বৃষ্টি কে না পছন্দ করেন? যদি কেউ প্রকৃতির এই আশীর্বাদ অপছন্দই করে থাকেন, তাহলে হয়তো তিনি নিতান্তই বেরসিক। কিন্তু কোনো ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন বৃষ্টির আগমন ঘটলে তা আশীর্বাদ নয়, বরং অভিশাপরূপেই উপনীত হয়। যার নজির আরও একবার দেখা গেল শুক্রবার বাংলাদেশ এবং নিউজিল্যান্ডের মধ্যকার ম্যাচে।
বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত হয়েছে ৩ ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচটি। যে কারণে নিউজিল্যান্ড দল খানিকটা স্বস্তি পেলেও কিছুটা হলেও হতাশ হয়েছে বাংলাদেশ দল। কারণ যতক্ষণ খেলা হয়েছে, ম্যাচের মধ্যেই ছিল নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সঙ্গে পুরো জাতিও আশায় বুক বেঁধেছিল নতুন এক ইতিহাস গড়ার সাক্ষী হতে, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে সিরিজ জিততে দেখতে। কিন্তু তা আর হলো কোথায়? নিউজিল্যান্ডের ইনিংসের ১১ ওভার শেষ হতে না হতেই হানা দেয় বেরসিক বৃষ্টি, পণ্ড হয় ম্যাচটি।
নেপিয়ারের সুখস্মৃতি নিয়েই এদিন মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে স্বাগতিকদের বিপক্ষে মাঠে নামে বাংলাদেশ। প্রথম টি-টোয়েন্টির মতো দ্বিতীয়টিতেও টসভাগ্য সহায় হয় বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্তর দিকে। ব্যস, বাংলাদেশ অধিনায়ক ঘোষণাও দিয়ে দিলেন- প্রথমে বলই করবেন।
কেন আরও একবার প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ, তা বুঝতে কারও বাকি থাকার কথা না। হ্যাঁ, শেষের দুই ম্যাচ তো প্রথমে বল করেই জিতেছিল টাইগাররা। আর এমনিতেও ম্যাচের আগের দিন মাউন্ট মঙ্গানুইয়ে হয়েছিল বৃষ্টি, যে কারণে শুরুতে বাড়তি একটু সুইং পাওয়ার আশায় আরও একবার প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
এ দিন বাংলাদেশের শুরুটাও হয়েছিল বেশ ভালো। নিজের প্রথম ওভারেই কিউই ওপেনার ফিন অ্যালেনের উইকেট নেন টাইগার পেসার শরিফুল ইসলাম। দলীয় ৯ রানেই প্রথম উইকেট হারায় কিউইরা। এরপর আরেক ওপেনার টিম সেইফার্ট শুরু করেন আক্রমণাত্মক ব্যাটিং। খেলতে থাকেন একের পর এক শট।
বাংলাদেশি বোলাররা যে বাজে বল করছিলেন তা কিন্তু নয়। তবে দিনভাগ্য বেশ সহায়ই ছিল সেইফার্টের। তার হাঁকানো বাউন্ডারিগুলোর মধ্যে অন্তত তিনটিই এসেছে আউটসাইড এজ এবং ইনসাইড এজ হয়ে। এমনকি পেসার মুস্তাফিজুর রহমানও তৈরি করেছিলেন দুই ব্যাটারকে আউট করার সুযোগ। কিন্তু ফিল্ডারদের ব্যর্থতায় তা সম্ভব হয়নি।
পাওয়ার প্লে শেষে লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক শান্ত। নিজের প্রথম ওভারে রিশাদ কোনো উইকেট না পেলেও সেখানে মাত্র ৩ রান খরচ করেন তিনি। চাপে পড়ে এর পরের ওভারেই পেসার তানজিম সাকিবের বলে শান্তর হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন সেইফার্ট। আউট হওয়ার আগে খেলেন ২৩ বলে ৪৩ রানের ইনিংস। এরপর বাকি সময় দুই ব্যাটার ড্যারিল মিচেল এবং গ্লেন ফিলিপসকে চেপে ধরেছিলেন টাইগার বোলাররা। যে কারণে আরও একবার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল বাংলাদেশ।
কিউইদের ইনিংসের ১১তম ওভার শেষে ২ উইকেটের বিনিময়ে তাদের সংগ্রহ ছিল ৭২ রান। এর পরই ম্যাচে আঘাত হানে বৃষ্টি। এর পরই ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন ম্যাচ অফিসিয়ালরা। বাংলাদেশের হয়ে এদিন শরিফুল এবং তানজিম সাকিব নিয়েছেন একটি করে উইকেট। ৩ ম্যাচ সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে একই ভেন্যুতে ৩১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সময় ভোর ৬টায়।