হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি মামুনুল হক পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছেন, মামুনুল রাষ্ট্রক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। এজন্যই পরিকল্পিতভাবে একের পর এক সহিংসতায় উসকানি দিচ্ছিলেন তিনি।
তাকে গ্রেপ্তারে তৎপরতা চলছে দাবি করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি লকডাউনের ভেতরেই তিনি আইনের আওতায় আসতে পারেন।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকে মামুনুল হককে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। তিনি শিক্ষকতা করেন মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসায়।
৩ এপ্রিল রিসোর্ট-কাণ্ডের পরদিন ওই মাদ্রাসায় হেফাজত নেতারা জরুরি বৈঠক করেন। সেখানে উপস্থিত ছিলেন মামুনুল হক। এরপর আর তাকে সাংগঠনিক কোনো কর্মকাণ্ডেও দেখা যায়নি।
অবশ্য তিনি ফেসবুকে যেসব লাইভ করেছেন সেগুলো মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসা থেকেই করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার ঘনিষ্ঠরা। নিউজবাংলার প্রতিবেদকেরা কয়েক দফা ওই মাদ্রাসায় গেলে সংশ্লিষ্টরা প্রতিবারই দাবি করেন, মামুনুল হক সেখানেই আছেন।
সাম্প্রতিক সহিংসতা ও রিসোর্টকাণ্ডে রাজধানীর পল্টন থানা ও নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানায় দুটি মামলা হয়েছে মামুনুল হকের বিরুদ্ধে। এছাড়া, ২০১৩ সালের শাপলা চত্বর তাণ্ডবের ঘটনাতেও তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সাইনবোর্ড মোড় থেকে শিমরাইল এলাকায় সম্প্রতি তাণ্ডব চালায় হেফাজত সমর্থকরারিসোর্টকাণ্ডের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংসদে মামুনুল হকের তীব্র সমালোচনা করেন। এরপর থেকেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। গ্রেপ্তার হতে থাকেন হেফাজতের নেতা-কর্মীরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বেশ কয়েকটি সূত্র জানায়, মামুনুল হকও যেকোনো সময় গ্রেপ্তার হতে পারেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার সৈয়দ নূরুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা তদন্ত করে যাচ্ছি, তদন্তের একটা পার্ট হল আটক করা। অনেক সময় পলাতক থাকলে আসামিকে আটক করা যায় না। তবে আটক না হওয়া মানে তো আর তদন্ত থেমে থাকা নয়।
‘তদন্তের আরও অন্যান্য দিক আছে। যে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে তার সপক্ষে কী স্বাক্ষ্য প্রমাণ আছে, সেগুলো সংগ্রহ করা তদন্তের গুরুত্বপূর্ণ পার্ট। এই কাজগুলো চলমান আছে।’
মামুনুল হক কি তাহলে পলাতক- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, অবশ্যই পলাতক আছেন। মামুনুল হককে গ্রেপ্তারের জন্য আমরা গোয়েন্দা নজরদারি অব্যাহত রেখেছি। অবস্থান শনাক্ত করা গেলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।’
ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের কাছেও মামুনুল ‘পলাতক’। ডিএমপি গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মাহবুব আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আপাতত যতক্ষণ আমরা তাকে ধরতে না পারছি, ততক্ষণ তিনি পলাতক। তিনি লুকিয়ে আছেন, তবে কোথায় লুকিয়ে আছেন, সেটা আমরা বের করার চেষ্টা করছি। তিনি মোটামুটি নজরদারির মধ্যেই আছেন।’
মামুনুল হক সুপরিকল্পিতভাবে সহিংসতায় উসকানি দিয়েছেন বলে দাবি করেন মাহবুব আলম। তিনি বলেন, ‘মামুনুল হক দেখলেন তার কথায় তো অনেক কিছু হয়ে যাচ্ছে, অনেক সমর্থক তার, উনি যা বলছেন তারা তাই করছেন। ভাস্কর্যবিরোধী বিক্ষোভ থেকে শুরু করে মোদিবিরোধী বিক্ষোভে তিনি যা বলেছেন, তাই হয়েছে। তখন তিনি ভাবলেন জামাত-বিএনপি তার সঙ্গে আছে, তিনি তাহলে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসীন হতে পারবেন।
‘সমমনাদের নিয়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসার একটা চিন্তা তার মধ্যে চলে এসেছিল। বড় নেতা হতে চেয়েছিলেন তাই তার বক্তব্যের ধরন পাল্টে গিয়েছিল। কিন্তু আইনের ব্যত্যয় যারাই করেছেন তারা কেউ ছাড় পাবে না, সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। শুধু সময়ের ব্যাপার, আমরা শুধু সঠিক সময়ের অপেক্ষা করছি।’
