বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শাটডাউনে ঘরে ঘরে ‘নরসুন্দর’

  •    
  • ১১ জুলাই, ২০২১ ১৪:০৩

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ১ জুলাই শুরু হয়েছে শাটডাউন। এতে চুল কাটা বা শেভের জন্য বাসার পাশের সেলুনে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এমন অবস্থায় ঘরেই চুল কাটার কৌশল আয়ত্ত করেছেন অনেকে।

আবু কাওসার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। পেশাগত কারণেই সব সময় ফিটফাট থাকতে হয় তাকে। ছোট চুল এবং নিয়মিত ক্লিন শেভড থাকেন মধ্যবয়স পেরোনো কাওসার।

তবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ১ জুলাই শুরু হওয়া শাটডাউন বিপাকে ফেলেছে তাকে। সাধারণত চুল কাটা বা শেভের জন্য বাসার পাশের সেলুনে ভরসা করলেও এখন তা আর সম্ভব হচ্ছে না।

সরকারি কঠোর বিধিনিষেধের আওতায় রয়েছে রাজধানীর বেশির ভাগ সেলুন। তবে অলিগলিতে শাটার বা দরজা অর্ধেক খোলা রেখে আড়ালে-আবডালে গ্রাহক সেবা দিচ্ছেন কিছু নরসুন্দর। অবশ্য বেশির ভাগ নগরবাসী ঘর থেকে না বেরুনোয় ব্যবসায় চলছে চরম মন্দা।

আবু কাওসারের মতো অনেকেই ঝুটঝামেলা এড়াতে সেলুনমুখী হচ্ছেন না। অনলাইনে ট্রিমার কিনে এখন ঘরেই নিজেকে সাজিয়ে নিচ্ছেন।

আবু কাওসার এবার ঘরে চুল কাটার পদ্ধতি আয়ত্ত করলেও মৌসুমী ইসলাম এই কৌশল শিখে নিয়েছেন বছর দেড়েক হলো।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মৌসুমী নিজের ঘরেই গড়ে তুলেছেন ‘মিনি সেলুন’। মৌসুমী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমি এর আগের লকডাউনেও স্বামীর চুল কেটে দিয়েছি। এবারও সেভাবে চলছে। মেয়ের চুলও আমি নিজেই কেটে দিই।’

একটি বেসরকারি টেলিভিশনের নির্বাহী প্রযোজক নায়লা পারভীন স্বামী, সন্তানের চুল পরিপাটি রাখার দায়িত্বও নিজের কাঁধে নিয়ে নেন গত বছরের লকডাউনের সময়। এবারের শাটডাউনেও কাঁচি হাতে পরিবারের সদস্যদের চুলের ছাঁট ঠিক করে দিচ্ছেন তিনি।

একই অবস্থা তুষার আহমেদের ঘরেও। তার স্ত্রীই নিচ্ছেন ‘নরসুন্দরের’ ভূমিকা।

বেশ কয়েকজন চাকরিজীবী ও তরুণের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছেলেদের কাছে বিপুল কদর তৈরি করেছে ট্রিমার। তরুণদের মধ্যে এটি ব্যবহারের প্রবণতা সবচেয়ে বেশি। অনলাইনে ট্রিমার কিনে ইউটিউব দেখে নতুন নতুন চুল কাটা বা দাড়ির স্টাইল রপ্ত করছেন তারা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আঞ্জুম হোসেনের দাবি, তিনি রীতিমতো এখন একজন ‘হেয়ার স্টাইলিশ’।

সেলুনের কী অবস্থা

রাজধানীর মৌচাক এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বেশির ভাগ সেলুন বাইরের দরজা টেনে ভেতরে চালু রয়েছে। এমনই একটি সেলুনের কর্মী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ভেতরে কাজ চলে, আমরা পালাক্রমে বাইরে পাহারা দিই।’

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই সেলুনকর্মী বলেন, ‘এলাকায় যতগুলো দোকান আছে সব এভাবেই চলছে। বাইরে একজন পাহারা দেয়, আর ভেতরে কাজ চলে। তবে এখন কাস্টমার তেমন আসে না। যারা পরিচিত তারা ফোন দেয়। সময় বলে দিলে তখন আসে। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা রাখি এভাবে।’

সিদ্ধেশ্বরী এলাকার একটি সেলুনের মালিক নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গতবার লকডাউনে তিন মাস সেলুন বন্ধ ছিল। তখন আমাদের কথা কেউ ভাবেনি। আমরাও তো দিন আনি, দিন খাই। কাস্টমার হলে ব্যবসা হবে, না হলে নাই। আপনিই বলেন এতদিন সেলুন বন্ধ রাখলে আমার দোকানের চারজন কর্মী কীভাবে খাবে?’

তিনি জানান, এখন বেশির ভাগ মানুষ ঘরেই চুল কাটছেন। পরিচিত কেউ কেউ বাসায় যেতে বলেন, তবে সেটা সীমিত।

অনলাইনে ট্রিমারের চাহিদা

সেলুন ব্যবসায় ধস নামলেও অনলাইনে ট্রিমার বিক্রি রমরমা। গত দেড় বছরে অনলাইনে পণ্য কেনাবেচার সাইটগুলোতে চাহিদার তালিকায় প্রথম দিকে উঠে এসেছে বিভিন্ন ধরনের শেভিং মেশিন।

অনলাইনে বেড়েছে ট্রিমার বিক্রি

অনলাইনভিত্তিক শেভারশপ বিডির কাস্টমার এক্সিকিউটিভ শফিকুর রহমান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা গত বছর শুরুতেই বিক্রিতে একটা উল্লম্ফন পেয়েছি। এখনও নিয়মিত সেল হচ্ছে। তবে প্রথম লকডাউনে বিক্রি অনেক বেড়ে গিয়েছিল। তখন বাসায় চুল কাটা ও শেভ করার প্রবণতা বেশি ছিল।’

অথবা ডটকমের এক্সিকিউটিভ মো. ইমরান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লকডাউনের কারণে বিক্রি অনেক বেড়ে গিয়েছে। তবে করোনা ছাড়াও এখন এই ট্রেন্ড চালু হয়ে গেছে, তাই মোটামুটি বিক্রি সব সময়ই বাড়তি আছে।’

অন্যদিকে, দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের হেড অফ পিআর (মিডিয়া কমিউনিকেশন) সায়ন্তনী ত্বিষা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ট্রিমার বিক্রি প্রায় ৪২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি আরও বেশি হতে পারত, তবে লকডাউন, স্টক এবং বিক্রয়কারীর জীবনের ঝুঁকির কারণে আমরা সর্বোচ্চ আয় করতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘লকডাউনে মার্কেট বন্ধ থাকায় স্টকের সমস্যা হয়েছে। এবং কিছু ট্রিমারের দাম বেড়েছে, তবে এর কারণে গ্রাহকদের কেনার ধরনে পরিবর্তন হয়নি।’

এ বিভাগের আরো খবর