বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভ থেকে শুরু। এরপর পাকিস্তানের বিপক্ষে তিনটি টি-টোয়েন্টি ও সিরিজের প্রথম টেস্টে হার। ডমিঙ্গো শিষ্যদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের দিকে তাকালে পরাজয় ছাড়া চোখে আর কিছুই পড়বে না। টানা ৯ ম্যাচে হার।
পরাজয়ের ধারাবাহিকতায় ছেদ ঘটাতে শনিবার পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুর টেস্টে মাঠে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এই টেস্টে শক্তিও বাড়ছে টাইগারদের। দলে ফিরছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচে হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরিতে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গিয়েছিল সাকিবের। বিশ্বকাপের পাশাপাশি বাঁহাতি এই অলরাউন্ডার ছিলেন না পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজে। ফিটনেস ইস্যুতে সবুজ সংকেত পাননি প্রথম টেস্টেও।
নিজেকে ফিট প্রমাণ করে সাকিব খেলবেন দ্বিতীয় টেস্টে। আর তাতেই উজ্জ্বীবিত বাংলাদেশ দল। খেলোয়াড়দের শারীরিক ভাষাতেও তা স্পষ্ট।
সাকিবের উপস্থিতিতে যে দলের ভোল বদলে গেছে সেটি অকপটে স্বীকার করলেন টেস্ট অধিনায়ক মুমিনুল হক। জানালেন, দ্বিতীয় টেস্টে কেমন হতে যাচ্ছে টাইগারদের টিম কম্বিনেশন।
মুমিনুল বলেন, ‘সাকিব ভাই ঢুকলে তো একটু সহজ হয়, তা সবারই জানা। উনাকে দেখলাম ভালোই আছেন। অনুশীলন করেছেন। ভালো লাগছে দেখে। আর টিম কম্বিনেশন হবে সাত ব্যাটসম্যান আর চার বোলারের। এ রকমই চিন্তা করেছি।’
সাকিব ফিরলেও শঙ্কা যায়নি তাসকিনের ফেরা নিয়ে। স্কোয়াডে থাকার পাশাপাশি দলের সঙ্গে অনুশীলন করলেও বিশ্রামে রাখা হতে পারে এ পেইসারকে।
পরিবর্তন থাকছে বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটিতে। টাইফয়েডের কারণে ঢাকা টেস্টে খেলার সুযোগ নেই ওপেনার সাইফ হাসানের। তার পরিবর্তে অভিষেক হতে পারে মাহমুদুল হাসান জয়ের। সেই সঙ্গে অভিষেক হতে পারে মোহাম্মদ নাঈম শেখের।
টানা ৯ ম্যাচ হারলেও সিরিজের শেষ টেস্টে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে চায় বাংলাদেশ।
তেমনটাই বোঝা গেল টেস্টের আগে সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক মুমিনুলের কণ্ঠে। পাশপাশি পাকিস্তানকে হারাতে ইতোমধ্যেই ছক কষে রেখেছেন টেস্ট অধিনায়ক। প্রস্তুত করেছেন নিজেদের হারের বৃত্ত থেকে বের হওয়ার।
মুমিনুল বলেন, ‘টেস্ট ম্যাচে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো প্রথম ১ ঘণ্টা। যেই ব্যাটিং করুক না কেনযদি উপর দিকে ভাল একটা শুরু এনে দিতে পারি তাহলে সবার জন্যই সহজ।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমাদের শক্তি হলো ব্যাটিং। দুই থেকে আড়াইদিন বা পাঁচ-ছয় সেশন যদি ব্যাটিং করতে পারি তাহলে খেলায় ফিরতে পারব। অবশ্যই আমি আশাবাদী। কেউই তো ম্যাচ হারার জন্য মাঠে নামে না। আমরা অবশ্যই জেতার জন্য নামব।’
বাংলাদেশ শিবিরে পরিবর্তন এলেও অপরিবর্তিত স্কোয়াড নিয়ে আরও একবার টাইগার বধের মিশনে নামতে যাচ্ছে পাকিস্তান।
এখন পর্যন্ত পাকিস্তানের বিপক্ষে মোট ১০টি টেস্ট খেলেছে বাংলাদেশ। সেখানে বাংলাদেশের একমাত্র অর্জন ২০১৫ সালের ড্র। বাকি ৯টি ম্যাচেই হার মেনে মাঠ ছাড়তে হয়েছিল লাল সবুজের প্রতিনিধিদের।
এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ১২২টি টেস্ট খেলেছে। এর ভেতর বাংলাদেশ জয়ের মুখ দেখেছে মাত্র ১৪টিতে। বাকি ৯২টিতে হেরেছে তারা।
বাংলাদেশের হারের ৯২টি ম্যাচের ভেতর ৪৩টিই ইনিংস ব্যবধানে পরাজয়। বাকি ১৬ টেস্ট ড্র করেছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা।
শনিবার প্রথমবারের মতো সাদা পোশাকে পাকিস্তান বধের মিশনে নামতে যাচ্ছে টিম টাইগার্স।
সকাল ১০টা থেকে শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হবে ম্যাচটি।
বাংলাদেশের সম্ভাব্য একাদশ: সাদমান ইসলাম, নাঈম শেখ/মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্ত, মুমিনুল হক (অধিনায়ক), মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, লিটন দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহী ও এবাদত হোসেন।
পাকিস্তানের সম্ভাব্য একাদশ: আবিদ আলি, আব্দুল্লাহ শফিক, আজহার আলি, বাবর আজম (অধিনায়ক), মোহাম্মদ রিজওয়ান, ফাওয়াদ আলম, ফাহিম আশরাফ, হাসান আলি, সাজিদ খান, নুমান আলি ও শাহিন আফ্রিদি।