এশিয়ার ক্রিকেটে শ্রেষ্ঠত্বের লড়াই শুরু হয়ে গেছে। টুর্নামেন্ট উদ্বোধনের দ্বিতীয় দিনেই মাঠে নামছে বাংলাদেশ। প্রতিপক্ষ বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ও সহ-আয়োজক দেশ শ্রীলংকা। ক্যান্ডির পাল্লেকেলে ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা ৩০ মিনিটে।
টুর্নামেন্টটি এবার যৌথভাবে আয়োজন করছে পাকিস্তান ও শ্রীলংকা। সহ-আয়োজক দেশ হওয়ায় লংকান ক্রিকেটাররা খেলবে একান্ত পরিচিত কন্ডিশনে। তবে প্রতিবেশী দেশটির এই কন্ডিশন বাংলাদেশের জন্যও অপরিচিত নয়। সে সুবাদে স্বাগতিকদের বিরুদ্ধে ফেভারিট হিসেবেই মাঠে নামবে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ এ পর্যন্ত তিনবার এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেছে। তবে শিরোপাটা অধরাই রয়ে গেছে। শিরোপা জিততে না পারার বন্ধ্যাত্বটা ঘোচানোর মিশন এবার। আর সেই লক্ষ্যে জয় দিয়ে আসর শুরু করতে উদগ্রীব অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের দল।
দেশ ছাড়ার আগে সাকিব বলে গেছেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা শুধু এশিয়া কাপ নিয়েই ভাবছি এবং বিশেষ করে শ্রীলংকা ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়েই আমাদের সব পরিকল্পনা।
‘টুর্নামেন্টটা জয় দিয়ে শুরু করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এশিয়া কাপের পর আমরা বিশ্বকাপ নিয়ে ভাবব। এখন আমাদের সব পরিকল্পনা কেবলই এশিয়া কাপ ঘিরে।’
সবশেষ নিদাহাস ট্রফিতে বাংলাদেশ-শ্রীলংকা ম্যাচের শেষ দিকে খেলোয়াড়দের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি দু’দলেরই ভালোভাবে স্মরণে আছে।
দুই দলের খেলোয়াড়রা বেশ কয়েকবার বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ায় ওই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। ওই ম্যাচে নাটকীয়ভাবে শ্রীলংকাকে হারিয়ে ফাইনালে উঠে যায় বাংলাদেশ। জয়ের আনন্দে মেতে ওঠে টাইগাররা।
ওই হারটা মেনে নেয়া কঠিন ছিলো লংকানদের জন্য। বাংলাদেশ দলের এমন উদযাপন তাদের সেই ক্ষতটা যেন আরও বাড়িয়ে দেয়। কিছুটা বিরক্তির অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে শ্রীলংকা দলের তৎকালীন কোচ চন্ডিকা হাতুরুসিংহের চোখে-মুখেও।
সেই হাতুরুসিংহে বর্তমানে বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ। সেদিনের স্মৃতি মনে করিয়ে দিলে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান ও কোচ হাথুরুসিংহে জানান, শ্রীলংকার মাটিতে পাঁচ বছর আগের তিক্ত ঘটনাকে একপাশে ঠেলে রেখে মহাদেশীয় টুর্নামেন্টে সেরা সাফল্যের জন্য উদগ্রীব পুরো দল।
২০১৫ সাল থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটে সেরা দল হিসেবে পরিচিতি পাওয়ার পর সবদিক দিয়েই শ্রীলংকার উপরে অবস্থান করছে বাংলাদেশ।
ওদিকে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই ইনজুরিতে জর্জরিত শ্রীলংকা। ইনজুরির কারণে খেলতে পারছেন না ইনফর্ম লেগ-স্পিন অলরাউন্ডার হাসারাঙ্গা ডি সিলভা। সদ্যসমাপ্ত লঙ্কান প্রিমিয়ার লিগে (এলপিএল) সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী এবং উইকেট শিকারী ছিলেন এই হাসারাঙ্গা।
এছাড়া ইনজুরির কারণে দলের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে পাচ্ছে না শ্রীলংকা। সবকিছু মিলিয়ে এটা বলাই যায় যে, ঘরের মাঠে খেলা হওয়া সত্ত্বেও ফেভারিট নয় শ্রীলংকা।
এশিয়া কাপে এখন পর্যন্ত ১৫ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। এর মধ্যে ১২টিতে জয় পেয়েছে শ্রীলংকা। তবে এশিয়া কাপে দুই দলের শেষ পাঁচ ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে- শ্রীলংকার সঙ্গে জয়-পরাজয়ে হারের ব্যবধান দ্রুত কমিয়ে এনেছে টাইগাররা। অথচ এক সময় টাইগারদের বিপক্ষে অপরাজেয় ছিলো লংকানরা।
ওয়ানডে ফরম্যাটে এখন পর্যন্ত ৫১ বার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও শ্রীলংকা। এর মধ্যে শ্রীলংকার জয় ৪০টিতে এবং বাংলাদেশ জয় পেয়েছে ৯ ম্যাচে। বাকি ম্যাচ দুটি পরিত্যক্ত হয়।
বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, আফিফ হোসেন, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাসকিন আহমেদ, হাসান মাহমুদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম, নাসুম আহমেদ, মাহেদি হাসান, নাইম শেখ, শামীম হোসেন পাটোয়ারী, তানজিদ হাসান তামিম, তানজিম হাসান সাকিব ও এনামুল হক বিজয়।
শ্রীলংকা দল: দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), পাথুম নিশাঙ্কা, দিমুথ করুণারত্নে, কুশল পেরেরা, কুশল মেন্ডিস, চারিথ আসালঙ্কা, সাদিরা সামারাবিক্রমা, ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা, দুশান হেমন্ত, দুনিথ ওয়েলালাগে, মহেশ থিকসানা, প্রমোদ মাদুসান, কাসুন রাজিথা, দিলশান মধুশঙ্কা ও মাথিশা পাথিরানা।