সিলেটের উইকেটে স্পিনাররা যে বাড়তি সুবিধা পাবেন- এটা অনুমিতই ছিল। হয়েছেও সেটি। ৯ উইকেট হারানোর দিন সাতটি উইকেটই গিয়েছে কিউই স্পিনারদের পকেটে। শুরুতে জয়, মুমিনুল শান্তদের ব্যাটে দৃঢ়তার আভাস দেখা গেলেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা কেবল মিইয়ে গিয়েছে। প্রথম দিন শেষে ৯ উইকেটে ৩১০ রান তুলেছে শান্তর দল।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারের শেষ বলে টিম সাউদিকে চার মেরে বাংলাদেশের রানের খাতা খোলেন মাহমুদুল হাসান জয়। তবে পরের ওভারেই বিপদের সম্ভাবনা জেগেছিল। কাইল জেমিসনের মিডল স্টাম্পে করা ডেলিভারি ক্রস ব্যাটে খেলতে গিয়ে ব্যর্থ হন জাকির হাসান। বল প্যাডে লাগলেও আম্পায়ার নিউজিল্যান্ডের আবেদনে সাড়া দেননি। কিউেইরা রিভিউ নিলে রিপ্লেতে দেখা যায় বল জাকিরের প্যাডে লাগার লাগে তার ব্যাট ছুঁয়েছে। ফলে রিভিউ হারিয়ে দিনের শুরু করতে হয় কিউইদের।
এরপর গুছিয়ে খেলতে শুরু করেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার। তাদের ব্যাটেই প্রথম দশ ওভার পার করে বাংলাদেশ। শুরুতে পেসাররা সাফল্য এনে দিতে ব্যর্থ হলে পরে স্পিনার এইজাজ প্যাটেলের হাতে বল তুলে দেন টিম সাউদি। সাফল্য পেতে খুব বেশি সময় নেননি প্যাটেল। ইনিংসের ১৩তম ওভারে উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন তিনি।
বাঁহাতি এই স্পিনারের অফ স্টাম্পের বাইরের ইন সুইঙ্গার ডেলিভারিটি জায়গা বানিয়ে খেলতে চেয়েছিলেন জাকির। কিন্তু ব্যাটে বলের সংযোগ না ঘটায় বোল্ড হয়ে ফিরতে হয় তাকে। জাকির ৪১ বলে ১২ রান করে সাজঘরে ফিরলে ক্রিজে এসে কিছুটা আক্রমণাত্বক খেলা শুরু করেন শান্ত। কিন্তু ওয়ানডে স্টাইলে খেলতে গিয়ে বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে পারেননি তিনি। ছক্কা হাঁকিয়ে ব্যক্তিগত ইনিংস শুরু করা শান্ত বিদায় নেন ছক্কা হাঁকাতে গিয়েই। ৩৫ বলে ৩৭ রান করে শান্ত যখন ফিরছেন, তখন দলীয় সংগ্রহ দুই উইকেটে ৯২ রান।
এরপর ফের টেস্টের মেজাজ ফিরিয়ে আনেন মুমিনুল ও জয়। এর মাঝে ৯৩ বলে নিজের হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন জয়। এ দুজনের ব্যাটে জমে ওঠে বাংলাদেশের ইনিংস। কিন্তু ত্রিশের কোটায় নিজের রান তোলার পর ফিরে যান মুমিনুলও। গ্লেন ফিলিপসের বলে কাট করতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন তিনি। তিনি ৩৭ রান করে ফিরলে পরের ওভারে সেঞ্চুরির পথে এগোতে থাকা জয়কে বিদায় করেন ইশ সোধি। ৮৬ রানে জয় ফেরার পর চার উইকেট হারিয়ে চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
এরপর ইনিংসের রাশ ধরার কথা থাকলেও তা পারেননি মুশফিক, শাহাদাৎ, মিরাজরা। নিয়মিত বিরতিতে তারা একে করে এসেছেন, আবার ফিরে গেছেন। অষ্টম ব্যাটার হিসেবে নামা উইকেটরক্ষক সোহানও দেখিয়েছেন একই দৃশ্য।
পরে তাইজুল-শরীফুলের ব্যাটে শেষ বিকেলে ফের একবার জমে ওঠে ম্যাচ। প্রথম দিনই বাংলাদেশকে অল আউট করতে নিউজিল্যান্ডের প্রয়োজন ছিল মাত্র ১ উইকেট। তবে তাদের হতাশ করেছেন শেষের এ দুই ব্যাটার।
আলোকস্বল্পতার কারণে ৫ ওভার বাকি থাকতেই শেষ হয় প্রথম দিনের খেলা। নিউজিল্যান্ডের হয়ে এদিন ফিলিপস চারটি, জেমিসন ও প্যাটেল নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। তাইজুল ৮ ও শরীফুল ১৩ রানে অপরাজিত থেকে বিশ্রামে যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর (প্রথম দিন শেষে)
বাংলাদেশ: ৩১০/৯ (৮৫ ওভার) (জয় ৮৬, জাকির ১২, মুমিনুল ৩৭, মুশফিক ১২, মিরাজ ২০, দিপু ২৪, সোহান ২৯; ফিলিপস ৪/৫৩)