জাতীয় নারী ফুটবল দল ও বয়সভিত্তিক ফুটবল দলের সাফল্যে এখন ধারাবাহিক। সপ্তাহ দুয়েক আগে সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করে সাবিনা-ঋতুপর্নারা স্বাক্ষর রেখেছেন তাদের উন্নতি ও ধারাবাহিকতার। জাতীয় দলের স্বপ্ন এখন দক্ষিণ এশিয়া ছাড়িয়ে এশিয়া পর্যায়ে।
তবে, ঘরোয়া পর্যায়ে ফুটবলের অবস্থা এতটা উজ্জ্বল নয়। বিশেষ করে নারী ফুটবল লিগ পিছিয়ে অনেকটা। ৫ ডিসেম্বর বাফুফে এ বছর লিগ শুরু করার ঘোষণা দিলেও, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) এ খেলা বসুন্ধরা কিংস ছাড়া অন্য কোনো ক্লাব নারীদের দল মাঠে নামাতে আগ্রহী নয়। ফলে, ফেডারেশনকে সার্ভিসেস ও আঞ্চলিক অ্যাকাডেমিগুলোর ভরসায় থাকতে হচ্ছে।
বিষয়টা স্বীকার করছেন জাতীয় দলের হেড কোচ গোলাম রাব্বানী ছোটনও। তার মতে পেশাদার লিগ কাঠামো অর্জনে এখনও অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশের নারী ফুটবল।
নিউজবাংলাকে ছোটন বলেন, ‘পেশাদার ফুটবলে আমরা অবশ্যই পিছিয়ে আছি। আমাদের মহিলা ফুটবল শুরু হয়েছে অল্প কিছুদিনের হয়েছে। বিভিন্ন ক্লাবের সমন্বয়ে লিগ শুরু হয়েছে খুবই অল্প দিন।’
নারী ফুটবলের ধারাবাহিক উন্নয়নের জন্য জাতীয় ও বয়সভিত্তিক দলের প্রজেক্টের পাশাপাশি ঘরোয়া লিগ ও ক্লাবগুলোকেও পেশাদারভাবে এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন ছোটন।
তিনি যোগ করেন, ‘দেশে অনেক শক্তিশালী লিগ হওয়ার প্রয়োজন। সবার অংশগ্রহণে যে সব পেশাদার দল রয়েছে তাদেরকে নিয়ে যখন কোনো লিগ হবে সে লিগ অনেক শক্তিশালী হবে। তো সবকিছু মিলিয়ে এখনও অনেক কাজ বাকি।’
ঘরোয়া পর্যায়ে খুব বড় স্বপ্ন না দেখলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ছোটনের বিশ্বাস দল এশিয়ান পর্যায়েও ধারাবাহিক সাফল্য নিয়ে আসতে পারবে। তবে, সে জন্য নতুন পরিকল্পনা প্রয়োজন।
ছোটন বলেন, ‘আমাদের খেলোয়ার আছে। এদেরকে শুধু নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে হবে। প্রত্যেকটা জেলা থেকে নতুন খেলোয়ার আসছে। এখানে আমাদের ৭০ জন খেলোয়াড় আছে। এর চেয়ে বেশি বাফুফে ভবনে রাখাও সম্ভব না।এখন যেটা করা উচিত তা হলো, খেলোয়ারদের রাখার ব্যবস্থা করা। খেলোয়াড় খুঁজে বের করার পর তাদের উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণের জন্য যে বিষয়গুলো থাকে সেগুলোর আয়োজন করা উচিত।’তবে, এশিয়ান পর্যায়ে দ্রুত সাফল্যের আশা করতে নারাজ ছোটন। বাংলাদেশ নারী ফুটবলের সফল এ কোচের মতে সাফ অঞ্চলে সাফল্যের মতো এশীয় পর্যায়ে সাফল্যে পেতেও ধৈর্য্য ধরে কাজ করতে হবে।
ছোটন যোগ করেন, ‘২০১২ সালে মেয়েদের ফুটবল শুরুর পর ২০১৬ সালে ৩৫ জন খেলোয়াড় ছিল আমাদের। এখন আছে ৭০ জন। ৬ বছর ক্যাম্প করার পর যদি সাউথ এশিয়ার সেরা দল হওয়া যায় আর এটা যদি আরও ৬ বছর অব্যাহত রাখতে পারা যায় এবং সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করে খেলোয়াড়দের রাখা হয় তাহলে এশিয়ার মধ্যে একটি ভালো অবস্থানে যাওয়া যাবে।’