বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বিআরটিসির দখলে মহাসড়ক

  •    
  • ৩০ মে, ২০২১ ০৮:২৩

মাসকান্দার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কটিতে দ্রুতগতিতে দিনরাত সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। বিআরটিসি বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখায় দুই লেনের এই মহাসড়কটির দুই পাশে জায়গা কম থাকে। ফলে পথচারীদের সব সময় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়।’

ময়মনসিংহের মাসকান্দা-দিকারকান্দা এলাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) বাস।

স্থানীয়দের অভিযোগ, এর ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে ওই এলাকাটিতে।

তবে বিআরটিসি বলছে, ডিপো না থাকায় এভাবে মহাসড়কের পাশে বাস রাখতে বাধ্য হচ্ছে সংস্থাটি।

বিআরটিসি জানিয়েছে, যাত্রীসেবার মান বাড়াতে ২০১৯ সালের ২৫ মার্চ ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা রুটে বিআরটিসির ১৬টি বাস চালু হয়। পরে বিভিন্ন রুটে আরও ৪৭টি বাস চালু করা হয়।

সংস্থাটি জানিয়েছে, অন্যান্য সময় জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চললেও করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে বাসগুলো বন্ধ ছিল। তবে ফের সড়কে চলাচল করছে বাসগুলো। সময়ের ব্যবধানে এরই মধ্যে বাসের সংখ্যা কমে গেছে। বর্তমানে ২৮টি বাস জেলার বিভিন্ন উপজেলায় চলাচল করছে।

মাসকান্দার বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, ‘মহাসড়কটিতে দ্রুতগতিতে দিনরাত সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। বিআরটিসি বাসগুলো সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে রাখায় দুই লেনের এই মহাসড়কটির দুই পাশে জায়গা কম থাকে। ফলে পথচারীদের সব সময় ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন ধরনের যানবাহন পাল্লা দিয়ে দ্রুত গতিতে যাওয়ার সময় হঠাৎ করেই দুর্ঘটনা হচ্ছে। বিশেষ করে সিএনজি, মাহিন্দ্র, ট্রাক, প্রাইভেট কার ও মোটরসাইকেলের দুর্ঘটনা ঘটে।’

সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘গত শনিবার রাত ৮টার দিকে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় পেছন দিক থেকে আসা একটি ট্রাক একটুর জন্য চাপা দিয়েছিল।’

বাংলাদেশ অ্যাম্বুলেন্স চালক কল্যাণ সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন ময়মনসিংহের মাসকান্দা শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা।

তিনি বলেন, ‘নগরীর পাটগুদাম মুক্তিযোদ্ধা পল্লি এলাকায় ভাঙারির দোকান করতেন সুজন নামে এক যুবক। দোকানের আয় দিয়েই পরিবারের ভরণপোষণ চলত।

‘১৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোকানের কর্মচারী সুমনকে নিয়ে মোটরসাইকেলে করে বাইপাস এলাকায় একটি দোকানে পাওনা টাকা আনতে যাচ্ছিলেন সুজন। বিআরটিসি বাসগুলো মাসকান্দা শান্তিনগর এলাকায় রাখা ছিল। ফলে মোটরসাইকেল চালিয়ে এ এলাকা পর্যন্ত আসামাত্রই ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুজনই নিহত হন।’

দেলোয়ার হোসেন জানান, মহাসড়ক দখল করে বিআরটিসি বাসগুলো রাখায় দুর্ঘটনায় প্রতিনিয়ত যাত্রীসহ চালকরা আহত হচ্ছেন। এক সপ্তাহ আগেও এই মহাসড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় একটি অ্যাম্বুলেন্স অটোরিকশায় ধাক্কা লেগে দুই যাত্রী আহত হয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিসি বাসের এক চালক বলেন, ‘গত বছরের সেপ্টেম্বরে ১৪টি বাস থেকে ২৬টি চাকা ও ২৪টি ব্যাটারি ছাড়াও অনেক মূল্যবান যন্ত্রাংশ চুরি হয়েছে। রাস্তার পাশে বাস রাখায় অনেকে যন্ত্রাংশ চুরি করতে চেষ্টা করে। এ ছাড়া সড়কজুড়ে বাস পড়ে থাকায় বাসগুলো বৃষ্টিতে ভিজে ও রোদে পুড়ে রং নষ্ট হচ্ছে।’

বিআরটিসি ময়মনসিংহের ম্যানেজার মো. কামরুজ্জামান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের দুই পাশে বাসগুলো আমাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই রেখেছি। নগরীর শম্ভুগঞ্জে বাসগুলো রাখার জন্যে ডিপো তৈরির কাজ চলছে। করোনার প্রাদুর্ভাব না থাকলে বাসগুলো এখন ডিপোতেই থাকত।’

আগে ৪৭টি বাস থাকলেও এখন ২৮টি বাস চলার কারণ জানাতে পারেননি তিনি। গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি হচ্ছে কি না, এমন প্রশ্নও এড়িয়ে গেছেন এই কর্মকর্তা।

তিনি আরও বলেন, ‘নগরীর শম্ভুগঞ্জে ডিপো নির্মাণের কাজ দেরি হওয়ায় মাসকান্দা এলাকার আশপাশে জায়গা নির্ধারণের চেষ্টা চলছে। আমরা মহাসড়কের পাশ থেকে গাড়িগুলো দ্রুত সরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে রাখার চেষ্টা করছি।’

বিআরটিসির জেনারেল ম্যানেজার (হিসাব) মো. আমজাদ হোসেন বলেন, ‘বাসগুলো মহাসড়কের পাশে রাখায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কাসহ যন্ত্রাংশ চুরির সম্ভাবনা রয়েছে জানি। এ ছাড়া খোলা স্থানে গাড়ি থাকায় রোদে পুড়ে ও বৃষ্টিতে ভিজে গাড়ির রংয়ের সমস্যা হয়।

‘তবুও ডিপো না থাকার কারণে এভাবে রাখা হয়েছে। ডিপো তৈরির কাজ দ্রুত গতিতে চলছে।’

ধীরে ধীরে বাসের সংখ্যা কমিয়ে দেয়ার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘এটি স্বাভাবিক বিষয়। মূলত যাত্রীদের চাহিদার ওপর বাস কয়টি দেয়া হবে তা নির্ভর করে। বর্তমানে চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় বাসের সংখ্যা কমিয়ে দেয়া হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর