বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ভারতের জয়ের মালা কি আরও দীর্ঘ হবে?

  •    
  • ১ নভেম্বর, ২০২৩ ২৩:৪৬

মুম্বাইয়ের মাঠে বৃহস্পতিবার অপ্রতিরোধ্য ভারতকে হতাশ করতে হলে শ্রীলঙ্কাকে অসাধারণ কিছু করে দেখাতে হবে। তা না হলে জয়রথ ছুটতেই থাকবে ভারতের, তাদের থামানো যাবে না।

ঠিক দেড় মাসের ব্যবধানে আবারও ওয়ানডে ক্রিকেটে বৃহস্পতিবার পরস্পরের সাক্ষাৎ হতে যাচ্ছে ভারত ও শ্রীলঙ্কার। সর্বশেষ গত সেপ্টেম্বরের ১৭ তারিখে এশিয়া কাপের ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে যে ম্যাচটি খেলেছিল লঙ্কানরা, সেটি কিন্তু জমিয়ে তুলতে পারেনি।

ফলে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছিল তাদের। অবশ্য সাইলেন্ট কিলারের মতো পারফর্ম করে টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছিল শ্রীলঙ্কা দলটি। কিন্তু ভারত যে ধাঁচের ক্রিকেট খেলেছে, তাদের সামনে বুক উঁচু করে দাঁড়াতেই পারেনি লঙ্কান খেলোয়াড়রা। বিশ্বকাপেও দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে ভারত দলটি।

এ পর্যন্ত যে ছয় ম্যাচ খেলেছে তারা, তাদের পারফরম্যান্স দেখে মনে হলো- এই অপ্রতিরোধ্য দলটিকে কেউ সহজে আটকাতে পারবে না। বৃহস্পতিবার তাদের সামনে শ্রীলঙ্কাও যে খুব একটা বড় প্রতিবন্ধক হয়ে দাঁড়াতে পারবে- এমনটা মনে হয় না।

তবে ক্রিকেট খেলায় তো অনেক কিছুই হতে পারে, যা অনেক সময় ধারণার বাইরে থাকে। সেই রকম যদি কোনো অঘটন ঘটে যায়, তাহলে ভিন্ন কথা। অবশ্য বড় মঞ্চে ভালো খেলার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে শ্রীলঙ্কা দলের। সে দিক থেকে চিন্তা করলে হয়তো ভারতের বিপক্ষে কিছু ঘটতেও পারে।

নিজেদের ঘরের মাঠে নতুন ধারার ক্রিকেট খেলছে টিম ইন্ডিয়া। কোনো দিকেই তাদের দুর্বলতা পরিলক্ষিত হয়নি। যেমন শক্তিশালী ব্যাটিং, তেমন বিধ্বংসী বোলিং তাদের। ফিল্ডিংও দুর্দান্ত।

মোট কথা, দলটিতে যারা আছেন, প্রত্যেকেই পারফর্মার। ব্যাটিংয়ে গুরুদায়িত্ব পালন করছেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি, শুভম্যান গিলরা। তাদের টপ অর্ডারের এই ব্যাটাররা ফর্মের তুঙ্গে। বিশ্বের যেকোনো বোলিংয়ের বিরুদ্ধে যেকোনো পরিস্থিতিতে লম্বা রানের ইনিংস খেলার সক্ষমতা আছে তাদের। বিশেষ করে পাওয়ার প্লের শুরু থেকেই মেজাজি ক্রিকেট খেলছেন রোহিতরা। স্কোরবোর্ডে দ্রুত রান তোলার প্রবণতা দেখছি তাদের মধ্যে। যেটি দলটিকে অনেক এগিয়ে রাখছে। মিডল অর্ডারের মেরুদণ্ড অনেক শক্ত তাদের। ফলে লোয়ার মিডল অর্ডারে তেমন চাপ পড়ছে না।