মামুনুলের কয়েকটি বিয়ে নিয়ে বিতর্ক এবং জিডির বিষয়ে আইনি কোনো পদক্ষেপ নেয়া হবে কিনা, জানতে চাইলে মাহবুব আলম বলেন, ‘আমরা বিষয়গুলো পর্যালোচনা করছি। আমরা দেখব এগুলো কি তার ব্যক্তিগত বিষয়, নাকি তার কোনো অনৈতিক উদ্দেশ্য ছিল। অনৈতিক-অসামাজিক উদ্দেশ্য প্রমাণিত হলে কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রতি সব নির্দেশনা দেয়া আছে, সে অনুযায়ী আমরা বিশেষ স্ট্রাটেজি নিয়ে কাজ করছি, আমরা অবশ্যই এর একটা চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেব।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি গোয়েন্দা সংস্থার ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মামুনুল হক আটক হবেই। এর আগে হেফাজত তাকে বহিষ্কার করলে প্রক্রিয়া সহজ হবে। এজন্য কিছুটা সময় নেয়া হচ্ছে। তবে হেফাজত কোনো সিদ্ধান্ত না নিলেও আমরা তাকে গ্রেপ্তার করব। এই লকডাউনের মধ্যেই সেটা ঘটতে পারে।’
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ের রয়্যাল রিসোর্টে সঙ্গীনিসহ অবরুদ্ধ হওয়ার পর মামুনুল তাকে দ্বিতীয় স্ত্রী দাবি করেন। সাম্প্রতিক ছবির্যাব সদর দপ্তরের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তাও নাম না প্রকাশ করার শর্তে একই ধরনের ইঙ্গিত দেন। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমরা নির্দেশনা অনুযায়ী বড় অভিযানের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।’
পুলিশের চোখে মামুনুল হক ‘পলাতক’ থাকলেও রিসোর্টকাণ্ডের পর থেকে তিনি মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদ্রাসাতেই আছেন বলে নিশ্চিত করেন র্যাবের ওই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘তিনি (মামুনুল) হয়ত গ্রেপ্তার এড়ানোর কৌশল হিসেবে মাদ্রাসা থেকে বের হচ্ছেন না। নিরাপদ ভেবে মাদ্রাসার একটি কক্ষে তিনি অবস্থান করছেন।
মামুনুল প্রশ্নে হেফাজতে অস্থিরতা
মামুনুল হকের রিসোর্টকাণ্ড এবং দুই নারীর সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের পর বিয়ের প্রশ্নবিদ্ধ দাবি নিয়ে হেফাজতে ইসলামের মধ্যে বিভক্তি স্পষ্ট। একটি পক্ষ মামুনুলকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে কেন্দ্রের কাছে।
সংগঠনের সহপ্রচার সম্পাদক মুফতি শরীফ উল্লাহর সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমীর মধ্যকার আলাপে মামুনুলকে বহিষ্কারের বিষয়ে কথা হয়েছে।
১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় হেফাজতের শীর্ষ পর্যায়ের বৈঠকেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনার কথা জানিয়েছেন নেতারা। যদিও বৈঠক শেষে হেফাজতের আমির জুনায়েদ বাবুনগরী বিষয়টি স্বীকার না করে দাবি করেছেন, মামুনুলের ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কেউ কথা তোলেনি।
তবে হেফাজতসংশ্লিষ্ট ও তাদের বিষয়ে খোঁজখবর রাখা বিভিন্ন ব্যক্তি ফেসবুকে সেদিনের আলোচনার বিষয়বস্তু তুলে ধরে বলছেন উল্টো কথা।
হেফাজতের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী এখন বলছেন, সেদিন নায়েবে আমির আবদুল আউয়াল প্রসঙ্গটি তোলেন। তবে আলোচনা আর আগায়নি।
৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁর রয়্যাল রিসোর্টে জান্নাত আরা ঝর্ণা নামে এক নারীকে নিয়ে গিয়ে অবরুদ্ধ হন মামুনুল। স্থানীয় লোকজনের জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সঙ্গীনির নাম বলেন আমিনা তাইয়্যেবা। তবে প্রকৃতপক্ষে এটি তার চার সন্তানের জননী স্ত্রীর নাম।
পরে মামুনুল দাবি করেন, ঝর্ণাকে তিনি দুই বছর আগে বিয়ে করেছেন। যদিও এই দাবির সত্যতা দুই সপ্তাহ পরও বড় প্রশ্নের মুখে।
এর মধ্যে জান্নাতুল ফেরদৌস লিপি নামে আরও এক নারীর সঙ্গে মামুনুলের সম্পর্কের বিষয়টি সামনে আসে। আর মামুনুল সেই নারীর ভাইকে ডেকে নিয়ে তাকেও বিয়ের দাবি করেন বলে মোহাম্মদপুর থানায় করা একটি সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) বলা হয়েছে। সেই নারীর বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। সেখানে গিয়ে স্বজনদের কাছ থেকে কথিত বিয়ের বিষয়ে কোনো তথ্যই পাওয়া যায়নি।
