শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে সাফ মিশনে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নামে বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে পিছিয়ে দ্বিতীয়ার্ধে ১০ জনের দল নিয়েও ভারতকে রুখে দিয়েছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
ইয়াসিন আরাফাতের কাঙ্ক্ষিত গোলে সমতার স্বস্তি নিয়ে ফিরে বাংলাদেশ।
মালের জাতীয় স্টেডিয়ামে সোমবার বিকেল পাঁচটায় শুরু হওয়া ম্যাচে ভারতকে ১-১ ব্যবধানে রুখে দেয় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে সুনীল ছেত্রীর গোলে ভারত লিড নেয়। পরের অর্ধে লাল কার্ডে ১০ জনে পরিণত হওয়া দলকে সমতা এনে দেয় ইয়াসিন আরাফাতের গোল।
সব মিলে হাই ভোল্টেজ ম্যাচটা দুর্দান্তভাবে ফিরে এক পয়েন্টের স্বস্তি নিয়ে ভারত বাধা শেষ করেছে বাংলাদেশ।
ভারতের প্রথম ম্যাচ। আর বাংলাদেশের দ্বিতীয়। তিন দিনের মাথায় দুই ম্যাচের ক্লান্তি নিয়ে ফুরফুরে মেজাজে থাকা ভারতের বিপক্ষে নামেন জামালরা।
দলে দুই পরিবর্তন (সাদ ও মতিন) নিয়ে মাঠে নেমে প্রথমে খেলার ছন্দ ধরতে কিছুটা সময় নেয় বাংলাদেশ।
২৫ মিনিটে প্রথম সুযোগ তৈরি হয় বাংলাদেশের। জামালের ফ্রি-কিকে পাওয়া বলে ভারতের রক্ষণ জটলা থেকে বাই সাইকেল কিক নিয়েছিলেন বিপলু। সাদের হেডে বল চলে যায় বাইরে।
এখান থেকে পাল্টা আক্রমণে ২৬ মিনিটে ম্যাচের লিড নিয়ে ফেলে ভারত। ডান দিক দিয়ে আক্রমণ সাজিয়ে বল কর্নারের দিকে নিয়ে যায় ভারত। সেখান থেকে রক্ষণকে ফাঁকি দিয়ে বল নিয়ে ডি-বক্সের ভেতরে ঢুকে পড়েন উদানা সিং।
একেবারে ফাঁকায় জায়গা করে নেয়া ছেত্রির পায়ে বল চলে আসে। ডান পায়ে আলতো টোকায় তা জালে জড়াতে ভুল করেননি বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচে জোড়া গোল করা এ ফরোয়ার্ড।
ম্যাচের ২৮ মিনিটে সমতায় ফিরতে ফিরতে ফেরা হয়নি লাল-সবুজদের। মতিন মিয়ার ব্যাক পাস থেকে বিপলুর দুর্বল পায়ের শট বার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।
আক্রমণ আসে ভারত থেকেও। ম্যাচের ৩৮ মিনিটে ছেত্রির বাম পায়ের নিখুঁত শট দারুণভাবে ঠেকিয়ে দিয়ে বিপদমুক্ত করেন গোলকিপার জিকো।
সমতায় ফিরতে মরিয়া জামালরা ম্যাচের ৩৯ মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করে। ভারতের কর্নার ব্যর্থ হলে কাউন্টার অ্যাটাকে যায় বাংলাদেশ।
মতিন মিয়া ড্রিবলিং করে মাঝমাঠের একটু সামনে থেকে বল এগিয়ে দেন ডান পাশে দৌড়াতে থাকা সাদ উদ্দীনকে। ঠিক ডি-বক্সের সামনে থেকে তিনি বলটা ঠেলে দেন বাম পাশ দিয়ে ফাঁকায় থাকা বিপলুর সামনে।
সমতায় ফেরার সহজ সুযোগ গোলকিপার বরাবর শট নিয়ে হাতছাড়া করেন বিপলু। এক গোলে পিছিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।
সমতায় ফেরার আরেকটি দারুণ সুযোগ হাতছাড়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয়ার্ধ। ডান প্রান্ত থেকে সাদ উদ্দীনের ক্রস থেকে ডি-বক্সের ভেতর ঠিক সিক্স ইয়ার্ডের সামনে থেকে বলটা বাম বারের বাইরে দিয়ে মেরে দেন ফরোয়ার্ড রাকিব। এমন জায়গা থেকে গোল মিস করে তার মাথায় হাত যেন পুরো দলের চিত্র।
এর পরে সবচেয়ে বড় ধাক্কা বাংলাদেশ পায় ৫৪ মিনিটে। ভারতের ফরোয়ার্ড লিস্টন কোলাসোকে টেনে ধরায় সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয় বাংলাদেশের ডিফেন্ডার বিশ্বনাথ ঘোষকে। এক গোলে পিছিয়ে থাকা দলটা ১০ জনে পরিণত হয়।
এমন অবস্থাতেও পাল্টা আক্রমণে দারুণ কিছু সুযোগ তৈরি করে বাংলাদেশ। একটি আসে এর কিছুক্ষণ পরে। কাউন্টার অ্যাটাকে মতিন মিস করে বসেন শট।
সমতায় ফেরার কাঙ্ক্ষিত গোলটি বাংলাদেশ পেয়ে যায় ৭৪ মিনিটে। হেড থেকে ইয়াসিন আরাফাতের গোলকে বলা যায় মরুভূমিতে পানি পাওয়ার মতো। জামালের কর্নার কিক থেকে রাকিবের হেডে বল চলে যায় সিক্স ইয়ার্ডের সামনে। সেখান থেকে বলটা হেড করে জালে জড়ান ইয়াসিন।
এরপরে রক্ষণ ভঙ্গিতে চলে যায় বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত কাঙ্ক্ষিত গোলে সমতার স্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ে অস্কার ব্রুজন।
লঙ্কা জয়ের পর ভারতকে রুখে দিয়ে চার পয়েন্ট নিয়ে আসরে শক্ত অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। ফেবারিট ভারত প্রথম ম্যাচটা শুরু করল হোঁচট খেয়ে।