আমি মনে করি, ভারতের মতো ব্যাটিং লাইনআপ ভাঙতে হলে অবিশ্বাস্য রকমের পারফরম্যান্স দেখাতে হবে লঙ্কান বোলারদের। এ ক্ষেত্রে স্পিনের চেয়ে শ্রীলঙ্কার পেস ইউনিট বড় চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে। একটি বিষয় লক্ষণীয় যে, বিশ্বকাপের শুরু থেকেই শ্রীলঙ্কা দলটি সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাদের বেশ কিছু খেলোয়াড় ইনজুরিতে পড়েছেন। টুর্নামেন্ট চলাকালীনও চোটের কারণে তাদের তিনজন খেলোয়াড় বদল করতে হয়েছে। ফলে তারা বোলিং বিভাগ সাজাতে গিয়ে বিপাকে পড়ছে। তবে ভারতের বিপক্ষে পেস ও স্পিনের সমন্বয়ে বোলিংয়ে সেরা একটি কম্বিনেশন দাঁড় করানোর চেষ্টা করবে শ্রীলঙ্কা।

অন্যদিকে, ভারতের বোলিং খুবই ধারালো। তাদের স্পিনে শক্তি হলেন অশ্বিন, কুলদীপ ও জাদেজা। এরই মধ্যে টুর্নামেন্টে দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়ে তারা প্রশংসা কুড়িয়েছেন। তাদের পেস অ্যাটাকও বিধ্বংসী। বিশ্বের যেকোনো ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন মোহাম্মদ শামি, জাসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সিরাজরা। তাদের সামনে লঙ্কানদের কঠিন পরীক্ষাই দিতে হবে।

পাওয়ার প্লেতে যদি সাবধান হয়ে না খেলেন ব্যাটাররা, তাহলে শুরুতেই বিপদে পড়তে পারে শ্রীলঙ্কা। নতুন বলে বুমরাহদের বল সামলাতে হলে অনেক দক্ষতার পরিচয় দিতে হবে। অবশ্য শ্রীলঙ্কা দলের ব্যাটাররা কতটা স্কিলফুল, তারা সেটি গত ম্যাচগুলোতে দেখিয়েছে। সাড়ে তিনশর কাছাকাছি স্কোরও গড়েছে দলটি। ফলে ভারতের বিপক্ষে তারা জ্বলে উঠলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

পূর্ণ শক্তি, সামর্থ্য থাকার পরও যে অনেক সময় দল হতাশায় পুড়ে- এমন ঘটনা আছে অহরহ। মানসিকভাবে কতটা চাঙা খেলোয়াড়রা, দলের মোমেন্টাম কেমন, দলীয় ঐক্য ও আত্মবিশ্বাস কোন পর্যায়ে রয়েছে ইত্যাদি ম্যাচে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। যা ম্যাচে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এদিক বিবেচনায় অনেক এগিয়ে থাকবে ভারত। টানা জয়ের ছন্দে থাকা দলটি আজ জয় পেলে সেমিফাইনালের টিকিট কনফার্ম করবে। একই সঙ্গে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটি ভালো করে দখল করে নেবে।

এদিকে গত ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছে হেরে যাওয়ায় মানসিকভাবে অনেকটাই পিছিয়ে থাকবে শ্রীলঙ্কা দল। তাদের সেমিফাইনালে খেলার সম্ভাবনা উজ্জ্বল নয়। তবে টুর্নামেন্টে প্রথম তিন ম্যাচে হারের পর ইংল্যান্ডকে হারিয়ে যেভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছিল তারা, সেটি বড় অনুপ্রেরণার উৎস হতে পারে তাদের।

পরিশেষে আমি বলব যে, মুম্বাইয়ের মাঠে বৃহস্পতিবার অপ্রতিরোধ্য ভারতকে হতাশ করতে হলে শ্রীলঙ্কাকে অসাধারণ কিছু করে দেখাতে হবে। তা না হলে জয়রথ ছুটতেই থাকবে ভারতের, তাদের থামানো যাবে না।

এ বিভাগের আরো খবর