করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ভারত থেকে আনা টিকা প্রথম নিচ্ছেন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। কোনো ধরনের চাপে নয়, সম্পূর্ণ নিজের আগ্রহে এই টিকা নিচ্ছেন বলে নিউজবাংলাকে জানিয়েছেন তিনি।
টিকা নিয়ে বিভিন্ন নেতিবাচক প্রচার উড়িয়ে দিয়ে রুনু বলছেন, দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করাই তার লক্ষ্য।
দেশে প্রথম টিকা নেয়ার অনভুতি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে অনেক দেশ টিকা না পেলেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য করোনা টিকার ব্যবস্থা করেছেন। উনি দেশে টিকা আনতে পেরেছেন। উনার ইচ্ছা অনুযায়ী একজন নার্সকে দিয়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। আমি স্বেচ্ছায় টিকা নিতে রাজি হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার বেলা ৩টায় ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে টিকা কার্যক্রম উদ্বোধনের পরপরই করোনা টিকা নেবেন রুনু। হাসপাতালের বিশ্বস্ত কয়েকটি সূত্র নিউজবাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুর্মিটোলা হাসপাতালের এক নার্স নিউজবাংলাকে জানান, রুনুর পর আরও দুই নার্সকে টিকা দেয়া হবে। একই সঙ্গে এদিন টিকা নেবেন তিন চিকিৎসক।
তালিকা অনুযায়ী প্রথমে টিকা নেবেন ডায়ালাইসিস ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স রুনু বেরুনিকা কস্তা। এর পরে ফিমেল মেডিসিন ইউনিটের ইনচার্জ ও সিনিয়র স্টাফ নার্স মুন্নি খাতুন এবং একই ইউনিটে কর্মরত নার্স রিনা সরকার টিকা পাবেন। তবে শেষ মুহূর্তে কারো কোনো শারীরিক অসুবিধা দেখা দিলে তালিকায় রদবদল হতে পারে।
এই হাসপাতালে চিকিৎসকদের মধ্যে টিকা নেয়ার তালিকার প্রথমে আছেন কনসালট্যান্ট লুৎফর কবির মবিন, শাহরিয়ার আলম। আরেক চিকিৎসকের নাম এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে খুব একটা ভাবছেন না অভিজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মী রুনু বেরুনিকা কস্তা। তিনি বলেন, ‘পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়টা অনেক ওষুধেই রয়েছে, কার বডিতে এটা কাজ করবে এবং কার বডিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেবে সেটা অন্য হিসাব। এটা (করোনা টিকা) তৈরি করা হয়েছে একটা ভালো উদ্দেশ্যে। এখন কার বডিতে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হবে সেটা তো আর কেউ আগে থেকে বলতে পারবে না। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ভয় পেলে কেউই এই টিকা নেবে না।’
টিকা নিতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকেও কোনো চাপ দেয়া হয়নি বলে জানান রুনু।
এপর প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তার পরিবারের অন্য সদস্যরা শুরুতেই টিকা হয়ত পাবেন না। তিনি বলেন, ‘এখনও সাধারণ মানুষের জন্য টিকা আসেনি, যখন সবার টিকা নেয়ার সুযোগ হবে তখন অবশ্যই তারা (পরিবার) টিকা নেবেন।’
দুই সন্তানের জননী রুনু বেরুনিকা কস্তা ২০১৩ সাল থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে দায়িত্বপালন করছেন। এর আগে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালে কাজ করেন।
মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে নার্সিংয়ের ওপর প্রশিক্ষণ নেন। তার স্বামী একটি বেসকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী।