বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হাঁটা-চলা করেন, তবুও ‘মৃত’ তিনি

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৪ জুন, ২০২১ ১১:৫৯

শতবর্ষী লোকমান হোসেন বললেন, বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন। তখন জানতে পারেন তাকে কাগজে কলমে ‘মেরে ফেলা হয়েছে’। ভোটার তালিকায়ও মৃত দেখানো হয়েছে। ফলে বয়স্ক ভাতার কার্ডটিও বন্ধ হয়ে গেছে।

পাবনার সুজানগরে শতবর্ষী এক ব্যক্তি জীবিত থাকলেও কাগজে কলমে তাকে ‘মৃত’ দেখানো হচ্ছে। এতে ভোগান্তির শেষ নেই তার। বন্ধ হয়ে গেছে তার বয়স্ক ভাতা পর্যন্ত।

সুজানগর উপজেলার সাতবাড়িয়া ইউনিয়নের গুপিনপুর গ্রামের ওই ব্যক্তির নাম লোকমান হোসেন মন্ডল। জাতীয় পরিচয়পত্রে তার জন্ম তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৮ আগস্ট ১৯১৭ সাল। ভোটার আইডি নং- ৭৬১৮৩৭৬৩৩৫৫২৬।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের ভাতা বই থেকে জানা যায়, লোকমান হোসেন মন্ডল গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত বয়স্ক ভাতা পেয়েছেন। এরপর থেকে তাকে আর ভাতা দেয়া হচ্ছে না। জীবিত থাকলেও নথিপত্রে তিনি মৃত!

লোকমান হোসেন মন্ডল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জীবিত থাকলেও আমাকে কীভাবে মৃত দেখান হলো। কারা এমনটি করলেন কিছুই জানি না।’

বয়সের সঙ্গে আর্থিক দীনতা- সব মিলিয়ে কাবু লোকমান। জানালেন, অনেক আগেই স্ত্রী মারা গেছেন। এর পর থেকে আছেন ছেলেদের সঙ্গে।

হঠাৎ বয়স্ক ভাতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোকমান হোসেন যেন আরও ন্যুব্জ হয়ে পড়েছেন। বললেন, বিষয়টি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে গিয়েছিলেন। তখন জানতে পারেন তাকে কাগজে কলমে ‘মেরে ফেলা হয়েছে’। ভোটার তালিকায়ও মৃত দেখানো হয়েছে। ফলে ভাতার কার্ডটি বন্ধ হয়ে গেছে।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাচন অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও ‘মৃত থেকে জীবিত’ হতে না পারায় বয়স্ক ভাতার কার্ডটি আর চালু করা যায়নি।

কথা হয় লোকমান হোসেনের ছেলে ইব্রাহিম হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমরা চার বোন ও তিন ভাই। চার বোনের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় সবাই দূরে বসবাস করেন। আমাদের তিন ভাইয়ের সাথেই ছিল বাবা। আমরা সবাই কৃষক। গত বছর দুয়েক আগে আমার এক ভাই রুকা হোসেন মারা গেলে ভাবি আর এক মেয়ের সঙ্গেই থাকেন তিনি।’

জীবিত থেকেও ‘মৃত’ লোকমান হোসেনের বিষয়ে সাতবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এসএম শামছুল আলম বলেন, ‘গুপিনপুরের লোকমান হোসেন মন্ডল জীবিত আছেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে কখনও মৃত ঘোষণা করাও হয়নি। সংশ্লিষ্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কীভাবে তাকে মৃত ভেবে ভাতা বন্ধ করেছেন বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়।’

সুজানগর সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমন্বয়কারী নূরে শাহরিন জানালেন, লোকমান হোসেন মন্ডলের মতো একই ঘটনা ইউনিয়নের শ্রী কণিকা রাণী সাহা নামক আরও এক নারীর ক্ষেত্রে ঘটেছে।

সুজানগর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাজমুল হাসান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকার সার্ভারে লোকমান হোসেন মন্ডলের জাতীয় পরিচয় পত্রের নং দিয়ে অনুসন্ধান করলে তাকে পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ তাকে মৃত দেখানো হয়েছে। এজন্য তার বয়স্ক ভাতাও বন্ধ করা হয়েছে।’

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ফাতেমা খাতুন বলেন, ‘বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য সংগ্রকারীরা নির্বাচন অফিসে ভুল তথ্য দেয়ার কারণে এমনটি হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী আবেদন করলে জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন করে দেয়া হবে।’

বিষয়টি নিয়ে সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রওশন আলী বলেন, ‘আমি শুনেছি বিষয়টি, শোনার সাথে সাথেই উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলেছি। যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্যার সমাধান করা হবে।’

এ বিভাগের আরো খবর