বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হেলেনার বিরুদ্ধে র‍্যাবের যেসব অভিযোগ

  •    
  • ৩০ জুলাই, ২০২১ ১৮:০৬

‘হেলানা জাহাঙ্গীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের মানহানি ও সুনাম নষ্ট করেছেন। এছাড়া তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করেছেন। তিনি খ্যাতি লাভের আশায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানিত ব্যক্তিবর্গদের বিব্রত করতেন।’

আলোচিত ব্যবসায়ী হেলেনা জাহাঙ্গীর খুবই উচ্চভিলাসী জানিয়ে র‌্যাব বলেছে, তার উদ্দেশ্য যা বাস্তবায়ন করতে তিনি নানাবিধ অবৈধ পন্থা, অপকৌশল ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন।

আগের রাতে আটকের পর শুক্রবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা বলেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

গৃহবধূ থেকে ব্যবসায়ী হয়ে সিআইপির (কমার্শিয়ালি ইমপরটেন্ট পারসন) স্বীকৃতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীর সম্প্রতি আলোচিত হয়ে উঠেন ‘আওয়ামী চাকরিজীবী লীগ’ নামে একটি সংগঠনের প্রচার চালাতে গিয়ে।

আওয়ামী লীগের এই নামে কোনো সংগঠন নেই আর তিনি এই সংগঠনকে সামনে নিয়ে আসার পর ক্ষমতাসীন দলের কর্মী সমর্থকদের কাছ থেকে তুমুল আক্রমণের মুখে পড়েন। এক পর্যায়ে হেলেনা পিছুটান দেন। বলেন, তিনি এই সংগঠনের কেউ না। তাকে সম্প্রতি সভাপতি হওয়ার প্রস্তাব দেয়া হয়েছিল।

তবে এই ঘটনায় আওয়ামী লীগের পদ হারান হেলেনা। ক্ষমতাসীন দলের মহিলা বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপকমিটির সদস্যপদ ছাড়াও কুমিল্লা উত্তর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টার পদ থেকেও অব্যাহতি দেয়া হয়।

এর মধ্যে হঠাৎ করেই তার বাসায় র‌্যাবের অভিযানের খবর দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে। সামাজিক মাধ্যমে তোলপাড় হয়।

পরে র‌্যাব জানায়, গুলশানে তার বাসভবন থেকে ১৯ বোতল বিদেশি মদ উদ্ধার করা হয়েছে। পাওয়া গেছে হরিণ ও ক্যাঙ্গারুর চামড়া, ক্যাসিনোর ৪৫৬টি চিপস, দুটি ওয়াকিটকি সেট। বিদেশি মুদ্রাও উদ্ধার হয়েছে।

তবে হেলেনার মেয়ে জেসি আলম জানিয়েছেন, তার ভাইয়ের মদের লাইসেন্স আছে। আর সেটি র‌্যাবকে দেখানোও আছে।

বিদেশি মুদ্রার বিষয়ে তিনি জানান, তারা নিয়মিত বিদেশ সফর করেন, আর সফর শেষে থেকে যাওয়া অর্থ বাসায় থাকতেই পারে।

ক্যাসিনোর চিপসের বিষয়ে তিনি বলেন, এগুলো রাখা হলেও ক্যাসিনো খেলার জন্য আর যা যা প্রয়োজন, তার কিছুই নেই। ফলে এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না কোনোভাবেই।

আর হরিণের চামড়াটি তার ভাইয়ের বিয়েতে উপহার পাওয়ার কথা জানান জেসি। বলেন, 'আওয়ামী লীগ নেতারাই এটি উপহার দিয়েছে।'

র‌্যাবের ব্রিফিংয়ে এই বিষয়গুলোর কোনো কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক বলেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীরের একটি উচ্চবিলাসী উদ্দেশ্য রয়েছে। যা বাস্তবায়ন করতে তিনি নানাবিধ অবৈধ পন্থা, অপকৌশল ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন।

‘তিনি তার এজেন্ডা বাস্তবায়নে একটি সংঘবদ্ধ চক্রের পৃষ্ঠপোষকতা করছেন, যারা অর্থের বিনিময়ে বা অবৈধ সুবিধা গ্রহণের মাধ্যমে এহেন অনৈতিক কার্যকলাপের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে।

‘এই সংঘবদ্ধ চক্রের সদস্যরা কয়েকটি গ্রুপে বিভক্ত রয়েছে। যারা বিভিন্ন সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মাঠ পর্যায়ে সক্রিয় রয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

খন্দকার মঈন বলেন, ‘হেলানা জাহাঙ্গীর উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের মানহানি ও সুনাম নষ্ট করেছেন। এছাড়া তিনি মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছেন।

‘তিনি খ্যাতি লাভের আশায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে ছবি তুলে তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে সম্মানিত ব্যক্তিবর্গদের বিব্রত করতেন।’

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, “অনৈতিক পন্থায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেকে খ্যাতনামা হিসেবে উপস্থাপন করতে চতুরতার আশ্রয় গ্রহণ করতেন। এ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে তিনি (হেলেনা) একটি সংঘবদ্ধ চক্র তৈরি করেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে ফেসবুক লাইভে এসে অযাচিত ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য প্রদান করতেন।

‘তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে বিভিন্ন সম্মানিত ব্যক্তিদের কটাক্ষ ও উত্ত্যক্ত করতেন। পরবর্তীতে ফোন করে তাদেরকে হেয় করতেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে তার অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেন।’

র‌্যাবের পরিচালক বলেন, “হেলেনা অপকৌশলের মাধ্যমে নিজেকে ‘মাদার তেরেসা’, ‘পল্লী মাতা’, ‘প্রবাসী মাতা’, হিসেবে পরিচিতি পেতে জয়যাত্রা ফাউন্ডেশনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘবদ্ধ চক্রটি হেলেনাকে এসব ‘ভুয়া খেতাব’ নামে ডাকত।

“এছাড়া বিভিন্ন দেশি/বিদেশি সংস্থা ও ব্যক্তি ‘জয়যাত্রা ফাউন্ডেশন’ নামে অর্থ সংগ্রহ করতেন। যা মানবিক সহায়তায় ব্যবহারের চেয়ে খেতাব প্রচার প্রচারণায় বেশি ব্যবহার করা হতো। তিনি বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে নিজের বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন। তার প্রায় ১২ ক্লাবের সদস্যপদ রয়েছে।”

হেলেনাকে ‘নাতি’ সম্বোধন করতেন সেফুদা

আলোচিত নারী নেত্রী হেলেনা জাহাঙ্গীরকে বিতর্কিত প্রবাসী সেফুদা ‘নাতি’ হিসেবে সম্বোধন করতেন। বিভিন্ন সময় সেফুদার সঙ্গে হেলেনা জাহাঙ্গীরের যোগাযোগ ও লেনদেন রয়েছে বলে র‌্যাবকে জানিয়েছেন হেলেনা।

এ বিভাগের আরো খবর