বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র: সহজ গ্রুপে রিয়াল-বার্সা, মৃত্যুকূপে পিএসজি

এবারের ড্রয়ে ‘মৃত্যুকুপ’ খ্যাত সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ হয়েছে গ্রুপ ‘এফ’। পিএসজির সঙ্গে এ গ্রুপে পড়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, এসি মিলান ও ইংলিশ ফুটবলে নতুন শক্তিধর নিউক্যাসল ইউনাইটেড।

অনুষ্ঠিত হয়েছে ফুটবলপ্রেমীদের বহুল প্রতীক্ষিত উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র। আসন্ন ২০২৩-২৪ মৌসুমের জন্য হওয়া এ ড্রয়ে স্পেনের দুই ঐতিহ্যবাহী ক্লাব রিয়াল মাদ্রিদ ও বার্সেলোনা পেয়েছে তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ।

তবে এবার এক গ্রুপে পড়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও বায়ার্ন মিউনিখ। এবারের ড্রয়ে ‘মৃত্যুকূপ’ খ্যাত সবচেয়ে কঠিন গ্রুপ হয়েছে গ্রুপ ‘এফ’। পিএসজির সঙ্গে এ গ্রুপে পড়েছে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, এসি মিলান ও ইংলিশ ফুটবলে নতুন শক্তিধর নিউক্যাসল ইউনাইটেড।

মোনাকোতে বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ছয়টায় (বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়) ২০২৩-২৪ আসরের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ড্র অনুষ্ঠিত হয়।

এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্বের ড্রয়ে সর্বোপরি ভারসাম্য রয়েছে বলা চলে। এবার শক্তিশালী দলের সঙ্গে একই গ্রুপে রয়েছে তুলনামূলক কম শক্তিধর দল; শুধু শক্তিধর দলগুলোকে নিয়ে যেমন হয়েছে গ্রুপ, তেমনই তুলনামূলক দুর্বল দলগুলো নিয়েও রয়েছে গ্রুপ।

গ্রুপ এ

আসন্ন মৌসুমে গ্রুপ ‘এ’-র সমীকরণটি বেশ মজার। জার্মানির ঘরোয়া লিগ চ্যাম্পিয়ন ও ইউরোপ সেরার মঞ্চে বারবার দাপট দেখানো বায়ার্ন মিউনিখ এবার পেয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে বেশ কয়েক বছর ধরে ধুঁকতে থাকার পর এরিক টেন হাগের নেতৃত্বে সবশেষ মৌসুমে ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দেয়। চলতি মৌসুমেও তারা ভালো করছে। তবে ডেনিশ ক্লাব এফসি কোপেনহেগেন ও তুরস্কের গালাতেসারাইয়ের মতো তুলনামূলক দুর্বল দলগুলোরও চমক দেখানোর সুযোগ থাকবে এবার।

গ্রুপ বি

গ্রুপ ‘বি’কে বলা চলে তুলনামূলক দুর্বলদের গ্রুপ। গতবছর লা লিগায় ১২তম অবস্থানে থেকে লিগ শেষ করা সেভিয়ার এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে আসাটা দুর্দান্ত বলা চলে। লিগে ১২তম হলেও ইউরোপা লিগ জিতে সরাসরি চ্যাম্পিয়ন্স লিগ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে আন্দালুসিয়ার এ ক্লাবটি। ‘বি’ গ্রুপে তাদের প্রতিপক্ষ সাম্প্রতিক সময়ে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের রাইজিং স্টার আর্সেনাল। নেদারল্যান্ডের পিএসভি আইন্ডহোভেন এবং ফরাসি লিগে প্রতিবছরই পিএসজিকে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেয়া লঁস। ফলে সবগুলো দল শক্তিমত্তায় খুব বেশি তারতম্য না থাকায় এ গ্রুপ থেকে যে কোনো দলের সুযোগ থাকবে গ্রুপপর্ব পার করে শেষ ষোলতে জায়গা করে নেয়ার।

