ডোপ টেস্টে পজিটিভ হওয়ায় জাতীয় দলের পেইসার শহিদুল ইসলামকে বৃহস্পতিবার ১০ মাসের জন্য সকল ধরনের ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করেছে আইসিসি। তার মূত্র নমুনায় ক্লোমিফেনের উপস্থিতি পাওয়ায় এই নিষেধাজ্ঞা পেয়েছেন তিনি।
ওয়ার্ল্ড অ্যান্টি ড্রাগ এজেন্সির তালিকায় নিষিদ্ধ হিসেবে তালিকাভুক্ত এই ক্লোমিফেন। আইসিসির অ্যান্টি ড্রাগ অ্যাক্টের ২.১ ধারা ভঙ্গের দায়ে শাস্তি পেয়েছেন ডানহাতি এ পেইসার।
এ বিষয়ে শহিদুল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জে আমি একজন নিউরোলজিস্টকে দেখিয়েছিলাম। ওনার পরামর্শে আমি এই ওষুধ খাওয়া শুরু করি। বিষয়টা আমার একান্তই ব্যক্তিগত।
‘আইসিসিকে আমার বিষয়টা জানিয়েছি। ওরা মেনে নিয়েছে। আমি যে ভুলটা করেছি তা হলো এসব ওষুধ খেলে আইসিসিকে জানাতে হয়। আমি ওদের জানাইনি।’
ওই ওষুধে ক্লোমিফেনের উপস্থিতি থাকায় শাস্তি পেয়েছেন শহিদুল।
আমেরিকার ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ হেলথের (এনআইএইচ) অধীনে থাকা ওয়েবসাইট মেডলাইন ডটজিওভিতে বলা হয়েছে ক্লোমিফেন সাধারণত নারীদের বন্ধ্যত্ব দূর করার কাজ করে। নারী দেহের অন্যতম প্রধান হরমোন অ্যাস্ট্রোজেনের বিকল্প হিসেবে কাজ করে এটি।
তবে, পুরুষরা ক্লোমিফেন সেবন করলে এটি কাজ করে পুরুষ দেহের স্পার্ম কাউন্ট বাড়ানো, পেশি ও হাড়ের শক্তি বৃদ্ধির জন্য দায়ী হরমোন টেস্টোসটেরনের মতো।
এ হরমোনের বাড়তি ও কৃত্রিম প্রবাহের ফলে ক্রীড়াক্ষেত্রে পারফরম্যান্স স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে অধিক মাত্রায় বৃদ্ধি পায়। আর এ কারণে হরমোন বৃদ্ধির সব ওষুধ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সে তালিকায় রয়েছে ক্লোমিফেনের নামও। সে কারণে নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হয়েছে জাতীয় দলের পেইসার শহিদুলকে।
শ্যামলী টিবি হাসপাতালের মহাপরিচালক আয়েশা আক্তার অবশ্য শহিদুলের ব্যক্তিগত কারণে ক্লোমিফেন ব্যবহারের যুক্তির সঙ্গে একমত নন।তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এই ওষুধ মূলত বন্ধ্যত্ব দূর করার জন্য। তবে আরও অনেক কারণে ক্লোমিফেন কেউ খেতে পারে শুধু চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী। কারণ এর একটি নির্দিষ্ট মাত্রা ও সময়সীমা আছে। চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ব্যক্তিগত কারণে এটি খাওয়ার কোনো কারণ নেই।’
পুরুষের ক্ষেত্রে ক্লোমিফেনের ব্যবহার বিরল বলে জানিয়েছেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. শাহিন রেজা।তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ক্লোমিফেন মূলত নারীদের হরমোনজনিত সমস্যা সমাধানে ব্যবহার করা হয়। নারীদের বন্ধ্যত্ব দূরীকরণে এর ব্যবহার বেশ প্রচলিত। কিন্তু পুরুষদের ক্ষেত্রে এর ব্যবহার খুব বিরল।’
আইসিসির নিষেধাজ্ঞা পাওয়ায় ১০ মাস ক্রিকেট খেলতে পারবেন না তিনি। তার নিষেধাজ্ঞা শুরু হয়েছে ২৮ মে থেকে। এর আগে বিসিবির করানো ডোপ টেস্টে পজিটিভ হয়ে নিষিদ্ধ হন আরেক বাংলাদেশি পেইসার কাজী অনিক।