ইউয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের এই মেগা ম্যাচে বরাবরের মতোই আগ্রহের কেন্দ্রে ছিলেন লিওনেল মেসি। গ্রীষ্মে ব্লকবাস্টার দলবদলের পর প্যারিসে এসে কখনও চোট, কখনও ছন্দহীনতায় ভুগছিলেন ছয়বারের ব্যলন ডর জয়ী।
অবশেষে নিজের সেরা ফর্মে ফিরলেন আর্জেন্টাইন মহাতারকা। পিএসজির জার্সিতে করলেন প্রথম গোল। এর সঙ্গে ইদ্রিসা গেয়ের গোলে ম্যানচেস্টার সিটিকে ২-০ ব্যবধানে হারায় প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি)।
ম্যাচের আগের দিন পিএসজি ম্যানেজার মরিসিও পচেত্তিনো বলেছিলেন, তিনি দেখতে চান মাঠে তার দল পজেশন বেশি ধরে রেখেছে।
পার্ক দ্য প্রিন্সেসে শুরু থেকে তেমনটা দেখা গেল না। ম্যানচেস্টার সিটি চাপিয়ে খেলল পিএসজির বক্সে।
হাই-প্রেসিং খেলে পিএসজির ডান প্রান্তের দুই ডিফেন্ডার নুনো মেন্দেস ও প্রেসনেল কিম্পেম্বেকে রীতিমতো গলদঘর্ম করে রাখেন রিয়াদ মাহরেজ ও কেভিন ডি ব্রুইনা।
তবে দৃশ্য পাল্টাল আট মিনিটে। ইদ্রিসা গেয়ের গোলে হুট করেই লিড নিয়ে নেয় পিএসজি।
আক্রমণের শুরুটা ডান প্রান্তে করেন আশরাফ হাকিমি। তার বাড়ানো বল নিয়ে ঝড়ের বেগে বক্সে ঢুকে পড়েন কিলিয়ান এমবাপে। তার কাট ব্যাক নেইমার ধরতে না পারলেও ওঁত পেতে থাকা গেয় ভুল করেননি।
কাছ থেকে লক্ষ্যভেদ করে লিড এনে দেন স্বাগতিকদের।
গোল পাওয়ার পর ছন্দে ফেরে পিএসজি। ম্যানসিটির প্রেস সামলে বেশ কয়েকবার আক্রমণের চেষ্টা করে প্যারিসিয়ানরা।
মূলে ছিলেন মার্কো ভেরাত্তি ও লিওনেল মেসি। মাঝমাঠ থেকে ভেরাত্তি ডি বক্সের ডান প্রান্তে বল ছাড়ছিলেন মেসির উদ্দেশে।
আর মেসি বক্সের ভেতরে খুঁজে নিচ্ছিলেন নেইমার-এমবাপেদের।
অন্য প্রান্তে ম্যানসিটিও ছেড়ে কথা বলেনি। আক্রমণের মাত্রা বাড়াতে থাকে গার্দিওলার দল।
২৫ মিনিটে অবিশ্বাস্যভাবে ছোট বক্সের ভেতর থেকে টানা দুইবার বল ক্রসবারে লাগান সিটির রাহিম স্টার্লিং ও বার্নার্ডো সিলভা।
স্টার্লিংয়ের শট বারে লেগে ফিরে এলে শট নেন সিলভা। তার শটও লাগে বারে। কপালগুণে রক্ষা পায় পিএসজি।
দারুণ উপভোগ্য প্রথমার্ধ শেষ হয় ওই এক গোলেই।
বিরতির পর একেবারে বর্ণহীন জ্যাক গ্রিলিশকে তুলে ফিল ফডেনকে নামান গার্দিওলা।
এতে আরও ক্ষুরধার হয় তাদের আক্রমণ। কিন্তু পিএসজি গোলকিপার জানলুইজি ডোনারুম্মার দক্ষতায় সমতা আনতে পারেনি অতিথি দল।
ম্যাচের ৭৬ মিনিটে আসে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত। ডান প্রান্ত দিয়ে বল পেয়ে দ্রুত বক্সের দিকে ছুটে যান মেসি।
এমবাপের সঙ্গে চমৎকার ওয়ান-টু করে বল ফিরে পান বিশ্বসেরা ফুটবলার। বক্সের বাইরে থেকে বাঁ পায়ের নিখুঁত শটে ম্যানচেস্টার সিটির গোলকিপার এডারসনকে বোকা বানাতে ভুল করেননি মেসি।
পিএসজির জার্সিতে তার প্রথম গোলটি ছিল চ্যাম্পিয়নস লিগে ১২১ নম্বর গোল।
বাকি ১৫ মিনিটে ম্যাচে ফিরতে পারেনি সিটিজেনরা। ২-০ গোলের হার নিয়েই মাঠ ছাড়ে লিওনেল মেসির দলবল।
গুরু গার্দিওলাকে আরও একবার হারের স্বাদ উপহার দেন মেসি। পেপ গার্দিওলার সিটির বিপক্ষে এ নিয়ে সাত গোল করলেন পিএসজির নম্বর ৩০।
তার জাদুতেই এবারের চ্যাম্পিয়নস লিগে প্রথম জয় নিশ্চিত করল পিএসজি।