গ্রুপ সি

৩৩ বছর পর স্কুদেত্তো জিতে স্বপ্নের মধ্যে থাকা নাপোলির জন্য গ্রুপ ‘সি’তে পড়াটা দুঃস্বপ্ন বলা যেতে পারে। কেননা এই গ্রুপে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ রিয়াল মাদ্রিদ। শুধু তাই নয়, দুই মৌসুম আগে বুন্দেসলিগায় উঠে আসা উনিয়ন বার্লিনও রয়েছে এ গ্রুপে। বুন্দেসলিগায় ফিরেই দাপট দেখাতে শুরু করেছে তারা। ফলস্বরূপ গত মৌসুমে প্রথম চারে থেকে এ মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নিয়েছে বার্লিনের এ ক্লাবটি। এছাড়া পর্তুগিজ লিগে গত কয়েক মৌসুম ধরে ভালো পারফরম করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের প্লে-অফে জায়গা করে নেয় এফসি ব্রাহা। প্লে-অফ পর্ব পার করে মূল পর্বে আসা এ দলটিও মুখিয়ে থাকবে ইউরোপ সেরার মঞ্চে নিজেদের মেলে ধরতে।

গ্রুপ ডি

এবারের গ্রুপ ‘ডি’ও শক্তির বিচারে বেশ ভারসাম্যের বলা চলে। এই গ্রুপে পর্তুগিজ লিগ চ্যাম্পিয়ন বেনফিকার সঙ্গে রয়েছে ইতালিয়ান সেরি-আ’র গত মৌসুমের দ্বিতীয় হওয়া সিমিওনে ইনজাগির ইন্টার মিলান। গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের গ্রুপপর্বে শুধু বায়ার্ন মিউনিখের কাছে হেরেছিল তারা। বার্সেলোনাকে কাঁদিয়ে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় করে ইউরোপা লিগ খেলতে বাধ্য করা ইন্টারের কথা ইউরোপিয়ান ফুটবলের ভক্তেদের নিশ্চয়ই মনে আছে। তাদের অপর দুই সঙ্গী অস্ট্রিয়ান বুন্দেসলিগা চ্যাম্পিয়ন রেড বুল জালসবুর্গ ও স্পেনের রিয়াল সোসিয়েদাদ। ফুটবল কোচিংয়ের অন্যতম সেরা মস্তিষ্ক ইমানোল আলগুয়াচির দলের সামর্থ্য কতটা, স্প্যানিশ ফুটবল দেখা প্রত্যেকেই তা জানেন। শুধু তাই নয়, ইমানোলের কৌশলকে সমীহ করেন না, এমন ফুটবল ম্যানেজার স্পেনে নেই বললেই চলে। ফলে এ গ্রুপে যে একের পরেএক চমক দেখা যাবে, তা আগে সহজেই অনুমান করা যায়।

গ্রুপ ই

গ্রুপ ‘ই’ও বেশ মজার হয়েছে এবার। দিয়েগো সিমিওনের আতলেতিকো মাদ্রিদের এবারের সঙ্গী ফেয়েনুর্ড, লাৎসিও এবং সেল্টিক। চিরো ইম্মোবিলের মতো তারকাসমৃদ্ধ মাউরিসিও সারির লাৎসিওই যে আতলেতিকো মাদ্রিদকে এ গ্রুপ থেকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দিবে, সেটা বোঝা যাচ্ছে। তাছাড়া স্কটল্যান্ডের সেল্টিক পার্কে গিয়ে জয় নিয়ে আসাটা যে ইউরোপের যেকোনো বড় দলেরই দুশ্চিন্তার বিষয়, তা ইউরোপিয়ান ফুটবলপ্রেমীদের জানার কথা। অন্যদিকে আয়াক্স, পিএসভি আইন্ডহোভেনের মতো দলকে পেছনে ফেলে গত মৌসুমে ডাচ লিগ চ্যাম্পিয়ন ফেয়েনুর্ডও কাউকে ছেড়ে কথা বলবে না।

