বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘মনে হয়েছিল আমার মৃত্যু হলেও শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে হবে’

  •    
  • ২১ আগস্ট, ২০২১ ০৮:৫৪

খলিলুর বলেন, ‘তখন মনে হয়েছিল, আমার মৃত্যু হলেও এ দেশের মানুষের প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে হবে। এক মুহূর্ত দেরি না করে আমরা শেখ হাসিনাকে ঘিরে মানবঢাল তৈরি করি। প্রথম গ্রেনেডটি বিস্ফোরণের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ট্রাক লক্ষ্য করে একই দিক থেকে পর পর আরও দুটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। দ্বিতীয় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই।’

একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলার ঘটনাস্থলে ছিলেন খলিলুর রহমান। এ দিন মিছিল নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা খলিলুর সমাবেশস্থলে গিয়েছিলেন। গ্রেনেড হামলায় আহত প্রত্যক্ষদর্শী খলিলুরের বাড়ি বরগুনা সদরে।

জঙ্গিদের ছোড়া গ্রেনেড যখন একের পর এক আঘাত হানতে শুরু করে তখন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার জীবন রক্ষায় মাবনবর্ম তৈরিকারীদের একজন ছিলেন খলিলুর।

নিউজবাংলাকে তিনি ওই দিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক ইতিহাসে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট একটি কলঙ্কময় দিন। ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের ভোটের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার গঠনের পর পরই আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের ওপর নেমে আসে নির্যাতন।’

বিএনপি-জামায়াত জোটের নির্যাতনের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ ২১ আগস্ট ঢাকায় সন্ত্রাসবিরোধী র‌্যালির আয়োজন করে। বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে তৈরি করা হয় অস্থায়ী মঞ্চ।

খলিলুর রহমান বলেন, ‘আমি তখন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্বে। সমাবেশের আগের দিন আমাকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হয়। আমার দায়িত্ব ছিল ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিট থেকে আসা মিছিল গুলিস্তান জিরো পয়েন্টে রিসিভ করা। সেখান থেকে সবাইকে নিয়ে আড়াইটার দিকে আমরা অস্থায়ী মঞ্চের সামনে যাই। একটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চে সমাবেশ চলছিল। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিকেল ৫টার দিকে সমাবেশস্থলে পৌঁছেন।

‘গাড়ি থেকে নেমে তিনি অস্থায়ী মঞ্চে উঠে ৫টা ২ মিনিটে বক্তব্য শুরু করেন। ২০ মিনিটের বক্তব্য শেষ করতেই দক্ষিণ দিক থেকে তাকে লক্ষ্য করে একটি গ্রেনেড ছুড়ে মারা হয়। গ্রেনেডটি ট্রাকের বাঁ পাশে পড়ে বিস্ফোরিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শেখ হাসিনা ট্রাকের ওপর বসে পড়েন। আমরা ঘটনার আকস্মিকতায় হতভম্ভ হয়ে যাই।’

খলিলুর বলেন, ‘তখন মনে হয়েছিল, আমার মৃত্যু হলেও এ দেশের মানুষের প্রয়োজনে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে বাঁচাতে হবে। এক মুহূর্ত দেরি না করে আমরা শেখ হাসিনাকে ঘিরে মানবঢাল তৈরি করি। প্রথম গ্রেনেডটি বিস্ফোরণের কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে ট্রাক লক্ষ্য করে একই দিক থেকে পর পর আরও দুটি গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হয়। দ্বিতীয় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনতে পেয়েছিলাম। এরপর আমার আর কিছু মনে নেই।

‘রাতে যখন হুঁশ ফেরে তখন আমি হাসপাতালের বেডে। পায়ের ব্যথায় কাতরাচ্ছিলাম। সেখানে ১৬-১৭ দিন থাকার পর কিছুটা সুস্থ হলে বাসায় ফিরি। আমাকে উদ্ধারকারীরা জানান, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্লাবের সামনে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে আমাকে প্রথমে ঢাকা মেডিক্যালে নেয়া হয়। সেখানে আহতদের ওপর পুলিশের লাঠিপেটার কারণে আমাকে ধানমন্ডির ট্রমা সেন্টারে নেয়া হয়। ট্রমা সেন্টারে পরিচিত এক চিকিৎসক আমাকে পরদিন গ্রিন লাইফ হাসপাতালে ভর্তি করান।’

খলিলুর রহমানের বাড়ি বরগুনা সদরের এম বালিয়াতলি ইউনিয়নের পরীরখাল এলাকায়। বরগুনা সরকারি কলেজ ছাত্রসংসদের তিনি নির্বাচিত সমাজসেবা সম্পাদক ছিলেন। খলিলুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, পরে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের উপকমিটির সহসম্পাদক ছিলেন। বর্তমানে আওয়ামী লীগের ত্রাণ উপকমিটির সদস্য হিসেবে রাজনীতিতে যুক্ত আছেন।

খলিলুর রহমান বলেন, ‘দুই পায়ে এখনও অনেক স্প্লিন্টার বয়ে বেড়াচ্ছি। শীতকালে ক্ষতের জায়গায় খুবই যন্ত্রণা হয়।’

এ বিভাগের আরো খবর