বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিশ্বকাপ আছে, ম্যারাডোনা নেই

  •    
  • ২৫ নভেম্বর, ২০২২ ১২:৫৮

এবারের বিশ্বকাপেও দেখা গেছে ভক্তদের জার্সি, টি-শার্ট ও পতাকায় ম্যারাডোনার ছবি। আর্জেন্টিনার ম্যাচের আগে প্রিয় ডিয়েগোর গান গেয়েই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছেন দর্শকেরা।

বিশ্বকাপ চলছে। চলছে পুরো বিশ্বের ফুটবল উৎসব। শত আনন্দের মাঝেও ফুটবল ভক্তদের তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে এক প্রিয় মানুষের চলে যাওয়ার স্মৃতি। বিশ্বকাপ এলেই যেন আরও বেশি করে মনে পড়ে তাকে।

আর্জেন্টিনার ফুটবল ঈশ্বর ডিয়েগো ম্যারাডোনা দুই বছর আগে এই দিনে চলে যান। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর কোটি ভক্তকে কাঁদিয়ে হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয় বিশ্বকাপজয়ী এ অধিনায়কের। মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে পুরো ক্রীড়া বিশ্বে। তবে, আলোচনা-সমালোচনায় তাকে এখনও প্রতিনিয়ত স্মরণ করেন ভক্তরা। বিশ্বকাপ এলে যেন আবারও সরূপে ফেরেন ফুটবল ইতিহাসের সবচেয়ে বর্ণিল এ চরিত্র।

৮২ সালে বিশ্বকাপের মঞ্চে পা রেখেছিলেন ম্যারাডোনা। একে একে খেলেছেন ৮৬, ৯০ ও ৯৪ এর বিশ্বকাপে। অবসরে যাওয়ার পরও সবসময় আর্জেন্টিনা দলের খেলার সময় উপস্থিত থাকতেন গ্যালারিতে। তার চলে যাওয়ার পর কাতারে বসেছে বিশ্বকাপ। না থেকেও আছেন তিনি।

এবারের বিশ্বকাপে ভক্তদের জার্সি, টি-শার্ট ও পতাকায় ম্যারাডোনার ছবি। আর্জেন্টিনার ম্যাচের আগে প্রিয় ডিয়েগোর গান গেয়েই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছেন দর্শকেরা।

ম্যারাডোনার পতাকা হাতে আর্জেন্টিনার ম্যাচ দেখার জন্য স্টেডিয়ামে প্রবেশ করছেন দর্শকরা। ছবি: টুইটার

আর্জেন্টিনার বর্তমান অধিনায়ক লিওনেল মেসিও প্রিয় ডিয়েগোকে খুঁজে বেড়িয়েছেন গ্যালারিতে। এই প্রথম মেসি বিশ্বকাপ খেলছেন আর ম্যারাডোনা মাঠে থেকে তার খেলা দেখছেন না।

বিশ্বকাপ শুরুর আগে মেসি জানান, ‘তাকে গ্যালারিতে না দেখাটা হবে অদ্ভূত। তিনি জাতীয় দলকে ভালোবাসতেন ও সবসময় সমর্থন করতেন। তিনি যেখানেই থাকুও না কেন আমার বিশ্বাস, আমাদের তিনি সমর্থন করছেন।’

নতুন বা পুরনো, ম্যারাডোনা সবার কাছে এমনই প্রিয়। চ্যাম্পিয়ন অফ চ্যাম্পিয়নস। সব ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়াপ্রেমীর অনুপ্রেরণা তিনি।

সেটা হওয়াটাই হয়তো স্বাভাবিক। ১৯৬০ সালের ৩১ অক্টোবর বুয়েনোস আইরেসের সুবিধাবঞ্চিত ভিয়া ফিয়োরিতায় জন্ম হওয়া ম্যারাডোনার বিশ্বজয়ের গল্পটা রূপকথার চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।

১৬ বছর বয়সে জাতীয় দলে ডাক পান। ১৯৭৮ বিশ্বকাপে হন উপেক্ষিত আর '৮২-এর বিশ্বকাপে পান লাল কার্ড। ১৯৮৬ সালে দেখান নিজের অলৌকিক ফুটবল।

পরে চার বছর ইতালির নাপোলিকে তলানি থেকে টেনে বানিয়েছেন চ্যাম্পিয়ন। বনে গেছেন ফুটবল ঈশ্বর।

নব্বইয়ের দশকটা তার ধ্বংসের গল্প। '৯১-এ মাদকসহ ধরা পড়ে ইতালি ছাড়েন। '৯৪ বিশ্বকাপে নিষিদ্ধ স্টেরয়েড গ্রহণের দায়ে বহিষ্কৃত হন।

আর ২০০১ সালে অতিরিক্ত মাদকসেবনে চলে যান মৃত্যুর দুয়ারে। এত কিছুরই পরও ফুরায়নি ম্যারাডোনা ম্যাজিক।

তার অবসরের দশক পরও রোনালদিনিয়ো, বাজ্জো, জোলারা এক বাক্যে ম্যারাডোনাকেই আদর্শ মেনে নেন। গ্যারি লিনেকার, জোসে মরিনিয়োসহ একের পর এক ফুটবল পণ্ডিতের কাছে ম্যারাডোনাই হয়ে ওঠেন ফুটবলের শেষ কথা।

মৃত্যুর সঙ্গে লড়াইয়ে জেতা ম্যারাডোনা কামব্যাক করেন রাজার মতোই। হেড কোচ হিসেবে দলকে নিয়ে যান ২০১০ বিশ্বকাপে। শুরু করেন পুরোদস্তুর কোচিং ক্যারিয়ার। নাইট অফ দ্য টেন নামে জনপ্রিয় এক টকশোর সঞ্চালক হিসেবে জিতে নেন সবার মন।

ভক্তদের ড্রামস কিটে ম্যারাডোনার ছবি। ছবি: টুইটার

সবকিছু ঠিকঠাকই যাচ্ছিল। শুধু ঠিক ছিল না তার স্বাস্থ্য। বছরের পর বছর মাদক ও ফুটবলের ধকল সইতে পারছিল না তার দেহ।

বিশ্বকাপে কাঁদিয়ে হুট করেই যেন বিদায় নেন ফুটবলের এ অবিসংবাদিত রাজা। তার মৃত্যুর পর সংবাদমাধ্যমে চাউর হয় তাকে নিয়ে বুয়েনোস আইরেসের একটি দেয়ালের গ্রাফিতি। সেটাই যেন ম্যারাডোনার জীবনকে ফুটিয়ে তোলে এক লাইনে।

ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর তার এক ভক্ত লিখেছেন, ‘ম্যারাডোনা আপনি আপনার জীবন নিয়ে কী করেছেন সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। আমার জীবন কীভাবে আপনি পাল্টে দিয়েছেন, সেটাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’

এ বিভাগের আরো খবর