বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

হরিণ ময়ূর বিক্রি করছে জাতীয় চিড়িয়াখানা

  •    
  • ২৬ মে, ২০২১ ১৭:১২

বন্ধের সময়ে নিরিবিলি পরিবেশে প্রাণীর প্রজনন বেড়েছে। পাশাপাশি যত্নের মান উন্নয়ন হওয়ায় কমেছে প্রাণী মৃত্যু। ফলে বেশ কিছু প্রাণীর সংখ্যা ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি হয়ে গেছে। এ অবস্থায় হরিণ ও ময়ূর বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

ধারণক্ষমতার চেয়ে সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় চিত্রা হরিণ ও ময়ূর বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে হরিণপ্রতি দাম ধরা হয়েছে ৭০ হাজার টাকা, আর ময়ূরের দাম ২৫ হাজার টাকা। ইতিমধ্যে আবেদন জমা পড়েছে ১২টি, এর মধ্যে আটজন হরিণ কিনবেন ও চারজন কিনবেন ময়ূর।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের মুখে গত ১ এপ্রিল থেকে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা। এর আগে গত বছরের ৮ মার্চ দেশে করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ার পর ২০ মার্চ থেকে প্রায় সাত মাস বন্ধ ছিল চিড়িয়াখানার দরজা।

কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্ধের সময়ে নিরিবিলি পরিবেশে প্রাণীর প্রজনন বেড়েছে। পাশাপাশি যত্নের মান উন্নয়ন হওয়ায় কমেছে প্রাণী মৃত্যু। ফলে বেশ কিছু প্রাণীর সংখ্যা ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি হয়ে গেছে। এ অবস্থায় হরিণ ও ময়ূর বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গত বছর ২০ মার্চ থেকে ১ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধের সময় ১১৬টি শাবক উপহার দিয়েছিল চিড়িয়াখানার প্রাণীরা। এরপর ফেব্রুয়ারি মাসের ১৫ তারিখের পর থেকে ১ মার্চ পর্যন্ত ৪২টি নতুন পশুপাখি সংযোজিত হয়েছে। পরে ১ এপ্রিল থেকে আবারও বন্ধ চিড়িয়াখানার দরজা। এই অবকাশেও বেশ কিছু প্রাণী বাচ্চা দেবে বলে কর্তৃপক্ষ আশাবাদী।

আরও পড়ুন: একান্ত সময়ে চিড়িয়ার রোমান্টিক মুড

বিশেষ অনুমতি নিয়ে সম্প্রতি জাতীয় চিড়িয়াখানার ভেতরের পরিবেশ ঘুরে দেখেছে নিউজবাংলা। এ সময় দেখা গেছে, করোনাভাইরাস মহামারি ঠেকাতে লকডাউন মানুষের জীবনে উদ্বেগ আর অনিশ্চয়তা নিয়ে এলেও চিড়িয়াখানার প্রাণীরা আছে নির্বিবাদে। নিরিবিলি পরিবেশে তৈরি হয়েছে একান্ত সময় কাটানোর সুযোগ, সঙ্গী আর সঙ্গিনীর মাঝে বেড়েছে সখ্য।

ইমু পাখিরও ১৪টি বাচ্চা এসেছে চিড়িয়াখানায়

চিড়িয়াখানার পরিচালক আব্দুল লতিফ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘দর্শনার্থীর উৎপাত না থাকায় প্রাণীদের সেক্সুয়াল ডিজায়ার বেড়ে গেছে। তাদের মধ্যে প্রজননক্ষমতাটাও বেড়ে গেছে। এর ফলে কোনো কোনো প্রাণীর ক্ষেত্রে তিন মাস পরে, কোনোটা ছয় মাস পরে, আবার কোনোটা এক বছর পরে বাচ্চা দিচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন প্রাণীর মৃত্যুহার কমিয়ে এনেছি। এর ফলে যেসব প্রাণী জন্মগ্রহণ করছে, তাদের স্বাভাবিক নিয়মেই বড় করে তুলছি। তবে কিছু প্রাণীর প্রজননক্ষমতা অনেক বেশি, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য চিত্রা হরিণ। এমন কোনো সপ্তাহ নেই যে আমরা দু-তিনটি চিত্রা হরিণের বাচ্চা পাচ্ছি না।’

হরিণের সংখ্যা এখন ধারণক্ষমতার অনেক বেশি জানিয়ে আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমাদের তিনটি হরিণের শেড রয়েছে। সেখানে যদি ৫০টি করেও রাখা হয়, তাহলে আমাদের দেড় শটি হরিণ পালনের সক্ষমতা রয়েছে। আমাদের বাজেটও সেভাবে দেয়া হচ্ছে। তবে এখন প্রায় সাড়ে তিন শ চিত্রা হরিণ এখানে আছে।’

আরও পড়ুন: করোনায় চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের ‘হানিমুন’

হরিণ বিক্রির চেষ্টা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কীভাবে বিক্রি করা যায় সেটি এখন ভাবছি। ইতিমধ্যে আমরা ঘোষণা দিয়েছি সরকারের অনুমোদিত দামেই এক জোড়া চিত্রা হরিণ (পুরুষ ও মেয়ে) ১ লাখ ৪০ হাজার টাকায় বিক্রি করা হবে।’

চিড়িয়াখানার নিরিবিলি পরিবেশে ভালোই কাটছে জেব্রার

একই অবস্থা ময়ূরের ক্ষেত্রেও। চিড়িয়াখানায় বর্তমানে ৭৮টি নীল ময়ূর রয়েছে, যা ধারণক্ষমতার বেশি।

আব্দুল লতিফ বলেন, ‘এক জোড়া (পুরুষ ও মেয়ে) ময়ূরের দাম পড়বে ৫০ হাজার টাকা।’

তিনি বলেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত ১২টি আবেদন পেয়েছি। এর মধ্যে হরিণের জন্য আটটি ও ময়ূরের জন্য চারটি। আমি তাদের প্রত্যয়নপত্র পাঠিয়েছি। এখন তারা বন বিভাগ থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে এলে আমরা তাদের কাছে বিক্রি করব। তবে এগুলো লালন-পালনের ক্ষেত্রে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে হবে। এসব প্রাণীর স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা থাকতে হবে।’

হরিণ ও ময়ূর বিক্রি করলেও অন্যান্য বাড়তি প্রাণীর ক্ষেত্রে ‘বিনিময়’-এর সিদ্ধান্ত চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের। আব্দুল লতিফ জানান, আন্তর্জাতিকভাবে যে নিয়ম আছে তা মেনে দেশের বাইরেও বিনিময় করা যেতে পারে। আবার কিছু প্রাণী দেশের ভেতরে সাফারি পার্ক ও ডুলাহাজারা পার্কেও পাঠানো হতে পারে।

এ বিভাগের আরো খবর