এসব ঘটনায় হেফাজত কতটা বিব্রত সেটি যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা ফজলুল করিম কাসেমী ও সহপ্রচার সম্পাদক মুফতি শরীফ উল্লাহর আলোচনাতেই স্পষ্ট।
দুইজনই একমত যে মামুনুলকে সংগঠনে রাখা যাবে না। দুইজনের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড এখন সামাজিক মাধ্যমে ভেসে বেড়াচ্ছে।
এতে কাসেমীকে বলতে শোনা যায়, ‘এটা কোন ধরনের বিয়ে? এমন বিয়ে তো আমগো করা দরকার।… ঝামেলা শেষ হোক। তারে (মামুনুল) এই পদে রাখা যাবে না।’
মুফতি শরীফ উল্লাহ বলেন, ‘এটা আমারও কথা এটা। তারে (মামুনুল) এখানে রাখা কোনো অবস্থাতেই সঠিক হবে না।’
কাসেমী আবার বলেন, ‘না না তারে (মামুনুল) এই পদে রাখা যাবে না।’
মুফতি শরীফ উল্লাহ বলেন, ‘তারে অবশ্যই এই পদ থেকে সরাইতে হবে।’
এর মধ্যে মামুনুল ফেসবুক লাইভে এসে ৩২ মিনিট বক্তব্য দিয়ে আরও বিপাকে পড়েন। তার রিসোর্টকাণ্ডের পর ফেসবুকে যেসব ফোনালাপ পাওয়া যাচ্ছিল, তার সমর্থকরা সেগুলোকে বানোয়াট বলে দাবি করে আসছিলেন। তবে মামুনুল কার্যত স্বীকার করে নেন ফোনালাপগুলো সঠিক।
এর মধ্যে ১১ এপ্রিল হাটহাজারী মাদ্রাসায় ডাকা হয় জরুরি বৈঠক। বেলা সাড়ে ১১টা থেকে সোয়া ৪টা পর্যন্ত চলা বৈঠক শেষে হেফাজতের আমির জুনাইদ বাবুনগরী দাবি করেন, মামুনুলের বিষয়টি নিয়ে কোনো আলোচনাই হয়নি।
তবে বৈঠকে উপস্থিত অন্য নেতারা বলছেন ভিন্ন কথা। নাম প্রকাশে না করার শর্তে নিউজবাংলাকে তারা বলেন, ঢাকাকেন্দ্রিক একটি পক্ষ মামুনুল হককে আরও সময় দেয়ার অনুরোধ জানায়। তবে হাটহাজারী মাদ্রাসাকেন্দ্রিক পক্ষটি চেয়েছিল মামুনুল হককে যেন হেফাজত থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। তবে শেষ পর্যন্ত মামুনুল হক টিকে যান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিস্তারিত কিছু বলতে না চাইলেও হেফাজতের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও নারায়ণগঞ্জ জেলার কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুল আউয়াল হুজুর মামুনুল হককে নিয়ে আলোচনা শুরু করতে চান। কিন্তু আমিরে হেফাজত জুনায়েদ বাবুনগরী বলেন, মামুনুল হকের বিষয়টি ব্যক্তিগত। তাই এই বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা না করাই উত্তম।’
তবে হেফাজতের বিষয়ে খোঁজখবর রাখা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের মুখপাত্র উসামা মাদানী ফেসবুকে লিখেছেন, বৈঠকের একপর্যায়ে মামুনুল হককে অব্যাহতির বিষয়ে একমত হন অধিকাংশ নেতা। তারা মনে করছেন, এই বিষয়টিকে ঘিরে মিডিয়া হেফাজত ইসলামকে জড়িয়ে নানা লেখালেখি করার সুযোগ পাচ্ছে।
তবে মামুনুলের রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী কিছুটা সময় চেয়ে বলেন যে, মামুনুল হক সাহেব নিজে থেকেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। তার সম্মান রক্ষার্থে অব্যাহতি না দিয়ে এই সুযোগ করে দেয়া হোক। পরে হেফাজতের ঢাকা মহানগর শাখার আমির জুনায়েদ আল হাবিব এই বক্তব্যে সমর্থন করেন।
এরপর মামুনুল হকের বিষয়টি নিয়ে আর কেউ কথা বলেনি।
মাওলানা খোরশেদ আলম কাসেমী বৈঠকে অনুরোধ করেছেন কি না, জানতে চাইলে হেফাজতের প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজী অবশ্য অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘তিনি এই বিষয়ে কোনো কথা বলেননি। যদি কেউ এটা বলে থাকে তাহলে সেটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং বানোয়াট তথ্য।’
হেফাজতের নায়েবে আমির ও নারায়ণগঞ্জ শাখা কমিটির সভাপতি মাওলানা আবদুল আউয়ালও স্বীকার করেন, তাদের বৈঠকে মামুনুলকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
আউয়াল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মজলিশে (সভায়) তো কত কথাই হয়। সব কথাই তো সবাই শুনে না, সবাই মানে না। তারপরও বলব, দলের সিদ্ধান্ত, আমার সিদ্ধান্ত।’
মামুনুলকে ছাঁটাইয়ে আপনার প্রস্তাব তোলায় আপনার তো অবমূল্যায়ন হয়েছে এমন মন্তব্যে তিনি বলেন, ‘আমি কিছু বলব না, আমি শুধু শুনব, তারা কী বলতে চায়।’