বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

পরিত্যক্ত ভবনে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাস

  • নিউজবাংলা ডেস্ক   
  • ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ০৯:৫১

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একসময়ের ছাত্র হল বাণী ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তারপরও সেখানে বাস করছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির অনেক কর্মচারী ও তাদের পরিবার। উপাচার্য বলছেন, কর্মচারীদের এখনই কোনো আবাসনসুবিধার পরিকল্পনা নেই তাদের।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) পুরোনো একটি হল ‘বাণী ভবন’। বিশ্ববিদ্যালয় ও রাজউক থেকে অনেক আগেই ভবনটিকে ঝুঁকিপূর্ণ ও বাসের অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে।

পরিত্যক্ত সেই ভবনেই নিরাপত্তার তোয়াক্কা না করে বাস করছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কিছু কর্মচারী ও তাদের পরিবার। বারবার নোটিশ দিয়ে সতর্ক করার পরও পরিবারগুলো বাণী ভবন ছাড়ছে না বলে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের।

স্বল্প বেতনে পরিবার নিয়ে আলাদা বাসা ভাড়া করে থাকার পরিস্থিতি নেই জানিয়ে কর্মচারীরা বলছেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আবাসনসুবিধা দেয়ার নামে গড়িমসির কারণেই তারা সেখানে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।

তাদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ভবনটি ভেঙে অন্তত টিনশেড ঘর করে দিলেও তারা পরিবার নিয়ে নিরাপদে থাকতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের আবাসনের কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই।

১ নম্বর ঈশ্বরদাস লেনের ৩৫ ও ৩৬ প্যারিদাস রোডের মাথায় অবস্থিত বাণী ভবন। ভবনটির ফটকে ‘কর্মচারী আবাস জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা’ লেখা রয়েছে। ভবনের দেয়াল ও ছাদ থেকে চুন-সুড়কি খসে খসে পড়েছে।

দোতলা ভবনটিতে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিছিন্ন। সন্ধ্যার পর বসে মাদকসেবীদের আড্ডা। ভবনের কয়েকটি কামরায় আবর্জনার স্তূপ।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, বাণী ভবনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের তত্ত্বাবধানে নেই। ভবন ছেড়ে দেয়ার জন্য কয়েকবার নোটিশ দেয়া হলেও কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছাড়াই সেখানে বাস করছেন। তাই কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নেবে না।

বাণী ভবন আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হল হিসেবে ব্যবহার হতো। এখন তা কর্মচারী আবাস হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। ১৯৮৫ সালে এরশাদ সরকারের আমলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ হলে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের সব হল ছাত্ররা ছেড়ে দেন।

ভবনে গিয়ে দেখা যায়, ২১টি কক্ষে অর্ধশতাধিক কর্মচারী বাস করছেন। তাদের মধ্যে অনেকে পরিবার নিয়েও আছেন। নেই বিদ্যুৎ, গ্যাসসংযোগ। তবে অনেকে সোলারের মাধ্যমে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করেছেন।

ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও পরিত্যক্ত ভবনে কেন থাকছেন জানতে চাইলে জবির কর্মচারীদের এক জন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের বেতন খুব কম। আলাদা বাসা ভাড়া নিতে গেলে সংসার চলবে না। তাই গ্যাস-বিদ্যুৎ না থাকলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে থাকছি। যদিও আমাদের অনেক কষ্ট এখানে থাকতে।’

তোফাজ্জেল ইসলাম নামের আরেক কর্মচারী বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ভবন, নোংরা পরিবেশ; তারপরও কোনোরকমে দিন কাটাচ্ছি। সত্যি বলতে, এটা কোনো জীবন নয়। কর্তৃপক্ষকে আবাসন সমস্যার কথা বলা হয়েছে। তারা আবাসনের ব্যবস্থা করার কথা বললেও তার কোনো সমাধান এক বছরেও পাইনি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নেই। কর্মচারীদের আবাসনব্যবস্থা বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে নেই। বাণী ভবন পরিত্যক্ত।

‘ওখানে কেউ থাকে না। হয়তো এই সুযোগে কেউ কেউ গিয়ে আবাস গড়েছেন। ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সেখান থেকে কর্মচারীদের অন্যত্র সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।’

গত বছরের মে মাসে নোটিশ দিয়ে ভবন থেকে কর্মচারীদের সরে যেতে বলেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে তবে এর দায় কর্তৃপক্ষ নেবে না বলে জানান উপাচার্য।

ভবনটি ভেঙে সেখানে টিনশেড করে স্বল্পকালীন সময়ের জন্য কর্মচারীদের আবাসনের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কর্মচারীদের এখনই কোনো আবাসনসুবিধার পরিকল্পনা নেই।’

এদিকে ঘোষিত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বসবাসের বিষয়ে জানে না রাজউক। সংস্থাটির উন্নয়ন কর্মকর্তা মেজর সামসুদ্দিন আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘বাণী ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে লোকজন বসবাসের বিষয়টি আমার জানা নেই।’

এ বিভাগের আরো খবর