বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেটে মাদ্রাসার ৩ ছাত্র নিখোঁজ, খুঁজছে পুলিশ

  •    
  • ১৬ আগস্ট, ২০২১ ১১:৩৩

নিখোঁজ সাজ্জাদের বোন রাশেদা বেগম বলেন, ‘আমার ভাইটি সহজ-সরল। তার কাছে কোনো মোবাইল ফোন নেই। গত ৩ আগস্ট রোহানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে সে মাদ্রাসায় যায়। কিন্তু মাদ্রাসার হুজুর বলছেন, সে মাদ্রাসায় যায়নি। এরপর থেকে তাকে আমরা সব আত্মীয়স্বজনের বাসায় খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু তাকে কোথাও পাইনি।’

সিলেটের তিন মাদ্রাসা ছাত্রের খোঁজ মিলছে না বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার। এই তিনজনই সিলেটের দক্ষিণ সুরমার জালালপুরের আল্লামা আব্দুল মুকিত মঞ্জলালী একাডেমির হিফজ শাখার ছাত্র।

গত ৩ আগস্ট থেকে তারা নিখোঁজ রয়েছে বলে তাদের পরিবারের সদস্যরা জানান।সিলেট থেকে আব্দুর রাজ্জাক নামের এক কলেজ ছাত্র তালেবানদের হয়ে লড়তে আফগানিস্তানে যাওয়ার খবরের মধ্যেই এই তিন মাদ্রাসা ছাত্রের নিখোঁজ হওয়ার তথ্য জানা গেলে।নিখোঁজ তিনজনই কিশোর। তারা হলেন সাজ্জাদ মিয়া, রোহান আহমেদ, নাহিম আহমেদ। সাজ্জাদ দক্ষিণ সুরমার বলদি গ্রামের বাসিন্দা। রোহান দক্ষিণ সুরমার জালালপুরের করিমপুর গ্রামের নূরুল হকের ছেলে ও নাহিম একই এলাকার সমসপুর গ্রামের মৃত নলু মিয়ার ছেলে।এদের মধ্যে সাজ্জাদ ও নাইম ৩ আগস্ট মাদ্রাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। কিন্তু গত ৭ আগস্ট মাদ্রাসায় ফোন দিয়ে পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, তারা মাদ্রাসায় যায়নি।

রোহান নামের আরেক মাদ্রাসা ছাত্রও নিখোঁজ বলে জানা যায়।পরবর্তীতে নিখোঁজ কিশোরদের পরিবারের সদস্যরা তাদের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। সেখানেও তাদের খুঁজে পাওয়া না গেলে তারা থানায় যোগাযোগ করেন।গত ৮ আগস্ট সাজ্জাদ মিয়ার বোন দক্ষিণ সুরমা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। অন্য দুই কিশোরের পরিবার জিডি করতে চাইলে মাদ্রাসা থেকে তাদের জিডি করতে নিষেধ করা হয় বলে জানান তাদের পরিবারের সদস্যরা।নিখোঁজ সাজ্জাদের বোন রাশেদা বেগম বলেন, ‘আমার ভাইটি সহজ-সরল। তার কাছে কোনো মোবাইল ফোন নেই। গত ৩ আগস্ট রোহানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করে সে মাদ্রাসায় যায়।

‘কিন্তু মাদ্রাসার হুজুর বলছেন, সে মাদ্রাসায় যায়নি। এরপর থেকে তাকে আমরা সব আত্মীয়স্বজনের বাসায় খোঁজ নিয়েছি। কিন্তু তাকে কোথাও পাইনি।’রোহান আহমেদের বাবা নূরুল হক বলেন, ‘মাদ্রাসা থেকে হুজুর কল দিয়ে বলেছেন রোহান মাদ্রাসায় নেই। সে বাড়িও আসেনি। থানায় জিডি করতে গিয়েছিলাম কিন্তু হুজুর বলেছেন, তারা জিডি করেছেন।

‘আমি গ্রামের মানুষ, এত কিছু বুঝি না। সম্ভব সব জায়গায় খোঁজ করেছি, কিন্তু রোহানকে পাইনি। শুনেছি তার সঙ্গে আরও দুটি ছেলেকে পাওয়া যাচ্ছে না।নিখোঁজ নাহিমের মামা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘নাহিম মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। কিন্তু পরে মাদ্রাসার হুজুর বলেন, সে যায়নি। এরপর অনেক জায়গায় খোঁজ করেছি, কিন্তু পাচ্ছি না। ছেলেটার বাবা নেই। মা একা কিছু করতে পারছে না।’এ ব্যাপারে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, সাজ্জাদ মিয়া নামের একটি ছেলে নিখোঁজের জিডি হয়েছে। তার সঙ্গে আরও দুটি ছেলে আছে বলে জানা গেছে। তারা একটি মোবাইল ফোন ব্যবহার করলেও বারবার ফোনের সিম বদলাচ্ছে।তারা তিনজন হয়ত পরিকল্পনা করেই গেছে। সর্বশেষ মোবাইল ট্র্যাক করে তাদের লোকেশন ময়মনসিংহের দিকে পাওয়া গেছে। আশা করা হচ্ছে, তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে।ওসি বলেন, ‘এভাবে তিনজন ছাত্র নিখোঁজের ব্যাপারটা আসলেই উদ্বেগজনক। কারণ সম্প্রতি তালেবান ইস্যুতে বাংলাদেশের কিশোর যুবকদের সম্পৃক্ততার খবর পাওয়া যাচ্ছে। আমরা এই ব্যাপারটা সিরিয়াসলি দেখছি।‘এর আগেও এই এলাকার এক মাদ্রাসা থেকে ছাত্র নিখোঁজ হলে আমরা তাদের গোয়াইনঘাট থেকে উদ্ধার করি। তাদেরও উদ্ধারে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।’এ ব্যাপারে ওই মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক হাফিজুর রহমান বলেন, ‘নিখোঁজ তিনজনই আমাদের মাদ্রাসার আবাসিক শিক্ষার্থী। এর মধ্যে দুজন ছুটিতে ছিল। রোহান মাদ্রাসায় ছিল। ৩ আগস্ট ক্লাস শেষে সবার অজান্তে রোহান মাদ্রাসা থেকে চলে যায়।

‘এরপর জানতে পারি আরও দুই ছাত্র নিখোঁজ। এ ব্যাপারে আমরা থানায় জিডি করেছি। পুলিশ তাদের খোঁজ করছে।’পুলিশের জঙ্গিবিরোধী বিশেষ শাখা কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম বিভাগ (সিটিটিসি) সূত্রে রোববার জানা গেছে, আব্দুর রাজ্জাক নামের সিলেটের মদন মোহন কলেজের এক ছাত্র তালেবানদের হয়ে লড়তে আফগানিস্তান চলে গেছেন। ‌‘বন্ধুর বাড়িতে যাওয়ার’ কথা বলে ঘর থেকে বেরিয়ে আফগানিস্তান চলে যান রাজ্জাক। রাজ্জাকের আফগানিস্তান যাওয়া নিয়ে আলোচনার মধ্যেই সিলেটের আরও তিন ছাত্র নিখোঁজের খবর এলো।

এ বিভাগের আরো খবর