতমের কাছে। এবার ক্যামেরা তামিম ইকবালের দিকে, সাকিবের সেই উদযাপন ফিরিয়ে দিলেন তিনি।
সে ম্যাচে শেষ ওভারের তৃতীয় বলে এক উইকেটের জয় পেয়েছিল রংপুর। জমজমাট সেই ম্যাচের আলোচনা ছাপিয়ে, ম্যাচ শেষে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল সাকিব-তামিমের উদযাপন।
বুধবার আবারও মুখোমুখি হচ্ছেন সাকিব-তামিম। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার ম্যাচে আরেকবার দেখা যাবে সাকিব-তামিমের এমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।
এখন প্রশ্ন হলো- শক্তির বিচারে কে কতটা এগিয়ে? এখানে অবশ্য একক আধিপত্য দেয়ার সুযোগ নেই কাউকে। কারণ দুই দলই নিজেদের সেরা অস্ত্র নিয়ে মাঠে নামবে।
তবে শেষ দুই ম্যাচে হেরে কিছুটা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকারই কথা রংপুর রাইডার্সের। রংপুরের আরেকটি চিন্তার কারণ হতে পারে তাদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। শেষ দুই ম্যাচেই ব্যর্থ ছিলেন রংপুরের অধিকাংশ ব্যাটার। প্রথম কোয়ালিফায়ার ম্যাচে তো শঙ্কা জেগেছিল স্বল্প রানে অলআউট হওয়ার। জিমি নিশামের কল্যাণে সেটা হয়নি। তাই এই ম্যাচের আগে রংপুরকে ব্যাটিংয়ে বেশ মনোযোগী হতে হবে।
অন্যদিকে শেষ দুই ম্যাচেই জয় পেয়ে মানসিকভাবে বেশ স্বস্তিতে আছে বরিশাল। বরিশালের বড় শক্তির জায়গা তামিম ইকবালের বড় ইনিংস খেলা আর কেইল মায়ার্সের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স। সাইফুদ্দিনের দুর্দান্ত বোলিং বাড়তি পাওয়া বরিশালের জন্য।
শেষ দুই ম্যাচেই তামিম ইকবাল দারুণ দুটি ইনিংস খেলেছেন। তুলে নিয়েছেন দুটি অর্ধশতক। বরিশালের জয়ে বড় ভূমিকা ছিল তামিমের ব্যাটের। মানে বেশ ইফেক্টিভ ছিল তামিমের ইনিংস দুটি। যেটি পুরো টুর্নামেন্টেই খুব একটা দেখা যায়নি। রংপুরের বিপক্ষেও সেই ধারাবাহিকতাই ধরে রাখতে চাইবে তামিম এবং বরিশাল।
অন্যদিকে বিপিএলের মাঝপথ থেকেই আগুনে ব্যাট করছিলেন সাকিব আল হাসান। প্রত্যেক ম্যাচেই সাকিবের স্ট্রাইক রেট ছিল ১৫০-এর উপরে। কিন্তু শেষ দুই ম্যাচেই হাসেনি সাকিবের ব্যাট। পায়নি রানের দেখা। তাই এ ম্যাচে সাকিবের ওপর থাকবে বাড়তি চাপ। তবে এমন চাপ মোকাবিলা করার সক্ষমতা আছে সাকিবের।
সাকিব-তামিমের লড়াইয়ে অবশ্য বাড়তি চোখ থাকবে বরিশালের ডেভিড মিলার আর রংপুরের নিকোলাস পুরানের দিকে। একই তুলনায় নাম আসতে পারে রংপুরের জিমি নিশাম আর বরিশালের কেইল মায়ার্স। দেশিদের মধ্যে চোখ থাকবে বরিশালের মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, সাইফুদ্দিন, মেহেদী মিরাজ। আর রংপুরের শেখ মাহেদী আর নুরুল হাসান সোহানের দিকে।
সবমিলিয়ে কঠিন একটি ম্যাচ হতে যাচ্ছে এটি। দুই দলের শেষ লড়াইয়ের মতো দর্শকরাও চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকবে এই ম্যাচের দিকে সাকিব-তামিমের আরেকটি জমজমাট লড়াই দেখার জন্য।
অবশ্য এই ম্যাচে মাঠে নামবে আরও দুই পাণ্ডব মাহমুউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহিম। তাই দেশের ক্রিকেট এদিন বিভক্ত হয়ে যাবে দুই দলে। তবে ভালো খেলেই ফাইনালে যেতে হবে হয় সাকিবকে অথবা তামিমকে।