গ্রুপ এফ

এই গ্রুপটিই এবারের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ‘গ্রুপ অব ডেথ’ বা ‘মৃত্যুকূপ’। বারবার লিগ ১ চ্যাম্পিয়ন পিএসজির প্রধান উদ্দেশ্যই মূলত চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা। এর জন্য গত কয়েক বছর ধরে তারা চেষ্টাও কম করছে না। কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করে নামী-দামী সব তারকা দিয়ে বারবার সাজিয়েছে দল। কিন্তু প্রতিবারই তাদের ব্যর্থ হতে হয়েছে। এবারও সবচেয়ে শক্ত গ্রুপে পড়েছে লুইস এনরিকের দায়িত্ব নেয়া পিএসজি। বুন্দেসলিগার বরুশিয়া ডর্টমুন্ড, স্তেফানো পিওলির এসি মিলান বা সৌদির টাকায় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে পুনরুত্থান হওয়া এডি হাওয়ির নিউক্যাসল ইউনাইটেড- কেউই কাউকে সুচাগ্র মেদিনী ছাড় দেবে না। এই গ্রুপে ঠিক কোন দুই দল পরের রাউন্ডে যাবে তা অন্তত তিন-চার লেগের খেলা শেষ হওয়ার পরও বলা কঠিন হবে।

গ্রুপ জি

গতবারের চ্যাম্পিয়ন ম্যানচেস্টার সিটি ‘জি’ গ্রুপে এবার তুলনামূলক সহজ প্রতিপক্ষ পেয়েছে। তাদের মূল মাথাব্যথার কারণ হতে পারে রেজেন বলস্পর্ট (আরবি) লাইপসিগ। এছাড়া রেড স্টার বেলগ্রেড ও ইয়াং বয়েজের মতো ক্লাবগুলো বাকি দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর চেয়ে শক্তিমত্তায় বেশ খানিকটা পিছিয়ে। ফলে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন কে হবে এবং পয়েন্ট টেবিলের তিনে থেকে কে ইউরোপা লিগে খেলবে, তা নিয়ে দেখা যাবে লড়াই।

গ্রুপ এইচ

গত কয়েক মৌসুম ধরে কঠিন প্রতিপক্ষের সঙ্গে গ্রুপপর্বে খেলেলেও এবার খানিকটা স্বস্তি পেয়েছে বার্সেলোনার সমর্থকরা। গতবারের মতো বায়ার্ন মিউনিখ, ইন্টার মিলানের মতো শক্তিশালী দলকে এবার গ্রুপপর্বেই মোকাবিলা করতে হচ্ছে না তাদের। এইচ গ্রুপে এবার তাদের প্রতিপক্ষ পর্তুগালের পোর্তো, ইউক্রেনের শাখতার দোনেৎস্ক এবং বেলজিয়ামের ক্লাব রয়াল আন্টওয়ের্প। ফলে পোর্তোর সঙ্গে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়া নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলেও বাকি দুই দলের সঙ্গে তাদের শক্ত লড়াই হওয়ার সম্ভাবনা কম।

গ্রুপপর্বের খেলা শুরু হবে আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর, যা চলবে ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে নকআউট পর্বের খেলা। এ মৌসুমের ফাইনাল ম্যাচটি হবে আগামী বছরের ১ জুন। এবারের ফাইনালের জন্য লন্ডনের ঐতিহ্যবাহী ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামকে নির্ধারণ করেছে উয়েফা।

বর্তমান ফরম্যাটে ৩২ দল নিয়ে প্রতিযোগিতার এটিই শেষ আসর। আগামী মৌসুম থেকে নতুন ফরম্যাটে ভিন্ন আঙ্গিকে চ্যাম্পিয়ান্স লিগের আয়োজন করবে উয়েফা। ৩২ থেকে বেড়ে হবে ৩৬টি দল নিয়ে হবে আগামী মৌসুমের আসর।

এ বিভাগের আরো খবর