পর্যটন নগরী কক্সবাজারের নৈস্বর্গিক সৌন্দর্যের পাশাপাশি বেড়াতে আসা ভ্রমণপিপাসুদের বাড়তি বিনোদন দিচ্ছে প্যারাসেইলিং অ্যাভেঞ্জার।
প্যারাসেইলিং অ্যাভেঞ্জার বা মানব ঘুড়ি পুরো বিশ্বে জনপ্রিয়। আর এটি কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের মধ্যে যুক্ত করেছে নতুন এক মাত্রা।
শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে সৈকতের হিমছড়ি দরিয়ানগর পয়েন্টে মেরিন ড্রাইভের দক্ষিণ পাশে সৈকতে দেখা যায় মানুষ প্যারাসুট পিঠে বেঁধে পাখির মতো আকাশে উড়াল দিচ্ছে।
প্রায় ৫০০ ফুট উঁচু থেকে সমুদ্রের নীল জলরাশি আর পাহাড়ের দৃশ্য দেখার এ এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। আর এ জন্য ব্যয় করতে হবে দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা।
বিশ্বমানের এই প্যারাসেইলিং অ্যাভেঞ্জার দিন দিন পর্যটকদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পাখির মতো আকাশে উড়ে নীল জলরাশি আর পাহাড়ের অপরূপ দৃশ্য যে কাউকে কৌতূহলী করে।
প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে সূর্য থাকা পর্যন্ত প্যারাসেইলিংয়ের সৌন্দর্য উপভোগ করতে দরিয়ানগরে ভিড় করছেন পর্যটকরা।
প্যারাসেইলিং করতে ঢাকা থেকে আসা মাহবুব খান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সৈকতে প্যারাসেইলিংয়ের কথা জানতে পারি আমার এক বন্ধুর কাছ থেকে। কক্সবাজার বেড়াতে আসার সুযোগে এখানে চলে আসলাম।
‘সমুদ্রসৈকতে প্যারাসেইলিং করার অনূভুতিটা ছিল অন্যরকম। প্যারাসেইলিংয়ের ২০ মিনিট সময়টা জীবনের বেষ্ট একটা অন্যরকম মুহূর্ত। খুব উপভোগ করলাম।’
সেখানে কথা হয় আরেক পর্যটক জান্নাতুল নাঈম জেরিনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘যখন আমার পা মাটি থেকে ওপরের দিকে উঠছিল, প্রথমে একটু ভয় পেয়েছি।
‘কিন্তু উপরে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে মনে হচ্ছিল, আমি আকাশে গাঙচিলের মতো উড়ছি। তাও পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের ওপরে। অনুভূতি জানানোর মতো ভাষা আমার কাছে নেই।’
উদ্যোক্তারা বলছেন, উন্নত দেশে প্যারাসেইলিং পর্যটকদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। প্যারাসেইলিং কক্সবাজারের পর্যটনকে বিশ্বের কাছে আরও ভালোভাবে তুলে ধরা সম্ভব। এজন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা দরকার বলে মনে করেন তারা।
বেসরকারি সংস্থা স্যাটেলাইট ভিশন সি স্পোর্টসের উদ্যোগে দরিয়ানগর ও হিমছড়ি সৈকতে প্যারাসেইলিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
প্রজেক্টের কো-অর্ডিনেটর আনোয়ার হোসাইন নয়ন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে যদি আমাদের পৃষ্ঠপোষকতা দেয় তাহলে এটা থেকে আরও উন্নত সেবা দেয়া সম্ভব।’
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। পাশাপাশি পর্যটকবান্ধব পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগিয়ে যাচ্ছে বলে জানান জেলা প্রশাসক মামুনুর রশিদ।
বলেন, শুধু প্যারাসেইলিং নয়, কক্সবাজারকে আন্তর্জাতিকমানের পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে নানা পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন তিনি।
কক্সবাজারে বিনোদন সিস্টেম আরেকটু বাড়ানো যায়, আরেকটু পরিবর্তন করা যায়, কীভাবে বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করা যায় এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন কাজ করছে।