বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

যে জীবন চা-শ্রমিকদের

  •    
  • ২০ মে, ২০২১ ১০:০৭

আজ থেকে ঠিক শতবর্ষ আগে এই শোষণের প্রতিবাদ করেছিলেন তারা। ‘মুল্লুকে চল’ ডাক দিয়ে চা-বাগান ছেড়ে সবাই মিলে রওনা দিয়েছিলেন বাড়ির পথে। এই যাত্রাপথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ব্রিটিশ সেনারা। তারা শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায়। এতে মারা যান কয়েক শ শ্রমিক। ১৯২১ সালের ২০ মের এই রক্তাক্ত দিনটির আজ ১০০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই দিনটিকে ‘চা-শ্রমিক দিবস’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি উঠেছে এবার।

‘সারা দিন চা তুলে ১২০ টাকা মজুরি পাই। কাজ না করলে আবার মজুরি মেলে না। ১২০ টাকায় তো এখন দুই কেজি চালও হয় না। এই টাকায় কী করে সংসার চলবে?’

কথাগুলো সিলেটের কালাগুল চা-বাগানের শ্রমিক সীমা বাউরির।

সীমা জন্মসূত্রেই এই বাগানের বাসিন্দা। তার মা-বাবাও কালাগুল বাগানের শ্রমিক ছিলেন। এখন তিনি ও তার স্বামী কাজ করেন।

সীমা আক্ষেপ করে বলেন, ‘চা-বাগানের শ্রমিক হওয়ার জন্যই যেন আমাদের জন্ম। আমার মা-বাবা বাগানে কাজ করছেন। আমরা করছি। আমার সন্তানরাও করবে। সন্তানদের লেখাপড়া শিখিয়ে যে অন্য পেশায় পাঠাব, সেই ক্ষমতা তো আমাদের নেই।’

সীমার থেকেও খারাপ অবস্থা অরবিন্দ মাহালীর। সিলেটের খাদিম এলাকার বুরজান চা-বাগানের শ্রমিক অরবিন্দ দীর্ঘদিন ধরে অসুখে ভুগছেন। টাকার অভাবে আটকে আছে তার চিকিৎসা। অরবিন্দ বলেন, ‘অসুখের কারণে কাজে যেতে পারি না। তাই মজুরিও পাই না। চিকিৎসা খরচ দূরে থাক, পরিবারের খাওয়াদাওয়ার খরচ জোগানো নিয়েই দুশ্চিন্তায় আছি।’

সিলেটের লাক্কাতুরা চা-বাগানের শ্রমিক কাকলী পালের কথাও বলা যেতে পারে। কাকলীর দুই ছেলে। লেখাপড়ার খরচ জোগাতে না পেরে বছর তিনেক ধরেই ছেলেদের কাজে লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি।

নিউজবাংলাকে কাকলী বলেন, ‘প্রাথমিক পর্যন্ত পড়ালেখার খরচ বাগান থেকে দেয়া হয়। এরপর নিজেদের খরচেই পড়াতে হয়। ছেলের পড়ানোর খরচ আমি কোথায় পাব। তাই প্রাথমিক পাস করার পর তাদের পড়ালেখা ছাড়িয়ে কাজে দিয়ে দিয়েছি।’

চা বাগানের শিশুরা এগোতে পারে না লেখাপড়ায়, বাগান চক্রেই আটকে যায় তাদের জীবন

কেবল সীমা, অরবিন্দ বা কাকলী নন, এসব আক্ষেপ আর অপ্রাপ্তি আসলে দেশের সব চা-শ্রমিকেরই। ন্যূনতম মজুরিতে অনেকটা ক্রীতদাসের মতোই তাদের কাজ করতে হয় বাগানে।

দেশে এখন চা-বাগান আছে ১৬২টি। এর মধ্যে ১৩৭টিই সিলেট বিভাগে। আর চা-জনগোষ্ঠীর সংখ্যা প্রায় ৭ লাখ। স্বল্পমজুরি ও সব ধরনের নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত থাকায় জীবনমানের সব সূচকেই পিছিয়ে এই শ্রমিকরা।

এই অঞ্চলে চা-শিল্পের শুরু থেকেই এমন বঞ্চনার শিকার হয়ে আসছেন শ্রমিকরা। দূরদূরান্ত থেকে নিয়ে আসা শ্রমিকদের অমানবিক পরিশ্রমে বুনো টিলায় গড়ে উঠেছে চা-বাগান। কিন্তু শ্রমিকরা রয়ে গেছেন বঞ্চিত-শোষিত হয়েই।

যেভাবে এলো চা-শ্রমিক দিবস

আজ থেকে ঠিক শতবর্ষ আগে এই শোষণের প্রতিবাদ করেছিলেন তারা। ‘মুল্লুকে চল’ ডাক দিয়ে চা-বাগান ছেড়ে সবাই মিলে রওনা দিয়েছিলেন বাড়ির পথে। এই যাত্রাপথে বাধা হয়ে দাঁড়ায় ব্রিটিশ সেনারা। তারা শ্রমিকদের ওপর গুলি চালায়। এতে মারা যান কয়েক শ শ্রমিক।

১৯২১ সালের ২০ মের এই রক্তাক্ত দিনটির আজ ১০০ বছর পূর্ণ হচ্ছে। এই দিনটিকে ‘চা-শ্রমিক দিবস’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির দাবি উঠেছে এবার।

শ্রমিকনেতাদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, এই অঞ্চলে প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চা উৎপাদন শুরু হয় ১৮৫৪ সালে, সিলেটের মালনীছড়ায়। এই সময়ে চা-শিল্পকে বিকশিত করতে ব্রিটিশ সরকার ভারতের ওড়িশা, ঝাড়খন্ড, উত্তর প্রদেশসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু দরিদ্র আদিবাসীদের ট্রেনে করে নিয়ে আসে সিলেট অঞ্চলে।

অত্যাচার সইতে না পেরে ১শ বছর আগে এভাবেই পথে নেমেছিলেন চা শ্রমিকরা

ভূমিসহ নানান সুযোগসুবিধা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের নিয়ে আসা হলেও বাস্তবে ঘটে ভিন্ন ঘটনা, ভূমি তো নয়-ই, সামান্য বাসস্থানের ব্যবস্থাটাও নিজেদের করে নিতে হয়। এরপর তাদের নিয়ে শুরু হয় পাহাড় পরিষ্কার করে চা-গাছ রোপণসহ নানান কাজ।

শ্রমিকনেতারা জানান, এমন অত্যাচার সইতে না পেরে ১৯২১ সালে সিলেট অঞ্চলের হাজার হাজার শ্রমিক এক আন্দোলনের ডাক দেন। যার স্লোগান ছিল মুল্লুকে চল (বাড়িতে চল)। সে বছরের ২০ মে নিজভূমে ফিরে যাওয়ার লক্ষ্যে সিলেট অঞ্চলের ৩০ হাজার চা-শ্রমিক সিলেট রেলস্টেশন থেকে হাঁটতে শুরু করেন। তারা চাঁদপুর মেঘনা স্টিমার ঘাটে পৌঁছামাত্র অস্ত্রধারী সিপাহিরা গুলি ছোড়ে। এতে মারা যান কয়েক শ চা-শ্রমিক। এরপর থেকে এই দিনটিকে ‘চা-শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত শ্রমিকরা।

এখনও জীবনমানে পিছিয়ে চা-শ্রমিকরা

ইংরেজ লেখিকা ক্যারো লাইন অ্যাডামস তার ‘সাত সমুদ্র তের নদীর ওপারে’ গ্রন্থে সিলেটে চা-বাগানের উষালগ্ন সম্পর্কে বলতে গিয়ে লিখেছেন, ‘প্রথম দিকের বাগান মালিকেরা তাদের দুর্ব্যবহারের জন্য ছিল কুখ্যাত, মদ্যপ, বাগানগুলো অব্যবস্থাপনার শিকার এবং শ্রমিকেরা বঞ্চিত ও অব্যবহৃত। ... বাগান শ্রমিকদের অত্যধিক খাটানো হতো, তাদের বাসস্থান নিম্নমানের এবং মজুরি ব্রিটিশ মালিকদের মুনাফার তুলনায় খুবই নগণ্য।’

চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সাবেক সভাপতি শ্রীবাস মাহালী মনে করেন, শতবর্ষ আগের এই মূল্যায়ন এখনও প্রাসঙ্গিক। আজকের দিনেও চা-শ্রমিকদের ভাগ্যের বদল হয়নি। তাদের ঘরবাড়ি খুবই নিম্নমানের। কারোরই ভূমির অধিকার নেই। তাদের খাটানো হয় অত্যধিক, কিন্তু মজুরি দেয়া হয় খুবই সামান্য।

শ্রীবাস মাহালী বলেন, এই একুশ শতকে এসেও বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা এমন সব অধিকার থেকে বঞ্চিত বেশির ভাগ চা-শ্রমিক। অশিক্ষা, অপুষ্টি, দরিদ্রতা এসবের সঙ্গেই তাদের নিত্য বসবাস।

শ্রীবাসের কথার সত্যতা পাওয়া যায়, চা-বাগানে পরিচালিত বিভিন্ন জরিপ আর গবেষণা কার্যক্রমেও।

২০১৯ সালে সিলেট অঞ্চলের চা-বাগানগুলোর স্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে প্রথম জরিপটি চালায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো। এই জরিপে দেখা গেছে, অপুষ্টির কারণে চা-বাগানের ৪৫ শতাংশ শিশুই খর্বাকার, ২৭ শতাংশ শীর্ণকায়। স্বল্প ওজনের শিশু ৪৭ দশমিক ৫ শতাংশ।

এই জরিপের তথ্য অনুযায়ী ১৮ বছরের আগেই বিয়ে হয়ে যাচ্ছে ৪৬ শতাংশ কিশোরীর, মা হয়ে যাচ্ছে ২২ শতাংশ। এ ছাড়া ন্যূনতম স্যানিটেশন-সুবিধা নেই চা-বাগানের ৬৭ শতাংশ পরিবারের।

শ্রমিকদের সংকট সন্তানদের শারীরিক গঠনেও প্রভাব ফেলছে

এর আগে ২০১৮ সালে বেসরকারি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন অ্যান্ড রিসার্চ বাংলাদেশ (সিআইপিআরবি) মৌলভীবাজারের চা-বাগানগুলোর নারীদের ওপর একটি গবেষণা চালায়। এতে দেখা যায়, প্রায় ১৫ শতাংশ নারী জরায়ু ক্যানসারে ভুগছেন।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, স্বল্পমজুরি, ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবার অভাব, মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবার অপ্রতুলতা, শিক্ষার অভাব ও কুসংস্কারের কারণে এমন অপুষ্টি আর রোগের শিকার চা-বাগানের নারী ও শিশুরা।

বুরজান চা-বাগানের শ্রমিক সুশীলা রাজভর। তার মতে, চা-শ্রমিকদের সব সমস্যার মূলে ওই মজুরি। তিনি বলেন, ‘হামার দুই গো বেটা এগো বেটি হওয়ে সঙ্গে হামার শাস ও শশুড় রহেন। উনকর হজরি সে না চলে’- (আমার দুই ছেলে তিন মেয়ে সঙ্গে শ্বশুর-শাশুড়ি থাকেন। এত বড় পরিবার স্বামীর আয়ে চলে না।)

স্বল্পমজুরির পাশাপাশি আরও নানা ক্ষেত্রে চা-শ্রমিকরা বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন বলে জানান চা-শ্রমিক ইউনিয়ন সিলেট ভ্যালির সভাপতি রাজু গোয়ালা। তিনি বলেন, দেড় শ বছর একই জমিতে বসবাস করে এখন পর্যন্ত এক খণ্ড ভূমির অধিকার পায়নি এই শ্রমিকরা। শিক্ষায়ও পিছিয়ে রয়েছে এখানকার শিশুরা। বেশির ভাগ বাগানেই বিদ্যালয় নেই। আবার প্রাথমিকের পর শিক্ষার দায়িত্বও নেয় না বাগান কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া শ্রমিকদের জন্য বাগানে স্বাস্থ্যসেবাও অপ্রতুল। বেশির ভাগ বাগানে নামমাত্র একটি চিকিৎসাকেন্দ্র থাকলেও জটিল কোনো রোগ হলে নিজ খরচে বাইরে চিকিৎসা করাতে হয়।

এ বাস্তবতায় পরম্পরা ছেড়ে চা-বাগানের কাজ ছেড়ে দিচ্ছেন অনেক শ্রমিকই। তেমনই একজন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সরকারি একটি বাগানের বাসিন্দা সিন্টু বাউরি। তিনি শ্রীমঙ্গলের একটি রিসোর্টে কাজ করেন।

সিন্টু বলেন, ‘আমি আমার ছেলেমেয়েদের স্কুল-কলেজে পড়াচ্ছি। বাগানে কাজ করলে এটা কখনো সম্ভব হতো না। তাদেরও বাগানে কাজ করতে দেব না।’

এমন বেহাল ঘরেই দিন কাটে দেশের অন্যতম অর্থকরী ফসল উৎপাদনকারীদের

তবে সিলেটের একটি চা-বাগানের ব্যবস্থাপক মনসুর আহমদ বলেন, চা-বাগানের শ্রমিকরা এখন অনেক সুযোগসুবিধা পাচ্ছেন।

তিনি জানান, বাজারমূল্যের তুলনায় যদিও তাদের মজুরি খুবই কম, তবু তদের রেশন, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সেবা বাগান থেকেই দেয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন এনজিও চা-শ্রমিকদের উন্নয়নে কাজ করছে। ফলে শ্রমিকদের অবস্থা এখন আগের মতো এতটা নাজুক নয়।

শ্রমিকদের ভূমির অধিকার না পাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ভূমি তো সরকারের। বাগান মালিকদের নয়। তা ছাড়া জমি শ্রমিকদের নামে লিখে দেয়ার পর তারা আর বাগানে কাজ করতে না চাইলে তো বাগান কর্তৃপক্ষকেই বিপদে পড়তে হবে। তখন নতুন শ্রমিক খুঁজতে হবে, তাদের আবার ভূমির অধিকার দিতে হবে।’

একই দাবি সিলেটের চা-শিল্পের উদ্যোক্তা ও সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আফজাল রশীদ চৌধুরীরও। তিনি বলেন, বাগান কর্তৃপক্ষই শ্রমিকদের ঘর করে দিচ্ছে। প্রতিটি বাগানে চিকিৎসক, নার্স ও মিডওয়াইফের ব্যবস্থা রয়েছে।

চা-শ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করা বেসরকারি সংস্থা আইডিয়ার নির্বাহী পরিচালক নজমুল হক বলেন, ‘শ্রমিকরা এখনও অনেকটা ক্রীতদাসের মতোই জীবন কাটাচ্ছেন। তাদের উন্নয়নে সরকার, মালিকপক্ষ সবাইকে আন্তরিক হতে হবে। এ ছাড়া শ্রমিকদেরও মানসিকতায় পরিবর্তন আনতে হবে। তাদের মানসিতায় কিছু গোঁড়ামি থাকায় এখনও অনেক বাগানে শিক্ষা, চিকিৎসা, স্যানিটেশন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না।

নজমুল হক বলেন, ‘ভবিষ্যতে এই শিল্পকে আরও সমস্যায় পড়তে হবে। কারণ, যেভাবে শ্রমিক বাড়ছে, সেভাবে বাগানের জমি বাড়ছে না। তখন হয়তো দেখা যাবে শ্রমিকদের আবাসনসুবিধা দিতে গিয়ে আবাদের জমি কমে আসবে। এসব সমস্যা সমাধানে চা-বাগান ও চা-শ্রমিকদের নিয়ে একটি বৃহৎ পরিকল্পনার দাবি জানান নজমুল।

একটি দিন নিজেদের অধিকার নিয়ে কথা বলার জন্য বরাদ্দ চান চা শ্রমিকরা

চা-শ্রমিক দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দাবি

২০ মে চা-শ্রমিক দিবসের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে চা-বাগান শিক্ষা অধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ। গত মঙ্গলবার এই দাবিতে সিলেটের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেয় সংগঠনটি।

বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ফেডারেশনের নেতা অধীর বাউরি বলেন, ঐতিহাসিক এই মুল্লুকে চল আন্দোলনটি চা-শ্রমিকদের প্রথম সংগঠিত বিদ্রোহ। এই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের জাতীয় মুক্তির সংগ্রামেও অংশগ্রহণ করেন চা-শ্রমিকরা। সাঁওতাল বিদ্রোহ, মুন্ডা বিদ্রোহ যেমন এক একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, একই রকম এই ঘটনা মুল্লুকে চল আন্দোলন। তাই এই আন্দোলনরে শতবর্ষে দাঁড়িয়ে দিবসটিকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করা খুবই যৌক্তিক।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর ডাকে চা শ্রমিকরা তীর-ধনুক নিয়ে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ে। এ সময় দেশের জন্য অনেক চা শ্রমিক জীবনও দিয়েছে। কিন্তু চা শ্রমিকরা এখনও এ দেশে পরবাসীর মতো আছে। তাদের নেই ভূমির অধিকারও। আমাদের দাবি, ২০ মে কে “চা শ্রমিক দিবস” হিসেবে সরকারি স্বীকৃতি দেয়া হোক।’

নানান কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার এই দিবস পালন করা হবে বলে জানিয়েছেন সিলেটের চা-শ্রমিকনেতা রিতেশ মোদি।

এ বিভাগের আরো খবর