বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আফগান নারী নেত্রী আশ্রয় চান বাংলাদেশে

  •    
  • ১৯ আগস্ট, ২০২১ ১৫:২৬

রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম নিউজবাংলাকে বলেন, বাংলাদেশকে সব সময় সাহায্য করা এক আফগান নারী নেত্রী পরিবার নিয়ে চরম আতংকে আছেন। জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

আফগানিস্তানের দখল তালেবানের হাতে যাওয়ার পর দেশটিতে আটকে পড়া ১৭ বাংলাদেশির তথ্য এখন পর্যন্ত পেয়েছে সরকার।

উজবেকিস্তানের তাসখন্দে থেকে কাবুলের দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা মোটামুটি ভালো আছেন। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলেই তাদের উদ্ধার করে দেশে পাঠানো হবে।

রাষ্ট্রদূত বলছেন, বাংলাদেশকে সব সময় সাহায্য করা এক আফগান নারী নেত্রী পরিবার নিয়ে চরম আতংকে আছেন। জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছেন তিনি।

অনলাইনে নিউজবাংলাকে দেয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম।

তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে বর্তমানে কোনো রাজনৈতিক সরকার নেই। সেখানে ব্যুরোক্র্যাটিক প্রক্রিয়ায় সরকারের দৈনন্দিন কাজ চলছে বলে আমার মনে হয়। এ অবস্থা মাথায় রেখেই আমরা সেখানকার বাংলাদেশিদের সুরক্ষার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’

মধ্য এশিয়ায় কেবল উজবেকিস্তানে বাংলাদেশের দূতাবাস রয়েছে। সেখান থেকে দক্ষিণ এশিয়ার আফগানিস্তানসহ তাজিকিস্তান, কিরঘিস্তান ও তুর্কেমিনিস্তানের কূটনৈতিক কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

উজবেকিস্তানের তাসখন্দে থেকে কাবুলের দায়িত্ব পালন করা বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত জাহাঙ্গীর আলম

বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘যে সমস্যাটি হয়েছে, আমরা কোনো চিঠি দেয়ার সময় পাইনি। বিশেষ করে দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে আমাদের কিছু জানাতে হয়। কোনো কোন ক্ষেত্রে তাদের প্রেসিডেন্টকে আমাদের আগ্রহের কথা বা চাহিদার কথা জানাতে হয়। এই প্রয়োজন হয় এমন পরিস্থিতিতে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করার জন্য।

‘আমি শুধু আমাদের বাংলাদেশিদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছি না, ওখানে আমাদের একজন খুবই বিশ্বস্ত সোর্স ছিলেন, যিনি আবার নারী নেত্রী, মানবাধিকার কর্মী। তিনি সময় সময় আমাদের তথ্য দিতেন। এমনকি মাজার-ই-শরিফ যেদিন দখল হয়, সেদিনও তিনি আমাদের তথ্য দিয়েছেন। কিন্তু এখন তিনি নিজের ঘরে বন্দি এবং তিনি তার বাবা-মা, আত্মীয় স্বজনের প্রাণ রক্ষা করতে চাচ্ছেন। তিনি বলছেন, যেহেতু তিনি নারী নেত্রী, মানবাধিকারকর্মী, তাই তিনি প্রাণ হারানোর ভয়ে আছেন।’

আফগানিস্তান থেকে এখন কোনো তথ্য পাওয়া খুবই কঠিন জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা স্বাভাবিক কোনো চ্যানেলে আফগানিস্তানের তথ্য নিতে পারছি না। ওদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে সচিব তার কাছে আমি একটা চিঠি লিখেছি। আমি তাকে লিখেছি, আফগানিস্তানের কোথায় কত জন বাংলাদেশি আছে, তা জানাতে ও তাদের নিরাপত্তা বিধান করতে। এছাড়া আমরা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দুটি হটলাইন চালু করেছি। এই হটলাইনে বাংলাদেশিরা জানাচ্ছেন, তারা কেমন আছেন, কোথায় আছেন, কোন অবস্থায় আছেন।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘ব্র্যাকের যিনি টিম লিডার তিনি আমাদের প্রথমে জানিয়েছিলেন, তারা ভালো জায়গায় এবং একটি রেস্ট হাউজে আছেন। তবে তাদের তিন জন দেশে যেতে চান। তাদের কোনো সহযোগিতা লাগবে কিনা জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রয়োজন নেই। তারপর তারা তিন জন দেশে চলে গেছেন। এখন তারা ছয় জন আছেন।

‘এরপর আমাদের হটলাইনে আরও সাত জন তাদের অবস্থান জানান। তারা একটি মুঠোফোন কোম্পানিতে কাজ করেন। তারা জানিয়েছেন, তারাও ভালো আছেন। তবে তাদের মধ্যে একজন আছেন রাজীব নামে, তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে জুলাইয়ের ৮ তারিখে। এটা জানার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আমার অধস্তনদের নির্দেশ দিয়েছি।’

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আরও দুজন আমাদের হটলাইনে যোগাযোগ করছেন। তারা কাবুলের ডিপ্লোম্যাটিক এরিয়ার সুয়্যারেজ সেক্টরে কাজ করতেন। উনারা আমাকে বললেন, খুব শংকার মধ্যে আছেন। যত দ্রুত সম্ভব তাদের যেন বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হয়। আমি তাদের বলেছি, বাংলাদেশের সঙ্গে কমার্শিয়াল ফ্লাইট বন্ধ। বাইরের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ। এখন আমি যদি আপনাদের ট্রাভেল পাসও দেই, আপনারা তো যেতে পারবেন না। আপনারা সতর্কতার সঙ্গে থাকেন। আমরা আফগান সরকারের যেখানে যতটুকু নিরাপত্তা বলয় আছে, সেখানে আপনাদের পাঠানোর ব্যবস্থা করব। এখনও কোনো রাজনৈতিক সরকার ব্যবস্থা সেখানে গড়ে ওঠেনি, তারপরেও আমরা আমাদের বাংলাদেশ, বাংলাদেশের মানুষ ও বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করব। তারা আমাদের কথায় সন্তুষ্ট হয়েছেন। তারা সবসময়ই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন এবং তারা ভালো আছেন।’

জাহাঙ্গীর আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিন জন বাংলাদেশি আফগানিস্তানের জেলে ছিলেন। আব্দুল সাত্তার নামে একজনের তথ্য আমি পেয়েছিলাম। পরে আমি বাংলাদেশে তার তথ্য পাঠাই। আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ঠিকানায় এই নামে কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, তার নাম দেখে, নামের অদ্যাক্ষর দেখে, তিনি বাংলাদেশি হতে পারেন। তালেবান কাবুলের সেন্ট্রাল জেল পুল ই চাখার দখল করে কয়েকটি ব্লক থেকে তাদের লোক বের করে আনে। সেখান থেকে একজন বাংলাদেশি মুক্ত হয়েছেন। তার নাম মইন আল মিজবাহ। তিনি এক আফগান পরিবারের আশ্রয়ে আছেন।

‘গত সোমবার রাতে একজন নিজেকে বাংলাদেশি পরিচয় দিয়ে, বাংলা ভাষায় আমাদের সাহায্য কামনা করেছেন। তিনি আছেন মাজার-ই-শরিফে। উজবেক সীমান্তের কাছে। আমি চেষ্টা করছি ওই ব্যক্তিকে উজবেকিস্তানে নিয়ে আসতে। কতোটুকু পারব তা জানি না। আফগান কয়েকজন নাগরিক আমার কাছে বাংলাদেশে যেতে ভিসার জন্য আবেদন করেছিলেন, সীমান্ত বন্ধ থাকায় তারা উজবেকিস্তানে আসতে পারছেন না।’

এ বিভাগের আরো খবর