চিত্রনায়িকা পরীমনির সঙ্গে সিটি ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের জড়িয়ে কিছু সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘মিথ্যা তথ্য’ প্রচারের অভিযোগে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
রাজধানীর গুলশান থানায় সোমবার রাতে এ জিডি করা হয় বলে জানিয়েছেন সিটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মাসরুর আরেফিন।
সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, যেসব সংবাদমাধ্যম তাকেসহ ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট সংবাদ প্রকাশ করেছে, তাদের বিরুদ্ধে দুই-এক দিনের মধ্যে মামলাও করা হবে।
নিউজবাংলাকে মঙ্গলবার বিকেলে তিনি বলেন, ‘মামলার সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি আমরা। ব্যাংকের পক্ষ থেকে এই মামলা করা হবে।’
চিত্রনায়িকা পরীমনি গ্রেপ্তার হওয়ার পর কয়েকটি সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে পরীমনিকে সাড়ে ৩ কোটি টাকার গাড়ি উপহার দেয়ার অভিযোগ তোলা হয় সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিনের বিরুদ্ধে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কর্মকর্তার বরাত ছাড়াই এসব প্রতিবেদনে সিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের নামও উল্লেখ করা হয়।
এর প্রতিবাদ জানিয়ে মাসরুর আরেফিন সোমবার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে জানান, পরীমনিকে তিনি কখনো দেখেননি।
অন্যদিকে নিউজবাংলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, আলোচিত গাড়িটির মালিকানা পরীমনির নয়। এমনকি সেটি এখন আছে বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানেরই শোরুমে।
গুলশান থানায় জিডিতে সিটি ব্যাংক কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, মিথ্যা-বানোয়াট তথ্য প্রচারের মাধ্যমে একটি চক্র সিটি ব্যাংক থেকে চাঁদাবাজির পাঁয়তারা করছে।
সিটি ব্যাংকের হেড অফ কোর্ট অপারেশন গাজী এম শওকত হাসান জিডিটি করেন বলে নিশ্চিত করেছেন গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসান।
জিডিতে বলা হয়, ‘সম্প্রতি কয়েকটি গণমাধ্যম ও অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একজন অভিনেত্রীর বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে কয়েকটি ব্যাংকের কর্মকর্তাসহ নানা পেশার বেশ কিছু মানুষের জড়িত থাকার বিষয়ে প্রকাশিত একটি তথ্য প্রচার করা হয়। ওই সংবাদের মধ্যে সিটি ব্যাংকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জড়িত বলে একটি অসমর্থিত, মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে।
‘এই তথ্যকে পুঁজি করে সমাজের কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি, অসাধু শ্রেণির প্রতারক ও চাঁদাবাজ শ্রেণির লোক বিভিন্নভাবে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাজেহাল করার অপচেষ্টায় লিপ্ত আছে অথবা থাকতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে।’
জিডিতে আরও বলা হয়, ‘অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিবর্গ এবং একটি স্বার্থান্বেষী মহল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ব্যবহার করে অত্র ব্যাংকের সুনাম ক্ষুণ্ন করার অপচেষ্টায় এবং ব্যাংক থেকে অবৈধ পন্থায় অর্থ লাভের বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করছে এবং ভবিষ্যতে করতে পারে বলে আশঙ্কা করা যাচ্ছে।
‘অজ্ঞাতনামা স্বার্থান্বেষী মহলের এমন কার্যক্রমে ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা, মানসিক উদ্বিগ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে।’