১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান হলো না। লঙ্কা জয়ের আত্মবিশ্বাস আর ভারতকে রুখে দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে মাঠে নেমে হার মালদ্বীপকে হারানো হলো না। দুই গোলের হার বরণ করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে জামালদের। এতে সাফের ফাইনালের যাওয়ার পথটা বেশ কঠিন হয়ে গেল অস্কার ব্রুজনের বাহিনীর।বৃহস্পতিবার মালেতে ২-০ ব্যবধানে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নদের কাছে হেরেছে বাংলাদেশ। তবে প্রথমার্ধটা মোটেও এমন ছিল না। সহসাই কৌশলী ফুটবল খেলে ভালো কিছু আক্রমণ করতে দেখা গেছে বাংলাদেশকে।
মূল একাদশে দুই পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে অস্কারের দল।
কিছুটা আধিপত্য নিয়ে ম্যাচটা শুরু করে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা। ঘরের মাঠে গ্যালারি ভরা দর্শকের সুবিধা নিয়ে তেতে ওঠার চেষ্টা করে মালদ্বীপ। তবে, ম্যাচের গতি ধরতে খুব একটা সময় নেয়নি বাংলাদেশ। রক্ষণ ঠিক রেখে সহসাই আক্রমণ সাজাতে থাকে মতিন-বিপলুরা।
গোছানো ফুটবলে মালদ্বীপের রক্ষণ ব্যস্ত রাখে জামালরা।
তারই ধারাবাহিতায় ম্যাচের শুরুতেই দারুণ একটা সুযোগ পায় বাংলাদেশ। ডি-বক্সের ভেতরে বল পেয়ে গোলবারে শট নেন বিপলু। দুর্বল শটটা সোজা চলে যায় মালদ্বীপের গোলকিপার ফয়সালের গ্লাভসে।ম্যাচের ২৯ মিনিটে প্রথম বড় সুযোগটা পায় মালদ্বীপ। বাংলাদেশের রক্ষণের সিক্স ইয়ার্ডের বাঁ পাশে প্রায় ফাঁকায় থাকা আকরাম আব্দুল ঘানি বল পাঠিয়ে দেন বারের বাইরে দিয়ে।
বলা বাহুল্য, বড় বাঁচা বেড়ে যায় বাংলাদেশ।
প্রথমার্ধের একেবারে শেষদিকে কিছুটা ভয় ধরায় মালদ্বীপ। পরপর তিনটি কর্নার-ফ্রি-কিকে গোলবারে দলীয় ফুটবল নৈপুণ্যে আক্রমণ সাজায় স্বাগতিকরা। তবে, বেশ দক্ষতার সঙ্গে আক্রমণ ধুলিস্যাৎ করে বাংলাদেশ।
গোলশূন্য স্কোরের স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে টাইগাররা।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই কৌশলে নামে বাংলাদেশ। রক্ষণ সামলে আক্রমণে যাওয়ার।
গোল করে মালদ্বীপের উদযাপন। ছবি: বাফুফে
ম্যাচের ৫৫ মিনিটে লিড নেয় স্বাগতিকরা। কর্নার থেকে উড়ে আসা বলটা প্রথমবার ক্লিয়ার হলে ফিরতি বলে হেড করেন নিহান। তার হেডটা বক্সের জটলায় পড়লে বাই সাইকেল শটে দৃষ্টিনন্দন গোল করেন হামজা। গোলকিপার জিকো ব্যর্থ চেষ্টা শুধু গোলের সৌন্দর্য বাড়িয়ে দেয়।
পিছিয়ে আসার পরপরই আক্রমণের ধার বাড়াতে বদলি হিসেবে তিন জন ফরোয়ার্ড রানা, সুফিল ও সুমনকে মাঠে নামান অস্কার।
সমতায় ফিরতে মরিয়া বাংলাদেশ ম্যাচে একটি সুযোগ তৈরি করে ফেলে। ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেয়া বুলেট শটটা ব্যাক হিলে চেষ্টা করেন মতিন। তার শট চলে যায় সাইড বারের বাইরে দিয়ে।
তবে ঠিক তার পরে নিজেদের বক্সে একটা অদ্ভুদ ফাউল করে বসেন সোহেল রানা। পাল্টা আক্রমণে মালদ্বীপের ফুটবলার হামজার জার্সি টেনে ধরেন সোহেল। পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। এই সুযোগ কাজে লাগাতে এতটুকু ভুল করেননি মালদ্বীপের তারকা ফুটবলার আশফাক আলী।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ার পর ম্যাচে ফেরা সম্ভব হয়নি বাংলাদেশের। ছবি: বাফুফে
মুহূর্তেই গোল হজম করে ম্যাচে ফেরার আশা আরও ক্ষীণ হয়ে যায় বাংলাদেশের।
ম্যাচের একেবারে অন্তিম মুহূর্তে মতিনের শট বারের একেবারে গায়ে ছুঁয়ে চলে যায় বাইরে।
এরপরেই ম্যাচ শেষের বাঁশি বাজলে হারের হতাশা নিয়ে মাঠ ছাড়ে বাংলাদেশ।
হারলেও সাফের ফাইনালে যাওয়ার সুযোগ রয়েছে অস্কারের বাহিনীর। শেষ ম্যাচে হারাতে হবে নেপালকে।