গরমে সারাদেশে জনজীবনে নাভিশ্বাস অবস্থা। অনেকে এই দাবদাহকে আরবের গরমের সঙ্গে তুলনা করছেন। দুপুরের গরমে ডাব, লেবুর শরবতের পাশাপাশি নানা জাতের ফলের চাহিদা বেড়েছে। এর মধ্যে গোপালগঞ্জের পাড়া মহল্লায় তালশাঁস নিয়ে চলছে কাড়াকাড়ি।
প্রচণ্ড গরমে একটু স্বস্তি পেতে তালশাঁস কিনে নিচ্ছেন অনেকে। এটি স্বাদে, রসে ভরপুর গ্রীষ্মকাল ঠান্ডা প্রকৃতির একটি ফল। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সবাই তালশাঁস খেতে পছন্দ করে। তালশাঁসে নানা খাদ্য উপাদান তুলে ধরে পরিমাণ মতো খাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
তাপদাহে একটু স্বস্তি পেতে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের কাছে মধু মাসের ফল তালশাঁসের কদর বেড়ে যায় বহুগুণ। করোনার প্রার্দভাবের মধ্যেও গোপালগঞ্জ শহরের হাট-বাজারসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস।
গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. অরবিন্দ কুমার রায় জানান, তালশাঁসের মধ্যে রয়েছে স্বচ্ছ জেলির মতো একটি পদার্থ। যা খেতে খুবই সুস্বাদু। তা ছাড়া রয়েছে নানান খাদ্য উপাদান । তালশাঁসের ভেতর মিনারেল ও ক্যালশিয়ামের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য।
এতে রয়েছে এন্টিঅক্সিডেন্টস। আছে পানি ও গ্লুকোজ। এসব খেলে ক্লান্তি নাশ ও বার্ধক্য দূর হয়। তাই রিকশাচালক থেকে শুরু করে সব শ্রেণি পেশার মানুষই মৌসুমি ফল তালশাঁস কিনতে ভিড় করছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতাদের কাছে।
বিক্রেতারা গোপালগঞ্জের বিভিন্ন গ্রাম থেকে তালশাঁস কিনে ভ্যান করে শহরে নিয়ে আসেন। মৌসুমী ফল বিক্রি করে চলে তাদের জীবন-জীবিকা।
সদর উপজেলার চন্দ্রদিঘলিয়া গ্রামের আবু তালেব মোল্লা ও বিজয়পাশা গ্রামের বক্কার আলি জানান, ‘তালশাঁস ৫ টাকা করে কিনে ঘুরে ঘুরে ৭ থেকে ১০টাকায় বিক্রি করি। বেচাকেনা ভালোই হচ্ছে। প্রচন্ড গরমে অনেক জায়গায় তালশাঁস নিতে লোকজনের মাঝে কাড়াকাড়ি লেগে যায়।’
শহরের কয়েকজন ক্রেতা বলেন, ‘প্রচন্ড গরমের স্বস্তির অন্যতম ফল হচ্ছে তালশাঁস। মানুষ ফরমালিন মুক্ত যে ফলটি পায় তা হলো তালশাঁস। ফলটি এখন অনেকটা কমে গেছে। বাচ্চারা বায়না ধরেছে। তাই তাদের জন্য তালশাঁস কিনতে এসেছি।’
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক আহমেদুল কবীর বলেন, বাংলাদেশসহ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে তালশাঁস একটি জনপ্রিয় খাবার। এটি মানব দেহের জন্য উপকারী। অনেক খাদ্যগুন রয়েছে তালশাঁসে।
গ্রীষ্ম মৌসুমে পরিমান মতো তালশাঁস খেয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানোর পারামর্শ দিয়েছেন এ চিকিৎসক।
কৃষি অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ড. অরবিন্দ বলেন, তালগাছ না কেটে আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে কৃষিবিভাগ।