বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিদ্যুৎ আছে, চাহিদা নেই

  •    
  • ২৭ জুলাই, ২০২১ ০৮:৩৬

২৩ জুলাই থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, কলকারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের ব্যবহার ১০ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে নেমে এসেছে। ফলে এই মুহূর্তে বিদ্যুতের যত জোগান, গ্রাহক চাহিদা তার চেয়ে অনেক কম।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে শাটডাউনে স্থবির জনজীবন। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ। শাটডাউনের প্রভাবে দেশে বিদ্যুতের চাহিদা ব্যাপকভাবে কমেছে। বিদ্যুতের ব্যবহার কমায় বন্ধ রাখা হয়েছে বেশ কিছু প্ল্যান্ট।

বিদ্যুৎ খাতসংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বলছেন, দেশে এখন দৈনিক বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ ১০ হাজার মেগাওয়াট। যদিও স্বাভাবিক সময়ে এ চাহিদা ১৩ থেকে ১৪ হাজার মেগাওয়াট থাকে।

২৩ জুলাই থেকে সরকারি-বেসরকারি অফিস, কলকারখানা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বিদ্যুতের ব্যবহার ১০ হাজার মেগাওয়াটের মধ্যে নেমে এসেছে। ফলে এই মুহূর্তে বিদ্যুতের যত জোগান, গ্রাহক চাহিদা তার চেয়ে অনেক কম। একই চিত্র গত বছর লকডাউনের সময়েও ছিল। সে সময় বিদ্যুতের চাহিদা নেমে এসেছিল ৭ হাজার মেগাওয়াটে।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, শাটডাউনের মধ্যে বিদ্যুতের ব্যবহার মূলত বাসাবাড়িকেন্দ্রিক। এ কারণেই দেশে এ মুহূর্তে চাহিদা অনেক কম।

চাহিদা আর সক্ষমতা কত

বিদ্যুৎ খাত তদারকির দায়িত্বে থাকা সরকারি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২৫ হাজার ২৩৫ মেগাওয়াট। ২০০৯ সালে সক্ষমতা ছিল ৪ হাজার ৯৪২ মেগাওয়াট।

দেশে বর্তমানে সচল বিদ্যুৎকেন্দ্রের সংখ্যা ১৪৬। এসব কেন্দ্র থেকে দিনে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদনের রেকর্ড এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৭৯২ মেগাওয়াট।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে বছরের এ সময়ে সারা দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়লেও এবার চিত্র আলাদা। শাটডাউনে বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় তিন হাজার মেগাওয়াট কমেছে। ঢাকার আশপাশে বাণিজ্যিক এলাকাগুলোতে কমেছে বিদ্যুতের ব্যবহার। তবে ঢাকায় সিটি করপোরেশনভুক্ত এলাকায় কিছুটা বেড়েছে চাহিদা।

পাওয়ার সেলের মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যুতের চাহিদা কমে গেছে। যেমন গত রোববার দুপুর ১টায় আমাদের চাহিদা ছিল ৮ হাজার ৯২০ মেগাওয়াট। আমাদের পিক আওয়ারে চাহিদা থাকে ১০ হাজার ৬৩৬ মেগাওয়াট। তার মানে আমাদের প্রায় ২ হাজার মেগাওয়াট ডিমান্ড কমে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘এর আগে শনিবার রাত ৮টায় ১০ হাজার ৭০০ সর্বোচ্চ চাহিদা ছিল। অথচ এটা হওয়ার কথা ১৩ হাজার মেগাওয়াটের মতো। সারা দেশেই বিদ্যুতের চাহিদা কমেছে।’

রাজধানীতে এখন বিদ্যুতের চাহিদা কেমন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ঢাকাতে নরমালি কমার কথা না। ঢাকা সিটি করপোরেশন এরিয়াতে চাহিদা বাড়বে কারণ মানুষ সারাক্ষণ বাসায় আছে।

‘তবে ঢাকার আশপাশের অঞ্চলের চাহিদা কমে যাবে। গাজীপুর, টঙ্গী, সাভার এগুলো বাণিজ্যিক এলাকা। এখানে চাহিদা কম।’

বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের জনসংযোগ পরিদপ্তরে পরিচালক সাইফুল হাসান চৌধুরীও জানালেন বিদ্যুতের চাহিদা কমার কথা।

তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এখন চাহিদা ১০ হাজার বা সাড়ে ১০ হাজার মেগাওয়াট। গত দুই তিন দিনে গড়ে ১০ হাজার। যদি লকডাউন না থাকত, তবে চাহিদা ১৩ বা ১৪ হাজার থাকত।’

এমন অবস্থায় সব বিদ্যুৎকেন্দ্রই সচল রাখা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা মূলত ডিপেন্ড করে। আমাদের এখন ম্যাক্সিমাম ইউনিট সচল আছে। এখন আমাদের ক্যাপাসিটি অনেক। আমরা এখন চাইলে ১৫ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে পারব। কিন্তু প্রয়োজন নেই বলে জেনারেট করি না।’

তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন অনুযায়ী আমরা কোনো পাওয়ার প্ল্যান্ট বন্ধ রাখি অথবা কম উৎপাদন করি। যেমন তেলের পাওয়ার প্ল্যাটগুলো বন্ধ আছে। যেগুলো উৎপাদন সাশ্রয়ী সেগুলো চালু আছে।

‘আমাদের এখন টোটাল ইউনিট সংখ্যা ১৪৬। এগুলো সবই সক্রিয় কেন্দ্র। আমরা প্রয়োজন অনুযায়ী বন্ধ রাখি। লকডাউনের কারণে কিছু কিছু বন্ধ আছে। আমাদের যা প্রয়োজন সেটাই উৎপাদন হচ্ছে।’

ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) আওতায় ২৫০ বর্গকিলোমিটার এলাকা রয়েছে। স্বাভাবিক সময়ে সেখানে প্রতিদিন গড়ে ১ হাজার ৫০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা থাকে। তবে সেই চাহিদা এখন কমে অর্ধেকে নেমেছে।

ডিপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী বিকাশ দেওয়ান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেখানে আগে আমাদের ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট দরকার ছিল, সেটি এখন ৯০০ বা ৮৫০। ঈদের সময় আরও কমে ৭০০ মেগাওয়াটে নেমে গিয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘এখন বাসাবাড়িতে চাহিদা আগের থেকে অনেক বেড়েছে। এখন যা ব্যবহার হচ্ছে সেটি মূলত বাসাবাড়িতেই।’

এ বিভাগের আরো খবর