চার বছর পর শনিবার পর্দা উঠছে এশিয়া কাপের ১৫তম আসরের। টুর্নামেন্টে মূল পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নামছে শ্রীলঙ্কা।
জয় দিয়ে মিশন শুরু করতে চায় ‘বি’ গ্রুপের দুটি দলই। এই গ্রুপের তৃতীয় দল বাংলাদেশ।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের (ইউএই) দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের ম্যাচটি বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে। লঙ্কানদের বিপক্ষে নিজেদের শততম টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে নামবে আফগানিস্তান।
টি-টোয়েন্টিতে বর্তমান সময়ে ছন্দে নেই শ্রীলঙ্কা। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভ থেকে বিদায় নেয় তারা।
পরে তিনটি দ্বিপক্ষীয় সিরিজ খেলে সবগুলোতেই হারতে হয়েছে লঙ্কানদের। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পাঁচ ও তিন ম্যাচের সিরিজ এবং ভারতের সঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজ হারে শ্রীলঙ্কা। ১১টি ম্যাচে তাদের জয় মাত্র দুটিতে।
লঙ্কানদের তারুণ্যনির্ভর দলটির অভিজ্ঞতা খুব বেশি নেই। ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারে কুশল মেন্ডিস, দানুস্কা গুনাথিলাকা, দিনেশ চান্দিমালের ওপর নির্ভর করে সাফল্য। শক্তি তাদের বোলিংয়ে। স্পিনে তাদের সবচেয়ে বড় তারকা ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। তার সঙ্গে আছেন মহেশ থেকশান, প্রাভিন জয়উইকরামা ও জেফরি ভ্যান্ডারসে।
পেইস বিভাগে লঙ্কানদের মাথাব্যথার কারণ শেষ মুর্হূতে দুশমান্ত চামিরার ইনজুরি। তার পরিবর্তে দলে সুযোগ পেয়েছেন পেইসার নুয়ান থুশারা।
পেইস আক্রমণে নতুন মুখ হিসেবে আছেন আসিথা ফার্নান্দো, দিলশান মধুশঙ্ক এবং মহেশ পাথিরানা। তিনজনের কারও টি-টোয়েন্টিতে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়নি।
এই দল নিয়েই এশিয়া কাপ জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দাসুন শানাকা। তিনি বলেন, ‘দলের সকলেই পরীক্ষিত। শিরোপা জয়ের ভালো সম্ভাবনা আছে আমাদের।
‘ছেলেরা নিজেদের সামর্থ্যের সবটুকু উজাড় করে দিতে পারলে শিরোপা জয় সম্ভব। এই দল নিয়ে আমি আশাবাদী।’
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পাঁচবার এশিয়া কাপের শিরোপা শ্রীলঙ্কার ঝুলিতে। আর রানার আপ হয়েছে ছয়বার। সর্বশেষ ২০১৪ সালে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত আসরের ফাইনালে পাকিস্তানকে ৫ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা জিতেছিল শ্রীলঙ্কা।
এশিয়া কাপের ১৪টি আসরে অংশ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৫৪টি ম্যাচ খেলেছে শ্রীলঙ্কা। এর মধ্যে ৫০টি ওয়ানডেতে ৩৪ জয় ও ১৬টি হেরেছে।
অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার মতোই সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স আহামরি নয় আফগানিস্তানের। এ মাসেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২তে হেরেছে আফগানরা।
যদিও গত জুনে জিম্বাবুয়ের সঙ্গে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতেছিল আফগানিস্তান। আর গত মার্চে বাংলাদেশ সফরে তিন ম্যাচের সিরিজ ১-১ সমতায় শেষ করেছিল তারা।
২০১৪ সালে প্রথম এশিয়া কাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করে আফগানিস্তান। এরপর ২০১৮ সালে দ্বিতীয়বার এই টুর্নামেন্টে খেলে তারা। বলার মতো কোনো সাফল্য নেই তাদের।
এশিয়া কাপে ৯টি ওয়ানডে ম্যাচে তিনটিতে জয়, পাঁচটিতে হার ও একটিতে টাই করে আফগানিস্তান।
আগের রেকর্ডকে মুছে এবারের এশিয়া কাপে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিলেন আফগানিস্তানের অধিনায়ক মোহাম্মদ নবী। তিনি বলেন, ‘এশিয়া কাপে আমাদের ভালো কোনো রেকর্ড নেই ঠিকই, কিন্তু আমরা টি-টোয়েন্টিতে ভালো দল। সেই অভিজ্ঞতা দিয়ে এবার ভালো কিছু করতে চাই।’
টি-টোয়েন্টিতে এখন পর্যন্ত একবারই দেখা হয়েছে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তানের। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টেনে ওই ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছিল লঙ্কারা।
শ্রীলঙ্কা স্কোয়াড
দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), দানুস্কা গুনাথিলাকা, পাথুম নিসানকা, কুশাল মেন্ডিস (উইকেটরক্ষক), চারিথ আসালঙ্কা (সহ-অধিনায়ক), ভানুকা রাজাপাকসে, আশেন বান্দারা, ধনঞ্জয়া ডি সিলভা, ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, মাহিশ থিকশানা, জেফারি বন্দরসে, প্রাভিন জয়উইকরামা, চামিকা করুণারত্নে, দিলশান মধুশঙ্ক, মাথিশা পাথিরানা, দিনেশ চান্দিমাল (উইকেটরক্ষক) জেফরি ভ্যান্ডারসে, নুয়ান থুশারা, মহেশ থেকশান ও আসিথা ফার্নান্দো।
আফগানিস্তান স্কোয়াড
মোহাম্মদ নবী (অধিনায়ক), নাজিবউল্লাহ জাদরান, আফসার জাজাই, আজমতউল্লাহ ওমারজাই, ফরিদ আহমেদ মালিক, ফজলহক ফারুকী, হাশমতউল্লাহ শাহিদি, হযরতউল্লাহ জাজাই, ইবরাহিম জাদরান, করিম জানাত, মুজিব উর রহমান, নাজিবউল্লাহ জাদরান, নাবিন উল হক, নুর আহমাদ, রহমানউল্লাহ গুরবাজ, রশিদ খান ও সামিউল্লাহ শেনওয়ারি।