দেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তার বিপরীতে তার অবকাঠামো বেশ দুর্বল। ঘুরে ফিরে বারবার একই ভেন্যুতে হয় আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলো। ঢাকার শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম ও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম; এই দুটো ভেন্যুতেই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে আয়োজন করা হয় আন্তর্জাতিক সিরিজগুলো।
পাশাপাশি ডিপিএল, বিপিএল, বিসিএলসহ ঘরোয়া ক্রিকেটগুলোর ভেন্যুও এই শেরে বাংলা, জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম। পাশাপাশি সাপোর্ট দেয়ার জন্য রয়েছে বিকেএসপি, খুলনার শেখ আবু নাসের চৌধুরী স্টেডিয়াম, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম, কক্সবাজারের দুটো স্টেডিয়াম, বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম, বরিশাল স্টেডিয়াম ও ফতুল্লা স্টেডিয়াম।
এগুলোতে বেশিরভাগে আয়োজন করা হয় স্থানীয়, বয়সভিত্তিক ও ঘরোয়া টুর্নামেন্ট। বাংলাদেশের ১০টি স্টেডিয়াম আন্তর্জাতিক ম্যাচ আয়োজনে সক্ষম হলেও মাত্র দুটি স্টেডিয়ামে আয়োজন করা হয় ম্যাচগুলো।
ফলাফল চোখের সামনে। ইতোমধ্যেই খেলার অনুপযুক্ত হয়ে পড়েছে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট। মৃতপ্রায় জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের উইকেটও।
তাই খেলার মান উন্নয়নে স্টেডিয়াম বাড়ানোর বিকল্প নেই বলে মনে করছেন গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহাবুব আনাম। সোমবার হোম অফ ক্রিকেটে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানান তিনি।
মাহাবুব বলেন, ‘আমাদের যে পরিমাণ খেলা তাতে ২০টি আন্তর্জাতিক মানের মাঠ তৈরি না করলে কোনভাবেই (উন্নয়ন) সম্ভব না। আমাদের ইচ্ছে ঢাকায় যাতে ছয়টি উন্নত মানের ভেন্যু থাকে। তাতে ঢাকায় যে পরিমাণ খেলা হয়- প্রিমিয়ার লিগ বা অন্যান্য খেলা, সেগুলো যাতে সুন্দরভাবে করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমরা ফতুল্লাকে নিয়ে স্ট্রাগল করছি। ফতুল্লার কাজ শুরু হলে ওখানে আমরা দুইটা মাঠ পেয়ে যাব। পূর্বাচলে আমরা দুইটি মাঠ করব। এর বাইরে মিরপুর তো রয়েছেই। বিকেএসপি আছে। তার বাইরেও দুটো মাঠ করার মতো ঢাকার আশেপাশে জায়গা কেনা হবে।’
স্টেডিয়াম বাড়ানোর পাশাপাশি বর্তমান মাঠগুলোর উন্নয়নেও বোর্ড অতিসত্বর কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছেন বোর্ডের এই পরিচালক। শ্রীলঙ্কা সিরিজ শেষ হওয়ার পর লম্বা সময় ঘরের মাঠে খেলা না থাকায় সে সময়টাতে মাঠ সংস্কার করা হবে বলে জানান তিনি।
মাহাবুব বলেন, ‘মিরপুরে অনুশীলনের জন্য সেন্টারে আমরা আরও চারটি উইকেট তৈরি করতে যাচ্ছি। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ শেষ হওয়ার সাথে সাথে আমরা কাজে হাত দিব। কারণ আপনারা জানেন এখানে বিভিন্ন সময় জাতীয় দল বা অন্যান্য দল অনুশীলন করে। কাজেই সেন্টারে আমাদের যে আটটি উইকেট আছে, সেগুলো ইফেক্টেড হয়।
‘সে ক্ষেত্রে লোকাল খেলাগুলোর জন্য আমরা ভালো উইকেট দিতে পারি না। পরিকল্পনা অনুযায়ী সেন্টারে আমরা দুই দিকে আট-আট করে ১৬ ফিটের আরও চারটি উইকেট করব, যেগুলো অনুশীলনের জন্য ব্যবহার করা হবে।’
তিনি বলেন, ‘গত বছর আমরা সিলেটের পর চট্টগ্রামের কাজ ধরেছি। এবার আমরা রাজশাহীতে কাজ ধরব, বগুড়াতে কিছু কাজ ধরেছি। সেটা বাইরের অনুশীলন উইকেট। আমরা প্রত্যেকটা স্টেডিয়ামের একটা মাস্টারপ্ল্যান করতে যাচ্ছি, যেটা রিজিয়নে আমাদের ভালো একটা সুযোগ-সুবিধা থাকবে। যেটাতে খেলার বাইরে অনুশীলন এবং একাডেমি থাকবে। এ বছরে আমাদের পরিকল্পনা মিরপুরের অ্যাডিশনাল উইকেট এবং রাজশাহী, বগুড়া- এই তিনটা ভেন্যুকে সম্পূর্ণরূপে আপগ্রেড করব।’