কাতার বিশ্বকাপ সাম্প্রতিক সময়কার বেশ কিছু তারকার শেষ আসর। আর্জেন্টাইন তারকা লিওনেল মেসি, উরুগুয়ের লুইস সুয়ারেজ, এদিনসন কাভানি, পর্তুগালের ক্রিস্টিয়ানো রোনালডোর এটিই শেষ বিশ্বকাপ। সবারই লক্ষ্য শেষটা হাসি দিয়ে রাঙানোর। বিশ্বকাপে দুর্দান্ত কিছু করে অন্তত শেষটা হাসিমুখে করার।
এখন পর্যন্ত সেই দৃশ্য দেখা সম্ভব হয়নি কাতার বিশ্বকাপের ভক্তদের। শুরুটা হয়েছিল কাভানি-সুয়ারেজদের দিয়ে। গ্রুপপর্ব থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল তাদের। নিজেদের শেষ ম্যাচে জয় পেলেও গোল ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ায় তাদের স্বপ্নভঙ্গ হয়।
সে সময় ফুটবল বিশ্ব কেঁদেছিল সুয়ারেজের কান্নায়।
সবশেষ এমনই একবুক হতাশা নিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ হলো পর্তুগালের। মরক্কোর বিপক্ষে ১-০ ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিতে হয়েছে পর্তুগিজদের। একই সঙ্গে সব আশা শেষ হয়ে যায় ক্রিশ্চিয়ানো রোনালডোর।
ম্যাচের শেষ বাঁশি বাজার পর একদিকে যখন মরক্কোর ফুটবলাররা ইতিহাস গড়ে উল্লাসে মাতোয়ারা, ঠিক সে সময় মাঠেই কাঁদছিলেন রোনালডো। নিজের স্বপ্নের এভাবে অপমৃত্যুতে এমন দৃশ্যের অবতারণা হওয়াটাই স্বাভাবিক।
বিতর্কের ঝুলি নিয়ে বিশ্বকাপের শুরুটা রোনালডো দুর্দান্ত করলেও শেষের সময়টায় ফের পিছু নেয় বিতর্ক। কোচের সঙ্গে ঝামেলার কারণে হারিয়েছিলেন শুরুর একাদশে নিজের জায়গা। টানা দুই ম্যাচের শুরুতে তো তাকে বসেই থাকতে হয় সাইড বেঞ্চে। এর ভেতর এক ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামলেও এক ম্যাচে তো দর্শক হয়েই ছিলেন ম্যাচের ৭৩ মিনিট পর্যন্ত।
নিজের শেষ বিশ্বকাপে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন শিরোপার মাধ্যমে ক্যারিয়ারের মধুর সমাপ্তি টানার। কিন্তু মরক্কোর হাতে ভেঙে গেল সেই স্বপ্ন।
আর সে কারণেই মাঠ থেকে শুরু করে ড্রেসিংরুম, পুরোটা সময়ই কাঁদতে দেখা গেছে রোনালডোকে। এমন কান্না ছুঁয়ে গেছে সবার মন।
বিশ্বকাপ ইতিহাসের অন্যতম দীর্ঘ ক্যারিয়ার ছিল রোনালডোর। ২০০৬ সালে পর্তুগালের হয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপ খেলেন। এরপর একে একে খেলেছেন ২০১০, ২০১৪ ও ২০১৮-এর আসর। আর বিদায় নিলেন ২০২২ বিশ্বকাপ থেকে।
সব মিলিয়ে ৫ আসরে ২২টি ম্যাচে ৮ গোল করেছেন পর্তুগালের এই আইকনিক ফুটবলার। তবে দলীয় সাফল্যে ভাটা ছিল তার। দলকে নিয়ে সর্বোচ্চ সাফল্য ২০০৬ সালের সেমিফাইনাল খেলা। এর বেশি এগোতে পারেননি ৫ বারের ব্যালন ডরজয়ী।