‘আমার মেয়ে শুরুতে এলাকায় যখন ফুটবল খেলত, তখন অনেকে বাঁকা চোখে দেখত। বলত, মেয়েদের ফুটবল খেলতে নেই। এখন মেয়ের সাফল্যে এলাকার ওই লোকজনই সম্মান দিয়ে কথা বলেছে। মার্জিয়াসহ সব নারী ফুটবলারের জন্য দোয়া রইল।’
কথাগুলো বলছিলেন সদ্য সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ী বাংলাদেশের নারী দলের ফুটবলার মার্জিয়ার গর্বিত বাবা আব্দুল মোতালেব। মেয়ে ও নারী ফুটবল দলের এমন অর্জনে আবেগাপ্লুত তিনি।
মার্জিয়ার বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর গ্রামে। বিজয়ী দলের মার্জিয়াসহ ছয় ফুটবলারই এই গ্রামের। তারা পড়েছেন কলসিন্দুর উচ্চ বিদ্যালয়ে।
দলের এই জয়ে গর্বিত বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা।
তারা জানালেন, দলটিতে কলসিন্দুরের আটটি মেয়ে ডাক পেয়েছে। এর মধ্যে মার্জিয়া, সাজিদা খাতুন, শিউলি আজিম, মারিয়া মান্ডা, শামসুন্নাহার সিনিয়র ও শামসুন্নাহার জুনিয়র নেপালের বিপক্ষে এই খেলায় অংশ নিয়েছে।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক উজ্জ্বল চন্দ্র পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ফাইনালের শুরু থেকেই সবাই ভালো খেলেছে। খেলা সব সময় নিয়ন্ত্রণ করেছে বাংলাদেশ। ১৪ মিনিটে শামসুন্নাহার জুনিয়র দুর্দান্ত গোল করেন। মনিকা চাকমার ক্রস থেকে শামসুন্নাহার জুনিয়র কোনাকুনি প্লেসিং করে বাংলাদেশকে লিড এনে দেন।
‘সবার দুর্দান্ত খেলার জন্য বাংলাদেশ বিজয়ী হয়েছে। খেলা যখন দেখছিলাম, তখন নিজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে গর্ব হয়েছে। এরা সাফল্যের সঙ্গে আরও অনেক দূর এগিয়ে যাবে।’
বিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মালা রানী সরকার নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠত্ব নারী দলে এবারই প্রথম। এর আগে ২০১৬ সালে ভারতের শিলিগুড়িতে বাংলাদেশ ভারতের বিপক্ষে হেরেছিল। এবার বাংলাদেশ অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়েছে।
‘সিনিয়র ফুটবলে কখনও না হারা ভারত ও নেপালকে এবার বাংলাদেশ হারিয়েছে। গ্রুপ পর্বে হারিয়েছে ভারতকে আর ফাইনালে নেপালকে। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল এগিয়ে যাচ্ছে এটাই তার প্রমাণ। এরা একদিন ফুটবলে বিশ্ব জয় করবে।’