বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

লাভ অ্যান্ড লস

  •    
  • ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০৮:২৬

বাংলাদেশসহ অধিকাংশ দেশে গত ভ্যালেনন্টাইনস ডে কেটেছে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে। কিন্তু করোনার কারণে এবার জীবনে অন্ধকার নেমে আসা মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বেড়েছে।

সেন্ট ভ্যালেন্টাইন’স ডে তথা বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। ক্যালেন্ডারের হিসাবে এবারের দিবসটি এসেছে বাংলার পয়লা ফাল্গুনকে সঙ্গী করে। যুগপৎ উৎসবেও কেমন যেন আমেজে ভাটা। ঈদ, পূজা, বড়দিনের মতো এ উৎসব দুটিও করোনার পেটে। ভালোবাসা দিবসে দাঁড়িয়েও ‘লসের’ হিসাব মেলাতে ব্যস্ত গোটা বিশ্ব।

হারানোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে মানুষের প্রাণহানি। প্রকৃতিতে যখন ফাগুন হাওয়া লেগেছে, ভালোবাসার আমেজ ছুঁয়ে যাচ্ছে হৃদয়ে হৃদয়ে, তখন বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃত্যুসংখ্যা ২৪ লাখ ছুঁইছুঁই। শনাক্ত ১০ কোটি ছাড়িয়েছে।

ভ্যালেন্টাইন’স ডেতে আমেজ ছড়ানো দেশগুলোর অন্যতম যুক্তরাষ্ট্র। আর করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তে সে দেশটিই রয়েছে তালিকার শীর্ষে। প্রায় পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে সেখানে।

প্রিয়জন হারানোর বেদনার সঙ্গে অতি ছোঁয়াচে ভাইরাসটি বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির জন্য হয়ে এসেছে বড় ধাক্কা হয়ে। আমেরিকা, ইউরোপসহ বিশ্বের এমন কোনো দেশ নেই যারা অর্থনৈতিক সংকটে পড়ছে না।

প্রতিটি দেশের অর্থনীতির সংকোচন হয়েছে উদ্বেগজনক হারে। কমেছে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি)। চাকরিহারা হয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। প্রভাব পড়েছে তাদের জীবিকায়।

করোনার প্রভাব বাংলাদেশে তীব্র না হলেও কম পড়েনি। এই ভাইরাসে এখন পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন ৮ হাজার ২৬৬ জন। শনাক্ত ছাড়িয়েছে ৫ লাখ ৪০ হাজার। চাকরি হারিয়েছেন লাখ লাখ মানুষ। রাজধানী ছেড়ে গ্রামে চলে যেতে হয়েছে অনেককে।

বাংলাদেশসহ অধিকাংশ দেশে গত ভ্যালেনন্টাইন’স ডে কেটেছে আনন্দ-উচ্ছ্বাসে। কিন্তু করোনার কারণে এবার জীবনে অন্ধকার নেমে আসা মানুষের সংখ্যা ক্রমেই বেড়েছে।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের পর চীনের উহান থেকে করোনা ছড়িয়ে পড়ার পর গোটা বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়তে সময় লেগেছে কমই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন আর সামাজিক দূরত্বের কারণে একপর্যায়ে জীবন আবদ্ধ হয় নির্দিষ্ট গণ্ডিতে। প্রিয়জনদের দূরে ঠেলে দেয় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি।

করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনসমাবেশ এড়িয়ে চলার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে এখনও বহাল এই নির্দেশনা। আর মাস্ক তো পরিণত হয়েছে মানুষের নিত্য অনুষঙ্গে।

করোনার কারণে এখনও মানুষ মনের মতো আড্ডাবাজি করতে পারছে না। পাঁচ জনের বেশি একত্র হলেই পরতে হয় মাস্ক। স্বাস্থ্যবিধিতে নিষেধাজ্ঞা আছে হ্যান্ডশেক করাতেও।

খেলার মাঠ, সিনেমা, থিয়েটার, পর্যটনস্থলে খাঁখাঁ। করোনাবিধির কারণে রং হারিয়েছে এসব জায়গা। গ্যালারিতে দর্শক ঢুকতে বিধিনিষেধ থাকায় ঠিক জমছে না ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ, লা লিগা, চ্যাম্পিয়নস লিগের মতো রোমাঞ্চকর ফুটবল প্রতিযোগিতা।

করোনা বড় ‘লসের’ কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে শিশু-কিশোরদের জন্যও। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দিনের পর দিন বন্ধ থাকায় প্রভাব পড়ছে এসব কোমলমতিদের ওপর। বন্ধু ও সমবয়সীদের সঙ্গে লুটোপুটি খাওয়ার সময়টায় তারা অনেকটা ঘরবন্দি।

আশার কথা, এরই মধ্যে করোনা-প্রতিরোধী বেশ কিছু টিকা এসেছে। এসবের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রে উদ্ভাবিত ফাইজার, মডার্না, রাশিয়ার স্পুৎনিক, চীনের সিনোভ্যাক ও যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা।

বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশে শুরু হয়েছে করোনা প্রতিরোধী টিকার প্রয়োগ। এতে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছে বিশ্ববাসী। আড়মোড়া ভেঙে সাহস পাওয়া যাচ্ছে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার।

বিশ্বের অনেক দেশ এরই মধ্যে করোনার বিধিনিষেধ তুলে নিতে শুরু করেছে। বাড়ছে মানুষের চলাচল। কাটতে শুরু করেছে অর্থনৈতিক সংকট। উদয় হচ্ছে সম্ভাবনার সূর্যের।

তাই গেল এক বছরের আমোদহীন ঈদ, পূজা, বড়দিনের তুলনায় অনেকটা উৎসবের বারতা থাকছে এবারের ভ্যালেন্টাইন’স ডে ও পয়লা ফাগুনে। প্রিয়জনের কাছে গিয়েই বলা যাবে, ভালোবাসি।

এ বিভাগের আরো খবর