বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

উপকূলে এখনও ‘আম্পানের ক্ষত’

  •    
  • ২০ মে, ২০২১ ১৩:৪২

সুপার সাইক্লোন আম্পান আঘাত হানে ২০২০ সালের ২০ মে। সেদিন সাতক্ষীরা উপকূলে ১৫১ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছিল আম্পান। টানা ১৫ ঘণ্টা চলে ঝড়, সৃষ্টি হয় ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস।

এক বছর পেরিয়ে গেলেও সুপার সাইক্লোন আম্পানের ক্ষত রয়ে গেছে সাতক্ষীরার উপকূলে। আর্থিক ক্ষতি কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি উপকূলের কয়েক লাখ মানুষ। ২০২০ সালের ২০ মে সুপার সাইক্লোন আম্পানের ভয়াল স্মৃতি আজও ভুলতে পারেননি তারা।

নদীতে জোয়ার দেখলেই বুক কাঁপে উপকূলীয় বাসিন্দাদের। কারণ, ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসে বাঁধ ভাঙে, কপাল ভাঙে সাগরপারের মানুষের। তারই মাঝে গত বছর এই দিনে সাতক্ষীরা উপকূলে ১৫১ কিলোমিটার বেগে আঘাত হেনেছিল আম্পান। টানা ১৫ ঘণ্টা চলে ঝড়, সৃষ্টি হয় ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস। প্রাথমিক হিসাবে ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ১১০০ কোটি টাকার। এর মধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় ৩১৪ কোটি ৮৯ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছিল।

জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, সাতক্ষীরায় ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ১২ হাজার ৬৯৮টি মাছের ঘেরে ১৭৬ কোটি ৩ লাখ টাকার ক্ষতি হয়। কৃষিতে ১৩৭ কোটি ৬১ লাখ ৩০ হাজার টাকার মধ্যে ৬৫ কোটি ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকার আম, ৬২ কোটি ১৬ লাখ টাকার সবজি, ১০ কোটি ২২ লাখ ৪০ হাজার টাকার পান ও ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার তিল। গরু ছাগল হাঁস-মুরগি মিলে ৯৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬১৬ টাকার ক্ষতি হয় আম্পানের আঘাতে।

আম্পানের তাণ্ডবে জেলায় মোট ৮৩ হাজার ৪৩১টি ঘর বিধ্বস্ত হয়েছিল। এর মধ্যে সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয় ২২ হাজার ৫১৫টি এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় ৬০ হাজার ৯১৬টি। জেলায় ৮১ কিলোমিটার রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া ৫৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

আম্পানের এক বছর পরে এখন উপকূলবাসীর রাত কাটে বেড়িবাঁধ ভাঙনের আতঙ্কে। যোগাযোগব্যবস্থা এখনও বলা চলে বিচ্ছিন্ন। চিকিৎসা, সুপেয় পানি, স্যানিটেশনসহ বিভিন্ন সংকটে বিপর্যস্ত উপকূলের মানুষ।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার শুভদ্রকাটি গ্রামের আতাউর রহমান জানান, তাদের এলাকার যোগাযোগব্যবস্থা একেবারে ভেঙে পড়েছে। নেই চিকিৎসার সুব্যবস্থা। সুপেয় পানির সংকট তীব্র। এলাকার বেড়িবাঁধগুলোর অবস্থাও নাজুক। সরকারের কাছে পর্যাপ্ত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ ও টেকসই বেঁড়িবাধ নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর।

উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসিম কুমার চক্রবর্তী জানান, ঘূর্ণিঝড়ের এক বছর পেরিয়ে গেলেও উপকূলীয় এলাকার মানুষ এখনও মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারেনি। এখনও সেখানকার মানুষের অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থানের অভাব রয়েছে। একই সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থাও বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্ন।

তিনি বলেন, ‘এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়িবাঁধগুলোর অবস্থাও ভালো নেই। কয়েকটি জায়গায় সংস্কার করা হলেও অধিকাংশ জায়গায় রয়েছে ফাটল। যেকোনো সময় প্রবল জোয়ারের চাপে ওই বাঁধগুলো আবারও ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হতে পারে।’

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল বলেন, ‘আম্পানে ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছিল এই অঞ্চলের বেড়িবাঁধগুলোর। প্রধানমন্ত্রী পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছিলেন সেগুলো সংস্কারের। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী জেলা প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, সেনাবাহিনীসহ জেলার সংশ্লিষ্ট সংস্থা অক্লান্ত পরিশ্রম করে বাঁধগুলোকে প্রাথমিকভাবে সংস্কার করা সম্ভব হয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর