বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কঙ্কালসার ভবনটিই সেই বিশ্ব বিজ্ঞানাগার

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৪ আগস্ট, ২০২১ ১৫:০৪

শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আশ্রমের ভক্তদের অভিযোগ, ভবন দুটির সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হলেও নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। উপরন্তু সেখানে প্রায়ই হানা দিচ্ছে চোর। তারা ভবনের রডসহ অবশিষ্ট সামগ্রী খুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে।

পলেস্তারা খসে গেছে। সেখানে আশ্রয় নিয়েছে গুল্ম লতা। নেই দরজা কিংবা জানালা। আছে শুধু কঙ্কালসার দেহটি।

বলছি পাবনার হেমায়েতপুরের শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত বিশ্ব বিজ্ঞানাগার ভবন দুটির কথা। পাবনা মানসিক হাসপাতালের সামনে হলেও এগুলোর ভাগ্যে যেন শুধুই বঞ্চনা।

শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র আশ্রমের ভক্তদের অভিযোগ, ভবন দুটির সুরক্ষায় সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হলেও নেয়া হয়নি কোনো উদ্যোগ। উপরন্তু সেখানে প্রায়ই হানা দিচ্ছে চোর। তারা ভবনের রডসহ অবশিষ্ট সামগ্রী খুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে।

বিভিন্ন নথি ঘেঁটে জানা যায়, শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র ১৮৮৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পাবনার হেমায়েতপুরে জন্ম নেন। ১৯২৯ সালে তিনি সেখানে অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ প্রতিষ্ঠা করেন।

তিনি একে একে গড়ে তোলেন সৎসঙ্গ তপোবন বিদ্যালয়, সৎসঙ্গ মেকানিক্যাল ও ইলেট্রিক্যাল ওয়ার্কসপ, প্রেস ও পাবলিকেশন হাউস, কুঠির বিভাগ, ব্যাংক, বিশ্ব বিজ্ঞানাগারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।

১৯৪৬ সালে ঠাকুর অসুস্থতা হওয়ার পর বায়ু পরিবর্তনের জন্য স্বপরিবারে ভারতে যান। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে রেখে যান বিশাল কর্মযজ্ঞ। ১৯৪৭ সালে দেশভাগ হলে নানা জটিলতায় কারণে ঠাকুর আর ফিরেননি এ দেশে।

আশ্রম কর্তৃপক্ষ জানায়, ঠাকুরের জন্মস্থান, তার বাসগৃহ, মাতৃমন্দির, স্মৃতিমন্দির, নিভৃত নিবাস, অফিসসহ স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো হেমায়েতপুর সৎসঙ্গকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য ১৯৬১ সাল থেকে সরকারের কাছে আবেদন করা হয়। অনেকবার আবেদন করার পর জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সুপারিশ পাঠানো হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।

এ বিষয়ে সুচিত্রা সেন স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ পাবনার সাধারণ সম্পাদক নরেশ মধু বলেন, ‘এটি ঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত স্থাপনাগুলোর একটি। অথচ এতটাই অবহেলায় ফেলে রাখা হয়েছে যে, ভবনটি দিনে দিনে মিলিয়ে যাচ্ছে।

‘মানসিক হাসপাতালের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে থাকলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও কিছু জানে না। আমরা চাই দ্রুত সময়ের মধ্যে স্থাপনাটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতায় নিয়ে সংরক্ষণ করা হোক।’

ঠাকুর অনুকূলচন্দ্র সৎসঙ্গ আশ্রমের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ সরকার বলেন, ‘মানসিক হাসপাতালের ভেতরে যেসব স্মৃতি রয়েছে, তা হাসপাতালের শুরু থেকেই দাঁড়িয়ে আছে। এইসব স্থাপনা মানসিক হাসপাতালের কার্যক্রমকে কখনো কোনো বাধার সৃষ্টি করেনি।

‘সৎসঙ্গ কর্তৃপক্ষ বহুবার বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন সরকারপ্রধানের কাছে আবেদন জানিয়েছে যাতে করে ঠাকুরের ফেলে যাওয়া ভবনগুলোকে প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগের আওতায় নেয়া হয়। কিন্তু কেউ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।’

পাবনা মানসিক হাসপাতালের পরিচালক আবুল বাসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ‘স্মৃতি বিজড়িত এ স্থাপনাটি ভাঙার বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। এটি ভেঙে ফেলার কোনো নির্দেশনাও আমাদের কাছে আসেনি।

হাসপাতালের সামনে বিজ্ঞানাগার ভাঙচুর হওয়া নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে পরিচালক বলেন, ‘এটি দেখভালের জন্য যথেষ্ট নিরাপত্তাকর্মী নেই। রাতের আঁধারে কে বা কারা ভেঙেছে তা আমরা কীভাবে জানব?’

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ‘পাবনা মানসিক হাসপাতালের ভেতরে অনুকূলচন্দ্রের কোনো স্থাপনা ভেঙে ফেলার কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে নেই। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আমাদের ভেঙে ফেলার কোনো ক্ষমতাও নেই।

‘আমি যতটুকু জানি, এটি সংরক্ষণের জন্য একটি নীতিগত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।’

এ বিষয়ে পাবনার জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিশ্বাস রাসেল হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনাটি আমি ভালোভাবে জানি না। বিষয়টি জেনে তারপর প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর